শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট
শ্রীলঙ্কার
পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। একই সঙ্গে
ঘোষণা দিয়েছেন আগামী আগষ্টে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন। তিনি রাজনীতিতে
সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারই অংশ হিসেবে এ নির্বাচন আয়োজন করা
হচ্ছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাতে তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার নোটিশ
জারি করেন। এতে ঘোষণা দেয়া হয় যে ২২৫ আসনের পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে ২৭শে
আগস্ট। এ বছরের জানুয়ারিতে মাহিন্দ রাজাপাকসের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন সিরিসেনা। এ সময়ে তিনি দেশের
রাজনীতিতে ব্যাপক সংস্কার আনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু পরে যখন তা বাস্তবায়ন
করতে গেলেন তখন এমপিদের বাধার মুখে পড়েন তিনি। সংস্কারের মধ্যে রয়েছে
প্রেসিডেন্টে ক্ষমতা কমানো এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার পরিবর্তন। ভেঙে দেয়া
পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপি ছিলেন ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম এলায়েন্স-এর।
পরাজয়ের আগে পর্যন্ত এর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মাহিন্দ রাজাপাকসে। তার প্রতি
অনুগত এমপিরা নতুন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাকে সমর্থন করবেন, তার সঙ্গে সংহতি
প্রকাশ করে কাজ করবেন এমনটা ভাবাও ঠিক নয়। কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে তাদের
বাধায় বার বারই সিরিসেনা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হন। তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে
গৃহযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে যে যুদ্ধ অপরাধের অভিযোগ উঠেছে তার একটি
আভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান করার কথা। সিরিসেনা আশা করছেন, নতুন পার্লামেন্ট তাতে
সহযোগিতা করবে। এ অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘ তদন্ত করেছে। সে রিপোর্ট প্রকাশ গত
মার্চে মুলতবি করান। কিন্তু আগামী সেপ্টেম্বরে ওই রিপোর্ট প্রকাশ করার কথা
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার। ওই রিপোর্ট প্রকাশের আগেই আগস্টে
জাতীয় নির্বাচন দিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। যদি সত্যিই জাতিসংঘ ওই
রিপোর্ট প্রকাশ করে দেয় তাহলে সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ রাজাপাকসের
ক্ষমতায় থাকার সুযোগ সীমিত হয়ে যেতে পারে। দেশের সিংহলি সম্প্রদায়ের কাছে
ব্যাপক জনপ্রিয়তা মাহিন্দ রাজাপাকসের। এই সম্প্রদায়টি শ্রীলঙ্কার ঘটনায়
আন্তর্জাতিক মহলের সংশ্লিষ্টতার বিরোধিতা করে। তিন যুগের বেশি সময় চলমান
গৃহযুদ্ধ তিনি শেষ করে দিতে পেরেছেন বলে সিংহলিরা তাকে বীরের মতো সম্মান
করে।
No comments