ইয়েমেনের আগুনে ঘি ঢালছে সৌদি হামলা -নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণ
ইয়েমেনে
টানা প্রায় তিন মাস বিমান হামলা চালাচ্ছে সৌদি আরব ও তার মিত্ররা।
প্রতিবেশী দেশটির নিয়ন্ত্রণে থাকা শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের পিছুহটতে বাধ্য
করাই রিয়াদের মূল লক্ষ্য। ইরান-সমর্থিত এই যোদ্ধাদের হটাতে পারলেই
সৌদিপন্থী ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট রাজধানী সানায় তাঁর সরকারি বাসভবনে ফিরতে
পারবেন।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের পদক্ষেপগুলো কোনো কাজে আসেনি। হুতি বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। অথচ এই সংঘাতে ২ হাজার ৬০০-এর বেশি লোকের প্রাণ নিভে গেছে। আর সংঘাতের দরুন আরব বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেনে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য দায় চেপেছে সৌদিদের কাঁধেই।
বিপর্যয় এড়াতে ত্রাণ সংস্থাগুলোর কাজের সুযোগ করে দিতে সামান্য কয়েক দিনের জন্য অস্ত্রবিরতি এনে দিতেও ব্যর্থ হয়েছে জেনেভায় গত সপ্তাহের সর্বশেষ শান্তি আলোচনা। এতে করে এই লড়াইয়ের অবসান ঘটাতে সৌদি আরবের বাস্তবসম্মত কৌশলের অভাব রয়েছে বলেই মানছেন বিশ্লেষকেরা। একই রকম মনে করছেন ইয়েমেনের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজনও। উপরন্তু, তাঁদের অনেকেই বলছেন, সৌদি আরবের হস্তক্ষেপই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এতে করে সহিংসতা আরও পাখা মেলেছে; সমাধানের পথটা হয়ে উঠছে আরও কঠিন। লেবাননের বৈরুতভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কার্নেগি মিডলইস্ট সেন্টারের ইয়েমেনি ভিজিটিং স্কলার ফারিয়া আল মুসলিমি বলেন, ইয়েমেনে ঢোকার আগে সৌদিরা পর্যাপ্ত ভাবনাচিন্তা করে কৌশল ঠিক করেননি। বিষয়টা এখন একেবারেই স্পষ্ট। তাঁরা ভেবেছিলেন, এটা আসলেই খুব সহজ হবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি।
বরং যেটা ছিল অভ্যন্তরীণ একটা সংঘাত মাত্র, তাতে একটা আন্তর্জাতিক মাত্রা এনে দিল সৌদি আরব ও তার নেতৃত্বাধীন জোট। পাশাপাশি এই সংঘাতের জের জোটের সদস্যদের টানতে হচ্ছে নানাভাবে। সংঘাতের অনিবার্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে এরই মধ্যে সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তের এলাকাগুলো একের পর এক আক্রান্ত হয়েছে। আর চরমপন্থীরাও মাথা গজানোর সুযোগ পেয়েছে।
হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যেমন ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর কিছু ইউনিট অংশ নিচ্ছে, তেমনি বিভিন্ন সশস্ত্র উপজাতি গ্রুপগুলোও রয়েছে এই লড়াইয়ে। এ ছাড়া ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখা বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও লড়ছেন। এমনকি আল-কায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোও রয়েছে লড়াইয়ের মাঠে। এর অর্থ, অনেকেই ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবেদরাব্বো মানসুর হাদি বা তাঁর সরকারের সমর্থক নন। অনেকেই আবার সৌদি আরবের কট্টর সমালোচক। কিন্তু লড়াইয়ের মাঠে একসঙ্গে আছে কেবল হুতিবিরোধী মানসিকতা থেকেই।
দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধা মোহাম্মদ আল-জুয়ারি তেমনই একজন। সৌদি আরবের পাশাপাশি ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট হাদিকেও পছন্দ করেন না তিনি। আল-জুয়ারি বলেন, সৌদিরা লড়াইয়ের সম্মুখভাবে হুতিদের ওপর বিমান হামলা করায় তিনি প্রথম দিকে খুশি ছিলেন। কিন্তু একপর্যায়ে তাঁর দলের ওপরও হামলা চালায় সৌদি বিমান। এতে ১৬ জনের প্রাণহানি হয়। তিনি জানান, ‘বহিঃশত্রু’র আক্রমণ থেকে নিজের অঞ্চলকে রক্ষার জন্যই তিনি লড়ছেন।
হুতিদের লেবাননভিত্তিক গেরিলা বাহিনী হিজবুল্লাহর প্রক্সি বাহিনী হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন সৌদি নেতারা। বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তবে বিষয়টা অতটা না হলেও এমন প্রচারণার কারণেই তেমনটি ঘটে গেছে। ইয়েমেনি বিশেষজ্ঞ মুসলিমির মতে, বাস্তবে ইরান হুতিদের পেছনে আগে খুব একটা বিনিয়োগ করেনি। কিন্তু সৌদিরা বিমান হামলা শুরুর পর তেহরান তার সমর্থন বাড়িয়েছে। আর লেবানন ও ইরাকের শিয়া গ্রুপগুলো তাদের কাছের ভাই হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত স্টিফেন এ. সিসে বলেন, ‘আমি মনে করি, ইয়েমেনিদের বিষয়গুলো তাদের হাতে ছেড়ে দিলে তারাই এই সংকট থেকে উত্তরণের একটা পথ আলোচনা করে বের করে নিতে পারত। অন্য শক্তিগুলো এসেই সবকিছু পণ্ড করে দিচ্ছে। এতে সমাধানের পথ কঠিন হয়ে পড়েছে।’
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের পদক্ষেপগুলো কোনো কাজে আসেনি। হুতি বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। অথচ এই সংঘাতে ২ হাজার ৬০০-এর বেশি লোকের প্রাণ নিভে গেছে। আর সংঘাতের দরুন আরব বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেনে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য দায় চেপেছে সৌদিদের কাঁধেই।
বিপর্যয় এড়াতে ত্রাণ সংস্থাগুলোর কাজের সুযোগ করে দিতে সামান্য কয়েক দিনের জন্য অস্ত্রবিরতি এনে দিতেও ব্যর্থ হয়েছে জেনেভায় গত সপ্তাহের সর্বশেষ শান্তি আলোচনা। এতে করে এই লড়াইয়ের অবসান ঘটাতে সৌদি আরবের বাস্তবসম্মত কৌশলের অভাব রয়েছে বলেই মানছেন বিশ্লেষকেরা। একই রকম মনে করছেন ইয়েমেনের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজনও। উপরন্তু, তাঁদের অনেকেই বলছেন, সৌদি আরবের হস্তক্ষেপই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এতে করে সহিংসতা আরও পাখা মেলেছে; সমাধানের পথটা হয়ে উঠছে আরও কঠিন। লেবাননের বৈরুতভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কার্নেগি মিডলইস্ট সেন্টারের ইয়েমেনি ভিজিটিং স্কলার ফারিয়া আল মুসলিমি বলেন, ইয়েমেনে ঢোকার আগে সৌদিরা পর্যাপ্ত ভাবনাচিন্তা করে কৌশল ঠিক করেননি। বিষয়টা এখন একেবারেই স্পষ্ট। তাঁরা ভেবেছিলেন, এটা আসলেই খুব সহজ হবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি।
বরং যেটা ছিল অভ্যন্তরীণ একটা সংঘাত মাত্র, তাতে একটা আন্তর্জাতিক মাত্রা এনে দিল সৌদি আরব ও তার নেতৃত্বাধীন জোট। পাশাপাশি এই সংঘাতের জের জোটের সদস্যদের টানতে হচ্ছে নানাভাবে। সংঘাতের অনিবার্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে এরই মধ্যে সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তের এলাকাগুলো একের পর এক আক্রান্ত হয়েছে। আর চরমপন্থীরাও মাথা গজানোর সুযোগ পেয়েছে।
হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যেমন ইয়েমেনি সেনাবাহিনীর কিছু ইউনিট অংশ নিচ্ছে, তেমনি বিভিন্ন সশস্ত্র উপজাতি গ্রুপগুলোও রয়েছে এই লড়াইয়ে। এ ছাড়া ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখা বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও লড়ছেন। এমনকি আল-কায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোও রয়েছে লড়াইয়ের মাঠে। এর অর্থ, অনেকেই ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবেদরাব্বো মানসুর হাদি বা তাঁর সরকারের সমর্থক নন। অনেকেই আবার সৌদি আরবের কট্টর সমালোচক। কিন্তু লড়াইয়ের মাঠে একসঙ্গে আছে কেবল হুতিবিরোধী মানসিকতা থেকেই।
দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধা মোহাম্মদ আল-জুয়ারি তেমনই একজন। সৌদি আরবের পাশাপাশি ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট হাদিকেও পছন্দ করেন না তিনি। আল-জুয়ারি বলেন, সৌদিরা লড়াইয়ের সম্মুখভাবে হুতিদের ওপর বিমান হামলা করায় তিনি প্রথম দিকে খুশি ছিলেন। কিন্তু একপর্যায়ে তাঁর দলের ওপরও হামলা চালায় সৌদি বিমান। এতে ১৬ জনের প্রাণহানি হয়। তিনি জানান, ‘বহিঃশত্রু’র আক্রমণ থেকে নিজের অঞ্চলকে রক্ষার জন্যই তিনি লড়ছেন।
হুতিদের লেবাননভিত্তিক গেরিলা বাহিনী হিজবুল্লাহর প্রক্সি বাহিনী হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন সৌদি নেতারা। বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তবে বিষয়টা অতটা না হলেও এমন প্রচারণার কারণেই তেমনটি ঘটে গেছে। ইয়েমেনি বিশেষজ্ঞ মুসলিমির মতে, বাস্তবে ইরান হুতিদের পেছনে আগে খুব একটা বিনিয়োগ করেনি। কিন্তু সৌদিরা বিমান হামলা শুরুর পর তেহরান তার সমর্থন বাড়িয়েছে। আর লেবানন ও ইরাকের শিয়া গ্রুপগুলো তাদের কাছের ভাই হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত স্টিফেন এ. সিসে বলেন, ‘আমি মনে করি, ইয়েমেনিদের বিষয়গুলো তাদের হাতে ছেড়ে দিলে তারাই এই সংকট থেকে উত্তরণের একটা পথ আলোচনা করে বের করে নিতে পারত। অন্য শক্তিগুলো এসেই সবকিছু পণ্ড করে দিচ্ছে। এতে সমাধানের পথ কঠিন হয়ে পড়েছে।’
No comments