বিভক্তির কবলে বিশ্বাস-৫: গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত by হামিদ বিশ্বাস ও সিরাজুস সালেকিন
বিভক্তি
গ্রাস করেছে বাংলাদেশের সিভিল সোসাইটিকে। সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরাই একে
চিহ্নিত করেছেন গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত হিসেবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের
সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খোন্দকার
ইব্রাহীম খালেদ বলেছেন, বাংলাদেশে সিভিল সোসাইটি বলে কিছু নেই। এখানে যারা
সিভিল সোসাইটির নামে কাজ করছেন তারা কারও না কারও লবিস্ট। মতাদর্শটি
বিদেশী। এখনও ইউরোপে চালু রয়েছে। আমি সিভিল সোসাইটি বিশ্বাস করি না।
বিশ্বাস করি নাগরিক সমাজে। কারণ আমি নিজেও একজন নাগরিক। এই সমাজে বাস করি।
একজন নাগরিক-ই পারেন অপর নাগরিকের সমস্যার সমাধান করতে। সব কিছুতে বিভক্তি
থাকে। নাগরিক সমাজেও কিছুটা বিভক্তি আছে। এটা সাময়িক। যারা পাকিস্তানে
বিশ্বাস করে তারা এক পক্ষ। অপর পক্ষ যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। বিভক্তির
কারণে নাগরিক সমাজ মূল দায়িত্ব থেকে দূরে সরে গেছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি
বলেন, বিভক্তির সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কোন সম্পর্ক নেই। দায়িত্ব পালন হলো
মানসিকতার বিষয়। মানসিকতা ভাল হলে সঠিক দায়িত্ব পালন করবে। ভাল না হলে
দায়িত্ব পালন করবে না। এটাই স্বাভাবিক।
সিভিল সোসাইটি নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলামেরও অভিন্ন বক্তব্য। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সিভিল সোসাইটি বলে যা বোঝানো হচ্ছে তা আসল সিভিল সোসাইটি নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, যে কোন নাগরিকের রাজনৈতিক বিশ্বাস খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু সুশীল হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের সরাসরি রাজনৈতিক পক্ষ অবলম্বন এবং অন্ধ রাজনৈতিক পক্ষ অবলম্বন বা দলীয় বক্তব্য রাখা, মতামত ব্যক্ত করা, নিজের পদ থেকে দলকে অন্ধের মতো সমর্থন করা কোনভাবেই সুখকর না। কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু সুশীলজনকে চাওয়া-পাওয়ার বিষয়কে মাথায় রেখে নেতানেত্রীদের অনুগ্রহ, অনুকম্পা ও বিশেষ সুযোগ-সুবিধার জন্য বিবেক বহির্ভূত ভূমিকার রাখতে দেখা যায়। এটা কোনভাবেই কাম্য না। সুশীল সমাজের স্বকীয়তা রক্ষা করা জরুরি। এর পরিণতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সমাজের বিবেক হিসেবে পরিচিত সুশীল জনদের সরাসরি রাজনৈতিক বিভক্তি দেশের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য অশনী সংকেত।
অর্থনীতিবিদ মামুন রশীদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের ধুয়া ও যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটি সুশীল সমাজকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সুশীলের কেউ কখনও যুদ্ধাপরাধের পক্ষ কিংবা স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি। তারা প্রত্যেকে এসব সমস্যার সুষ্ঠু মীমাংসা চেয়েছিলেন। তবুও বিষয়টিকে জিইয়ে রেখে বারবার সামনে আনা হয়। সৃষ্টি হয় পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি। ভেঙে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যায় জাতির দুর্দিনের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর সুশীল সমাজ। বিভক্তির দ্বিতীয় কারণ বর্ণনায় মামুন বলেন, শাসক গোষ্ঠী দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে বিরোধী পক্ষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকিয়ে দেয় তখন সুশীল সমাজের নাগরিকরা ভয় পেয়ে যায়। সাধারণত সুশীল সমাজের নাগরিকরা হলেন সমাজের সব চেয়ে ভদ্র ও উচ্চ শিক্ষিত। সঙ্গত কারণে সুশীলরা রক্তচক্ষু, রাজনৈতিক হাঙ্গামা ও জেল-জরিমানার সঙ্গে অভ্যস্ত নয়। সে কারণে দেশের সুশীলরা আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হতে থাকেন। এছাড়া বিরোধী দল যদি ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে আমাদের বাঁচাবে কে- এ ধরনের চিন্তা থেকেও সিভিল সোসাইটি দুর্বল হয়ে থাকতে পারে। যারা বর্তমানে সিভিল সোসাইটির ভূমিকায় আছেন তারা যে কোন বিষয়ের গভীরে যাচ্ছেন না। যেনতেনভাবে মন্তব্য করে যাচ্ছেন। সুশীল সমাজ দুষ্টক্ষত মুক্ত নয় উল্লেখ করে মামুন রশীদ আরও বলেন, সুশীলের ব্যক্তিগত আমলনামা ঠিক করা দরকার। তারা নানা সুযোগ-সুবিধায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অল্পতে হাতবদল হয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান সুশীল সমাজ মিডিয়া কেন্দ্রিক হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, মিডিয়া যাকে বলবে সুশীল, সে হবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। সে কারণে অনেক সুশীল মিডিয়ার প্রতি ঝুঁকছেন। এসব পার্থিব চাওয়া-পাওয়া থেকে বের হতে না পারলে নিরপেক্ষ সৃজনশীল সুশীল সমাজ পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন মামুন রশীদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস এ প্রসঙ্গে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সুশীল সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। সাংবাদিকদের দুটি গ্রুপ, শিক্ষকদের বিভিন্ন গ্রুপ দেখা যায়। এই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সিভিল সোসাইটিকে তাদের পছন্দমতো বানিয়ে ফেলেছে। সিভিল সোসাইটি যে স্বায়ত্তশাসিত, নিজেদের স্বত্বা নিয়ে দাঁড়াবে সেই জায়গটা আওয়ামী লীগ-বিএনপি নষ্ট করে দিয়েছে। যে কারণে তাঁতী দল, আওয়ামী শিশু লীগ, আওয়ামী ভাঙ্গারী লীগ তৈরি হয়েছে। অথচ এরা নিজেদের স্বকীয়তা নিয়ে দাঁড়ানোর কথা। সাপুড়ে লীগ তৈরি করার তো কোন দরকার নেই। একে বলে পার্টিয়ার্কি, দলতন্ত্র বা দলবাজি। বিএনপি-আওয়ামী লীগ সমস্ত জায়গাগুলো গ্রাস করে ফেলেছে। সুশীল সমাজের একটি অংশকে দায়ী করে তিনি বলেন, আবার সিভিল সোসাইটির কিছু লোক নিজেদের পদ-পদবি, সুযোগ-সুবিধা, লোভের ফাঁদে পড়ে নিজেদের সত্তা হারিয়ে ফেলেছে। সুশীল সমাজের বিভাজনের পরিণতি সম্পর্কে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, পরিণতি খুব দুঃখজনক। এই বিভাজনের ফলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে না। বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সেগুলো দলীয়করণ হয়েছে। আমাদের আমলারা দলীয়করণের শিকার। পিয়ন থেকে সেক্রেটারি দলীয়করণের শিকার। এসমস্ত কারণে স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
সাংবাদিক আশরাফ কায়সার বলেন, সুশীল সমাজের বিভাজনটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক না। সুশীল সমাজ অথবা যারা জাতিকে দিকনির্দেশনা দেবেন তারা যখন রাজনৈতিক কারণে বিভাজিত হন তখন তাদের জন্য গুণগতমান সেটি নিচের দিকে যায় এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তারা কোন বিষয়কে বিবেচনা করেন। তাদের যে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা, তাদের সঠিক মন্তব্য করার ক্ষমতা এটিতে তারা আপস করেন রাজনৈতিক কারণে। তা থেকে তখন বাংলাদেশের মানুষ বা যে কোন জাতি সঠিক দিকনির্দেশনা পায় না। রাজনৈতিক পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু তারা অন্ধ দলীয় আনুগত্যের দিকে চলে যাচ্ছে। সুশলী সমাজ এর বাইরে নয়। সুশীল সমাজের বিভাজন দূর করতে দূর করতে দলীয় আনুগত্য পরিহার জরুরি মনে করেন তিনি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এখান থেকে বের হয়ে আসার বড় উপায় হচ্ছে সেন্সিবল হওয়া। যারা সুশীল সমাজের অংশ এবং দলীয় কর্মীর মতো কথা বলেন বা ব্যবহার করেন তাদের আসলে দলের পরিচয়ে পরিচিত হওয়া ভাল নিজেদের সুশীল সমাজ না বলে। আমরা সেই সুশীল সমাজ প্রত্যাশা করি যারা দলীয় পরিচয়ে বাইরে গিয়ে সত্যকে সত্য বলার সাহস রাখে।
সিভিল সোসাইটি নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলামেরও অভিন্ন বক্তব্য। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সিভিল সোসাইটি বলে যা বোঝানো হচ্ছে তা আসল সিভিল সোসাইটি নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, যে কোন নাগরিকের রাজনৈতিক বিশ্বাস খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু সুশীল হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের সরাসরি রাজনৈতিক পক্ষ অবলম্বন এবং অন্ধ রাজনৈতিক পক্ষ অবলম্বন বা দলীয় বক্তব্য রাখা, মতামত ব্যক্ত করা, নিজের পদ থেকে দলকে অন্ধের মতো সমর্থন করা কোনভাবেই সুখকর না। কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু সুশীলজনকে চাওয়া-পাওয়ার বিষয়কে মাথায় রেখে নেতানেত্রীদের অনুগ্রহ, অনুকম্পা ও বিশেষ সুযোগ-সুবিধার জন্য বিবেক বহির্ভূত ভূমিকার রাখতে দেখা যায়। এটা কোনভাবেই কাম্য না। সুশীল সমাজের স্বকীয়তা রক্ষা করা জরুরি। এর পরিণতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সমাজের বিবেক হিসেবে পরিচিত সুশীল জনদের সরাসরি রাজনৈতিক বিভক্তি দেশের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য অশনী সংকেত।
অর্থনীতিবিদ মামুন রশীদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের ধুয়া ও যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটি সুশীল সমাজকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সুশীলের কেউ কখনও যুদ্ধাপরাধের পক্ষ কিংবা স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়নি। তারা প্রত্যেকে এসব সমস্যার সুষ্ঠু মীমাংসা চেয়েছিলেন। তবুও বিষয়টিকে জিইয়ে রেখে বারবার সামনে আনা হয়। সৃষ্টি হয় পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি। ভেঙে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যায় জাতির দুর্দিনের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর সুশীল সমাজ। বিভক্তির দ্বিতীয় কারণ বর্ণনায় মামুন বলেন, শাসক গোষ্ঠী দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে বিরোধী পক্ষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকিয়ে দেয় তখন সুশীল সমাজের নাগরিকরা ভয় পেয়ে যায়। সাধারণত সুশীল সমাজের নাগরিকরা হলেন সমাজের সব চেয়ে ভদ্র ও উচ্চ শিক্ষিত। সঙ্গত কারণে সুশীলরা রক্তচক্ষু, রাজনৈতিক হাঙ্গামা ও জেল-জরিমানার সঙ্গে অভ্যস্ত নয়। সে কারণে দেশের সুশীলরা আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হতে থাকেন। এছাড়া বিরোধী দল যদি ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে আমাদের বাঁচাবে কে- এ ধরনের চিন্তা থেকেও সিভিল সোসাইটি দুর্বল হয়ে থাকতে পারে। যারা বর্তমানে সিভিল সোসাইটির ভূমিকায় আছেন তারা যে কোন বিষয়ের গভীরে যাচ্ছেন না। যেনতেনভাবে মন্তব্য করে যাচ্ছেন। সুশীল সমাজ দুষ্টক্ষত মুক্ত নয় উল্লেখ করে মামুন রশীদ আরও বলেন, সুশীলের ব্যক্তিগত আমলনামা ঠিক করা দরকার। তারা নানা সুযোগ-সুবিধায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অল্পতে হাতবদল হয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান সুশীল সমাজ মিডিয়া কেন্দ্রিক হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, মিডিয়া যাকে বলবে সুশীল, সে হবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। সে কারণে অনেক সুশীল মিডিয়ার প্রতি ঝুঁকছেন। এসব পার্থিব চাওয়া-পাওয়া থেকে বের হতে না পারলে নিরপেক্ষ সৃজনশীল সুশীল সমাজ পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন মামুন রশীদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস এ প্রসঙ্গে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সুশীল সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। সাংবাদিকদের দুটি গ্রুপ, শিক্ষকদের বিভিন্ন গ্রুপ দেখা যায়। এই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সিভিল সোসাইটিকে তাদের পছন্দমতো বানিয়ে ফেলেছে। সিভিল সোসাইটি যে স্বায়ত্তশাসিত, নিজেদের স্বত্বা নিয়ে দাঁড়াবে সেই জায়গটা আওয়ামী লীগ-বিএনপি নষ্ট করে দিয়েছে। যে কারণে তাঁতী দল, আওয়ামী শিশু লীগ, আওয়ামী ভাঙ্গারী লীগ তৈরি হয়েছে। অথচ এরা নিজেদের স্বকীয়তা নিয়ে দাঁড়ানোর কথা। সাপুড়ে লীগ তৈরি করার তো কোন দরকার নেই। একে বলে পার্টিয়ার্কি, দলতন্ত্র বা দলবাজি। বিএনপি-আওয়ামী লীগ সমস্ত জায়গাগুলো গ্রাস করে ফেলেছে। সুশীল সমাজের একটি অংশকে দায়ী করে তিনি বলেন, আবার সিভিল সোসাইটির কিছু লোক নিজেদের পদ-পদবি, সুযোগ-সুবিধা, লোভের ফাঁদে পড়ে নিজেদের সত্তা হারিয়ে ফেলেছে। সুশীল সমাজের বিভাজনের পরিণতি সম্পর্কে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, পরিণতি খুব দুঃখজনক। এই বিভাজনের ফলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে না। বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সেগুলো দলীয়করণ হয়েছে। আমাদের আমলারা দলীয়করণের শিকার। পিয়ন থেকে সেক্রেটারি দলীয়করণের শিকার। এসমস্ত কারণে স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
সাংবাদিক আশরাফ কায়সার বলেন, সুশীল সমাজের বিভাজনটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক না। সুশীল সমাজ অথবা যারা জাতিকে দিকনির্দেশনা দেবেন তারা যখন রাজনৈতিক কারণে বিভাজিত হন তখন তাদের জন্য গুণগতমান সেটি নিচের দিকে যায় এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তারা কোন বিষয়কে বিবেচনা করেন। তাদের যে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা, তাদের সঠিক মন্তব্য করার ক্ষমতা এটিতে তারা আপস করেন রাজনৈতিক কারণে। তা থেকে তখন বাংলাদেশের মানুষ বা যে কোন জাতি সঠিক দিকনির্দেশনা পায় না। রাজনৈতিক পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু তারা অন্ধ দলীয় আনুগত্যের দিকে চলে যাচ্ছে। সুশলী সমাজ এর বাইরে নয়। সুশীল সমাজের বিভাজন দূর করতে দূর করতে দলীয় আনুগত্য পরিহার জরুরি মনে করেন তিনি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এখান থেকে বের হয়ে আসার বড় উপায় হচ্ছে সেন্সিবল হওয়া। যারা সুশীল সমাজের অংশ এবং দলীয় কর্মীর মতো কথা বলেন বা ব্যবহার করেন তাদের আসলে দলের পরিচয়ে পরিচিত হওয়া ভাল নিজেদের সুশীল সমাজ না বলে। আমরা সেই সুশীল সমাজ প্রত্যাশা করি যারা দলীয় পরিচয়ে বাইরে গিয়ে সত্যকে সত্য বলার সাহস রাখে।
No comments