চট্টগ্রামে বিলবোর্ড উচ্ছেদে যুবলীগের বাধা, গুলির হুমকি, প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া
চট্টগ্রামে বিলবোর্ড উচ্ছেদ করতে গিয়ে সরকারদলীয় যুবলীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে সিটি করপোরেশনের এক মহিলা ম্যাজিস্ট্রেটকে। এ সময় তাকে লাঞ্ছিত করার জন্য এগিয়ে যান স্থানীয় কয়েকজন। একপর্যায়ে মহানগর শাখার এক নেতা পিস্তল বের করে বিলবোর্ডে হাত না দেয়ার জন্য প্রতিপক্ষের কয়েকজন সদস্য ও পুলিশদের হুমকি দেন। গতকাল দুপুরে নগরীর টাইগারপাস মোড় এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ। তাকে প্রকাশ্যে পিস্তল নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটকে কাজে বাধা দেয় টাইগার পাস এলাকার যুবলীগ কর্মী শাহীন আলম, সোহাগ, মোহাম্মদ আলী নামের বেশ কয়েকজন। জানা গেছে, সকাল ১১টায় টাইগার পাস এলাকার বেশ কিছু অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদ শুরু করলে দলবল নিয়ে সেখানে হাজির হন যুবলীগের কর্মীরা। এ সময় তাদের একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন, সব বিলবোর্ডের অনুমোদন আছে। খামাখা ঝামেলা করলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে। জবাবে ম্যাজিস্ট্রেট নাজিয়া শিরিন বলেন, যেসব বিলবোর্ড অবৈধ ও আমাদের করপোরেশনের বাইরে সেগুলোই আমরা উচ্ছেদ করার কাজে নেমেছি। কোন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে লাভ নেই। তার এ কথা শুনে বেশ কয়েকজন যুবলীগ কর্মী লাঠিসোটা হাতে তেড়ে এলে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ তখন তাদের দমানোর চেষ্টা করলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাধা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিয়া শিরিন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় কিছু ছেলেপেলে এমনভাবে তেড়ে এলো যে তাদের কিছুতেই দমানো যাচ্ছিল না। তাদের আচরণ দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। পরে আমি উচ্ছেদ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করি। তিনি আরও বলেন, বারবারই ওরা বলছিল বিলবোর্ডের নাকি অনুমোদন আছে। আমি এ ব্যাপারে কাগজপত্র দেখাতে বললে ওরা কোন জবাব না দিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী গাড়িচালক আবদুস সাত্তার বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পর ওরা নিজেরাই গ্রুপিং রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে। এর আগে ফরিদ নামের একজন পিস্তল নিয়ে শোডাউন করেছেন। তিনি গুলি করবেন বলে কিছু লোকজনকে বলেছিলেন। তারা নাকি ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তা করছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল সন্ধ্যায় কথা হয় নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদের সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমার পিস্তলের লাইসেন্স আছে। কোন ভেজাল নেই। প্রয়োজনে কাগজপত্র দেখাতে পারবো। দুপুরে আপনারা যা দেখেছেন তার একাংশ সত্যি। তিনি বলেন, পিস্তলটি কিনেছি ভয় দেখাতে। কাউকে গুলি করতে নয়। কিছুদিন আগে আমার বাসায় এসে লালখান বাজারের এক ব্যক্তি জীবন নেয়ার হুমকি দিয়ে গেছে। পরে নেতাকর্মীদের অনুরোধে পিস্তলটি কিনে এনেছি।
No comments