টিউশন ফি বাড়ানোয় ব্রিটেনে ফের ছাত্র আন্দোলন

নকল্যাণ খাতে ব্যয় হ্রাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে গত বুধবার হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল করেছে। দুপুরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। চলে দিনভর। এ সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মিছিলকারীদের ঘিরে রাখে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল থেকেই বিভিন্ন শহরের শিক্ষার্থীরা মধ্য লন্ডনে জড়ো হতে থাকে। দুপুর নাগাদ ছাত্রবিক্ষোভ বিশাল মিছিলে পরিণত হয়। বিক্ষোভকারীরা ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড নিয়ে টিউশন ফি কমানোর দাবির পাশাপাশি সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেয়।


এর আগে গত ডিসেম্বরে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে শিক্ষার্থীরা একই রকম বিক্ষোভ মিছিল করে। সে সময় জ্বালাও-পোড়াও ছাড়াও পুলিশের সঙ্গে তাদের কয়েক দফা সংঘর্ষও হয়। একসময় ব্রিটিশ যুবরাজ প্রিন্স চার্লস ও তাঁর স্ত্রী ক্যামিলা পার্কারকে বহনকারী গাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আগামী বছর থেকে টিউশন ফি তিনগুণ বাড়িয়ে ৯ হাজার পাউন্ড করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বুধবার বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা শহরের কেন্দ্রস্থলে সিটি সেন্টারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বিক্ষোভ মূলত শান্তিপূর্ণ হলেও শান্তি ভঙ্গ ও গণ-আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে পুলিশ ২৪ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে। ছাত্রবিক্ষোভটি মধ্য লন্ডনের ম্যুলেট স্ট্রিট থেকে শুরু হয়ে লন্ডন ওয়াট স্ট্রিটে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশি বাধায় তা ট্রাফালগার চত্বরেই শেষ হয়। বিক্ষোভরত একদল শিক্ষার্থী ট্রাফালগার চত্বরে নেলসন স্তম্ভের পাদদেশে বিশটিরও বেশি তাঁবু টানিয়ে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ দ্রুত তাঁবুগুলো কেড়ে নিয়ে চত্বর থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারই লন্ডনকে বিক্ষোভের নগর বানিয়েছে। তারা প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। টিউশন ফি কমাতে সরকারকে বাধ্য করা হবে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আন্দোলনরত পোর্টস মাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অ্যানিতি ওয়েব বলেন, আগামী বছর থেকে টিউশন ফি তিনগুণ বাড়িয়ে ৯ হাজার পাউন্ড করা হয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই ঝরে পড়বে। তার ভাষ্যমতে, 'এর মানে শিক্ষা শুধু ধনীদের জন্য। কিন্তু আমি এমনটা মনে করি না। আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা সবার জন্য।'
পুলিশের দাবি, প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, ১০ হাজার শিক্ষার্থী মিছিলে যোগ দিয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের সামাল দিতে চার হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এদিকে ছাত্রবিক্ষোভের পূর্বনির্ধারিত স্থানের কাছেই সেন্টপল ক্যাথেড্রালের আঙিনায় চলছে পুঁজিবাদবিরোধী বিক্ষোভ। সূত্র : রয়টার্স,
এএফপি, আল-জাজিরা।

No comments

Powered by Blogger.