বিদেশি ঋণ প্রতিশ্রুতিতে ভাটা by জাহাঙ্গীর আলম
সরকার অর্থনীতির আকার বাড়াতে বিদেশি ঋণ
সহায়তা পেতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তারপরও ঋণ প্রতিশ্রুতিতে আসছে না গতি।
চলতি অর্থবছরের শেষ সময়েও দাতাদের ঋণ প্রতিশ্রুতি বাড়েনি। এক বছরের
ব্যবধানে গত জুলাই-মে মাসে কমেছে সাড়ে ৬৩ কোটি ডলার বা ২২ শতাংশ। কারণ গত
১১ মাসে ঋণ প্রতিশ্রুতি ২৮২ কোটি ৬২ লাখ ডলার পাওয়া গেলেও আগের অর্থবছরের
একই সময়ে ছিল ৩৪৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। একই সময়ে সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণও
কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। অর্থছাড় (ঋণ) এক শতাংশও বাড়েনি। অর্থনীতিবিদরা
বলছেন, ঋণের ব্যবহার বাড়াতে না পারায় প্রতিশ্রুতিও বাড়ছে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) গতকাল হালনাগাদ এক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের গত ১১ মাসে দাতাদের মোট ঋণ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ২৮২ কোটি ৬২ লাখ (২ হাজার ৮২৬ দশমিক ২৩ মিলিয়ন) ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া গিয়েছিল ৩৪৬ কোটি ১২ লাখ (৩ হাজার ৪৬১ দশমিক ২৪ মিলিয়ন) ডলার। কমেছে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ (৬৩৫ মিলিয়ন) ডলার বা ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ওই প্রতিশ্রুতির মধ্যে ঋণ হচ্ছে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ (২ হাজার ৪৩২ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন) ডলার এবং অনুদান ৩৯ কোটি ৩৩ লাখ (৩৯৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন) ডলার।
বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশ গত ১১ মাসে (ঋণ) অর্থছাড় করেছে ২৬৩ কোটি ৫৫ লাখ (২ হাজার ৬৩৫ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন) ডলার। অর্থছাড়ের মধ্যে ঋণ হচ্ছে ২১৬ কোটি ৭৩ লাখ (২ হাজার ১৬৭ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন) ডলার এবং অনুদান ৪৬ কোটি ৮১ লাখ (৪৬৮ দশমিক ১৭ মিলিয়ন) ডলার। আর গত অর্থবছরে মোট অর্থছাড় হয়েছিল ২৬১ কোটি ৯৪ লাখ (২ হাজার ৬১৯ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন) ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১৯৪ কোটি ৪৮ লাখ (এক হাজার ৯৬৪ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন) ডলার এবং অনুদান ৬৫ কোটি ৪৫ লাখ (৬৫৪ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন) ডলার। ১১ মাসের ব্যবধানে অর্থছাড় বেড়েছে মাত্র এক কোটি ৬১ লাখ (১৬ দশমিক ১৩ মিলিয়ন) ডলার।
১১ মাসে সরকারের ঋণ পরিশোধও কমতির দিকে। ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১০২ কোটি ৬০ লাখ ডলার (এক হাজার ২০ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন) ডলার ঋণের মধ্যে আসল হচ্ছে ৮৫ কোটি ২৯ লাখ (৮৫২ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন) ডলার এবং সুদ ১৬ কোটি ৭৮ লাখ (১৬৭ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন) ডলার, যা আগের অর্থবছরে ১১৫ কোটি ৩১ লাখ (এক হাজার ১৫৩ দশমিক ১০ মিলিয়ন) ডলার ঋণ পরিশোধের মধ্যে আসল ছিল ৯৬ কোটি ৮৫ লাখ (৯৬৮ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন) ডলার এবং সুদ ছিল ১৮ কোটি ৪৫ লাখ (১৮৪ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন) ডলার। ঋণ পরিশোধ কমেছে ১৩ কোটি ২৫ লাখ (১৩২ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন)
এ ব্যাপারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর গতকাল মানবকণ্ঠকে বলেন, বিদেশি ঋণে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এর ধীরগতির কারণে প্রতিশ্রুতিও কমছে। এর প্রভাবে অর্থছাড়েও গতি পাচ্ছে না। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবস্থাপনায় সরকারকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার চাইলেই এর গতি বাড়বে। কারণ আঞ্চলিক কানেকটিভিতে অনেক বিনিয়োগের সুযোগ আছে। বিদ্যুৎ, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ছে। তবে সরকারের দুর্বলতা, দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে। তবেই ঋণ প্রতিশ্রুতি বাড়বে, অর্থছাড়ও বাড়বে।
আর পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সিনিয়র সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, কী প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেল তা বড় কথা নয়। এ ব্যাপারে আমরা উদ্বিগ্নও নই। দাতারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থায়ন করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাই বলা যায়, দাতাদের কোনো নেতিবাচক মনোভাব নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, প্রতিশ্রুতি কমলেও এত কিছুর পরও অর্থছাড় বেড়েছে, ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে। তা ইতিবাচক বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
ওই প্রতিবেদনে আরো দেখা গেছে, গত ১১ মাসে সর্বোচ্চ অর্থছাড় করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি ৮০ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার অর্থছাড় করেছে। এরপর এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি ৬২ কোটি ২৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার, জাইকা ২৬ কোটি ৬১ লাখ ২০ হাজার ডলার, রাশিয়া ১২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক-আইডিবি ১২ কোটি ৯০ হাজার ডলার, চীন ১২ কোটি ৬০ হাজার ডলার এবং ভারত ৭ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার অর্থছাড় করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) গতকাল হালনাগাদ এক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের গত ১১ মাসে দাতাদের মোট ঋণ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ২৮২ কোটি ৬২ লাখ (২ হাজার ৮২৬ দশমিক ২৩ মিলিয়ন) ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া গিয়েছিল ৩৪৬ কোটি ১২ লাখ (৩ হাজার ৪৬১ দশমিক ২৪ মিলিয়ন) ডলার। কমেছে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ (৬৩৫ মিলিয়ন) ডলার বা ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ওই প্রতিশ্রুতির মধ্যে ঋণ হচ্ছে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ (২ হাজার ৪৩২ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন) ডলার এবং অনুদান ৩৯ কোটি ৩৩ লাখ (৩৯৩ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন) ডলার।
বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশ গত ১১ মাসে (ঋণ) অর্থছাড় করেছে ২৬৩ কোটি ৫৫ লাখ (২ হাজার ৬৩৫ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন) ডলার। অর্থছাড়ের মধ্যে ঋণ হচ্ছে ২১৬ কোটি ৭৩ লাখ (২ হাজার ১৬৭ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন) ডলার এবং অনুদান ৪৬ কোটি ৮১ লাখ (৪৬৮ দশমিক ১৭ মিলিয়ন) ডলার। আর গত অর্থবছরে মোট অর্থছাড় হয়েছিল ২৬১ কোটি ৯৪ লাখ (২ হাজার ৬১৯ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন) ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১৯৪ কোটি ৪৮ লাখ (এক হাজার ৯৬৪ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন) ডলার এবং অনুদান ৬৫ কোটি ৪৫ লাখ (৬৫৪ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন) ডলার। ১১ মাসের ব্যবধানে অর্থছাড় বেড়েছে মাত্র এক কোটি ৬১ লাখ (১৬ দশমিক ১৩ মিলিয়ন) ডলার।
১১ মাসে সরকারের ঋণ পরিশোধও কমতির দিকে। ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১০২ কোটি ৬০ লাখ ডলার (এক হাজার ২০ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন) ডলার ঋণের মধ্যে আসল হচ্ছে ৮৫ কোটি ২৯ লাখ (৮৫২ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন) ডলার এবং সুদ ১৬ কোটি ৭৮ লাখ (১৬৭ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন) ডলার, যা আগের অর্থবছরে ১১৫ কোটি ৩১ লাখ (এক হাজার ১৫৩ দশমিক ১০ মিলিয়ন) ডলার ঋণ পরিশোধের মধ্যে আসল ছিল ৯৬ কোটি ৮৫ লাখ (৯৬৮ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন) ডলার এবং সুদ ছিল ১৮ কোটি ৪৫ লাখ (১৮৪ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন) ডলার। ঋণ পরিশোধ কমেছে ১৩ কোটি ২৫ লাখ (১৩২ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন)
এ ব্যাপারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর গতকাল মানবকণ্ঠকে বলেন, বিদেশি ঋণে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এর ধীরগতির কারণে প্রতিশ্রুতিও কমছে। এর প্রভাবে অর্থছাড়েও গতি পাচ্ছে না। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবস্থাপনায় সরকারকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার চাইলেই এর গতি বাড়বে। কারণ আঞ্চলিক কানেকটিভিতে অনেক বিনিয়োগের সুযোগ আছে। বিদ্যুৎ, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ বাড়ছে। তবে সরকারের দুর্বলতা, দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে। তবেই ঋণ প্রতিশ্রুতি বাড়বে, অর্থছাড়ও বাড়বে।
আর পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সিনিয়র সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, কী প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেল তা বড় কথা নয়। এ ব্যাপারে আমরা উদ্বিগ্নও নই। দাতারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থায়ন করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাই বলা যায়, দাতাদের কোনো নেতিবাচক মনোভাব নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, প্রতিশ্রুতি কমলেও এত কিছুর পরও অর্থছাড় বেড়েছে, ভবিষ্যতে আরো বাড়বে। অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে। তা ইতিবাচক বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
ওই প্রতিবেদনে আরো দেখা গেছে, গত ১১ মাসে সর্বোচ্চ অর্থছাড় করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি ৮০ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার অর্থছাড় করেছে। এরপর এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি ৬২ কোটি ২৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার, জাইকা ২৬ কোটি ৬১ লাখ ২০ হাজার ডলার, রাশিয়া ১২ কোটি ৯৯ লাখ ডলার, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক-আইডিবি ১২ কোটি ৯০ হাজার ডলার, চীন ১২ কোটি ৬০ হাজার ডলার এবং ভারত ৭ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার অর্থছাড় করেছে।
No comments