ফ্ল্যাট বাসায় জাল টাকার ‘টাকশাল’- ঈদে ১০ কোটি টাকার জাল নোট তৈরির পরিকল্পনা ছিল
আবদুর
রহিম শেখের বাড়ি পিরোজপুর। ঢাকায় এসে ট্রাকের হেলপারের কাজ শুরু করেছিল
সে। এরমধ্যেই পরিচয় হয় জাল টাকার কারিগর হুমায়ুনের সঙ্গে। এই পরিচয়টাই তাকে
নিয়ে যায় অন্ধকার জগতে। অল্প সময়ে বিত্তশালী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয় আবদুর
রহিম। হুমায়ুনের পরামর্শেই জাল টাকার বাণিজ্য শুরু করে সে। আয়ত্ত করে জাল
টাকা তৈরি করার কৌশলও। জাল টাকার কারিগর আবদুর রহিম তার দুই স্ত্রীকে নিয়ে
গড়ে তোলে একটি চক্র। রাজধানীতে ফ্ল্যাট ভাড়া করে গড়ে তোলে জাল টাকার
টাকশাল। দেশের বিভিন্নপ্রান্তে নিয়োগ দেয়া হয় জাল টাকা বাণিজ্যের এজেন্ট।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি রহিমের। রোববার জাল টাকা তৈরি চক্রের মূল হোতা আবদুর
রহিম শেখ ও তার দুই স্ত্রীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। সকালে
রাজধানীর বনশ্রীর ১৬ নম্বর সড়কের কে ব্লকের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে তাদের
গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ এক কোটি চার লাখ ৮০ হাজার জাল টাকা, ১১টি টাকা তৈরির স্ক্রীন, তিনটি বোর্ড, দুটি বিশেষ ডট কালার প্রিন্টার, দুটি ল্যাপটপ, চার রোল টাকার ভেতরের নিরাপত্তা সুতার ফয়েল, দুই কৌটা জলছাপে ব্যবহৃত আইপিআই প্রিন্টিং কালি, ২০০টি প্রিন্টারের কার্টিজ, এক বোতল রেডোসার কেমিক্যাল, আট রিম টাকা তৈরিতে ব্যবহৃত কাগজ, একটি স্ক্যানার, একটি লেমিনেটিং মেশিন এবং দুটি টাকা কাটিং গ্লাস উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও তাদের কাছ থেকে ভারতীয় রুপীর নিরাপত্তা সুতা সম্বলিত ফয়েল জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হচ্ছে, আবদুর রহিমের প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৪) ও দ্বিতীয় স্ত্রী রুবিনা খাতুন (১৯) এবং দুই সহযোগী মোহাম্মদ আসাদ (২২) ও তাজিম হোসেন (২৬)। এ উপলক্ষে গতকাল দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান. এ চক্রটির কাছ থেকে যে পরিমাণ জাল নোট তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে তা দিয়ে আরও ১০ কোটি টাকা তৈরি সম্ভব। সেই পরিমাণ জাল টাকা তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করছিল তারা। এমনকি ঈদের পর থেকে ভারতীয় জাল রুপী তৈরির পরিকল্পনাও ছিল তাদের।
তিনি বলেন, আবদুর রহিম শেখ ২০০৩ সালে পিরোজপুর হতে ঢাকায় আসে এবং তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে হেলপার হিসেবে শুরু কাজ করে। পরবর্তীতে সে ২০০৮ সালে সেখানে কর্মরত অবস্থায় অসাধু জাল টাকা তৈরি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ওই চক্রটি মোহাম্মদপুরের জাল টাকা তৈরির কারিগর ও চক্রের মূল হোতা হুমায়ুন দ্বারা পরিচালিত হতো। আবদুর রহিম শেখ ওই চক্রের কাছ থেকে জাল টাকা সংগ্রহ করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করতো। ইতিমধ্যেই রহিম শেখ উক্ত চক্রের মূল হোতা হুমায়ুনের সান্নিধ্যে থেকে তার আস্থা অর্জন করে জাল টাকা তৈরির সকল প্রকার কারিগরী বিদ্যা হাতে কলমে শিখে নেয়। এরপর রহিম নিজেই ল্যাপটপ ও প্রিন্টার কিনে ঢাকার বনশ্রী আবাসিক এলাকায় নিরিবিলি একটি ফ্যাট ভাড়া করে জাল টাকা তৈরির রমরমা ব্যবসা শুরু করে। এ কাজে রহিম তার উভয় স্ত্রীকে নিয়োগ করে এবং প্রায়ই গ্রামের বাড়ি থেকে নিকট স্বজনদের মধ্যে থেকে মহিলা নিয়ে এসে উক্ত কাজে নিয়োগ করতো।
জাল টাকা তৈরির বিবরণ দিতে গিয়ে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিম জানিয়েছে টাকা তৈরির জন্য প্রথমে টিস্যু কাগজের এক পার্শ্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি স্ক্রিনের নিচে রেখে গাম দিয়ে ছাপ দিতো। এরপর ৫০০ ও ১০০০ লেখা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের ছাপ দিতো। অতপর অপর একটি টিস্যু পেপার নিয়ে তার সঙ্গে ফয়েল পেপার থেকে টাকার পরিমাপ অনুযায়ী নিরাপত্তা সুতা কেটে তাতে লাগিয়ে সেই টিস্যুটি ইতিপূর্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি জলছাপ দেয়া টিস্যু পেপারের সঙ্গে গাম দিয়ে সংযুক্ত করে দিতো। এভাবে টিস্যু পেপার প্রস্তুত করে বিশেষ ডট কালার প্রিন্টারের মাধ্যমে ল্যাপটপে সেইভ করা টাকার ছাপ অনুযায়ী প্রিন্ট করা হতো।
তিনি জানান, ওই টিস্যু পেপারের উভয় সাইট প্রিন্ট করা হতো এবং প্রতিটি টিস্যু পেপারে মোট চারটি জাল টাকার নোট প্রিন্ট করা হতো। এরপর প্রিন্টকৃত টিস্যু পেপারগুলো কাটিং গ্লাসের উপরে রেখে নিখুঁতভাবে কাটিং করা হতো। পরবর্তীতে কাটিংকৃত জাল টাকাগুলো বিশেষভাবে বান্ডিল করে আসাদ ও তাজিম হোসেনসহ আরও পাঁচ-ছয় জনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। র্যাব সূত্র জানায়, এ চক্রটি জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত টিস্যু কাগজ ঢাকার বাবু বাজার হতে, টাকার ভেতরের নিরাপত্তা সুতার ফয়েল চকবাজার, স্ক্রিন ও বোর্ড মালিটোলা, রেডোসার কেমিক্যাল মালিটোলা ও আইপিআই প্রিন্টার কালি পল্টন থেকে সংগ্রহ করতো।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে জাল টাকা তৈরি চক্রটির তৎপরতা অতিমাত্রায় বেড়ে যায়। তাই র্যাবের গোয়েন্দা দল এ চক্রকে শনাক্তে তদন্তে নামে। তারই ধারাবাহিকতায় ওই ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ এক কোটি চার লাখ ৮০ হাজার জাল টাকা, ১১টি টাকা তৈরির স্ক্রীন, তিনটি বোর্ড, দুটি বিশেষ ডট কালার প্রিন্টার, দুটি ল্যাপটপ, চার রোল টাকার ভেতরের নিরাপত্তা সুতার ফয়েল, দুই কৌটা জলছাপে ব্যবহৃত আইপিআই প্রিন্টিং কালি, ২০০টি প্রিন্টারের কার্টিজ, এক বোতল রেডোসার কেমিক্যাল, আট রিম টাকা তৈরিতে ব্যবহৃত কাগজ, একটি স্ক্যানার, একটি লেমিনেটিং মেশিন এবং দুটি টাকা কাটিং গ্লাস উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও তাদের কাছ থেকে ভারতীয় রুপীর নিরাপত্তা সুতা সম্বলিত ফয়েল জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হচ্ছে, আবদুর রহিমের প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৪) ও দ্বিতীয় স্ত্রী রুবিনা খাতুন (১৯) এবং দুই সহযোগী মোহাম্মদ আসাদ (২২) ও তাজিম হোসেন (২৬)। এ উপলক্ষে গতকাল দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান. এ চক্রটির কাছ থেকে যে পরিমাণ জাল নোট তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে তা দিয়ে আরও ১০ কোটি টাকা তৈরি সম্ভব। সেই পরিমাণ জাল টাকা তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করছিল তারা। এমনকি ঈদের পর থেকে ভারতীয় জাল রুপী তৈরির পরিকল্পনাও ছিল তাদের।
তিনি বলেন, আবদুর রহিম শেখ ২০০৩ সালে পিরোজপুর হতে ঢাকায় আসে এবং তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডে হেলপার হিসেবে শুরু কাজ করে। পরবর্তীতে সে ২০০৮ সালে সেখানে কর্মরত অবস্থায় অসাধু জাল টাকা তৈরি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ওই চক্রটি মোহাম্মদপুরের জাল টাকা তৈরির কারিগর ও চক্রের মূল হোতা হুমায়ুন দ্বারা পরিচালিত হতো। আবদুর রহিম শেখ ওই চক্রের কাছ থেকে জাল টাকা সংগ্রহ করে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করতো। ইতিমধ্যেই রহিম শেখ উক্ত চক্রের মূল হোতা হুমায়ুনের সান্নিধ্যে থেকে তার আস্থা অর্জন করে জাল টাকা তৈরির সকল প্রকার কারিগরী বিদ্যা হাতে কলমে শিখে নেয়। এরপর রহিম নিজেই ল্যাপটপ ও প্রিন্টার কিনে ঢাকার বনশ্রী আবাসিক এলাকায় নিরিবিলি একটি ফ্যাট ভাড়া করে জাল টাকা তৈরির রমরমা ব্যবসা শুরু করে। এ কাজে রহিম তার উভয় স্ত্রীকে নিয়োগ করে এবং প্রায়ই গ্রামের বাড়ি থেকে নিকট স্বজনদের মধ্যে থেকে মহিলা নিয়ে এসে উক্ত কাজে নিয়োগ করতো।
জাল টাকা তৈরির বিবরণ দিতে গিয়ে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রহিম জানিয়েছে টাকা তৈরির জন্য প্রথমে টিস্যু কাগজের এক পার্শ্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি স্ক্রিনের নিচে রেখে গাম দিয়ে ছাপ দিতো। এরপর ৫০০ ও ১০০০ লেখা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রামের ছাপ দিতো। অতপর অপর একটি টিস্যু পেপার নিয়ে তার সঙ্গে ফয়েল পেপার থেকে টাকার পরিমাপ অনুযায়ী নিরাপত্তা সুতা কেটে তাতে লাগিয়ে সেই টিস্যুটি ইতিপূর্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি জলছাপ দেয়া টিস্যু পেপারের সঙ্গে গাম দিয়ে সংযুক্ত করে দিতো। এভাবে টিস্যু পেপার প্রস্তুত করে বিশেষ ডট কালার প্রিন্টারের মাধ্যমে ল্যাপটপে সেইভ করা টাকার ছাপ অনুযায়ী প্রিন্ট করা হতো।
তিনি জানান, ওই টিস্যু পেপারের উভয় সাইট প্রিন্ট করা হতো এবং প্রতিটি টিস্যু পেপারে মোট চারটি জাল টাকার নোট প্রিন্ট করা হতো। এরপর প্রিন্টকৃত টিস্যু পেপারগুলো কাটিং গ্লাসের উপরে রেখে নিখুঁতভাবে কাটিং করা হতো। পরবর্তীতে কাটিংকৃত জাল টাকাগুলো বিশেষভাবে বান্ডিল করে আসাদ ও তাজিম হোসেনসহ আরও পাঁচ-ছয় জনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হতো। র্যাব সূত্র জানায়, এ চক্রটি জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত টিস্যু কাগজ ঢাকার বাবু বাজার হতে, টাকার ভেতরের নিরাপত্তা সুতার ফয়েল চকবাজার, স্ক্রিন ও বোর্ড মালিটোলা, রেডোসার কেমিক্যাল মালিটোলা ও আইপিআই প্রিন্টার কালি পল্টন থেকে সংগ্রহ করতো।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে জাল টাকা তৈরি চক্রটির তৎপরতা অতিমাত্রায় বেড়ে যায়। তাই র্যাবের গোয়েন্দা দল এ চক্রকে শনাক্তে তদন্তে নামে। তারই ধারাবাহিকতায় ওই ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
No comments