বিব্রতকারী ব্লগার, বিব্রত সরকার by ইব্রাহিম খলিল
শুরুতে
সরকারের জন্য দু’টি বিব্রতকর কথা বলি। প্রথমত, সরকার ভাবে সারাদিন তাদের
প্রশংসা করা জনগণের ডিউটি। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ বিস্মিত হয় এই ভেবে যে,
দেশের সব মানুষ কেন আওয়ামী লীগ সমর্থন করে না।
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় ১৩ অক্টোবরে প্রকাশিত একটা সংবাদ পড়লাম। সংবাদের শিরোনাম ‘চিহ্নিত হচ্ছে বিব্রতকারী ব্লগাররা।' শিরোনাম পড়ে বিশাল খটকা লাগলো। কথিত এসব ব্লগার কাদেরকে বিব্রত করে? কীভাবে বিব্রত করে? সংবাদের বিস্তারিত পড়ে বুঝলাম এরা আসলে সরকারকে বিব্রত করে। বিষয়টা বুঝতে পেরে দারুণভাবে আতংকিত হলাম।
সংবিধানের কোথাও লেখা নেই যে, সরকারকে বিব্রত করা যাবে না। অথচ সরকার বিব্রতকারী ব্লগারদের চিহ্নিত করছে। নিশ্চয় এটা নিছক কোনো গণনা নয়। কিংবা চিহ্নিত ব্লগারদের পুরস্কৃতও করা হবে না। সম্ভাব্য নির্যাতন বা নিপীড়নের প্রথম ধাপই হচ্ছে বিব্রতকারী হিসেবে চিহ্নিত করা।
মনের মাঝে শত শত প্রশ্ন। ব্লগাররা কি কি লিখলে সরকার বিব্রত হয়? এই বিব্রত হওয়া কি কেবলই সরকারের স্বাধীনতা, নাকি কোনো আইনী ব্যাখ্যা আছে? কোনো ব্লগার লিখলো ‘সরকার দুর্নীতিবাজ,’ এতেই কি সরকার বিব্রত হবে? নাকি ‘সরকার দুর্নীতিবাজ নয়,’ এটা না লেখার কারণে বিব্রতবোধ করবে? তাছাড়া ব্লগাররা কি আসলেই সরকারকে বিব্রত করার জন্য লিখে? নাকি সরকার বিব্রত হওয়ার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে? সুযোগ পেলেই বিব্রতবোধ করে?
বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সংবাদে আরো পড়েছি ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করেও নাকি কিছু ব্লগার সরকারকে বিব্রত করে। এখন আমার কানে কেবল বাজছে, এই সরকার বিব্রত হয়, এই সরকার বিব্রত হয়। আহারে, সরকার বিব্রত হয়। অনেকক্ষণ কানে বাজতে থাকলে নিজেই বিব্রতবোধ করি। সরকার ঠিক করে দিবে ব্লগাররা কী লিখবে আর কী লিখবে না। দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এই পর্যায়ে আছে।
দেশে কোনো বিরোধী দল নেই। রাজনীতির মাঠে সরকারের গঠনমূলক বিরোধিতা করার মতো কেউ নেই। জাতীয় পার্টি নাকি বিরোধী দল। কার বিরোধী দল, তা বুঝি না। তবে এতটুকু বুঝি, তারা আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো বিরোধিতা করে না। এমনকি সরকারে তাদের মন্ত্রীও আছে। এই দলটি বিরোধী দলের মর্যাদা পাওয়ার পর একটি জনমুখী ইস্যুতেও আন্দোলন করেনি, সংসদে জোরালো কোনো ভূমিকা রাখেনি।
তারচেয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা দারুণ একটা ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে নেতাকর্মীদের বড় বড় ছবিওয়ালা ব্যানার ফেস্টুন অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর ১৯ দফা দাবি জানিয়েছে, যার সবগুলোই শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে। এই ঘটনার পর আমার মনে হয়েছে রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের একমাত্র যোগ্য বিরোধী দল ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা।
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় ১৩ অক্টোবরে প্রকাশিত একটা সংবাদ পড়লাম। সংবাদের শিরোনাম ‘চিহ্নিত হচ্ছে বিব্রতকারী ব্লগাররা।' শিরোনাম পড়ে বিশাল খটকা লাগলো। কথিত এসব ব্লগার কাদেরকে বিব্রত করে? কীভাবে বিব্রত করে? সংবাদের বিস্তারিত পড়ে বুঝলাম এরা আসলে সরকারকে বিব্রত করে। বিষয়টা বুঝতে পেরে দারুণভাবে আতংকিত হলাম।
সংবিধানের কোথাও লেখা নেই যে, সরকারকে বিব্রত করা যাবে না। অথচ সরকার বিব্রতকারী ব্লগারদের চিহ্নিত করছে। নিশ্চয় এটা নিছক কোনো গণনা নয়। কিংবা চিহ্নিত ব্লগারদের পুরস্কৃতও করা হবে না। সম্ভাব্য নির্যাতন বা নিপীড়নের প্রথম ধাপই হচ্ছে বিব্রতকারী হিসেবে চিহ্নিত করা।
মনের মাঝে শত শত প্রশ্ন। ব্লগাররা কি কি লিখলে সরকার বিব্রত হয়? এই বিব্রত হওয়া কি কেবলই সরকারের স্বাধীনতা, নাকি কোনো আইনী ব্যাখ্যা আছে? কোনো ব্লগার লিখলো ‘সরকার দুর্নীতিবাজ,’ এতেই কি সরকার বিব্রত হবে? নাকি ‘সরকার দুর্নীতিবাজ নয়,’ এটা না লেখার কারণে বিব্রতবোধ করবে? তাছাড়া ব্লগাররা কি আসলেই সরকারকে বিব্রত করার জন্য লিখে? নাকি সরকার বিব্রত হওয়ার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে? সুযোগ পেলেই বিব্রতবোধ করে?
বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সংবাদে আরো পড়েছি ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করেও নাকি কিছু ব্লগার সরকারকে বিব্রত করে। এখন আমার কানে কেবল বাজছে, এই সরকার বিব্রত হয়, এই সরকার বিব্রত হয়। আহারে, সরকার বিব্রত হয়। অনেকক্ষণ কানে বাজতে থাকলে নিজেই বিব্রতবোধ করি। সরকার ঠিক করে দিবে ব্লগাররা কী লিখবে আর কী লিখবে না। দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এই পর্যায়ে আছে।
দেশে কোনো বিরোধী দল নেই। রাজনীতির মাঠে সরকারের গঠনমূলক বিরোধিতা করার মতো কেউ নেই। জাতীয় পার্টি নাকি বিরোধী দল। কার বিরোধী দল, তা বুঝি না। তবে এতটুকু বুঝি, তারা আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো বিরোধিতা করে না। এমনকি সরকারে তাদের মন্ত্রীও আছে। এই দলটি বিরোধী দলের মর্যাদা পাওয়ার পর একটি জনমুখী ইস্যুতেও আন্দোলন করেনি, সংসদে জোরালো কোনো ভূমিকা রাখেনি।
তারচেয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা দারুণ একটা ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে নেতাকর্মীদের বড় বড় ছবিওয়ালা ব্যানার ফেস্টুন অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর ১৯ দফা দাবি জানিয়েছে, যার সবগুলোই শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে। এই ঘটনার পর আমার মনে হয়েছে রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের একমাত্র যোগ্য বিরোধী দল ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা।
দেশে
বিরোধীদল নেই, এটা আওয়ামী লীগের জন্য স্বস্তি। এই স্বস্তি ভুল এবং এটা
দেশের ভবিষ্যতের জন্য খুবই খারাপ ফল বয়ে আনবে। আরো ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে, কেবল
রাজনীতি নয়, রাজনীতির বাইরেও আওয়ামী লীগ কোনো ভিন্নমত সহ্য করছে না,
সমালোচনা সহ্য করছে না। এই সহ্য না করার বিষয়টি সর্বমহলে আওয়ামী লীগকে
অসহ্যকর করে তুলছে।
বিরোধী দলহীন দেশে ব্লগ ফেসবুক বেশ গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে। সরকারের একটি ভুল সিদ্ধান্তও বিনা বাধায় কার্যকর হতে পারছে না। বরং ব্লগার ফেসবুকাররা অনেক সিদ্ধান্ত পাল্টে দিয়েছে। সরকার বুদ্ধিমান। বুঝতে পেরেছে বিএনপি নেতাদের আর জেলে ভরে লাভ নেই।
আসল প্রতিপক্ষের দিকে নজর দিতে হবে। ইতিহাস বলে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হওয়া কোনো আনন্দের বিষয় নয়। এরা প্রতিপক্ষের প্রতি খুবই নির্মম। নৃশংসভাবে প্রতিপক্ষ দমন করতে আওয়ামী লীগের জুড়ি নেই। মনে মনে ভাবি এই দলটি যদি দুর্নীতি আর দুঃশাসনকেও নিজেদের প্রতিপক্ষ মনে করতো, তাহলে কারণে অকারণে দলটিকে এত বেশি বেশি বিব্রত হতে হতো না।
প্রতিপক্ষ বাদ। এবার আসি বিব্রত হলে সরকার কী করে, সে প্রসঙ্গে। সরকার বিব্রতকারী ব্লগারদের চিহ্নিত করবে। আমি জানি না চিহ্নিত ব্লগারদের জীবনে কী দুঃসময় অপেক্ষা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাগুরায় মাতৃগর্ভে শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়া এবং রাজধানীতে নির্যাতন শেষে শিশু হত্যা করে কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বিব্রত করেছে। বিব্রত হয়ে সরকার দুই মামলার দুই প্রধান আসামীকে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করে। একজন প্রশ্ন ফাঁসকারীও সরকারকে বিব্রত করার পর হার্ট অ্যাটাকে (!) মারা যান।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ব্লগারদের দুশ্চিন্তা কেন? ব্লগাররাতো আর মাতৃগর্ভের শিশুকে গুলি করছে না, কিংবা নির্যাতন করে হত্যা করছে না, কিংবা প্রশ্ন ফাঁস করছে না। তাহলে ব্লগারদের অহেতুক দুশ্চিন্তা করার মানে হয় না। কিন্তু আসলে কি তাই? ব্লগাররা একদিকে সরকারকে বিব্রত করছে, আরেকদিকে বর্তমানে সরকারের একমাত্র প্রতিপক্ষ। দুইয়ে মিলে তাদের উপর সরকারের চোখ কতটুকু বড় হবে আর কী পরিমাণ লাল হবে, ভাবতেই ভয় পাচ্ছি।
আমিও একজন ব্লগার। আমারও প্রাণের ভয় আছে। আমি জানতে চাই ব্লগাররা কী কী লিখলে সরকার বিব্রত হয়। আমি আরো জানতে চাই, যেসব ব্লগারের লেখালেখির কারণে সরকার বিব্রত হবে, তাদের বিচার কোন আইনে হবে। জানতে চাই আমি বিব্রতকারী ব্লগারদের তালিকায় আছি কিনা, তা কিভাবে বুঝবো।
বিরোধী দলহীন দেশে ব্লগ ফেসবুক বেশ গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে। সরকারের একটি ভুল সিদ্ধান্তও বিনা বাধায় কার্যকর হতে পারছে না। বরং ব্লগার ফেসবুকাররা অনেক সিদ্ধান্ত পাল্টে দিয়েছে। সরকার বুদ্ধিমান। বুঝতে পেরেছে বিএনপি নেতাদের আর জেলে ভরে লাভ নেই।
আসল প্রতিপক্ষের দিকে নজর দিতে হবে। ইতিহাস বলে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হওয়া কোনো আনন্দের বিষয় নয়। এরা প্রতিপক্ষের প্রতি খুবই নির্মম। নৃশংসভাবে প্রতিপক্ষ দমন করতে আওয়ামী লীগের জুড়ি নেই। মনে মনে ভাবি এই দলটি যদি দুর্নীতি আর দুঃশাসনকেও নিজেদের প্রতিপক্ষ মনে করতো, তাহলে কারণে অকারণে দলটিকে এত বেশি বেশি বিব্রত হতে হতো না।
প্রতিপক্ষ বাদ। এবার আসি বিব্রত হলে সরকার কী করে, সে প্রসঙ্গে। সরকার বিব্রতকারী ব্লগারদের চিহ্নিত করবে। আমি জানি না চিহ্নিত ব্লগারদের জীবনে কী দুঃসময় অপেক্ষা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাগুরায় মাতৃগর্ভে শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়া এবং রাজধানীতে নির্যাতন শেষে শিশু হত্যা করে কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বিব্রত করেছে। বিব্রত হয়ে সরকার দুই মামলার দুই প্রধান আসামীকে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করে। একজন প্রশ্ন ফাঁসকারীও সরকারকে বিব্রত করার পর হার্ট অ্যাটাকে (!) মারা যান।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ব্লগারদের দুশ্চিন্তা কেন? ব্লগাররাতো আর মাতৃগর্ভের শিশুকে গুলি করছে না, কিংবা নির্যাতন করে হত্যা করছে না, কিংবা প্রশ্ন ফাঁস করছে না। তাহলে ব্লগারদের অহেতুক দুশ্চিন্তা করার মানে হয় না। কিন্তু আসলে কি তাই? ব্লগাররা একদিকে সরকারকে বিব্রত করছে, আরেকদিকে বর্তমানে সরকারের একমাত্র প্রতিপক্ষ। দুইয়ে মিলে তাদের উপর সরকারের চোখ কতটুকু বড় হবে আর কী পরিমাণ লাল হবে, ভাবতেই ভয় পাচ্ছি।
আমিও একজন ব্লগার। আমারও প্রাণের ভয় আছে। আমি জানতে চাই ব্লগাররা কী কী লিখলে সরকার বিব্রত হয়। আমি আরো জানতে চাই, যেসব ব্লগারের লেখালেখির কারণে সরকার বিব্রত হবে, তাদের বিচার কোন আইনে হবে। জানতে চাই আমি বিব্রতকারী ব্লগারদের তালিকায় আছি কিনা, তা কিভাবে বুঝবো।
২০০৮
সালে ব্লগে লেখালেখি শুরু করার পর মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে সম্যক ধারণা
নেয়ার চেষ্টা করেছি। কিছু পড়াশোনা শেষে বুঝলাম মত প্রকাশের স্বাধীনতা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে তার চিন্তা ভাবনা
প্রকাশ করার। বাংলাদেশের মানুষ খুবই ভাগ্যবান। জাতিসংঘ সনদের চেয়েও
বাংলাদেশের সংবিধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেশি দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ সনদের ফ্রিডম অব স্পিচ (বাক স্বাধীনতা), ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন (ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা) এর বিপরীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান তার নাগরিকদের জন্য ফ্রিডম অব থট (চিন্তার স্বাধীনতা)এবং ফ্রিডম অব কনসায়েন্স (বিবেকের স্বাধীনতা) নামের আরো দু’টো অধিকার দিয়েছে।
ওই সময়ের পড়াশোনার কোথাও ‘সরকারকে বিব্রত করা’ টাইপের কোনো কথা চোখে পড়েনি। এখন পড়ছে। পড়তেই পারে। তখন আর এখনকার সময়ের মাঝে ৮ বছরের ব্যবধান। দিন বদলেছে, সবকিছু বদলেছে। এখন সরকার বিব্রত হয়। একজন ব্লগার হিসেবে এটা আমার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। বিষয়টি বিবেচনায় আনা উচিত। কিন্তু বিব্রত হওয়া বিষয়ে পরিস্কার কোনো ধারণা পাচ্ছি না।
সরকার যেহেতু, সুশাসনের তোয়াক্কা না করে যে কোনভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকতে চায়; যেহেতু ক্ষমতায় থাকার পথটা রেশমি কাপড়ের মত মসৃণ করতে চায়, সেহেতু সরকারের উচিত কার্যকর কিছু উদ্যোগ নেয়া। সরকার চাইলে এসব উদ্যোগকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণার সাথে সম্পৃক্ত করে নিতে পারে।
‘দায়িত্বশীল ব্লগার (Responsible Blogger)’ নামে একটা ওয়েবসাইট খুলতে পারে। যেখানে একজন ব্লগার কী কী বিষয়ে লিখলে সরকার বিব্রত হবে পারে, তার বিস্তারিত বিবরণ থাকবে। সরকার বিব্রত হয়ে গেলে কী পরিণামের মুখে পড়তে হবে, এ বিষয়ও পরিস্কারভাবে লেখা থাকবে। কোনো কারণে বিব্রতকারী ব্লগার হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেলে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কী কী করতে হবে, তাও বলা থাকবে। একটি সার্চ বক্স থাকবে, যেখানে একজন ব্লগার নিজের নাম লিখে সার্চ দিয়ে দেখতে পারবে তিনি বিব্রতকারী ব্লগারের তালিকায় আছেন কিনা।
আমি হয়তো একটু বাড়িয়ে বলেছি, কিন্তু সরকারের উচিত যেভাবেই হোক বিষয়গুলোর স্পষ্ট ব্যাখ্যা করা। সরকারের সহ্য ক্ষমতা কতটুকু, তা জানাতে হবে। ব্লগাররা যেন পরিস্কার ধারণা পায়, সে ব্যবস্থা করা। তাহলে আমার মতো যারা নির্যাতন নিপীড়নে ভয় পায়, তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লেখালেখি করে নিজেকে বাঁচাতে পারবে। ব্লগারাও এই দেশের নাগরিক। আশা করি সরকার বিব্রত হওয়া বিষয়ে স্পষ্টতা আনয়নের মাধ্যমে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। নির্যাতন মোটেও মানবিক বিষয় নয়।
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলগুলো সব সময় সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে নানানভাবে নিজের অপকর্মের অংশ করে নেয়। সৃজনশীল মানুষদেরকেও দুর্নীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসার ফাঁদ পাতে। এই ফাঁদে বেশিরভাগই পা দেয়। একসময় দেশের পত্রিকাগুলোয় প্রচুর রাজনৈতিক স্যাটায়ার দেখা যেতো। সৃজনশীল মহল থেকে বেশি বেশি কার্যকর সমালোচনা, প্রতিবাদ দেখা যেতো। এখন আর দেখা যায় না। সবকিছু নির্বিষ হয়ে গেছে। এই নির্বিষ সময়ে সরকারের কানে বিষ ঢালতে পারে একমাত্র ব্লগাররা। মুখের উপর সবকিছু বলে দিতে পারে।
জাতিসংঘ সনদের ফ্রিডম অব স্পিচ (বাক স্বাধীনতা), ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন (ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা) এর বিপরীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান তার নাগরিকদের জন্য ফ্রিডম অব থট (চিন্তার স্বাধীনতা)এবং ফ্রিডম অব কনসায়েন্স (বিবেকের স্বাধীনতা) নামের আরো দু’টো অধিকার দিয়েছে।
ওই সময়ের পড়াশোনার কোথাও ‘সরকারকে বিব্রত করা’ টাইপের কোনো কথা চোখে পড়েনি। এখন পড়ছে। পড়তেই পারে। তখন আর এখনকার সময়ের মাঝে ৮ বছরের ব্যবধান। দিন বদলেছে, সবকিছু বদলেছে। এখন সরকার বিব্রত হয়। একজন ব্লগার হিসেবে এটা আমার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। বিষয়টি বিবেচনায় আনা উচিত। কিন্তু বিব্রত হওয়া বিষয়ে পরিস্কার কোনো ধারণা পাচ্ছি না।
সরকার যেহেতু, সুশাসনের তোয়াক্কা না করে যে কোনভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকতে চায়; যেহেতু ক্ষমতায় থাকার পথটা রেশমি কাপড়ের মত মসৃণ করতে চায়, সেহেতু সরকারের উচিত কার্যকর কিছু উদ্যোগ নেয়া। সরকার চাইলে এসব উদ্যোগকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণার সাথে সম্পৃক্ত করে নিতে পারে।
‘দায়িত্বশীল ব্লগার (Responsible Blogger)’ নামে একটা ওয়েবসাইট খুলতে পারে। যেখানে একজন ব্লগার কী কী বিষয়ে লিখলে সরকার বিব্রত হবে পারে, তার বিস্তারিত বিবরণ থাকবে। সরকার বিব্রত হয়ে গেলে কী পরিণামের মুখে পড়তে হবে, এ বিষয়ও পরিস্কারভাবে লেখা থাকবে। কোনো কারণে বিব্রতকারী ব্লগার হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেলে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কী কী করতে হবে, তাও বলা থাকবে। একটি সার্চ বক্স থাকবে, যেখানে একজন ব্লগার নিজের নাম লিখে সার্চ দিয়ে দেখতে পারবে তিনি বিব্রতকারী ব্লগারের তালিকায় আছেন কিনা।
আমি হয়তো একটু বাড়িয়ে বলেছি, কিন্তু সরকারের উচিত যেভাবেই হোক বিষয়গুলোর স্পষ্ট ব্যাখ্যা করা। সরকারের সহ্য ক্ষমতা কতটুকু, তা জানাতে হবে। ব্লগাররা যেন পরিস্কার ধারণা পায়, সে ব্যবস্থা করা। তাহলে আমার মতো যারা নির্যাতন নিপীড়নে ভয় পায়, তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লেখালেখি করে নিজেকে বাঁচাতে পারবে। ব্লগারাও এই দেশের নাগরিক। আশা করি সরকার বিব্রত হওয়া বিষয়ে স্পষ্টতা আনয়নের মাধ্যমে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। নির্যাতন মোটেও মানবিক বিষয় নয়।
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলগুলো সব সময় সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে নানানভাবে নিজের অপকর্মের অংশ করে নেয়। সৃজনশীল মানুষদেরকেও দুর্নীতির মূল স্রোতে নিয়ে আসার ফাঁদ পাতে। এই ফাঁদে বেশিরভাগই পা দেয়। একসময় দেশের পত্রিকাগুলোয় প্রচুর রাজনৈতিক স্যাটায়ার দেখা যেতো। সৃজনশীল মহল থেকে বেশি বেশি কার্যকর সমালোচনা, প্রতিবাদ দেখা যেতো। এখন আর দেখা যায় না। সবকিছু নির্বিষ হয়ে গেছে। এই নির্বিষ সময়ে সরকারের কানে বিষ ঢালতে পারে একমাত্র ব্লগাররা। মুখের উপর সবকিছু বলে দিতে পারে।
আবার
ব্লগারদের মধ্যে একটা শ্রেণী সরকারের ক্ষমতার ছায়াতলে আছে। তারা সরকারের
সম্পদ। তাদের কোনো সমস্যা নেই, হয় না। তারা সরকারকে বিব্রত করে না। সরকার
খুব দরদের সাথে এ ধরনের ব্লগারের খামার বানাচ্ছে।
আরেকদিকে কিছু ব্লগার মারা যাচ্ছে। মৃত্যুর অপেক্ষায় আছে। সুকৌশলে ধর্মের শাক দিয়ে এসব হত্যাকাণ্ড ঢেকে দেয়া হচ্ছে। আগে সাধারণ মানুষ বিএনপি জামায়াতের ধর্ম ব্যবসায় বিভ্রান্ত হতো। এখন হয় আওয়ামী লীগের ধর্ম ব্যবসায়। আওয়ামী লীগ আপ্রাণ চেষ্টা করেছে সবাইকে বুঝাতে যে, ব্লগাররা শুধু ধর্মকে কটাক্ষ করে, আর কিছু করে না। এটা বুঝানোর জন্য ব্লগার গ্রেফতার করেছে, পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ব্লগারদের হুমকি দিয়েছে।
এখন বিব্রতকারী ব্লগারদের তালিকা করছে। যেসব ব্লগারের অনেকগুলো অপরাধের (!) একটা অপরাধ ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করা। ধর্ম নিয়ে লেখালেখির বিষয়টাকে একটা স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে প্রচার করতে বিএনপি-জামাত-আওয়ামী লীগ জোট বেঁধে কাজ করেছে।
ব্লগার হত্যার বিচার কিংবা হত্যা বন্ধে সরকারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ কেউ দেখেনি। কারো সামনে কোনো সন্তোষজনক তথ্য সরবরাহ করতে পারেনি। সরকার ব্যস্ত আছে বিব্রতকারী ব্লগারদের তালিকা করতে। একদিকে সরকার বানাচ্ছে বিব্রতকর ব্লগারদের তালিকা, আরেকদিকে বিভিন্ন অপমানজনক আন্তর্জাতিক তালিকায় বাংলাদেশের নাম ঢুকছে।
কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট, সিপিজে-এর অপরাধীদের বিচার না হওয়া বিষয়ক গ্লোবাল ইমপিউনিটি ইনডেক্সে বাংলাদেশের নাম এসেছে। বিশেষত ব্লগার হত্যার বিচারে সরকারের আন্তরিকতা না থাকার কারণে এই গৌরব অর্জন করেছি আমরা।
এখানে সরকার নিপীড়নের উদ্দেশ্যে তালিকা বানাবে, আর অন্য কোথাও অন্য কেউ নিপীড়কের তালিকায় সরকারের নাম লিখে দিবে। এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে!
আরেকদিকে কিছু ব্লগার মারা যাচ্ছে। মৃত্যুর অপেক্ষায় আছে। সুকৌশলে ধর্মের শাক দিয়ে এসব হত্যাকাণ্ড ঢেকে দেয়া হচ্ছে। আগে সাধারণ মানুষ বিএনপি জামায়াতের ধর্ম ব্যবসায় বিভ্রান্ত হতো। এখন হয় আওয়ামী লীগের ধর্ম ব্যবসায়। আওয়ামী লীগ আপ্রাণ চেষ্টা করেছে সবাইকে বুঝাতে যে, ব্লগাররা শুধু ধর্মকে কটাক্ষ করে, আর কিছু করে না। এটা বুঝানোর জন্য ব্লগার গ্রেফতার করেছে, পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ব্লগারদের হুমকি দিয়েছে।
এখন বিব্রতকারী ব্লগারদের তালিকা করছে। যেসব ব্লগারের অনেকগুলো অপরাধের (!) একটা অপরাধ ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করা। ধর্ম নিয়ে লেখালেখির বিষয়টাকে একটা স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে প্রচার করতে বিএনপি-জামাত-আওয়ামী লীগ জোট বেঁধে কাজ করেছে।
ব্লগার হত্যার বিচার কিংবা হত্যা বন্ধে সরকারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ কেউ দেখেনি। কারো সামনে কোনো সন্তোষজনক তথ্য সরবরাহ করতে পারেনি। সরকার ব্যস্ত আছে বিব্রতকারী ব্লগারদের তালিকা করতে। একদিকে সরকার বানাচ্ছে বিব্রতকর ব্লগারদের তালিকা, আরেকদিকে বিভিন্ন অপমানজনক আন্তর্জাতিক তালিকায় বাংলাদেশের নাম ঢুকছে।
কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট, সিপিজে-এর অপরাধীদের বিচার না হওয়া বিষয়ক গ্লোবাল ইমপিউনিটি ইনডেক্সে বাংলাদেশের নাম এসেছে। বিশেষত ব্লগার হত্যার বিচারে সরকারের আন্তরিকতা না থাকার কারণে এই গৌরব অর্জন করেছি আমরা।
এখানে সরকার নিপীড়নের উদ্দেশ্যে তালিকা বানাবে, আর অন্য কোথাও অন্য কেউ নিপীড়কের তালিকায় সরকারের নাম লিখে দিবে। এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে!
চ্যানেল আই অনলাইন
No comments