মুদ্রা দরপতনে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা
মালয়েশিয়া
ও সিঙ্গাপুরে মুদ্রার অবমূল্যায়ন অব্যাহত রয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন
বাংলাদেশী শ্রমিকরা। ২০১৩ সালের অক্টোবরে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিকরা ১
রিঙ্গিত দেশে পাঠালে গ্রহীতারা পেতেন ২৪ টাকা ৬২ পয়সা। চলতি বছরের একই সময়ে
শ্রমিকের পাঠানো ১ রিঙ্গিতে গ্রহীতা পাচ্ছেন ১৭ টাকা ২২ পয়সা থেকে ১৮ টাকা
২২ পয়সা। অর্থাৎ দুই বছরে টাকার বিপরীতে মালয়েশিয়ার মুদ্রার মান কমেছে ২৫
দশমিক ৫০ শতাংশ। টাকার বিপরীতে রিঙ্গিতের মান কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সে
দেশে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকরা। এর প্রভাব পড়ছে দেশের রেমিট্যান্স আয়েও।
এক্সচেঞ্জ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, কোন দেশের শ্রমিকই সরাসরি সে দেশের
মুদ্রা দেশে পাঠাতে পারেন না। রেমিট্যান্স পাঠানোর সময় প্রথমে তা মার্কিন
ডলারে রূপান্তর করা হয়। যেহেতু ডলারের বিপরীতে মালয়েশিয়ার মুদ্রার
অবমূল্যায়ন হয়েছে, তাই ডলার কম পাওয়া যাচ্ছে।
মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৩ সালের অক্টোবরে ৩ দশমিক ১৫ রিঙ্গিত দিয়ে পাওয়া যেত ১ মার্কিন ডলার। এখন ১ মার্কিন ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৪ দশমিক ১৭ রিঙ্গিত।
অন্যদিকে বাংলাদেশে সে সময় ১ ডলারের বিপরীতে পাওয়া যেত ৮০ টাকা। এখন পাওয়া যাচ্ছে ৭৮ টাকা। শুধু মালয়েশিয়া নয়, মুদ্রার অবমূল্যায়নে বিপাকে পড়েছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরাও। সিঙ্গাপুরের ১ ডলারের বিপরীতে ২০১৩ সালের অক্টোবরে ৬২ টাকা ৭৩ পয়সা পাওয়া গেলেও এখন পাওয়া যাচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। সে হিসাবে দুই বছরে টাকার বিপরীতে সিঙ্গাপুর ডলারের দাম কমেছে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ব্যাংকের মুদ্রা বিনিময় হার পর্যালোচনায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের উৎস দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রের পরই সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসে মালয়েশিয়া থেকে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশটি থেকে বাংলাদেশে এসেছে ১৩৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছর এসেছিল ১০৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা দেশে পাঠিয়েছেন যথাক্রমে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ও ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক আয়। যোগাযোগ করা হলে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়নে শ্রমিকদের আয়ও কমে গেছে। ফলে দেশেও রেমিট্যান্স কিছুটা কমেছে। এতে কোন ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকলে দ্রুতই তা করা উচিত। বিশেষ করে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর কোন ভূমিকা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
তথ্য মতে, জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম গন্তব্য মালয়েশিয়ায় বর্তমানে কর্মরত প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক। ২০০৭ সালে দেশটিতে ২ লাখ ৭৩ হাজার ২০১ ও ২০০৮ সালে ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৬২ জন শ্রমিক যান। কিন্তু নানা অনিয়ম ও প্রতারণার ফলে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি। এর পর ২০১২ সালের নভেম্বরে দুই দেশের মধ্যে সরকারিভাবে কর্মী নেয়ার চুক্তি হয়। তখন মালয়েশিয়া ৫ লাখ কর্মী নেয়ার আশ্বাস দেয়। যদিও গত তিন বছরে পাঠানো গেছে মাত্র আট হাজার শ্রমিক। রেমিট্যান্সের আরেক গুরুত্বপূর্ণ উৎস সিঙ্গাপুর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে এসেছে ৪৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল ৪২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বর্তমানে সিঙ্গাপুরেও প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক কর্মরত। মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে তাদের আয়েও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, টাকার মান শক্তিশালী হওয়ায় মালয়েশিয়ায় থাকা শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। সে দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে শ্রমিকদের ক্ষতি হচ্ছে। যত দিন বাংলাদেশের মুদ্রা শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে, এভাবেই লোকসান গুনতে হবে। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটায়, তাহলে রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারী উভয়ই লাভবান হবে। পৃথিবীর অনেক দেশই এমনটা করছে, বাংলাদেশেরও সুযোগ আছে এদিকে যাওয়ার। ভেবে দেখতে পারে বাংলাদেশ।
মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৩ সালের অক্টোবরে ৩ দশমিক ১৫ রিঙ্গিত দিয়ে পাওয়া যেত ১ মার্কিন ডলার। এখন ১ মার্কিন ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৪ দশমিক ১৭ রিঙ্গিত।
অন্যদিকে বাংলাদেশে সে সময় ১ ডলারের বিপরীতে পাওয়া যেত ৮০ টাকা। এখন পাওয়া যাচ্ছে ৭৮ টাকা। শুধু মালয়েশিয়া নয়, মুদ্রার অবমূল্যায়নে বিপাকে পড়েছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরাও। সিঙ্গাপুরের ১ ডলারের বিপরীতে ২০১৩ সালের অক্টোবরে ৬২ টাকা ৭৩ পয়সা পাওয়া গেলেও এখন পাওয়া যাচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। সে হিসাবে দুই বছরে টাকার বিপরীতে সিঙ্গাপুর ডলারের দাম কমেছে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ব্যাংকের মুদ্রা বিনিময় হার পর্যালোচনায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের উৎস দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্রের পরই সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসে মালয়েশিয়া থেকে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশটি থেকে বাংলাদেশে এসেছে ১৩৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছর এসেছিল ১০৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকরা দেশে পাঠিয়েছেন যথাক্রমে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ও ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক আয়। যোগাযোগ করা হলে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়নে শ্রমিকদের আয়ও কমে গেছে। ফলে দেশেও রেমিট্যান্স কিছুটা কমেছে। এতে কোন ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকলে দ্রুতই তা করা উচিত। বিশেষ করে এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর কোন ভূমিকা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
তথ্য মতে, জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম গন্তব্য মালয়েশিয়ায় বর্তমানে কর্মরত প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক। ২০০৭ সালে দেশটিতে ২ লাখ ৭৩ হাজার ২০১ ও ২০০৮ সালে ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৬২ জন শ্রমিক যান। কিন্তু নানা অনিয়ম ও প্রতারণার ফলে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি। এর পর ২০১২ সালের নভেম্বরে দুই দেশের মধ্যে সরকারিভাবে কর্মী নেয়ার চুক্তি হয়। তখন মালয়েশিয়া ৫ লাখ কর্মী নেয়ার আশ্বাস দেয়। যদিও গত তিন বছরে পাঠানো গেছে মাত্র আট হাজার শ্রমিক। রেমিট্যান্সের আরেক গুরুত্বপূর্ণ উৎস সিঙ্গাপুর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে এসেছে ৪৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল ৪২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বর্তমানে সিঙ্গাপুরেও প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক কর্মরত। মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে তাদের আয়েও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, টাকার মান শক্তিশালী হওয়ায় মালয়েশিয়ায় থাকা শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। সে দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে শ্রমিকদের ক্ষতি হচ্ছে। যত দিন বাংলাদেশের মুদ্রা শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে, এভাবেই লোকসান গুনতে হবে। যদি বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটায়, তাহলে রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারী উভয়ই লাভবান হবে। পৃথিবীর অনেক দেশই এমনটা করছে, বাংলাদেশেরও সুযোগ আছে এদিকে যাওয়ার। ভেবে দেখতে পারে বাংলাদেশ।
No comments