গাইবান্ধার ডিসি এসপি ইউএনও চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে তলব
গাইবান্ধা সদরের একটি ইউনিয়নে ‘নিজস্ব আদালত’ পরিচালনাকারী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই রুল জারি করেন।একই সঙ্গে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং ওই
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে ১২ জানুয়ারি আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম কেন অবৈধ হবে না, তা-ও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত রোববার প্রথম আলোতে ‘এক চেয়ারম্যানের নিজস্ব আদালত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ খবরটি আদালতের নজরে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আলতাফ হোসেন। শুনানি নিয়ে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।
আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছেন। এ ছাড়া ব্যাখ্যা জানাতে ডিসি, চেয়ারম্যানসহ চারজনকে ১২ জানুয়ারি হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক ওরফে লেবু নিজস্ব নিয়মকানুনে বিচার চালু করেছেন। ২০১১ সালের ২৭ জুলাই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রতি শনিবার ওই গ্রামে ‘আদালত’ বসান তিনি। ওই আদালতে বিচার চাইতে হলে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে আবেদন করতে হয়। বিচারের দিন হাজির না হলে জারি করা হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। ওই দিন বাদী-বিবাদী দুই পক্ষকে টাকা দিয়ে কথিত ‘আইনজীবী’ নিয়োগ করতে হয়। নইলে বিচার করেন না ‘বিচারক’।
চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘এক চেয়ারম্যানের নিজস্ব আদালত’ শীর্ষক সংবাদকে ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও অমূলক বলে দাবি করেছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক। গতকাল সোমবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
চেয়ারম্যান বলেন, গিদারি ইউপি কার্যালয়ে স্থাপিত ‘গ্রাম আদালতে’ বিচারকার্য আইনসংগতভাবে সম্পাদন হয়। অথচ গ্রাম আদালতকে ‘নিজস্ব আদালত’ বলে অবমাননা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইউপি সদস্যরা ওই বিচারকাজের সঙ্গে যুক্ত নন বলে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি দাবি করেন, আদালতে আইনজীবী, মুহুরি নিয়োগ, ফি আদায়, গ্রাম পুলিশদের সূর্যের দিকে মুখ করে দাঁড় করিয়ে রাখা, চৌকিদারের চেয়ারম্যানের বাড়ি পাহারা দেওয়া, গ্রাম আদালতে বিবাদীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে জোরপূর্বক হাজির করানোর সংবাদও মিথ্যা।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: সরেজমিন পরিদর্শন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এবং এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করা হয়।
No comments