লোকমান হত্যার এজাহার বিভ্রান্তিকর! : আসামিদের পক্ষে এমপির সাফাই, টঙ্গীতে একজন গ্রেফতার হলেও তদন্ত নিয়ে ধূম্রজাল by মাজহারুল পারভেজ

ল ও সরকারের হাইকমান্ডের সঙ্গে নরসিংদীর ৪ এমপির সাক্ষাতের পর পাল্টে যেতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্টদের বাতচিত। আলোচিত মেয়র লোকমান হত্যা মামলার ভবিষ্যত্ নিয়ে দেখা দিয়েছে ঘোর সংশয়। ভুক্তভোগীরা বলছেন, নরসিংদী পুলিশ চোখে কালোকাপড় বেঁধে আসামি ধরার ছেলেখেলায় নেমেছে। হত্যার ৯ দিন পরও কোনো আসামির টিকি স্পর্শ করতে পারেনি তারা।অন্যদিকে লোকমান হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবিতে সোচ্চার জেলার এমপিদের কণ্ঠে নতুন সুর।


গত কয়েকদিন যাদের গ্রেফতার দাবিতে ছিলেন জোরকণ্ঠ এখন তাদের রক্ষার জন্যই বরং মরিয়া। রাতারাতি এই রঙ বদল নরসিংদীবাসীর কাছে এখন প্রধান আলোচ্য বিষয়। নরসিংদী সদরের সরকারি দলের এমপি লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম হীরু বীরপ্রতীক এখন বলছেন— লোকমান হত্যায় মন্ত্রী রাজুর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু জড়িত— এটা আর তিনি বিশ্বাস করেন না। লোকমান হত্যার আসামিদের পাকড়াও অভিযান এখন মন্ত্রী-এমপি প্রভাবশালীদের বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলেই দুলছে। জেলায় নতুন এসপি নিয়োগ দেয়া হলেও পুলিশের হাত-পা বাঁধা— মন্তব্য ওয়াকিবহাল রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
ওদিকে লোকমান হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে টঙ্গী থেকে একজনকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ।
মূল হত্যা মামলার নেই কোনো অগ্রগতি। এদিকে গতকাল জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সভাটি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা উন্নতির জন্য নয়। শুধু মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা মামলার এজাহার ও আসামিদের সুরক্ষা নিয়ে আলোচনার জন্যই বসেছিল। সংবাদ সম্মেলন শেষে মিডিয়ার সামনে এক এমপির বক্তব্যে স্থানীয়দের পাশাপাশি ঢাকা থেকে আসা অনেক সাংবাদিকও হতবাক হয়েছেন। অথচ গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নিহত লোকমান হোসেন ছাড়া জেলা আওয়ামী
লীগের কোনো নেতাই এই এমপির পক্ষে ছিলেন না। মূলত লোকমান হোসেনই ছিলেন তার নৌকার প্রধান ও একমাত্র কাণ্ডারি। কিন্তু মেয়রের মৃত্যুর পর এমপির বক্তব্যে পরিবারসহ স্বজনরা হতবাক হয়েছেন।
মন্ত্রীর আসামি ভাইয়ের পক্ষে এমপি হীরুর সাফাই: নরসিংদী সদর থেকে নির্বাচিত সরকারদলীয় সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম হীরু বীর প্রতীক জানিয়েছেন সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত পৌর মেয়র লোকমান হোসেন মামলার প্রধান আসামি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ বাচ্চু ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না।
গতকাল নরসিংদী জেলা আইনশৃঙ্খলা সভা শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
এমপি হীরু আরও বলেন, আমি যতটুকু জানি ও চিনি বাচ্চু একজন ভদ্রলোক। লোকমানের পরিবারকে কেউ ভুল বুঝিয়ে তাকে এ মামলায় জড়িয়ে থাকতে পারে।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আজকের সভায়ও প্রত্যক্ষদর্শীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেছেন, একজন মুখোশধারী সন্ত্রাসী লোকমান হোসেনকে গুলি করেছে। অথচ সেখানে এফআইআরে কীভাবে চারজন গুলি করেছে লেখা হলো তা তার বোধগম্য নয়। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলার বাদী নিহতের ছোট ভাই লোকমান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ঢাকা নেয়ার সময় তিনি সঙ্গে যাননি বা ছিলেন না। আমি বারবার খোঁজ রেখেছি কে বা কারা সঙ্গে আছেন। তারা আমাকে জানিয়েছেন কামরুজ্জামান নেই। অথচ এফআইআরে লেখা হয়েছে বাদী কামরুজ্জানকে লোকমান সব বলে গেছে। এফআইআরটি বিভ্রান্তিকর উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই ধরনের মামলাকে কোনো গণ্ডির মধ্যে বেঁধে দেয়া হয় না। ১০-১৫ সেকেন্ডের মধ্যে একজন গুলি করেছে অথচ এজাহারের মধ্যে লেখা হয়েছে ৪ জন গুলি করেছে।
তিনি নিজেকে সোজা পথে চলার মানুষ উল্লেখ করে আরও বলেন, আজকের সভার সব সদস্য একমত পোষণ করেছেন এই হত্যাকাণ্ডটি রাজনৈতিকভাবে চালিয়ে দিয়ে খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কে এই চেষ্টার সঙ্গে জড়িত অবশ্য তিনি তা সাংবাদিকদের বলেননি।
মামলাটি কোনো কমম্পিকেটেড কেইস নয় উল্লেখ করে আরও বলেন, তারপরও তদন্ত করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। যারা বলেন আসামি গ্রেফতার করা না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নরসিংদী অচল করে দিবেন এটা সঠিক নয়।
এদিকে খায়রুল কবীর খোকন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই খোকনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিবপুর ও পলাশ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য জহিরুল হক মোহন ও আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপ, জেলা প্রশাসক মো. ওবায়দুল আজম, নবাগত পুলিশ সুপার খ মুহিদ উদ্দিন ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবং নির্বাহী কর্মকর্তাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদীর বক্তব্য : মামলার বাদী ও নিহত মেয়র লোকমান হোসেনের ছোট ভাই কামরুজ্জামান নিহত মেয়রের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসন ও দেশবাসীর কাছে জানতে চেয়েছেন একটি চাঞ্চল্যকর মামলা তদন্তকালীন অবস্থায় কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি আসামিদের পক্ষ নিয়ে এরকম মন্তব্য করতে পারেন কিনা। তিনি আরও জানান, মামলার আইও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমার বাসায় এসে আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং এজাহারে উল্লিখিত আসামিদের সম্পর্কেও জানতে চেয়ছেন, আমার বৃদ্ধ শোকাহত মাসহ প্রতিটি সদস্য এতে একমত পোষণ করেছি। কিন্তু এরপর তিনি হঠাত্ করে কি উদ্দেশ্যে এমন কথা বলতে পারলেন এর জবাব নরসিংদীবাসীর কাছে তাকেই দিতে হবে।
প্রাণনাশের আশঙ্কায় মারা যাওয়ার পূর্বে লোকমান হোসেন থানায় জিডি করেছেন। প্রায়ই পুলিশের সহায়তা চাইতেন। পুলিশ তার কথা আমলে না নেয়ার জন্য অভিমান করে এক বছর ধরে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাসহ পুলিশের অনেক সভা সেমিনার তিনি এড়িয়ে চলতেন। অথচ এক প্রশ্নের জবাবে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম হীরু বীরপ্রতীক লোকমান হোসেনকে নরসিংদীর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি স্বীকার করে পুলিশের ঢাকার ডিআইজির বরাত দিয়ে বলেন, তিনি মেয়রকে ৬ বার সতর্ক করেছেন। কিন্তু মেয়র ডিআইজির কথা আমলে নেননি সতর্কও হননি। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসন ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাদের কোনো দোষ নেই বলে দাবি করেন। এ সময় সাংবাদিকরা একে অপরকে লক্ষ্য করে বলেন, আসলে লোকমান হোসেন মরে গিয়েও দোষ করেছেন।
নিজ গৃহে কাইয়ুম বন্দি : নিজগৃহে বন্দি জীবন যাপন করছেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি এস এম কাইয়ুম। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তার ওপর হামলা হওয়ার পরদিন থেকে তাকে বাসায় অবস্থান করার কথা জানিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। তবে তার স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা কাইয়ুমের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বলেও জানা গেছে। এদিকে তার ওপর হামলা প্রসঙ্গে এমপি হীরু বলেন, তিনি একজন সৈনিক ছিলেন তার জীবনে লাখ থেকে দেড় লাখ গুলি ছুড়েছেন। তিনি এটা বুঝতেই পারছেন না কেন তিনবার গুলি করার পর গুলি ফুটল না। আর কাইয়ুমের ওপর কেনইবা র্যাব গুলি করতে যাবে।
এদিকে যেখানে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুব্রত হালদার মিডিয়ার কাছে এ ঘটনার সঙ্গে র্যাব জড়িত নয় এমন কি এটা কোনো সন্ত্রাসী হামলাও নয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাইয়ুমের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন এবং এ ব্যাপারে একটি মামলাও হয়েছে এর একদিন পর এমপি হীরুর এমন বক্তব্য নিয়ে আবার নতুন করে ধূম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে।
সহসাই ধরা পড়ছে না আসামি : প্রশাসনের দুর্বল নজরদারি, মন্ত্রী রাজুর ভয়ভীতি ও এমপিদের নানা খবরদারির কারণে সহসাই কোনো আসামি ধরা পড়ছে না। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন নিহতের স্বজন ও পৌরবাসীরা। সাটিরপাড়া মহল্লার জব্বর মিয়া, বীরপুর মহল্লার লিয়াকত হোসেন ও ভেলানগর মহল্লার আমজাত মিয়া বলেন, গত কয়েক দিন ধরে যে নজির লক্ষ্য করা যাচ্ছে এতে স্পষ্টই বুঝা যায় এ সরকারের আমলে লোকমান হত্যার বিচার আশা করা মোটেও ঠিক নয়।
নিহত পৌর মেয়র লোকমান হোসেন জীবনবাজি রেখে রাতদিন নরসিংদীর মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। লোকমান যাদের জন্য কাজ করেছেন তাদের একজন হলেন নরসিংদী সদর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হীরু। আজকের সংবাদ সম্মেলনে তার বক্তব্য শুনে নির্বাক হয়ে গেছেন অনেকে। তবে ৯ দিন পর হলেও নরসিংদীর জনগণের কাছে তিনি তার অবস্থান পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু সপ্তাহে তিনদিন নরসিংদী সার্কিট হাউজে এসে অবস্থান করতেন। এই সার্কিট হাউজে টিএনও কেলেঙ্কারি, এনডিসি কেলেঙ্কারিসহ নানা ঘটনা ঘটেছে। জেলার মানুষ রাজুর প্রতি ঘৃণা থেকেই সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি ভাংচুর করেছে বলে দাবি করেছেন খায়রুল কবীর খোকনের আইনজীবীরা। আইনজীবীরা আরও বলেন, এই সরকার আসার পর এই পবিত্র ভবনটি পতিতালয়ে পরিণত হয়েছে।
বিতর্কিত লোকদের নিয়ে সভা : লোকমান হোসেন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষ নেমে পড়ে রাস্তায়। রাতেই ব্যাপক ভাংচুর হয়। ভাংচুর হয় সার্কিট হাউজ, নরসিংদী রেলস্টেশন ও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি আত্মস্বীকৃত খুনি রিসালদার মুসলেহ উদ্দিনের আশ্রয়দাতা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজুর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হাজী সাত্তারের বাড়ি। এ ঘটনার পর তাকে আর নরসিংদী দেখা না গেলেও গতকাল তাকে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় দেখা যায়। তাকে দেখেই সাংবাদিকরা তার ছবি তুলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে আকস্মিক তিনি পিছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে উধাও হয়ে যান।
১ মামলায় খোকনের জামিন লাভ : নরসিংদী সার্কিট হাউজ ভাংচুর মামলায় নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি খায়রুল কবির খোকনের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। সকাল ১১টায় খোকনের পক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ ড. মো. শাজাহান মিয়া এ জামিন মঞ্জুর করেন। অন্য আরেকটি মামলায় রোববার শুনানির কথা রয়েছে।
মামলার আইও’র বক্তব্য : আজ নয়, কাল জানাব। আর এমন করতে করতেই কেটে গেল নয় দিন।কিন্তু এ পর্যন্ত কিছুই জানাতে পারেননি মামলার আইও ডিবির ওসি মামুনুর রশীদ। তবে শুক্রবার অবশ্যই তিনি ভালো কিছু জানাবেন বলে কথা দিয়েছেন।
এদিকে নতুন করে আর কোনো গ্রেফতার বা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেনি বলে জানান তিনি। এদিকে পুলিশের কয়েকটি টিম সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আসামিদের হন্যে হয়ে খুঁজছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
খোকনের নিঃশর্ত মুক্তিদাবি : এদিকে বেলাব উপজেলা জেলা বিএনপি সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক, খায়রুল কবির খোকনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট অলিউর রহমান কাউছারের নেতৃত্বে গতকাল এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল খালেক মাস্টার, জেলা কমিটি সদস্য শাহ আলম হুদা কাজল, সহ সভাপতি আবদুল হাই, সদর ইউনিয়ন সভাপতি একেএম আক্তারুজ্জামান, আমলাব ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, বাজনাব ইউপি চেয়ারম্যান বেনুজির আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ আলহাজ রফিকুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা আতাউর রহমান বাচ্চু, জাকির হোসেন, আকাশ, মজিবুর, মোহাম্মদ আলী মাস্টার, ছাত্রনেতা জহিরুল ইসলাম সবুজ, জেএইচ রুবেল প্রমুখ।
বক্তারা অবিলম্বে খায়রুল কবির খোকনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন এবং আগামী ১৩ নভেম্বর নরসিংদীর মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
টঙ্গীতে একজন আটক
স্টাফ রিপোর্টার জানান, একটি হোন্ডার সূত্র ধরে নরসিংদী পৌর মেয়র লোকমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে টঙ্গী থেকে হাজী সেলিম (৩৮) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী ডিবি পুলিশ। হাজী সেলিম টঙ্গীর ভরান এলাকার হাজী সিরাজ উদ্দিনের ছেলে।
সেলিমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঈদের পরদিন রাত ১১টায় সাদা পোশাকধারী একদল লোক সেলিমকে টঙ্গীবাজার হাজী মার্কেট এলাকা থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। রাত ১২টার পরও বাসায় ফিরে না যাওয়ায় তার স্ত্রী সেলিমের মোবাইলফোনে জানতে পারে যে নরসিংদীর ডিবি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পরে নরসিংদী ডিবি পুলিশ অফিসে যোগাযোগ করা হলে ডিবি’র পক্ষ থেকে জানানো হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে তার পরিবারের সদস্যরা ভীষণ উদ্বিগ্ন ও উত্কণ্ঠায় দিন যাপন করেছেন। সেলিমের পরিবারের সদস্যরা জানায়, মেয়র লোকমান হত্যার এক সপ্তাহ আগে নরসিংদীর গোপালদী এলাকার সেলিমের দূরসম্পর্কের চাচা শ্বশুর নরসিংদী শহরের আল রাজী হাসপাতালের মালিক মোবারক হোসেন ওরফে কিলার মোবা একটি পুরাতন মোটরসাইকেল কিনে দিতে বলে। পরে টঙ্গীর মোল্লা হোন্ডা গ্যারেজের মালিকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলে সেখান থেকে মোবা একটি মোটরসাইকেল কিনে নিয়ে যায়। টঙ্গী থেকে কেনা সাইকেল লোকমান হত্যা ঘটনাস্থলে পাওয়ার সূত্র ধরে সেলিমকে আটক করা হয়। তাবলীগ অনুসারী হাজী সেলিম এলাকায় একজন ভালো লোক হিসেবে পরিচিত।

No comments

Powered by Blogger.