কিশোরীর লাশ নিয়ে রাজনীতি
কলকাতায় দুই দফা গণধর্ষণের শিকার কিশোরীর মৃত্যুর পর এবার তাকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতি শুরু হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে সিপিএম। মেয়েটির লাশ নিয়ে পুলিশ ও বামপন্থীদের মধ্যে দফায় দফায় হট্টগোল হয়েছে। গত অক্টোবরে ওই কিশোরী দুই দফা গণধর্ষণের শিকার হয়। এরপর ধর্ষকের দল তাকে অব্যাহতভাবে হুমকি দিতে থাকে। এতে করে মানসিকভাবে সে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে গত ২৩ ডিসেম্বর গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়। মেয়েটির বাবা একজন ট্যাক্সিচালক। তিনি ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (সিআইটিইউ) সঙ্গে জড়িত।
তিনি চেয়েছিলেন, শেষকৃত্যের আগে মেয়ের লাশ নিয়ে শোকযাত্রা করতে। কিন্তু বাদ সাধে পুলিশ। এ নিয়ে গতকাল বুধবার সকালে কলকাতার নিমতলা ঘাট শ্মশানে পুলিশের সঙ্গে মেয়েটির পরিবার ও বামপন্থীদের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে হট্টগোল হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতব্যাপী লাশ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা হয়। গতকাল সকাল সাতটায় কিশোরীর মৃতদেহ নিমতলা ঘাট শব-চুল্লিতে নেওয়া হয়। আটটার দিকে সেন্টার অব ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নের (সিআইটিইউ) সদস্যরা শোকযাত্রার উদ্দেশ্যে কিশোরীর লাশ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দিলে প্রায় তিন ঘণ্টা দুই পক্ষে উত্তেজনা চলে। পরে অবশ্য লাশ নিতে দেয় পুলিশ। সিআইটিইউ জানায়, লাশ নিয়ে শোকযাত্রার পূর্বপরিকল্পনা বাদ দিয়ে তারা বিকেলে (গতকাল) কিশোরীর লাশ দাহ করবে। তবে একই সময়ে তিন কিলোমিটার দূরে ধর্মতলার উদ্দেশ্যে একটি মিছিলও বের করা হবে। কিশোরীর মা-বাবার অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁদের সন্তানের মৃতদেহ শবাগারে নেওয়ার সময় পুলিশ শব বহনের গাড়িতে বাধা দেয় এবং গাড়িটি শ্মশানে নিয়ে যেতে বাধ্য করে।
পুলিশ কর্মকর্তারা সেখানে লাশ দাহ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁদের কাছে মৃত্যুসনদ না থাকায় তাঁরা শেষ পর্যন্ত তা করতে পারেননি। পাঁচ ঘণ্টা পর রাত আড়াইটার দিকে বাড়িতে লাশ ফেরত দেয় পুলিশ। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা কিশোরীর পরিবারের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, পরিবারের সম্মতি পেয়েই তাঁরা লাশ শ্মশানে নিয়ে গিয়েছিলেন। মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের: কলকাতায় গণধর্ষণের শিকার ১৬ বছর বয়সী কিশোরীর মৃত্যুর পর গত মঙ্গলবার তার বাবা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্বে থাকা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গণধর্ষণের শিকার মেয়েটির বাবা তার মৃত্যুর জন্য সরকারি আরজি কর মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করেন। কিশোরীর বাবা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়নকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। পিটিআই ও জি নিউজ।
No comments