ওবামার 'মিশন ২০১৪' by ফাতেমা আবেদীন
মিশন
২০১৪-কে সামনে রেখে প্রশাসনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যেই কাজ করবেন
ওবামা। তবে নতুন বছরেও ঘরে-বাইরে ওবামার সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে থেকে
যাচ্ছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি প্রতিষ্ঠা, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি
এবং ইসরায়েলকে সামলানো, সিরিয়ায় যুদ্ধ এড়ানো। ওবামাকে সবচেয়ে যে
চ্যালেঞ্জটি মোকাবেলা করতে হবে তা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন
নানা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পঞ্চম বছর পার
করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বিশ্লেষকরা সার্বিকভাবে
২০১৩ সালকে ওবামার জন্য কণ্টকাকীর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছেন। অভ্যন্তরীণ,
আন্তর্জাতিক কিংবা রাজনৈতিক সব মিলিয়ে বছরটি তার জন্য সুখকর ছিল না। ১৭ বছর
পর শাটডাউনের ঘটনা, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের গোয়েন্দা নজরদারি ও কর্মকর্তা
এডওয়ার্ড স্নোডেনের গোপন দলিল প্রকাশ, সিরিয়া যুদ্ধের কাছ থেকে ফিরে আসা,
রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসসহ বছরটি সংকট ও উত্তেজনা প্রথম মেয়াদের চেয়ে
অপেক্ষাকৃত বেশি ছিল। সব মিলিয়ে এক বছর পর বেশ বিপর্যস্ত ওবামা প্রশাসন।
তবে এটিকেই শেষ বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকরা। ২০১০ সালের মধ্যবর্তী
নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের ভরাডুবির পরও ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
সাফল্যের সঙ্গে উতরে যান প্রেসিডেন্ট ওবামা। তাই মিশন ২০১৪-কে সামনে রেখে
প্রশাসনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যেই কাজ করবেন ওবামা_ এমনটাই ভাবছেন
বিশ্লেষকরা। তবে নতুন বছরেও ঘরে-বাইরে ওবামার সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে থেকে
যাচ্ছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তি প্রতিষ্ঠা, ইরানের পরমাণু
কর্মসূচি এবং ইসরায়েলকে সামলানো, সিরিয়ায় যুদ্ধ এড়ানো। ওবামাকে সবচেয়ে যে
চ্যালেঞ্জটি মোকাবেলা করতে হবে তা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী
নির্বাচন। এ ছাড়া রিপাবলিকানদের কাছ থেকে চ্যালেঞ্জ ও স্বাস্থ্যসেবা খাত তো
রয়েছেই। কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো রয়েছেই। এখন সিনেট দখল
করতে মরিয়া রিপাবলিকানরা। এ জন্য তাদের মাত্র ৬টি আসন দরকার। জাতীয়
গোয়েন্দা নীতি নিয়েও চাপে থাকবেন তিনি। নিজের নিম্নমুখী জনপ্রিয়তা উদ্ধারও
একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।
২০১৩ সালের চড়াই-উৎরাই সাফল্যের সঙ্গে পাড়ি দিলেও জনসমর্থন কমেছে ওবামার। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট ওবামার ক্ষমতার পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি নিউজ পোল যৌথ এক জরিপের আয়োজন করেছিল। এতে জনসমর্থনে বেশ ভাটা পড়েছে বলেই দাবি করেন জরিপ বিশ্লেষকরা। অনেক স্থানে ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় রিপাবলিকানদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এর জন্য ওবামা প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন তারা। এবিসি নিউজ পোল দাবি করে, এক বছর আগের জরিপে ওবামার অবস্থান যতটা দৃঢ় ছিল এখন সেটি নেই। তার অবস্থান এখন টালমাটাল বলেই দাবি সংবাদ সংস্থাটির। তারা আরও মনে করে, নিজস্ব গোঁয়ার্তুমির কারণেই ওবামা এই অবস্থানে এসে পেঁৗছেছেন। বিশেষ করে দেশকে আংশিক গভর্নমেন্ট শাটডাউনের (সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার মতো অর্থনৈতিক সংকট) মুখোমুখি হতে হয়েছে। এটা জনমনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এর প্রভাব আসন্ন সংসদ নির্বাচনে (মধ্যবর্তী) পড়বে বলে মনে করছেন খোদ ডেমোক্র্যাটরা। এখনও জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা বিল নিয়ে কোনো দৃঢ় সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা। খোদ হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা দাবি করেছেন, স্বাস্থ্যসেবা বিল নিয়ে তৈরি ওয়েবসাইটেও প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে না জনগণ। স্বাস্থ্যসেবা বিল নিয়ে রিপাবলিকানদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব না মেটা পর্যন্ত এমনটাই হতে থাকবে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে ডেমোক্র্যাটরা অবস্থান হারিয়েছেন রিপাবলিকানদের কাছে।
জরিপে ওবামা প্রশাসন :সম্প্রতি একটি জরিপে ওবামা প্রশাসন ও রিপাবলিকান উভয়ই ৪১ শতাংশ ভোট নিয়ে একই অবস্থানে রয়েছে। জরিপের বিষয় ছিল, দেশের সমস্যা মোকাবেলায় কোনো প্রশাসন অধিকতর কার্যক্ষম। অন্যদিকে এক বছর আগে এই একই জরিপে ওবামা সরকার ১৫ পয়েন্ট বেশি পেয়ে এগিয়ে ছিল। ২০১০ সালেও এই জরিপে ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান ছিল রিপাবলিকানদের চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট উপরে। তবে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা সংক্রান্ত জরিপে ওবামার থেকে রিপাবলিকানদের এগিয়ে রেখেছেন মার্কিন জনগণ। ১৭ বছর পর দেশকে গভর্নমেন্ট শাটডাউনের মুখোমুখি করায় এ ক্ষেত্রে ওবামার জনসমর্থন নেমে এসেছে ৪১ শতাংশে। যেখানে রিপাবলিকানরা পেয়েছেন ৪৫ শতাংশ ভোট। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে ছিল ৫৪ শতাংশ ভোট। রিপাবলিকানরা সে সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৩৬ শতাংশ ভোট। মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ডেমোক্র্যাট সরকারের অবস্থান নেমেছে মোট ৬ পয়েন্ট। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে নারী ভোটার ও উদারপন্থি তরুণ আমেরিকানদের মধ্যে ওবামার যে জনপ্রিয়তা ছিল তাতে ধস নেমেছে।
প্রেসিডেন্টের বর্তমান ইতিবাচক রে?টিং পয়েন্ট মাত্র ৪৩ যেটি গত মেয়াদে ছিল ৫৫ শতাংশ। দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্টদের মধ্যে ওবামার রেটিং পয়েন্ট এই মুহূর্তে সর্বনিম্ন। জর্জ ডবি্লউ বুশের দ্বিতীয় মেয়াদে নেতিবাচক রেটিং পয়েন্ট ছিল ৫২ শতাংশ ও ইতিবাচক ৪৭ শতাংশ। কংগ্রেসনাল সমর্থনের ক্ষেত্রে ওবামার পক্ষে রয়েছে গড়ে ১৬ শতাংশ। প্রায় ১০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৭টি রিপাবলিকানদের সমর্থন পেয়ে পাস হতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সূচক কমেছে। এ বছর জনপ্রিয়তা নামার পরও নিউইয়র্কে একযুগ পর ডেমোক্র্যাট গভর্নর নির্বাচিত হওয়াকে ইতিবাচক উত্থান বলেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। ডেমোক্র্যাট নেতা বিল ডি ব্লাসিও ৭২ শতাংশ ভোট পেয়ে নতুন মেয়র নির্বাচিত হন।
গভর্নমেন্ট শাটডাউন ও ওবামা :দ্বিতীয় মেয়াদে ওবামা সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে গভর্নমেন্ট শাটডাউনের ঘটনা। বাজেট সিদ্ধান্তে ঐকমত্য না আসায় ১৬ দিনের শাটডাউনের মুখোমুখি হয়েছিল ওবামা প্রশাসন। এতে মোট সাত লাখ কর্মচারী চাকরিচ্যুত ও ৬৬ লাখ কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। উৎপাদনশীলতা কমে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় ২০০ কোটি ডলারের। এ ছাড়া শাটডাউনের প্রভাব অর্থনীতিতে গভীর ছাপ রেখে গেছে। শাটডাউনে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দেয়। জিডিপির প্রবৃদ্ধির ০.২ থেকে ০.৬ শতাংশ কমে আসতে পারে বলেও সতর্কতা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে কংগ্রেস স্বাস্থ্যসেবা বিলের ব্যাপারে একমত হতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার আংশিকভাবে অচল হয়ে পড়ে যা শাটডাউন হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে একটি বিল পাস করে ওবামা প্রশাসন। এই বিলে সমঝোতার মাধ্যমে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ পর্যন্ত মার্কিন সরকারের ঋণসীমা বাড়ানো হয় ।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওবামা :আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রেসিডেন্ট ওবামার সফলতা ও ব্যর্থতা প্রায় সমান সমান। সিরিয়া যুদ্ধে মার্কিন হস্তক্ষেপের প্রস্তুতি নিয়েও শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মেনে নেয় ওবামা প্রশাসন। পাশাপাশি ইরানের সঙ্গে পরমাণু সংকট নিয়ে সমঝোতার ইঙ্গিত দিতে সক্ষম হয়েছে ওবামা প্রশাসন। সিরিয়ার রাসায়নিক নিরস্ত্রীকরণকে ওবামা সরকারের সাফল্য বলেই বিবেচনা করতে চায় মার্কিন সরকার। তবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসএ) গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম সারাবিশ্বে সমালোচিত হয়েছে। এই কার্যক্রম ফাঁসকারী মার্কিন কর্মকর্তা স্নোডেনকে হেনস্তা করা নিয়েও ওবামা সরকারকে তিরস্কৃত হতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ জার্মানিও এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে।
২০১৩ সালের চড়াই-উৎরাই সাফল্যের সঙ্গে পাড়ি দিলেও জনসমর্থন কমেছে ওবামার। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট ওবামার ক্ষমতার পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওয়াশিংটন পোস্ট ও এবিসি নিউজ পোল যৌথ এক জরিপের আয়োজন করেছিল। এতে জনসমর্থনে বেশ ভাটা পড়েছে বলেই দাবি করেন জরিপ বিশ্লেষকরা। অনেক স্থানে ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় রিপাবলিকানদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এর জন্য ওবামা প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন তারা। এবিসি নিউজ পোল দাবি করে, এক বছর আগের জরিপে ওবামার অবস্থান যতটা দৃঢ় ছিল এখন সেটি নেই। তার অবস্থান এখন টালমাটাল বলেই দাবি সংবাদ সংস্থাটির। তারা আরও মনে করে, নিজস্ব গোঁয়ার্তুমির কারণেই ওবামা এই অবস্থানে এসে পেঁৗছেছেন। বিশেষ করে দেশকে আংশিক গভর্নমেন্ট শাটডাউনের (সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার মতো অর্থনৈতিক সংকট) মুখোমুখি হতে হয়েছে। এটা জনমনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এর প্রভাব আসন্ন সংসদ নির্বাচনে (মধ্যবর্তী) পড়বে বলে মনে করছেন খোদ ডেমোক্র্যাটরা। এখনও জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা বিল নিয়ে কোনো দৃঢ় সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা। খোদ হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা দাবি করেছেন, স্বাস্থ্যসেবা বিল নিয়ে তৈরি ওয়েবসাইটেও প্রয়োজনীয় সহায়তা পাচ্ছে না জনগণ। স্বাস্থ্যসেবা বিল নিয়ে রিপাবলিকানদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব না মেটা পর্যন্ত এমনটাই হতে থাকবে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে ডেমোক্র্যাটরা অবস্থান হারিয়েছেন রিপাবলিকানদের কাছে।
জরিপে ওবামা প্রশাসন :সম্প্রতি একটি জরিপে ওবামা প্রশাসন ও রিপাবলিকান উভয়ই ৪১ শতাংশ ভোট নিয়ে একই অবস্থানে রয়েছে। জরিপের বিষয় ছিল, দেশের সমস্যা মোকাবেলায় কোনো প্রশাসন অধিকতর কার্যক্ষম। অন্যদিকে এক বছর আগে এই একই জরিপে ওবামা সরকার ১৫ পয়েন্ট বেশি পেয়ে এগিয়ে ছিল। ২০১০ সালেও এই জরিপে ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান ছিল রিপাবলিকানদের চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট উপরে। তবে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা সংক্রান্ত জরিপে ওবামার থেকে রিপাবলিকানদের এগিয়ে রেখেছেন মার্কিন জনগণ। ১৭ বছর পর দেশকে গভর্নমেন্ট শাটডাউনের মুখোমুখি করায় এ ক্ষেত্রে ওবামার জনসমর্থন নেমে এসেছে ৪১ শতাংশে। যেখানে রিপাবলিকানরা পেয়েছেন ৪৫ শতাংশ ভোট। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে ছিল ৫৪ শতাংশ ভোট। রিপাবলিকানরা সে সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৩৬ শতাংশ ভোট। মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে ডেমোক্র্যাট সরকারের অবস্থান নেমেছে মোট ৬ পয়েন্ট। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে নারী ভোটার ও উদারপন্থি তরুণ আমেরিকানদের মধ্যে ওবামার যে জনপ্রিয়তা ছিল তাতে ধস নেমেছে।
প্রেসিডেন্টের বর্তমান ইতিবাচক রে?টিং পয়েন্ট মাত্র ৪৩ যেটি গত মেয়াদে ছিল ৫৫ শতাংশ। দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্টদের মধ্যে ওবামার রেটিং পয়েন্ট এই মুহূর্তে সর্বনিম্ন। জর্জ ডবি্লউ বুশের দ্বিতীয় মেয়াদে নেতিবাচক রেটিং পয়েন্ট ছিল ৫২ শতাংশ ও ইতিবাচক ৪৭ শতাংশ। কংগ্রেসনাল সমর্থনের ক্ষেত্রে ওবামার পক্ষে রয়েছে গড়ে ১৬ শতাংশ। প্রায় ১০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৭টি রিপাবলিকানদের সমর্থন পেয়ে পাস হতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সূচক কমেছে। এ বছর জনপ্রিয়তা নামার পরও নিউইয়র্কে একযুগ পর ডেমোক্র্যাট গভর্নর নির্বাচিত হওয়াকে ইতিবাচক উত্থান বলেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। ডেমোক্র্যাট নেতা বিল ডি ব্লাসিও ৭২ শতাংশ ভোট পেয়ে নতুন মেয়র নির্বাচিত হন।
গভর্নমেন্ট শাটডাউন ও ওবামা :দ্বিতীয় মেয়াদে ওবামা সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে গভর্নমেন্ট শাটডাউনের ঘটনা। বাজেট সিদ্ধান্তে ঐকমত্য না আসায় ১৬ দিনের শাটডাউনের মুখোমুখি হয়েছিল ওবামা প্রশাসন। এতে মোট সাত লাখ কর্মচারী চাকরিচ্যুত ও ৬৬ লাখ কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। উৎপাদনশীলতা কমে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় ২০০ কোটি ডলারের। এ ছাড়া শাটডাউনের প্রভাব অর্থনীতিতে গভীর ছাপ রেখে গেছে। শাটডাউনে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দেয়। জিডিপির প্রবৃদ্ধির ০.২ থেকে ০.৬ শতাংশ কমে আসতে পারে বলেও সতর্কতা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে কংগ্রেস স্বাস্থ্যসেবা বিলের ব্যাপারে একমত হতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার আংশিকভাবে অচল হয়ে পড়ে যা শাটডাউন হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায়। পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে একটি বিল পাস করে ওবামা প্রশাসন। এই বিলে সমঝোতার মাধ্যমে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ পর্যন্ত মার্কিন সরকারের ঋণসীমা বাড়ানো হয় ।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওবামা :আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রেসিডেন্ট ওবামার সফলতা ও ব্যর্থতা প্রায় সমান সমান। সিরিয়া যুদ্ধে মার্কিন হস্তক্ষেপের প্রস্তুতি নিয়েও শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মেনে নেয় ওবামা প্রশাসন। পাশাপাশি ইরানের সঙ্গে পরমাণু সংকট নিয়ে সমঝোতার ইঙ্গিত দিতে সক্ষম হয়েছে ওবামা প্রশাসন। সিরিয়ার রাসায়নিক নিরস্ত্রীকরণকে ওবামা সরকারের সাফল্য বলেই বিবেচনা করতে চায় মার্কিন সরকার। তবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসএ) গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম সারাবিশ্বে সমালোচিত হয়েছে। এই কার্যক্রম ফাঁসকারী মার্কিন কর্মকর্তা স্নোডেনকে হেনস্তা করা নিয়েও ওবামা সরকারকে তিরস্কৃত হতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ জার্মানিও এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে।
No comments