স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিই বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে: কামাল লোহানী
একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ আমরা লালন করেছি তার পূর্ণতা এখনো দেখতে পাইনি। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার সপক্ষে। যে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র আমাদের স্বপ্ন ছিল, সেই স্বপ্নের পথে কাঁটা হয়ে উঠেছে মৌলবাদী স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থান। গত চার দশকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিগুলো টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিগুলো একত্রিত হয়েছে। বিভিন্ন নামে তারা সংগঠিত হয়েছে। আর স্বাধীনতাবিরোধী সেই শক্তিই আজ মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের মন্টিফিউরি সেন্টারে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ব্রিটেনের প্রাচীনতম বাংলা সংবাদপত্র সাপ্তাহিক জনমত এর আয়োজনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জনমত এর প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশার সভাপতিত্বে ও নির্বাহী সম্পাদক সাঈম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার নাদীম কাদির, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ডা. রফিকুল হাসান খান, কবি শামীম আজাদ ও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক চৌধুরী। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক জনমত এর পলিটিক্যাল এডিটর ইসহাক কাজল, বিলেতের বাংলা মিডিয়ার কার্যক্রম তুলে বক্তব্য রাখেন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মাহবুব রহমান। সভায় কামাল লোহানী আরও বলেন, সবকিছুর মূলেই হলো রাজনীতি। রাজনীতি যদি সঠিক পথে না চলে তবে রাষ্ট্র প্রত্যাশিত পথে চলে না। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা যাতে অন্যায় করার সুযোগ না পান সেই লক্ষ্যে সাংবাদিকসহ সমাজের সকল পর্যায় থেকে সাধারণ মানুষকে পাহারাদের ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক কামাল লোহানী বেতার কেন্দ্রে তার যোগদানের স্মৃতিচারণ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে কলকাতায় অবস্থানকালে সাংবাদিক আমিনুল হক বাদশার সাথে দেখা হয় বাংলাদেশ মিশনের সামনে। তিনিই আমাকে ট্যাক্সিতে উঠিয়ে নিয়ে যান বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে। সেখানে তখন আয়োজন চলছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এর ৫০ কিলোওয়াট মিডিয়াম ওয়েভ ট্রান্সমিটারের উদ্বোধন। সেদিন থেকেই আমি এই বেতারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। মুক্তিযুদ্ধকালীন বেতার কেন্দ্রের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন, বাঙালি জাতির মাঝে মৃতসঞ্জীবনী সুধা সঞ্চার করে সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে উজ্জীবিত করে রাখে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। এই বেতারে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মাধ্যমে আমরা পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে মনস্তাত্বিক যুদ্ধে জয়ী হওয়াতেই তারা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। মতবিনিময় সভায় বিলেতের বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক বেলাল আহমদ, সাপ্তাহিক জনমত এর বার্তা সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, বাংলা টাইমস এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাসন, বাংলা নিউজ টুয়েন্টিফোরের প্রতিনিধি সৈয়দ আনাস পাশা, টাওয়ার হ্যামলেটস মেয়রের পলিটিক্যাল এডভাইজার সৈয়দ মনসুর উদ্দিন, সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার সম্পাদক তাইছির মাহমুদ, সুরমা সম্পাদক আহমেদ ময়েজ, সাংবাদিক হামিদ মোহাম্মদ, শাহাবুদ্দিন বেলাল, এনআরবি প্রতিনিধি মতিয়ার চৌধুরী, ডেইলি স্টার প্রতিনিধি আনসার আহমেদ উল্লাহ, চ্যানেল এস এর বার্তা সম্পাদক কামাল মেহেদী, ইকরা টিভির বার্তা প্রধান হাসান হাফিজ, বাংলা টাইমস এর নিউজ এডিটর মো. এমরান আহমদ, ম্যানেজিং ডিরেক্টর আহমেদ নাসির, জনমত প্রতিনিধি আহাদ চৌধুরী বাবু, চ্যানেল এস এর সিনিয়র রিপোর্টার ইব্রাহিম খলিল, জাকির হোসেন কয়েস, রেজাউল করিম মৃধা, এনটিভির এম.এ কাইয়ূম, বাংলা পোস্টের শিহাবুজ্জামান কামাল, গ্লোবাল নিউজ সম্পাদক নাজমুল হোসেন।
No comments