আবার সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল-সিএনজির দাম বাড়লে আন্দোলনের হুমকি by নাজমুল ইমাম

দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আবারও বাড়ল সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম। প্রধান পাঁচ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা করে বেড়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ৫১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৬, পেট্রোল ৮১ থেকে বেড়ে ৮৬, অকটেন ৮৪ থেকে বেড়ে ৮৯ এবং ফার্নেস অয়েল ৫০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর সরকার সিএনজির দাম বাড়ানোরও উদ্যোগ নেবে। দু'তিন দিনের মধ্যে সিএনজির দাম বাড়তে পারে।


এর সঙ্গে যানবাহনের ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। সিএনজির পর আগামী মাসে ভোক্তাপর্যায়ে বিদ্যুতের দামও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও দেশে দাম বৃদ্ধি করায় জাতীয় অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেরোসিনের দাম বাড়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী পড়বে বেকায়দায়। গণপরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও বেড়ে যাবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।
এদিকে যানবাহনে ব্যবহৃত জ্বালানি 'কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস' বা রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম বাড়লে এ খাতটি হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা সিএনজি ফিলিং স্টেশন মালিকদের। সিএনজির দাম বাড়লে আন্দোলনে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সিএনজির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদও জানিয়েছে সংগঠনটি। সংবাদপত্রে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে আগামী শনিবার সারাদেশের সিএনজি ফিলিং স্টেশন মালিকরা এক জরুরি সভা আহ্বান করেছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরও লিটারপ্রতি ডিজেল, কেরোসিন ও ফার্নেস অয়েলে যথাক্রমে ১৬.৩৯, ১৬.৩১ ও ৪.৯৭ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। পেট্রোল ও অকটেনে ভর্তুকি দিতে হবে না। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেলের দাম প্রায় ৭০ টাকা এবং প্রতি লিটার পেট্রোল প্রায় ১১৭ টাকা। সীমান্তবর্তী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে জ্বালানি তেলের দাম যথেষ্ট কম থাকায় চোরাচালানের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা ও ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান বর্তমানে প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পাওয়ায় বিপিসির আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আর্থিক লোকসান বেড়েছে।
গতকাল মধ্যরাতে সরকার এক তথ্য বিবরণীর মাধ্যমে আকস্মিকভাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। বিকেলেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক পেট্রোলপাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী দেড় মাসের মধ্যে সিএনজির দাম আবারও বাড়িয়ে ডিজেলের সমান করার ইঙ্গিত দেন। এর একদিন পরই সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল।
সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পায়। তখন লিটারপ্রতি ডিজেল, পেট্রোল, কেরোসিন, অকটেনের দাম বাড়ে পাঁচ টাকা করে। ফার্নেস অয়েলের দাম এক লাফে আট টাকা বৃদ্ধি পায়। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর সরকারের ইচ্ছায় তড়িঘড়ি করে সিএনজির দাম বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সবশেষ দফায় ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ঘনমিটারে (ইউনিট) সিএনজির দাম বাড়ে ২০ শতাংশ। এর ফলে যানবাহনের এ জ্বালানির মূল্য ঘনমিটার ২৫ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৩০ টাকা। ফিড গ্যাসের দামও প্রতি ঘনমিটারে ৫ টাকা বাড়ানো হয়। প্রথমবারের মতো গণশুনানি ছাড়াই অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ বলে বিইআরসি সিএনজির দাম বাড়ায়। জ্বালানি তেল এবং সিএনজির দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন যানবাহনের ভাড়াও বাড়ানো হয়। সরকার মিনি বাস ও বড় বাসে প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি পাঁচ পয়সা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার জন্য প্রতি কিলোমিটারে ১৪ পয়সা ভাড়া বাড়ায়। অনেক যানবাহনে এর চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হয়। এর চার মাস আগে সিএনজির দাম আরেক দফা বৃদ্ধি পায়। আর এর আগে ৫ মে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারপ্রতি দুই টাকা করে বাড়ানো হয়।
দাম বৃদ্ধির পক্ষে সরকারের যুক্তি : বিপিসি আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে জ্বালানি তেল ক্রয় করে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে দেশের অভ্যন্তরে বিক্রি করায় দীর্ঘদিন ধরে লোকসান দিয়ে আসছে। বিগত ২০১০-১১ অর্থবছরে বিপিসি জ্বালানি তেল বিক্রয়ে প্রায় ৮ হাজার ২শ' কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। চলতি বছরের ২১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মূল্য অনুযায়ী দেশে সংগ্রহ ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে ব্যবধানের কারণে বিপিসি বর্তমানে ডিজেল, কেরোসিন ও ফার্নেস অয়েলে লিটারপ্রতি যথাক্রমে ২১.৩৯ টাকা, ২১.৩১ টাকা ও ৯.৯৭ টাকা লোকসান দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উলেল্গখ্য যে, ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের মূল্য ছিল ৯১.৭২ মার্কিন ডলার প্রতি ব্যারেল। বর্তমানে ডিজেলের আন্তর্জাতিক মূল্য হচ্ছে ১২১.৮৩ মার্কিন ডলার প্রতি ব্যারেল। তবে অর্থনীতিবিদ এবং জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা সরকারের এ যুক্তির সঙ্গে একমত নন। পেট্রোলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হক গতরাতে সমকালকে বলেছেন, বিশ্ববাজারে যেখানে তেলের দাম কমছে, সেখানে দেশের বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নেই। ভর্তুকির যে তথ্য দেওয়া হয় সেটাও ঠিক নয়।
ঋণের চাপ কমাতে দাম বৃদ্ধি : জ্বালানি বিভাগ বলছে, বর্তমানে বিপিসি দেশি-বিদেশি ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ করে জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে। আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের তুলনায় দেশীয় মূল্য যথেষ্ট কম থাকায় বিপিসির আর্থিক সংকট বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে বিপিসির পক্ষে ঋণ পরিশোধ করা এবং জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ ও আমদানি অব্যাহত রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এবং সরকারের আর্থিক সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে জ্বালানি তেলের অভ্যন্তরীণ বিক্রয় মূল্য বৃদ্ধি করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে বেড়েছে তেলের ব্যবহার : চলতি অর্থবছর জ্বালানি তেলের ব্যবহার ২০ লাখ টন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত অর্থবছরে দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ছিল প্রায় ৪৮ লাখ মেট্রিক টন। বিদ্যমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলার জন্য জরুরিভিত্তিতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও অন্যান্য সেক্টরে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি অর্থবছরের ওই চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৬৮ লাখ মেট্রিক টনে দাঁড়াচ্ছে। জ্বালানি বিভাগ বলছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বর্তমান বিক্রয়মূল্য অব্যাহত রাখলে এবং আন্তর্জাতিক বাজারদর অপরিবর্তিত থাকলে চলতি অর্থবছরে বিপিসির লোকসান হবে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। বিপিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, একের পর এক তেলনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ফলে তেলের বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ওই তেল আমদানি এবং এর মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গিয়ে বিপিসির বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভর্তুকি মূল্যে তেল দিতে গিয়েও লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে।
সিএনজির দামও বাড়বে : জ্বালানি তেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দু'তিনদিনের মধ্যে সিএনজির দামও বাড়বে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলা এখনও অবশ্য বিইআরসিতে প্রস্তাব পাঠায়নি বলে গত রাতে সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর জানিয়েছেন। বিইআরসির সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ জানান, পেট্রোবাংলা প্রস্তাব দিলে সে অনুযায়ী উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এক লিটার ডিজেলে যেখানে একটি গাড়ি চার কিলোমিটার চলে, সেখানে এক ঘনমিটার সিএনজিতে চলে আড়াই কিলোমিটার। এ ছাড়া সিএনজিচালিত গাড়ি ডিজেলচালিত গাড়ির তুলনায় কিছুটা দামি এবং আয়ুষ্কাল কম। এসব কারিগরি দিক বিবেচনা করে জ্বালানি সাশ্রয়ী না হলে সিএনজিচালিত গাড়ির মালিকদের পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
ভোক্তা সংগঠনের মতে, গত মে মাসে প্রায় ৫০ ভাগ সিএনজির দাম বৃদ্ধির পর রাজধানীতে গণপরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে এলাকাভেদে দেড় থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধি করেন পরিবহন মালিকরা। সরকারের তরফ থেকে আগাম প্রস্তুতি না থাকা এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতায় পরিবহন মালিকদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। ভোক্তা সংগঠনগুলো বলছে, সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পাচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন পরিবহন মালিকরা, যা সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত আয়।
সিএনজি ব্যবসায়ী সংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইন, ২০০৩ অনুসারে তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির একক এখতিয়ার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের। বিইআরসি আইন অধ্যায় ৭ ধারা ৩৪ অনুযায়ী মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবনা উত্থাপনের পর স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে আলোচনায় প্রস্তাবের যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে হবে। এরপর বিইআরসি দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেবে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর এখতিয়ার না থাকায় সংগঠনের তরফ থেকে একে লাগামহীন ও বেআইনিও বলা হয়। সিএনজি স্টেশন মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন নয়ন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সিএনজির দাম আরও বৃদ্ধি জ্বালানি খাতকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।
সিএনজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বৃদ্ধি করে রাজস্ব আদায় যদি প্রধান লক্ষ্য হয়, তাহলে সরকার সব ধরনের গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে মাত্র পাঁচ ভাগ গ্যাস ব্যবহার হয় এমন খাতের দাম কেন বারবার বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সিএনজি খাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। বারবার দাম বৃদ্ধির ফলে এ খাতটি এরই মধ্যে অস্থির হয়ে উঠেছে। সিএনজির দাম বাড়ায় তাদের বিক্রি কমেছে। অনেকেই এখন আর সিএনজিচালিত গাড়ি ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন না। ডিজেলের সমপর্যায়ে সিএনজির দাম নেওয়া হলে কেউ আর সিএনজিচালিত গাড়ি ব্যবহার করবে না। এতে সরকারকে বেশি বেশি করে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে। অর্থনীতি আরও চাপের মধ্যে পড়বে।
জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে :মাত্র দুই মাসের আগেই আরেক দফা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় আরেক দফা বাড়বে। যানবাহন ভাড়া থেকে দ্রব্যমূল্য সব কিছুতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে দেখছেন না দেশের অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষি উৎপাদনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাড়বে গণপরিবহন ভাড়া। শিল্প উৎপাদন ব্যয়ও অনেক বেড়ে যাবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে এমনিতেই শিল্প উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির ফলে দরিদ্র মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়বে। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতে পারে। ফলে জীবনযাত্রার ব্যয়ও বৃদ্ধি পাবে। গণপরিবহনে দেখা দিতে পারে অস্থিরতা। কৃষি ও শিল্প উৎপাদনেও খরচ বেড়ে যাবে। কেরোসিনের দাম বৃদ্ধি করায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকের ঘরে টিমটিমে আলোও জ্বলবে না বলে তিনি মনে করেন।

No comments

Powered by Blogger.