ফিলিস্তিন বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আজ

জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ চেয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের ব্যাপারে আজ শুক্রবার বৈঠকে বসবে নিরাপত্তা পরিষদ। পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রের অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র আগেই আবেদনের বিপক্ষে ভেটো দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় এটি অনুমোদনের কোনো সুযোগ এমনিতেই নেই। তার ওপর ইউরোপীয় দেশগুলো এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতায় সমর্থন দেওয়ায় পরিস্থিতি এখন ফিলিস্তিনের সম্পূর্ণ প্রতিকূলে। ফলে ওয়াশিংটনের ভেটো ছাড়াই ফিলিস্তিনের আবেদন পাস হওয়ার পথ আটকে গেছে বলে কূটনীতিকরা মনে করছেন।


নিয়ম অনুযায়ী, নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের (পাঁচটি স্থায়ী ও ১০টি অস্থায়ী) মধ্যে ৯টি কোনো প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে তা পাস হয়। তবে শর্ত অনুযায়ী স্থায়ী সদস্যদের কেউ ভেটো দিলে প্রস্তাব বাতিল বলে গণ্য হবে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ চেয়ে আবেদন করেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ইতিমধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের আট সদস্য ফিলিস্তিনের দাবির প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফিলিস্তিনের পক্ষে ৯ ভোট পড়লে যুক্তরাষ্ট্র অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়বে। বাধ্য হয়ে তখন তাদের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে।
রাশিয়া, চীন, ব্রাজিল, ভারত, লেবানন ও দক্ষিণ আফ্রিকা গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। গ্যাবন ও নাইজেরিয়াও সমর্থন জানাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে গত সপ্তাহেই ব্রিটেন, ফ্রান্স ও কলম্বিয়া ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে বলে জানায়। নিরাপত্তা পরিষদের অন্য দুই সদস্য বসনিয়া ও পর্তুগালও প্রস্তাবটির ওপর অনুষ্ঠিতব্য ভোটাভুটিতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর জার্মানি বিপক্ষে ভোট দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের প্রস্তাব পাস হওয়ার সুযোগ নেই। জাতিসংঘের এক কূটনীতিক বলেন, 'আমাদের হিসাব অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের জেতার কোনো কারণ নেই।' তবে পরিষদের ৯টি ভোট নিজেদের পক্ষে পেলে তা ফিলিস্তিনের নৈতিক জয় বলেই বিবেচিত হবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। ফিলিস্তিনিও এই একই আশা করছে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ পাওয়ার ব্যাপারে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিয়েছিল ফ্রান্স।
এর আগে গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের আবেদনের বিষয়ে ঐকমত্যে পেঁৗছাতে ব্যর্থ হয় নিরাপত্তা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ একটি কমিটি। পরিষদের সদস্যদের কাছে বিতরণ করা কমিটির খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের কাছে সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।
এদিকে ভোটদানে বিরত থাকার পক্ষে সরকারের অবস্থান তুলে ধরায় পার্লামেন্টে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ। গত বুধবার সরকারি ও বিরোধী উভয় দলের আইনপ্রণেতারা হেগের বিরুদ্ধে সরব হন। সরকারের এ অবস্থানকে 'দায়িত্ব থেকে পলায়ন' বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ। সাবেক লেবার মন্ত্রী জন রাডক বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোটদানে বিরত থাকার মানে 'না' ভোট দেওয়া।" সূত্র : টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.