রপ্তানি হচ্ছে তেঁতুলিয়ার টুপি by সাবিবুর রহমান সাবিব
শুধু
দেশে নয় বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে তেঁতুলিয়ায় নিবিড় পল্লীতে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র
কারখানাগুলোতে তৈরি টুপি। এ টুপি শিল্পের মাধ্যমে বেকার যুবক ও নারীদের
আয়বর্ধকমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ থাকলেও
প্রয়োজনীয় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। রমজান ও ঈদ
সামনে রেখে টুপি শিল্পের কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তেঁতুলিয়া সদর
ইউনিয়নের আজিজনগর ও মাথাফাটা গ্রামের ছায়াঘেরা নিবিড় পল্লীতে ক্ষুদ্র
পরিসরে গড়ে উঠেছে প্রায় হাফডজন টুপি কারখানা। তেঁতুলিয়া শহর থেকে গবরা
ব্রিজ হয়ে উত্তর-পূর্বদিকে সবুজ শ্যামল পল্লীর আঁকাবাঁকা সরু পথ দিয়ে
আজিজনগর ও মাথাফাটা যাওয়ার সময় মেসার্স আল তামিম ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ,
মেসার্স ওসমান ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ, মেসার্স আলিঙ্গন ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ,
মেসার্স আল ইকরা ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ ও মেসার্স আল খাইয়্যাত ক্যাপ
ইন্ডাস্ট্রিজের সাইনবোর্ড চোখে পড়বে। এসব ক্ষুদ্র কারখানা মালিকরা
অর্থনৈতিকভাবে তেমন সচ্ছল না হলেও স্বল্প পুঁজির মাধ্যমে পাঁচ থেকে দশটি
এমব্রয়ডারি মেশিন নিয়ে বাহারি টুপি তৈরি করেন। এসব বাহারি টুপির বাজার
মূল্য ৭০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। এসব কারখানায় আজিজনগর, মাথাফাটা, ডাঙ্গাপাড়া
গ্রামের প্রায় দুশতাধিক নারী ও পুরুষ টুপি সেলাই, এমব্রয়ডারি, নকশা তোলা,
কাপড় কাটিং ও বিক্রি কাজে সম্পৃক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। এখানকার
কারখানা মালিক নিজেই কারিগর। মালিক ছাড়া কোন কারিগর টুপি তৈরির কাজ করে
মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা উপার্জন করেন। আবার নারী শ্রমিকরা সংসারের কাজের
ফাঁকে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা কাজ করেন। আশপাশের নারী শ্রমিকরা কিছু
টুপিতে হাতের কাজ করার জন্য বাসায় নিয়ে যান। এভাবে নারী শ্রমিকরা মাসে ৩
থেকে ৪ হাজার টাকা আয় করেন। এসব কারখানায় অনেকে স্বামী-স্ত্রী মিলে টুপি
তৈরি ও নকশা তোলার কাজও করেন। কারখানা মালিকরা নকশা করা এসব টুপি বিক্রয়
প্রতিনিধির মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা, খুলনা, যশোর, বরিশাল, টাঙ্গাইল, নওগাঁ,
বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরে পাইকারি ভিত্তিতে বাজারজাত করেন। এছাড়া কিছু
ব্যবসায়ী খুচরা বিক্রির পাশাপাশি বিদেশে, যেমন- পাকিস্তান, সৌদি আরব,
জাপানে স্বল্প পরিসরে রপ্তানি করেন। তবে কারখানা মালিকরা মূলধন বেশি না
থাকায় ও প্রয়োজনীয় জনবল সঙ্কটে দেশেই টুপির চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না।
এছাড়া রমজান মাস ও ঈদুল সামনে রেখে দেশ বিদেশে টুপির চাহিদা বাড়লেও ঘন ঘন
বিদ্যুতের গোলযোগের কারণে গ্রাহকদের চাহিদা অনুয়াযী মাল সরবরাহ দিতে পারছেন
না। এরপরও কারিগররা রাতদিন ব্যস্ত সময় পার করছেন। মেসার্স আল তামিম ক্যাপ
ইন্ডাস্ট্রিজের কারিগর ও স্বত্বাধিকারী মাথাফাটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক
১৯৯১ সালে তেঁতুলিয়ার চৌরাস্তা বাজারে দর্জির দোকানে কাজ করতেন। পরে ভাল
পাঞ্জাবির সঙ্গে সুন্দর টুপির কথা ভেবে টুপির তৈরির কাজ শুরু করেন।
সর্বপ্রথম জিন্স প্যান্টের মোটা কাপড় দিয়ে সুন্দর টুপি তৈরির চেষ্টা করেন। কিন্তু জিন্স প্যান্টের কাপড়ের টুপি নিখুঁত না হলে পরবর্তীতে দেশী সুতি কাপড় দিয়ে টুপি তৈরি করেন। কিন্তু টুপির নকশা ভাল দেখায় না বলে পেইন্টিং কাপড়, পেস্টিং ও নানা রঙের সুতা দিয়ে এব্রয়ডারি মেশিনের সাহায্যে উন্নতমানের টুপি তৈরি করে সাফল্য অর্জন করেন। সেই সময় পাঁচ দিনে কুড়িটি টুপি তৈরি করে বীরগঞ্জ মাদরাসায় বিক্রি করেন। পরবর্তীকালে বাজারে নকশা করা টুপির কদর ও চাহিদা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু নিজের মূলধন না থাকায় এলাকার আব্দুল হান্নানের সহযোগিতায় ১০০ গজ পেইন্টিং কাপড় দিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যৌথভাবে টুপির ব্যবসা শুরু করেন। তখন ওই টুপি কারখানার নাম দেন ‘মেসার্স আল খাইয়্যাত ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ’। এ কারখানায় ৮ বছর কারিগর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে আল খাইয়্যাত সর্ববৃহৎ টুপি কারখানা হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছে। দেশ বিদেশে বাজারজাত হতে শুরু হলে এখানকার টুপির কদর ও ক্রেতার চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরবর্তীতে আব্দুর রাজ্জাক ১২টি এমব্রয়ডারি মেশিন ক্রয় করে ক্ষুদ্রভাবে টুপির ব্যবসা শুরু করেন। মেসার্স ওসমান ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী আজিজনগর গ্রামের আব্দুল জলিল। সে অন্যের কারখানায় বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। ২০০১ সালে বাড়ির পাশে একটি টিনশেড পাকাঘর তুলে স্বল্প পুঁজি দিয়ে টুপির ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধির জন্য ব্র্যাক সংস্থা থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। বর্তমানে তার কারখানায় ৫টি এমব্রয়ডারি মেশিনে ৬ জন কারিগর ও ৬ জন নারী শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। আল খাইয়্যাত ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মাথাফাটা গ্রামের মো. হারুন অর রশিদ। লেখাপড়া করার ইচ্ছা থাকলেও অভাব অনটনে দশম শ্রেণীর পর আর পড়াশোনা করতে পারেননি। এরপর পাশের একটি কারখানায় টুপি তৈরির কাজ শেখেন। সেখানে শুরুতে ৮০০ টাকা বেতন হলেও পরবর্তীতে কারিগর হলে তার মাসিক বেতন হয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। সেখানে ৬ বছর থাকার পর ১২টি এমব্রয়ডারি মেশিন কিনে নিজে একটি টুপির কারখানা খোলেন। বর্তমানে তার কারখানায় ১২ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী কাজ করেন। তার কারখানা থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১৫০০ টুপি তৈরি করে বিক্রি করেন। এতে কারিগরের খরচসহ অন্যান্য খরচ বাদে ১০ হাজার টাকা মুনাফা থাকে। ওসমান ক্যাম্প টুপি কারখানায় কথা হয় কারিগর সোহেল রানার সঙ্গে। সে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে টুপি তৈরির কাজ করছেন। এ কারখানায় কাজ করে ছোট বোন ফরিদাকে ১০ হাজার খরচে বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে বাবা, মাকে নিয়ে সংসার পরিচালনা করছেন। প্রতিমাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা উপার্জন করেন। আল-ইকরা ক্যাপ কারখানায় কথা হয় নারী শ্রমিক কুলসুমের সঙ্গে। সে ২০০৮ এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেন। এরপর তেঁতুলিয়া ডিগ্রি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। কিন্তু অভাব থাকায় বাবা-মা বিয়ে দেন টুপি কারিগর আদম আলীর সঙ্গে। বর্তমানে সেখানে স্বামী স্ত্রী টুপি তৈরির কাজ করে মাসে প্রায় ১২ হাজার টাকা আয় করেন। সংসারের খরচ বাদে বাড়তি টাকা দিয়ে ১ বিঘা আবাদি জমি ক্রয় করেছেন। একইভাবে নারী শ্রমিক উম্মে কুলছুম টুপি সেলাইয়ের কাছ করেন। তার স্বামী সুরুজ মিয়া প্রায় ৭ বছর টুপি কারখানায় কারিগর হিসেবে কাজ করছেন। তারা স্বামী স্ত্রী মিলে প্রতি মাসে প্রায় ১৩ হাজার টাকা আয় করছেন। এটা দিয়ে সংসারের খরচ চালানোর পাশাপাশি বাড়তি টাকা দিয়ে দুটি গাভী কিনেছেন। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকে প্রতিমাসে ২০০ টাকা সঞ্চয় করছেন। কারখানা মালিক আব্দুল জলিল ও হারুন অর রশিদ জানান, রমজান ও ঈদ সামনে রেখে দেশ-বিদেশে টুপির চাহিদা অনেক। কিন্তু বিদ্যুতের অব্যাহত গোলযোগের কারণে স্বল্প সংখ্যক পুঁজি ও কারিগর দিয়ে বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারিভাবে স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা পেলে তৈরি টুপি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে অত্র এলাকার বেকার যুবক ও কিশোরীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারখানাগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারখানা মালিকদের বিভিন্ন ব্যাংক ও সংস্থা থেকে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেয়ার জন্য সহযোগিতা করছি। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও একজন কর্মকর্তা এসে টুপি কারখানাগুলো পরিদর্শন করে গেছেন। অদূর ভবিষ্যতে তেঁতুলিয়ার নিবিড় পল্লীতে গড়ে ওঠা টুপি শিল্প কারখানাগুলো অত্র অঞ্চলের বেকার যুবক ও নারীদের আয়বর্ধকমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার খুলে দেবে।
সর্বপ্রথম জিন্স প্যান্টের মোটা কাপড় দিয়ে সুন্দর টুপি তৈরির চেষ্টা করেন। কিন্তু জিন্স প্যান্টের কাপড়ের টুপি নিখুঁত না হলে পরবর্তীতে দেশী সুতি কাপড় দিয়ে টুপি তৈরি করেন। কিন্তু টুপির নকশা ভাল দেখায় না বলে পেইন্টিং কাপড়, পেস্টিং ও নানা রঙের সুতা দিয়ে এব্রয়ডারি মেশিনের সাহায্যে উন্নতমানের টুপি তৈরি করে সাফল্য অর্জন করেন। সেই সময় পাঁচ দিনে কুড়িটি টুপি তৈরি করে বীরগঞ্জ মাদরাসায় বিক্রি করেন। পরবর্তীকালে বাজারে নকশা করা টুপির কদর ও চাহিদা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু নিজের মূলধন না থাকায় এলাকার আব্দুল হান্নানের সহযোগিতায় ১০০ গজ পেইন্টিং কাপড় দিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যৌথভাবে টুপির ব্যবসা শুরু করেন। তখন ওই টুপি কারখানার নাম দেন ‘মেসার্স আল খাইয়্যাত ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ’। এ কারখানায় ৮ বছর কারিগর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে আল খাইয়্যাত সর্ববৃহৎ টুপি কারখানা হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছে। দেশ বিদেশে বাজারজাত হতে শুরু হলে এখানকার টুপির কদর ও ক্রেতার চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরবর্তীতে আব্দুর রাজ্জাক ১২টি এমব্রয়ডারি মেশিন ক্রয় করে ক্ষুদ্রভাবে টুপির ব্যবসা শুরু করেন। মেসার্স ওসমান ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী আজিজনগর গ্রামের আব্দুল জলিল। সে অন্যের কারখানায় বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। ২০০১ সালে বাড়ির পাশে একটি টিনশেড পাকাঘর তুলে স্বল্প পুঁজি দিয়ে টুপির ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধির জন্য ব্র্যাক সংস্থা থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। বর্তমানে তার কারখানায় ৫টি এমব্রয়ডারি মেশিনে ৬ জন কারিগর ও ৬ জন নারী শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। আল খাইয়্যাত ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মাথাফাটা গ্রামের মো. হারুন অর রশিদ। লেখাপড়া করার ইচ্ছা থাকলেও অভাব অনটনে দশম শ্রেণীর পর আর পড়াশোনা করতে পারেননি। এরপর পাশের একটি কারখানায় টুপি তৈরির কাজ শেখেন। সেখানে শুরুতে ৮০০ টাকা বেতন হলেও পরবর্তীতে কারিগর হলে তার মাসিক বেতন হয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। সেখানে ৬ বছর থাকার পর ১২টি এমব্রয়ডারি মেশিন কিনে নিজে একটি টুপির কারখানা খোলেন। বর্তমানে তার কারখানায় ১২ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী কাজ করেন। তার কারখানা থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১৫০০ টুপি তৈরি করে বিক্রি করেন। এতে কারিগরের খরচসহ অন্যান্য খরচ বাদে ১০ হাজার টাকা মুনাফা থাকে। ওসমান ক্যাম্প টুপি কারখানায় কথা হয় কারিগর সোহেল রানার সঙ্গে। সে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে টুপি তৈরির কাজ করছেন। এ কারখানায় কাজ করে ছোট বোন ফরিদাকে ১০ হাজার খরচে বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে বাবা, মাকে নিয়ে সংসার পরিচালনা করছেন। প্রতিমাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা উপার্জন করেন। আল-ইকরা ক্যাপ কারখানায় কথা হয় নারী শ্রমিক কুলসুমের সঙ্গে। সে ২০০৮ এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেন। এরপর তেঁতুলিয়া ডিগ্রি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। কিন্তু অভাব থাকায় বাবা-মা বিয়ে দেন টুপি কারিগর আদম আলীর সঙ্গে। বর্তমানে সেখানে স্বামী স্ত্রী টুপি তৈরির কাজ করে মাসে প্রায় ১২ হাজার টাকা আয় করেন। সংসারের খরচ বাদে বাড়তি টাকা দিয়ে ১ বিঘা আবাদি জমি ক্রয় করেছেন। একইভাবে নারী শ্রমিক উম্মে কুলছুম টুপি সেলাইয়ের কাছ করেন। তার স্বামী সুরুজ মিয়া প্রায় ৭ বছর টুপি কারখানায় কারিগর হিসেবে কাজ করছেন। তারা স্বামী স্ত্রী মিলে প্রতি মাসে প্রায় ১৩ হাজার টাকা আয় করছেন। এটা দিয়ে সংসারের খরচ চালানোর পাশাপাশি বাড়তি টাকা দিয়ে দুটি গাভী কিনেছেন। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকে প্রতিমাসে ২০০ টাকা সঞ্চয় করছেন। কারখানা মালিক আব্দুল জলিল ও হারুন অর রশিদ জানান, রমজান ও ঈদ সামনে রেখে দেশ-বিদেশে টুপির চাহিদা অনেক। কিন্তু বিদ্যুতের অব্যাহত গোলযোগের কারণে স্বল্প সংখ্যক পুঁজি ও কারিগর দিয়ে বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারিভাবে স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা পেলে তৈরি টুপি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে অত্র এলাকার বেকার যুবক ও কিশোরীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারখানাগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারখানা মালিকদের বিভিন্ন ব্যাংক ও সংস্থা থেকে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেয়ার জন্য সহযোগিতা করছি। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও একজন কর্মকর্তা এসে টুপি কারখানাগুলো পরিদর্শন করে গেছেন। অদূর ভবিষ্যতে তেঁতুলিয়ার নিবিড় পল্লীতে গড়ে ওঠা টুপি শিল্প কারখানাগুলো অত্র অঞ্চলের বেকার যুবক ও নারীদের আয়বর্ধকমূলক কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বার খুলে দেবে।
No comments