শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্তৃত্ব আরোপ করতে চায় মোদি সরকার -সাক্ষাৎকারে অমর্ত্য সেনের অভিযোগ
ভারতের
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন অভিযোগ করে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির
সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চায়।
প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক
সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। অমর্ত্য সেনের এই বক্তব্যের মাধ্যমে মোদি
সরকারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ আবার প্রকাশ্যে এল। অমর্ত্য সেনকে সরকারের
নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পদ থেকে ‘সরিয়ে দেওয়ার’ প্রসঙ্গটি
সাক্ষাৎকারে উঠে আসে। অধ্যাপক সেন এ বিষয়ে বলেন, ‘সেটি কোনো বিচ্ছিন্ন
ঘটনা নয়। ভারতের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর কর্তৃত্ব আরোপের চেষ্টার একটি
অংশ মাত্র।’
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমাকে নিশ্চিতভাবেই নালন্দা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের কয়েকজন সদস্য, বিশেষ করে বিদেশিরা চেয়েছিলেন আমি ওই পদে থাকি। তবে আমি নিজে সরে এসেছি। কারণ, ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে থাকতে চাইনি। আমি ওই পদে থাকলে সরকার হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বরাদ্দ আটকে রাখত।’
মোদি সরকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘আধিপত্য বিস্তারের’ কথিত চেষ্টা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের (টিআইএফআর) কথা উল্লেখ করেন অমর্ত্য সেন। বিখ্যাত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে সন্দীপ ত্রিবেদীর নিয়োগ খারিজ করাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। অমর্ত্য বলেন, ‘এর আগে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর আমলে এমন ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি দিল্লি ও মুম্বাই আইআইটিতেও ‘সরকারি হস্তক্ষেপ’ হওয়ার কথা বলেন।
নিউইয়র্ক রিভিউ অব বুকস-এর আগামী আগস্ট মাসের সংখ্যায় অমর্ত্য সেন চার হাজার শব্দের একটি নিবন্ধ লিখছেন। সেই নিবন্ধে তিনি তাঁকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পদ থেকে সরিয়ে নেওয়ার ইতিবৃত্ত তুলে ধরেছেন।
সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক সেন ভারতের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই সরকার বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে বাজার অর্থনীতিকে কার্যকর করতে চাইলে সরকারি পরিষেবা বাড়াতে হবে।
দিন দিন ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেটের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের পরিমাণ কমতে থাকা চিন্তিত করেছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ বাঙালি তাত্ত্বিককে।
অমর্ত্য সেন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি কখনোই শিল্পায়নের বিরোধী নই। কিন্তু প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অভাবে থাকা কোনো শ্রমশক্তিকে দিয়ে বিশ্বের কোনো দেশই বৃহৎ শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হতে পারে না।’
জনস্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভারতের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ চীনের এগিয়ে থাকার কথা তুলে ধরেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, ভারত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ২ শতাংশ জনস্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করে। চীন এই খাতে ব্যয় করে ৩ শতাংশ। ভারত এখন সেই খাতেও বরাদ্দ কমিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ভারত চীনের মতো উচ্চ মাত্রার প্রবৃদ্ধি চায়। তবে একটি বিষয় খেয়াল করা হয় না যে চীন সরকারি পরিষেবার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে চলেছে।
সামাজিক খাতে চীনের অগ্রগতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘তাদের অত্যন্ত উঁচু মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা রয়েছে। সব শিশুই স্কুলে যায়। এশিয়ার উন্নয়নের এটিই ধারা। আপনাকে বাজার অর্থনীতিকেও এগিয়ে নিতে হবে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রের ভূমিকাও থাকতে হবে।’
ভারতের পার্লামেন্টে উত্থাপিত ভূমি অধিগ্রহণ আইনের সমালোচনা করেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, এর আগের ইউপিএ সরকারের আমলে উত্থাপিত একই আইনটি ছিল ধোঁয়াশাপূর্ণ। আর বর্তমান সরকারের আইনটি ‘পুরোপুরি ভুল’। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের একটি মৌলিক ভ্রান্তি আছে। সেটি হলো, তারা বুঝতে পারছে না যে সমস্ত উন্নয়নের কেন্দ্রে আছে মানুষ।
১৭ জুলাই অমর্ত্য সেন নালন্দার আচার্যের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন সিঙ্গাপুরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ ইয়োও।
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমাকে নিশ্চিতভাবেই নালন্দা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের কয়েকজন সদস্য, বিশেষ করে বিদেশিরা চেয়েছিলেন আমি ওই পদে থাকি। তবে আমি নিজে সরে এসেছি। কারণ, ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে থাকতে চাইনি। আমি ওই পদে থাকলে সরকার হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বরাদ্দ আটকে রাখত।’
মোদি সরকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘আধিপত্য বিস্তারের’ কথিত চেষ্টা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের (টিআইএফআর) কথা উল্লেখ করেন অমর্ত্য সেন। বিখ্যাত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে সন্দীপ ত্রিবেদীর নিয়োগ খারিজ করাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। অমর্ত্য বলেন, ‘এর আগে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর আমলে এমন ঘটনা ঘটেনি।’ তিনি দিল্লি ও মুম্বাই আইআইটিতেও ‘সরকারি হস্তক্ষেপ’ হওয়ার কথা বলেন।
নিউইয়র্ক রিভিউ অব বুকস-এর আগামী আগস্ট মাসের সংখ্যায় অমর্ত্য সেন চার হাজার শব্দের একটি নিবন্ধ লিখছেন। সেই নিবন্ধে তিনি তাঁকে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের পদ থেকে সরিয়ে নেওয়ার ইতিবৃত্ত তুলে ধরেছেন।
সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক সেন ভারতের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই সরকার বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে যে বাজার অর্থনীতিকে কার্যকর করতে চাইলে সরকারি পরিষেবা বাড়াতে হবে।
দিন দিন ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেটের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের পরিমাণ কমতে থাকা চিন্তিত করেছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এ বাঙালি তাত্ত্বিককে।
অমর্ত্য সেন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি কখনোই শিল্পায়নের বিরোধী নই। কিন্তু প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অভাবে থাকা কোনো শ্রমশক্তিকে দিয়ে বিশ্বের কোনো দেশই বৃহৎ শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হতে পারে না।’
জনস্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভারতের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ চীনের এগিয়ে থাকার কথা তুলে ধরেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, ভারত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ২ শতাংশ জনস্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করে। চীন এই খাতে ব্যয় করে ৩ শতাংশ। ভারত এখন সেই খাতেও বরাদ্দ কমিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ভারত চীনের মতো উচ্চ মাত্রার প্রবৃদ্ধি চায়। তবে একটি বিষয় খেয়াল করা হয় না যে চীন সরকারি পরিষেবার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে চলেছে।
সামাজিক খাতে চীনের অগ্রগতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘তাদের অত্যন্ত উঁচু মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা রয়েছে। সব শিশুই স্কুলে যায়। এশিয়ার উন্নয়নের এটিই ধারা। আপনাকে বাজার অর্থনীতিকেও এগিয়ে নিতে হবে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রের ভূমিকাও থাকতে হবে।’
ভারতের পার্লামেন্টে উত্থাপিত ভূমি অধিগ্রহণ আইনের সমালোচনা করেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, এর আগের ইউপিএ সরকারের আমলে উত্থাপিত একই আইনটি ছিল ধোঁয়াশাপূর্ণ। আর বর্তমান সরকারের আইনটি ‘পুরোপুরি ভুল’। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের একটি মৌলিক ভ্রান্তি আছে। সেটি হলো, তারা বুঝতে পারছে না যে সমস্ত উন্নয়নের কেন্দ্রে আছে মানুষ।
১৭ জুলাই অমর্ত্য সেন নালন্দার আচার্যের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন সিঙ্গাপুরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ ইয়োও।
No comments