সংসদে অর্থ বিল পাস রপ্তানিতে কর ও শিক্ষায় ভ্যাট কমছে
তৈরী পোশাকসহ সব ধরনের পণ্যে রপ্তানিমূল্যের ওপর এক শতাংশ উৎসে কর কাটার যে প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী করেছিলেন, তা কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ কয়েকটি সংশোধনী এনে অর্থবিল-২০১৫ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। বিলের উপর আনীত সংশোধনীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উপর মূসক (ভ্যাট) ১০ শতাংশের বদলে ৭ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশকিছু প্রস্তাবে পরিবর্তন আনতে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। এরপর অর্থমন্ত্রী বাজেটের উপর সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, আমার প্রস্তাবিত বাজেটের উপর প্রধানমন্ত্রী যে সব বিষয়ে পরিবর্তন করার প্রস্তাব করেছেন সেগুলো অবশ্যই সংশোধন হবে। এর আগে গত ৪ঠা জুন সংসদে এই অর্থবিল উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেটের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী তা কমিয়ে সব ক্ষেত্রে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন। অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর এই সুযোগ দেন, আগামীতে ভাল করলে আপনি বাড়াবেন।’ তিনি পোল্ট্রি ও মৎস্য শিল্পে আয়কর ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কে করমুক্ত রাখা এবং ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫ শতাংশ এবং ৩০ লাখ টাকার বেশি হলে ১০ শতাংশ করার অনুরোধ জানান। যা অর্থমন্ত্রী অর্থবিলে সংশোধনীর জন্য তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ক্যান্সারের ওষুধ তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে সব ধরনের আমদানি শুল্কসহ সব শুল্ক-কর প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের প্রতিষেধক, ভেষজ ও হারবাল ওষুধের কাঁচামালে ছাড় দেয়ার আহ্বান জানালে অর্থমন্ত্রী এসব ক্ষেত্রে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য সংসদে সংশোধনীর জন্য তা উপস্থাপন করেন। এছাড়া তিনি ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত কর প্রস্তাব ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশে এবং ই-কমার্স ব্যবসায় প্রস্তাবিত ৪ শতাংশ কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এর আগে সমাপনী বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ব্যারিয়ারে (বাধা) আটকে আছে। তা আগামী অর্থবছরেই অতিক্রম করবে। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায়ে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। এটা উচ্চাভিলাষী, তবে বাস্তবায়ন সম্ভব। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌরসভা ও অন্যান্য এলাকার ন্যূনতম করের হার পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজেটে সিটি করপোরেশনের ন্যূনতম কর হার ৫ হাজার টাকা, জেলা সদরের পৌরসভা এলাকায় ৪ হাজার টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া ঝাড়বাতিসহ উন্নতমানের গৃহসজ্জা লাইটের ওপর প্রস্তাবিত বাজেটে আরোপ করা ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন তিনি।
No comments