অভিনব প্রতিবাদ
হংকং-এ এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাকে বুক দিয়ে আঘাত করার দায়ে এক নারীকে সাজা দেয়া হয়েছে। এ রায়ের প্রতিবাদে ব্রা পরে অভিনব বিক্ষোভ জানিয়েছে বহু নারী-পুরুষ। এনজি লাই-ইং (৩০) নামের ওই নারী গত মার্চে একটি আন্দোলনের সময় তার বুকে হাত দেয়ার অভিযোগ তোলেন পুলিশের প্রধান পরিদর্শক চ্যান কা-পো’র বিরুদ্ধে। কিন্তু নজিরবিহীন এ নজির সৃষ্টি করে আদালত উল্টো ওই নারীর বিরুদ্ধেই রায় দেন। রায়ে আদালত বলেন, লাই-ইং উদ্দেশ্যমূলকভাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তার দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। যাতে করে তাকে স্তনে সপর্শ করার অভিযোগে ফাঁসানো যায়। এ অপরাধের দায়ে লাই-ইং’কে ৩ মাস ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত। কিন্তু আদালতের রায়কে ‘হাস্যকর’ হিসেবে অভিহিত করে রোববার পুলিশ সদর দপ্তরের বাইরে ২০০ জনের মতো মানুষ ‘ব্রেস্ট ওয়াক’ প্রতিবাদে অংশ নেয়। প্রতিবাদে সামিল হওয়া অনেকে বক্ষবন্ধনী পরে ছিলেন। অন্যদের হাতে ছিল ব্রা। ‘স্তন কোন অস্ত্র নয়’ বলে স্লোগানও দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। প্রসঙ্গত, গত মার্চে হংকং-এ সস্তা ও ভাল মানের পণ্য কিনতে আসা চীনাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ বিষয়টি হংকং-এ বহুদিন ধরে বিতর্কিত একটি ইস্যু। সে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন এনজি লাই-ইং। তিনি বলেন, বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় আন্দোলনকারীদের। ওই সময় পুলিশের প্রধান পরিদর্শক চ্যান কা-পো তার ব্যাগ কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একপর্যায়ে তার হাত গিয়ে পড়ে লাই-ইং-এর স্তনে। এরপর চ্যান কা-পো’র বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনেন তিনি। কিন্তু উলটো তাকেই স্তন ব্যবহার করে পুলিশ কর্মকর্তাকে আঘাত করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। বিচারক মাইকেল চ্যান পিক-কিউ বলেন, লাই-ইং ওই পুলিশ কর্মকর্তার সুনামহানি করার চেষ্টা করেছিলেন। বিচারক বলেন, ওই নারী তার ‘নারীত্বের পরিচয়কে ব্যবহার করে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ তোলার চেষ্টা করেছেন। তবে বিক্ষোভকারীরা এ রায়কে ‘উপহাস্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জেমস হন জানান, আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে তিনি জীবনে প্রথমবারের মতো বক্ষবন্ধনী পরেছেন। তিনি বলেন, আমরা এ অদ্ভুত পদ্ধতি ব্যবহার করে দুনিয়াকে জানাতে চাই এটি কতটা হাস্যকর রায়! অ্যাক্টিভিস্ট এনজি চেইউক-লিং বলেন, শাসকরা উদ্ভট। স্তন কীভাবে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে? তার শঙ্কা, এ রায়ের ফলে ভবিষ্যতে নারীরা প্রতিবাদে অংশ নিতে সঙ্কোচ বোধ করবেন। তার মতে, পুলিশকে অবশ্যই নারী প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে আচরণের নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। আরেকজন পুরুষ প্রতিবাদকারী বলেন, আজকে আমি যেভাবে নারীদের বক্ষবন্ধনী পরে রয়েছি, তা দেখতে খুবই খারাপ দেখাচ্ছে। কিন্তু বিচারের রায়টির মতো খারাপ নিশ্চয়ই নয়।
No comments