ঈদের কেনাকাটা- দেশি পোশাকের চাহিদাই বেশি by মানসুরা হুসাইন
ঈদের বাজার জমে উঠছে। গতকাল রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে বুটিক শপে কেনাকাটা l প্রথম আলো |
মালয়েশিয়ার
সারাওয়াক অঞ্চলের আদিবাসীদের ব্যবহার করা পাটির নকশার অনুপ্রেরণায় শাড়ির
নকশা করেছেন ডিজাইনার চন্দ্র শেখর সাহা। ডোংগা কাপড়, ভিটি শাড়ি, গরদ শাড়ি,
আলিবালি, আব-ই রওয়ান, নয়নসুখসহ অসংখ্য শাড়ির নাম দিয়ে ডিজাইন করা শাড়ি
‘শাড়ির যত নাম’। শিল্পী হাশেম খানের নকশায় করা পাখপাখালি ছাড়াও বিভিন্ন
শিল্পীর নকশায় বানানো রূপ-অপরূপ, উয়ারী-বটেশ্বর, পুষ্প অরণ্য, জননী-২,
মন-ময়ূরী, আনন্দধারা ও জামদানি শাড়িগুলো হ্যাঙ্গারে ঝুলছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নূরজাহান রোডে নিত্য উপহারের কারখানার সঙ্গেই লাগোয়া শোরুমটি এভাবেই বাহারি নামের শাড়ি ও অন্যান্য পোশাক নিয়ে ঈদবাজারের ক্রেতাদের জন্য সেজেছে। এখানকার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত তাহমিদুল আলম গর্বিত ভঙ্গিতেই বললেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে টার্গেট করে বানানো শাড়ি, টি-শার্ট, পাঞ্জাবিসহ আমাদের সব আয়োজন পুরোপুরি দেশি। শুধু ঈদ নয়, সারা বছরই আমাদের পোশাকের কদর থাকে।’
নূরজাহান রোডেই খোরশেদ আলম ও আফসানা হোসেন স্বামী-স্ত্রী মিলে বাটিক, ভেজিটেবল ডাইয়ের থ্রিপিস, ওড়না, বিছানার চাদরসহ বিভিন্ন পোশাক বিক্রি করছেন। বাসার খানিকটা জায়গাতেই তাঁরা গড়ে তুলেছেন এ ব্যবসা।
ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে খোরশেদ আলম কয়েকটি জয়পুরী প্রিন্টের থ্রিপিস ঝুলিয়ে রেখেছেন। তবে সেগুলো তিনি কেনেন সৈয়দপুর থেকে। তাই এগুলো আসলেই ভারতের জয়পুর থেকে আসা কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলের ক্রেতা, বিক্রেতা, নকশাবিদ এবং দেশীয় ফ্যাশন হাউসের কর্ণধারেরা জানালেন, এবার ঈদে ক্রেতাদের দেশীয় পোশাক কেনার আগ্রহের মাত্রা বেড়েছে। একই সঙ্গে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের জাঁকজমকপূর্ণ পোশাকের এক শ্রেণির ক্রেতার দেখা পাওয়া যাচ্ছে ঈদবাজারে।
দেশি ফ্যাশন হাউস সাদা-কালোর চেয়ারপারসন এবং প্রধান নকশাবিদ তাহসীনা শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে কিছু ক্রেতা থাকেন, যাঁরা হয়তো ৫০ বা ৬০ হাজার টাকা দিয়ে একটি লেহেঙ্গা কেনেন। এ ধরনের ক্রেতার সংখ্যা কম। প্রতি ঈদেই ক্রেতাদের দেশীয় পোশাকের প্রতি পছন্দের মাত্রাটা একটু একটু করে বাড়ছে। এবারও বেড়েছে। তাই বলা যায়, ভারত বা বিদেশি পোশাকের দাপট থাকলে দেশীয় পোশাকের চাহিদা থেমে যেত। তা না হয়ে এ চাহিদা বাড়ছেই।’
সাদা-কালো প্রতিবারের মতো এবারও যুগল পোশাক, বাবা, মা ও ছেলে-মেয়ের জন্য একই ধরনের পোশাক তৈরি করেছে।
ঈদবাজারে কোন পোশাক প্রাধান্য পাচ্ছে, জানতে চাইলে গ্রিন রোডের বাসিন্দা শিমু ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশি পোশাক দেখেছি। কিন্তু ভালো লাগে নাই। সব পোশাক দেখতে কেমন যেন একই রকম। তাই নিজের এবং মেয়ে লামিয়ার জন্য পোশাক যেগুলো কিনেছি, সবই দেশি। শাড়িও কিনেছি দেশি।’
গতকাল রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলে দেখা যায়, সেখানকার ‘দেশী দশ’-এ ক্রেতাদের ভিড় বেশি। ‘সৃষ্টি’ নামের ফ্যাশন হাউসের বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, ‘শুক্রবার বৃষ্টির মধ্যেও সৃষ্টিতে দুই লাখ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি হয়েছে। আজ আরও বেশি বিক্রি হবে।’
স্টার ওয়ার্ল্ড দোকানের ব্যবস্থাপক কালাম বলেন, ‘ঈদের বিক্রি শুরু হয়নি। ভারতের বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়িকা বা মডেলরা যে পোশাক পরেন, তাঁদের নামেই পোশাকের নাম দিই। আমরা পরিস্থিতির শিকার। ক্রেতা আইস্যা চায় পাখি বা অন্য কোনো নামের ড্রেস। ক্রেতার চাহিদা বুঝে সামনে যে পোশাক থাকে, তার সে নাম দিই। তবে এইবার পাখিটাখি নামের কোনো পোশাক আসেনি বা অন্য বিক্রেতারা সেভাবে নাম দেন নাই। আমার মতে, নাম না থাকায় ভালো হইছে। এতে বিভ্রান্তি বাড়ে।’ এ দোকানে ফ্লোর টাচ, গাউনসহ বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে।
একটি দোকানে ৬০ হাজার টাকার লেহেঙ্গা দেখে ক্রেতা বের হয়ে যাচ্ছিলেন। বিক্রেতা বললেন, ‘আপা আসেন, আমাদের এখানে এর কম দামেও লেহেঙ্গা আছে।’ তবে ক্রেতা আর সেমুখো হলেন না।
দেশি ফ্যাশন হাউস রঙ-এর কর্ণধার বিপ্লব সাহা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘গণমাধ্যমগুলো ঈদ এলেই ঝলমলে বিদেশি পোশাক নিয়ে প্রতিবেদন করে। ছবি দেয়। কিন্তু আমরা দেশি ফ্যাশন হাউসগুলো যে কী ধরনের অবর্ণনীয় কষ্ট এবং সরকারের কোনো ধরনের সহযোগিতা ছাড়াই টিকে থাকার সংগ্রাম করছি, তা কেউ লেখে না। বিদেশি পোশাককে নিয়ন্ত্রণের জন্য নেই কোনো নীতিমালা। দেশি পোশাক কিনতে উৎসাহিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা বলতে গেলে কিছুই নেই। গত পাঁচ বছরে দেশে অসংখ্য ফ্যাশন হাউস গড়ে উঠেছে। ঈদ বা যেকোনো উৎসব সামনে রেখে তারা বিদেশি কাপড় দিয়ে দোকান ভরে ফেলছে। তা দেখার কেউ নেই।’
গতকাল রাজধানীতে সারা দিনই ছিল বৃষ্টি। রাস্তার জ্যাম, যানবাহন না পাওয়ার বিড়ম্বনা তো ছিলই। ঈদবাজারের বিক্রেতারাও বেরসিক বৃষ্টির ওপর ছিলেন বেজায় নাখোশ।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নূরজাহান রোডে নিত্য উপহারের কারখানার সঙ্গেই লাগোয়া শোরুমটি এভাবেই বাহারি নামের শাড়ি ও অন্যান্য পোশাক নিয়ে ঈদবাজারের ক্রেতাদের জন্য সেজেছে। এখানকার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত তাহমিদুল আলম গর্বিত ভঙ্গিতেই বললেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে টার্গেট করে বানানো শাড়ি, টি-শার্ট, পাঞ্জাবিসহ আমাদের সব আয়োজন পুরোপুরি দেশি। শুধু ঈদ নয়, সারা বছরই আমাদের পোশাকের কদর থাকে।’
নূরজাহান রোডেই খোরশেদ আলম ও আফসানা হোসেন স্বামী-স্ত্রী মিলে বাটিক, ভেজিটেবল ডাইয়ের থ্রিপিস, ওড়না, বিছানার চাদরসহ বিভিন্ন পোশাক বিক্রি করছেন। বাসার খানিকটা জায়গাতেই তাঁরা গড়ে তুলেছেন এ ব্যবসা।
ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে খোরশেদ আলম কয়েকটি জয়পুরী প্রিন্টের থ্রিপিস ঝুলিয়ে রেখেছেন। তবে সেগুলো তিনি কেনেন সৈয়দপুর থেকে। তাই এগুলো আসলেই ভারতের জয়পুর থেকে আসা কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলের ক্রেতা, বিক্রেতা, নকশাবিদ এবং দেশীয় ফ্যাশন হাউসের কর্ণধারেরা জানালেন, এবার ঈদে ক্রেতাদের দেশীয় পোশাক কেনার আগ্রহের মাত্রা বেড়েছে। একই সঙ্গে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের জাঁকজমকপূর্ণ পোশাকের এক শ্রেণির ক্রেতার দেখা পাওয়া যাচ্ছে ঈদবাজারে।
দেশি ফ্যাশন হাউস সাদা-কালোর চেয়ারপারসন এবং প্রধান নকশাবিদ তাহসীনা শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে কিছু ক্রেতা থাকেন, যাঁরা হয়তো ৫০ বা ৬০ হাজার টাকা দিয়ে একটি লেহেঙ্গা কেনেন। এ ধরনের ক্রেতার সংখ্যা কম। প্রতি ঈদেই ক্রেতাদের দেশীয় পোশাকের প্রতি পছন্দের মাত্রাটা একটু একটু করে বাড়ছে। এবারও বেড়েছে। তাই বলা যায়, ভারত বা বিদেশি পোশাকের দাপট থাকলে দেশীয় পোশাকের চাহিদা থেমে যেত। তা না হয়ে এ চাহিদা বাড়ছেই।’
সাদা-কালো প্রতিবারের মতো এবারও যুগল পোশাক, বাবা, মা ও ছেলে-মেয়ের জন্য একই ধরনের পোশাক তৈরি করেছে।
ঈদবাজারে কোন পোশাক প্রাধান্য পাচ্ছে, জানতে চাইলে গ্রিন রোডের বাসিন্দা শিমু ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশি পোশাক দেখেছি। কিন্তু ভালো লাগে নাই। সব পোশাক দেখতে কেমন যেন একই রকম। তাই নিজের এবং মেয়ে লামিয়ার জন্য পোশাক যেগুলো কিনেছি, সবই দেশি। শাড়িও কিনেছি দেশি।’
গতকাল রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলে দেখা যায়, সেখানকার ‘দেশী দশ’-এ ক্রেতাদের ভিড় বেশি। ‘সৃষ্টি’ নামের ফ্যাশন হাউসের বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, ‘শুক্রবার বৃষ্টির মধ্যেও সৃষ্টিতে দুই লাখ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি হয়েছে। আজ আরও বেশি বিক্রি হবে।’
স্টার ওয়ার্ল্ড দোকানের ব্যবস্থাপক কালাম বলেন, ‘ঈদের বিক্রি শুরু হয়নি। ভারতের বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়িকা বা মডেলরা যে পোশাক পরেন, তাঁদের নামেই পোশাকের নাম দিই। আমরা পরিস্থিতির শিকার। ক্রেতা আইস্যা চায় পাখি বা অন্য কোনো নামের ড্রেস। ক্রেতার চাহিদা বুঝে সামনে যে পোশাক থাকে, তার সে নাম দিই। তবে এইবার পাখিটাখি নামের কোনো পোশাক আসেনি বা অন্য বিক্রেতারা সেভাবে নাম দেন নাই। আমার মতে, নাম না থাকায় ভালো হইছে। এতে বিভ্রান্তি বাড়ে।’ এ দোকানে ফ্লোর টাচ, গাউনসহ বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে।
একটি দোকানে ৬০ হাজার টাকার লেহেঙ্গা দেখে ক্রেতা বের হয়ে যাচ্ছিলেন। বিক্রেতা বললেন, ‘আপা আসেন, আমাদের এখানে এর কম দামেও লেহেঙ্গা আছে।’ তবে ক্রেতা আর সেমুখো হলেন না।
দেশি ফ্যাশন হাউস রঙ-এর কর্ণধার বিপ্লব সাহা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘গণমাধ্যমগুলো ঈদ এলেই ঝলমলে বিদেশি পোশাক নিয়ে প্রতিবেদন করে। ছবি দেয়। কিন্তু আমরা দেশি ফ্যাশন হাউসগুলো যে কী ধরনের অবর্ণনীয় কষ্ট এবং সরকারের কোনো ধরনের সহযোগিতা ছাড়াই টিকে থাকার সংগ্রাম করছি, তা কেউ লেখে না। বিদেশি পোশাককে নিয়ন্ত্রণের জন্য নেই কোনো নীতিমালা। দেশি পোশাক কিনতে উৎসাহিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা বলতে গেলে কিছুই নেই। গত পাঁচ বছরে দেশে অসংখ্য ফ্যাশন হাউস গড়ে উঠেছে। ঈদ বা যেকোনো উৎসব সামনে রেখে তারা বিদেশি কাপড় দিয়ে দোকান ভরে ফেলছে। তা দেখার কেউ নেই।’
গতকাল রাজধানীতে সারা দিনই ছিল বৃষ্টি। রাস্তার জ্যাম, যানবাহন না পাওয়ার বিড়ম্বনা তো ছিলই। ঈদবাজারের বিক্রেতারাও বেরসিক বৃষ্টির ওপর ছিলেন বেজায় নাখোশ।
No comments