ভূমিদস্যুদের কবলে নারায়ণগঞ্জ সওজের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি by বিল্লাল হোসেন রবিন
ভূমিদস্যুদের কবলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি। প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা যে যার মতো এসব জায়গা দখল করে কারখানা, বহুতল ভবন, দোকান-পাট, বিলবোর্ডসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যোগ সাজশে এ সকল সম্পত্তি বেদখল হয়েছে। ফলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাছাড়া বেদখল হয়ে যাওয়া ওইসব সম্পত্তি উদ্ধার করতে গিয়েও আইনী জটিলতাসহ নানাবিধ বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে সড়ক ও জনপথকে। তবে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের অব্যবহৃত সম্পত্তিই বেশি দখল হয়ে গেছে। এরমধ্যে যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর ৮ লেন মহাসড়কের পার্শ্বের কয়েক শত কোটি টাকার সম্পত্তি গত কয়েক বছরে দখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা। মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর অংশ সরজমিনে ঘুরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইল এলাকায় মহাসড়কের পার্শ্বে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির উপর ২০১০ সালে এসবি গ্রুপ ফ্রিজিং কোল্ড স্টোরেজ নামক একটি শিল্প কারখানা গড়ে তুলেছেন জনৈক শাহজাহান বাবলু। তিনি সরকারের প্রভাবশালী দুইজন মন্ত্রীর কাছের লোক বলে জানা গেছে। এই সম্পত্তির মূল্য বর্তমান বাজার দরে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এ সম্পত্তি ওই ব্যক্তি ইজারা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ তা অস্বীকার করে বলেছে এই ভবন অবৈধভাবে করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ও জনপথের ভূমি ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী এই ধরনের কারখানা স্থাপনের জন্য ইজারা দেয়ারও কোন বিধান নেই। দুদক এই বিষয়ে অনুসন্ধান করছে।
সাইনবোর্ড মোড়ের কয়েকশ’ মিটার পশ্চিমে ডগাইর মৌজায় মহাসড়কের উত্তর পার্শ্বে ৬০ শতাংশ জায়গা গত বছরের প্রথম দিকে দখল করে সেখানে একটি বহুতল ফাউন্ডেশন দিয়ে দোতলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করেছেন জনৈক আবুল হোসেন। ভবনটির নাম দেয়া হয়েছে ‘বরিশাল ভবন’। বাকি জায়গা (মহাসড়কের উপরসহ) লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরাও করে নিজ দখলে রেখেছেন ওই দখলদার। ভবনটির সামনে থেকে মহাসড়ক পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা ওই স্থানটিতে পুরাতন স্পিড বোড মেরামতের কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। এই সম্পত্তির মূল্য কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা। আবুল হোসেন নিজেকে একজন সংসদ সদস্য ও বিচারকের কাছের লোক হিসেবে দাবি করেন। তিনি বলেন, ভবনটি তার নিজের জায়গায়। এবং যাতায়াতের জন্য একটি প্রবেশ পথের অনুমতি নিয়েছেন। আর তার দখলীয় বাকি জায়গা যেন অন্য কেউ দখল করতে না পারে সে জন্য গ্রিল দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছেন। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ ধরনের অনুমতি তাকে দেয়া হয়নি। ভবনের জায়গাটির ৮০ ভাগই সড়ক ও জনপথের সম্পত্তি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে।
সাইনবোর্ড মোড়ে মহাসড়কের পাকা ঘেঁষে কয়েকশ’ ফুট জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে খাবারের হোটেল, টায়ারের দোকানসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এর পেছনে পুকুর ও জমিসহ ৬ একরের বেশি জায়গাও দখল করে নেয়া হয়েছে। ময়নাল নামের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা এই জায়গা দখল করেছেন। দখল করে নেয়া এই জমির দাম কমপক্ষে ১৬০ কোটি টাকা। ময়নাল দাবি করেছে সে এই জায়গা ইজারা নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তবে এখনও অনুমোদন পাননি বলে স্বীকার করেছেন। এই জায়গা সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন তার স্ত্রীর নামে ইজারা নিয়ে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দখলে রেখে সেখান থেকে মাটি বিক্রি করায় ২০০৭ সালে দুদক মামলা করেছিল। সানারপাড় থেকে মাদানীনগর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার মহাসড়কের উত্তর পার্শ্বের জলাশয় দেড় দশক ধরে অবৈধভাবে দখলে রেখে মাছ চাষ করছে শহীদুল ইসলাম। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। এই জলাশয়ের পরিমাণ কয়েক একর। মৌচাক এলাকায় মহাসড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে স্যামস ফিলিং স্টেশনের সঙ্গে প্রায় এক একর জমি দখলে নিয়ে দোকানপাট করে ব্যবসা করছে স্থানীয় কিছু লোক। তারা দুই যুগের বেশি সময় ধরে এই জমি দখল করে রেখেছেন। এই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। কাঁচপুর সেতুর পশ্চিমপার্শ্বে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা প্রায় এক একর জায়গা দখল নিয়ে বালু ও পাথরের ব্যবসা করছে স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা। ৫-৬ মাস ধরে ওই নেতা জায়গাটি দখলে নিয়েছে। গত মে মাসে ওই সীমানা প্রাচীরের কিছু অংশ দখলকারীর লোকজন ভেঙ্গে ফেলেছে। দখল হওয়া ওই সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে ৩ একর। এই জায়গার মূল্য প্রায় পৌনে ২০০ কোটি টাকা। যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের জায়গায় অনুমোদন ছাড়াই বেশ কিছু বিলবোর্ড স্থাপন করে সেগুলো ভাড়া দিচ্ছে দখলদাররা। গত বছরের ১৭ই জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে চিঠির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল মহাসড়কের পার্শ্বে অনুমোদনবিহীন স্থাপিত অবৈধ সব বিলবোর্ড ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণ করে মন্ত্রণালয়কে জানাতে। কিন্তু গত ১১ মাসে একটি বিলবোর্ডও অপসারণ করা হয়নি। সর্বশেষ গত ৫ই জুন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী শিমরাইল মোড়ে মহাসড়কের উপর স্তূপ করে রাখা আবর্জনার স্থান আকস্মিক পরিদর্শনে এসে আবারও নির্দেশ দিয়েছেন এসব অবৈধ বিল বোর্ড ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণের। কিন্তু কে শোনে কার কথা। যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর অংশে মহাসড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাবে এসব সম্পত্তি ভূমিদস্যুরা দখল করে নিচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা অনেক ক্ষেত্রে নীরব থেকে লাভবান হচ্ছেন। এমন দখলের উৎসব শুধু মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত অংশেই নয়। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতাধীন ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাঁচপুর থেকে মেঘনা-গোমতী সেতু, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কাঁচপুর থেকে নরসিংদির সীমানা, ঢাকা বাইপাস মহাসড়কের মদনপুর থেকে কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাড়, ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড (আঞ্চলিক মহাসড়ক) পর্যন্ত মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের উভয় পার্শ্বে কয়েক হাজার একর সড়ক ও জনপথের অব্যবহৃত জমি দখলদারের কবলে চলে গেছে। বহু সম্পত্তি আর এস রেকর্ড পর্যন্ত দখলদারদের নামে হয়ে গেছে। এসব সম্পত্তির মূল্য কয়েক শত কোটি টাকা। এ ছাড়াও মহাসড়কগুলোর পার্শ্বে সওজের জায়গায় রয়েছে অনুমোদন বিহীন শতাধিক বিলবোর্ড।
অবাক করার বিষয় সড়ক ও জনপথের নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতাধীন কি পরিমাণ জমি বেদখল হয়ে গেছে সেই হিসাবও তাদের কাছে নেই। শুধুমাত্র সড়ক ও মহাসড়কের পার্শ্বে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা কিছু স্থাপনা মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ করা ছাড়া অন্যগুলোর বিষয়ে কোন খোঁজ খবরই রাখেন না কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, রাজনৈতিক প্রভাব ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধা গ্রহণের বিষয়টি জড়িত রয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দখলদারেরা সওজকে বিবাদী করে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়ে দখলদারিত্ব বজায় রাখছেন। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ এ ধরনের ৫৯টি মামলার বিবাদী এখন। আদালতে সঠিকভাবে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে পারার কারণেও সরকারি সম্পত্তি বেহাত হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোশনি-এ ফাতিমা সওজের জায়গা দখল হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অনেকে জায়গা দখল করে সওজের বিরুদ্ধে মামলা করে দেয়। মামলা শেষ করে তা ফিরে পেতে অনেক জটিলতায় পড়তে হয়। তারপরও দখল হওয়া বিভিন্ন সম্পত্তি উদ্ধারে তিনি চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন।
সাইনবোর্ড মোড়ের কয়েকশ’ মিটার পশ্চিমে ডগাইর মৌজায় মহাসড়কের উত্তর পার্শ্বে ৬০ শতাংশ জায়গা গত বছরের প্রথম দিকে দখল করে সেখানে একটি বহুতল ফাউন্ডেশন দিয়ে দোতলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করেছেন জনৈক আবুল হোসেন। ভবনটির নাম দেয়া হয়েছে ‘বরিশাল ভবন’। বাকি জায়গা (মহাসড়কের উপরসহ) লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরাও করে নিজ দখলে রেখেছেন ওই দখলদার। ভবনটির সামনে থেকে মহাসড়ক পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখা ওই স্থানটিতে পুরাতন স্পিড বোড মেরামতের কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। এই সম্পত্তির মূল্য কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা। আবুল হোসেন নিজেকে একজন সংসদ সদস্য ও বিচারকের কাছের লোক হিসেবে দাবি করেন। তিনি বলেন, ভবনটি তার নিজের জায়গায়। এবং যাতায়াতের জন্য একটি প্রবেশ পথের অনুমতি নিয়েছেন। আর তার দখলীয় বাকি জায়গা যেন অন্য কেউ দখল করতে না পারে সে জন্য গ্রিল দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছেন। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ ধরনের অনুমতি তাকে দেয়া হয়নি। ভবনের জায়গাটির ৮০ ভাগই সড়ক ও জনপথের সম্পত্তি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে।
সাইনবোর্ড মোড়ে মহাসড়কের পাকা ঘেঁষে কয়েকশ’ ফুট জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে খাবারের হোটেল, টায়ারের দোকানসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এর পেছনে পুকুর ও জমিসহ ৬ একরের বেশি জায়গাও দখল করে নেয়া হয়েছে। ময়নাল নামের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা এই জায়গা দখল করেছেন। দখল করে নেয়া এই জমির দাম কমপক্ষে ১৬০ কোটি টাকা। ময়নাল দাবি করেছে সে এই জায়গা ইজারা নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তবে এখনও অনুমোদন পাননি বলে স্বীকার করেছেন। এই জায়গা সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন তার স্ত্রীর নামে ইজারা নিয়ে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দখলে রেখে সেখান থেকে মাটি বিক্রি করায় ২০০৭ সালে দুদক মামলা করেছিল। সানারপাড় থেকে মাদানীনগর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার মহাসড়কের উত্তর পার্শ্বের জলাশয় দেড় দশক ধরে অবৈধভাবে দখলে রেখে মাছ চাষ করছে শহীদুল ইসলাম। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। এই জলাশয়ের পরিমাণ কয়েক একর। মৌচাক এলাকায় মহাসড়কের দক্ষিণ পার্শ্বে স্যামস ফিলিং স্টেশনের সঙ্গে প্রায় এক একর জমি দখলে নিয়ে দোকানপাট করে ব্যবসা করছে স্থানীয় কিছু লোক। তারা দুই যুগের বেশি সময় ধরে এই জমি দখল করে রেখেছেন। এই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। কাঁচপুর সেতুর পশ্চিমপার্শ্বে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা প্রায় এক একর জায়গা দখল নিয়ে বালু ও পাথরের ব্যবসা করছে স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা। ৫-৬ মাস ধরে ওই নেতা জায়গাটি দখলে নিয়েছে। গত মে মাসে ওই সীমানা প্রাচীরের কিছু অংশ দখলকারীর লোকজন ভেঙ্গে ফেলেছে। দখল হওয়া ওই সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে ৩ একর। এই জায়গার মূল্য প্রায় পৌনে ২০০ কোটি টাকা। যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের জায়গায় অনুমোদন ছাড়াই বেশ কিছু বিলবোর্ড স্থাপন করে সেগুলো ভাড়া দিচ্ছে দখলদাররা। গত বছরের ১৭ই জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে চিঠির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল মহাসড়কের পার্শ্বে অনুমোদনবিহীন স্থাপিত অবৈধ সব বিলবোর্ড ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণ করে মন্ত্রণালয়কে জানাতে। কিন্তু গত ১১ মাসে একটি বিলবোর্ডও অপসারণ করা হয়নি। সর্বশেষ গত ৫ই জুন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী শিমরাইল মোড়ে মহাসড়কের উপর স্তূপ করে রাখা আবর্জনার স্থান আকস্মিক পরিদর্শনে এসে আবারও নির্দেশ দিয়েছেন এসব অবৈধ বিল বোর্ড ও অবৈধ স্থাপনা অপসারণের। কিন্তু কে শোনে কার কথা। যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর অংশে মহাসড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের সঠিক তদারকির অভাবে এসব সম্পত্তি ভূমিদস্যুরা দখল করে নিচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা অনেক ক্ষেত্রে নীরব থেকে লাভবান হচ্ছেন। এমন দখলের উৎসব শুধু মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত অংশেই নয়। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতাধীন ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাঁচপুর থেকে মেঘনা-গোমতী সেতু, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কাঁচপুর থেকে নরসিংদির সীমানা, ঢাকা বাইপাস মহাসড়কের মদনপুর থেকে কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাড়, ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড (আঞ্চলিক মহাসড়ক) পর্যন্ত মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের উভয় পার্শ্বে কয়েক হাজার একর সড়ক ও জনপথের অব্যবহৃত জমি দখলদারের কবলে চলে গেছে। বহু সম্পত্তি আর এস রেকর্ড পর্যন্ত দখলদারদের নামে হয়ে গেছে। এসব সম্পত্তির মূল্য কয়েক শত কোটি টাকা। এ ছাড়াও মহাসড়কগুলোর পার্শ্বে সওজের জায়গায় রয়েছে অনুমোদন বিহীন শতাধিক বিলবোর্ড।
অবাক করার বিষয় সড়ক ও জনপথের নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতাধীন কি পরিমাণ জমি বেদখল হয়ে গেছে সেই হিসাবও তাদের কাছে নেই। শুধুমাত্র সড়ক ও মহাসড়কের পার্শ্বে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা কিছু স্থাপনা মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ করা ছাড়া অন্যগুলোর বিষয়ে কোন খোঁজ খবরই রাখেন না কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, রাজনৈতিক প্রভাব ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধা গ্রহণের বিষয়টি জড়িত রয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দখলদারেরা সওজকে বিবাদী করে আদালতে মামলা ঠুকে দিয়ে দখলদারিত্ব বজায় রাখছেন। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ এ ধরনের ৫৯টি মামলার বিবাদী এখন। আদালতে সঠিকভাবে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে পারার কারণেও সরকারি সম্পত্তি বেহাত হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোশনি-এ ফাতিমা সওজের জায়গা দখল হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অনেকে জায়গা দখল করে সওজের বিরুদ্ধে মামলা করে দেয়। মামলা শেষ করে তা ফিরে পেতে অনেক জটিলতায় পড়তে হয়। তারপরও দখল হওয়া বিভিন্ন সম্পত্তি উদ্ধারে তিনি চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন।
No comments