লালবাগ কেল্লায় নির্মাণকাজ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
লালবাগ কেল্লার প্রাচীর ভেঙে গাড়ি রাখার জায়গা তৈরি করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। ২৬ জুন তোলা ছবি । ছবি : সাজিদ হোসেন |
রাজধানী
ঢাকার মোগল স্থাপত্যের নিদর্শন লালবাগ কেল্লার দেয়াল ভেঙে গাড়ি রাখার
স্থান তৈরির কাজ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একটি
রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু
তাহের মো. সাইফুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আজ রোববার আদালতে আবেদনটি জমা দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। শুনানি শেষে তিনি বলেন, আদালত রুল জারি করেছেন। কেন এই জায়গা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে আদালত রুল দিয়েছেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, লালবাগ দুর্গের কিউরেটর, সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব ও লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন গত বৃহস্পতিবার সকালে লালবাগ কেল্লা পরিদর্শন করে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তাঁরা গিয়ে দেখেন, রাজধানী ঢাকার মোগল স্থাপত্যের নিদর্শন লালবাগ কেল্লার উত্তর-পশ্চিম দিকের দেয়াল ভেঙে ভেতরে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। আর এ কাজের ঠিকাদারি পেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক এক নেতা।
এ ঘটনা জানার পর পরিবেশবাদী নেতারা বলছেন, এভাবে দেয়াল ভেঙে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করে লালবাগ কেল্লার মতো পুরাকীর্তিকে ধ্বংস করা হচ্ছে, যা ১৯৬৮ সালের পুরাকীর্তি আইনের পরিপন্থী।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্র জানায়, যেখানে গাড়ি রাখার জায়গা তৈরি করা হচ্ছে, সেখানকার বেশ কিছু অংশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ স্থাপনা ছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৪ মে ওই স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ওই বছরই সেখানে গাড়ি রাখার জায়গা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। গত ৭ মে মইনুল হক হাসান নামের একজন এ কাজের ঠিকাদারি পান। বালু, ইট প্রভৃতি আনা-নেওয়ার জন্য ভাঙা হয় দেয়াল।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান পবা, প্রত্যাশা, গ্রিন ফাইন্ড সোসাইটিসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা দেয়াল ভেঙে কেল্লার ভেতরে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে সন্ধ্যায় পবার পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রভাবশালী মহলের প্ররোচনায় গাড়ি রাখার জায়গা করা হচ্ছে। অবিলম্বে এ কাজ বন্ধ করে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ওই দিন দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ১০ ফুটের মতো জায়গা নিয়ে দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভেতরে মাটিতে সারি সারি ইট বিছিয়ে যাচ্ছেন চার-পাঁচজন শ্রমিক।
যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার মইনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ঠিকাদারি ব্যবসাও করেন। লালবাগ কেল্লার দরপত্রে অংশগ্রহণ করলে তিনি কাজ পান। ওই দেয়ালটি পুরাকীর্তির অংশ নয়। তিনি অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়েই দেয়াল ভেঙেছেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন লালবাগ কেল্লার কাস্টডিয়ান সুলতানা জাকিয়া বেদৌরা প্রথম আলোকে বলেন, ওই দেয়ালটি পুরাকীর্তির অংশ নয়। স্বাধীনতার পর তা তৈরি করা হয়েছে। তাই দেয়াল ভেঙে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করে পুরাকীর্তি ধ্বংস করার কথাটি সত্য নয়।
তবে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেয়ালটি স্বাধীনতার পরে তৈরির বিষয়টি বড় কথা নয়। দেয়াল ও কেল্লার ভেতরের অংশ—সবকিছু মিলেই আমাদের ঐতিহ্য। এগুলো যেভাবে আছে, যত দূর সম্ভব সেভাবেই রাখা উচিত। ভেতরে গাড়ি ঢুকলে শব্দ-ধোঁয়ায় কেল্লার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। এতে প্রত্নতাত্ত্বিক সৌন্দর্য নষ্ট হবে। অধিদপ্তরের উচিত অন্য কোথাও গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অস্থায়ীভাবে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করছি। আশপাশে স্থায়ীভাবে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করা গেলে তা সরিয়ে নেওয়া হবে।’
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আজ রোববার আদালতে আবেদনটি জমা দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। শুনানি শেষে তিনি বলেন, আদালত রুল জারি করেছেন। কেন এই জায়গা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে আদালত রুল দিয়েছেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, লালবাগ দুর্গের কিউরেটর, সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব ও লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
পরিবেশবাদী কয়েকটি সংগঠন গত বৃহস্পতিবার সকালে লালবাগ কেল্লা পরিদর্শন করে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তাঁরা গিয়ে দেখেন, রাজধানী ঢাকার মোগল স্থাপত্যের নিদর্শন লালবাগ কেল্লার উত্তর-পশ্চিম দিকের দেয়াল ভেঙে ভেতরে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। আর এ কাজের ঠিকাদারি পেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক এক নেতা।
এ ঘটনা জানার পর পরিবেশবাদী নেতারা বলছেন, এভাবে দেয়াল ভেঙে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করে লালবাগ কেল্লার মতো পুরাকীর্তিকে ধ্বংস করা হচ্ছে, যা ১৯৬৮ সালের পুরাকীর্তি আইনের পরিপন্থী।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্র জানায়, যেখানে গাড়ি রাখার জায়গা তৈরি করা হচ্ছে, সেখানকার বেশ কিছু অংশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ স্থাপনা ছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৪ মে ওই স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। ওই বছরই সেখানে গাড়ি রাখার জায়গা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। গত ৭ মে মইনুল হক হাসান নামের একজন এ কাজের ঠিকাদারি পান। বালু, ইট প্রভৃতি আনা-নেওয়ার জন্য ভাঙা হয় দেয়াল।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান পবা, প্রত্যাশা, গ্রিন ফাইন্ড সোসাইটিসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা দেয়াল ভেঙে কেল্লার ভেতরে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে সন্ধ্যায় পবার পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রভাবশালী মহলের প্ররোচনায় গাড়ি রাখার জায়গা করা হচ্ছে। অবিলম্বে এ কাজ বন্ধ করে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ওই দিন দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ১০ ফুটের মতো জায়গা নিয়ে দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভেতরে মাটিতে সারি সারি ইট বিছিয়ে যাচ্ছেন চার-পাঁচজন শ্রমিক।
যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার মইনুল হক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ঠিকাদারি ব্যবসাও করেন। লালবাগ কেল্লার দরপত্রে অংশগ্রহণ করলে তিনি কাজ পান। ওই দেয়ালটি পুরাকীর্তির অংশ নয়। তিনি অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়েই দেয়াল ভেঙেছেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন লালবাগ কেল্লার কাস্টডিয়ান সুলতানা জাকিয়া বেদৌরা প্রথম আলোকে বলেন, ওই দেয়ালটি পুরাকীর্তির অংশ নয়। স্বাধীনতার পর তা তৈরি করা হয়েছে। তাই দেয়াল ভেঙে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করে পুরাকীর্তি ধ্বংস করার কথাটি সত্য নয়।
তবে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেয়ালটি স্বাধীনতার পরে তৈরির বিষয়টি বড় কথা নয়। দেয়াল ও কেল্লার ভেতরের অংশ—সবকিছু মিলেই আমাদের ঐতিহ্য। এগুলো যেভাবে আছে, যত দূর সম্ভব সেভাবেই রাখা উচিত। ভেতরে গাড়ি ঢুকলে শব্দ-ধোঁয়ায় কেল্লার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। এতে প্রত্নতাত্ত্বিক সৌন্দর্য নষ্ট হবে। অধিদপ্তরের উচিত অন্য কোথাও গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অস্থায়ীভাবে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করছি। আশপাশে স্থায়ীভাবে গাড়ি রাখার স্থান তৈরি করা গেলে তা সরিয়ে নেওয়া হবে।’
No comments