শহুরে দরিদ্রদের মধ্যে পানির জন্য প্রতিযোগিতা by কল্পনা ভাট্টারি এবং প্রিয়াঙ্কা শ্রেষ্ঠা
পৃথিবীর
তিন চতুর্থাংশ জুড়ে বিস্তার করা পানি জীবনের মূল মাধ্যম। বছরে ২০০০ মিলি
বৃষ্টিপাত এবং তিনটি প্রধান নদীর পাশে অবস্থিত হয়েও বিশাল নগর ঢাকা এখন
পর্যন্ত নগরবাসীদের নিরাপদ পানির সরবরাহ দিতে পারে নাই। সমগ্র ঢাকায় প্রায়
১৬ কোটি মানুষের (যা প্রতি বছর ৫% হারে বাড়ছে) পানি সরবরাহ এবং নিকাশী
সেবার দায়িত্ব একটি মাত্র সংস্থা "ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়নিস্কাশন
কর্তৃপক্ষ" (ডি.ডব্লিউ.এ.এস.এ) এর উপর নিয়োজিত, তাই তাদের জন্য সবসময় পানির
গুণগত মান এবং পরিমান রক্ষা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
তীব্র ঘাটতি এবং প্রতিযোগিতার মুখে সামঞ্জস্যহীন ভাবে পানি সমস্যার শিকার হয় শহরের দরিদ্র জনসংখ্যা। উদাহরণ সরূপ, ডব্লিউ এইচ ও এর মতে পানিতে আর্সেনিকের সর্বচ্চ মাত্রা ০.০১ মিলি গ্রাম/ লিটার, কিন্তু বাংলাদেশে আর্সেনিকের সর্বচ্চ মাত্রা ০.০৫ মিলি গ্রাম/ লিটার, যা ডব্লিউ.এইচ.ও এর তুলনায় অনেক বেশী। বাংলাদেশের ৭৭-৯৫ মিলিয়ন মানুষ অনুমোদিত সীমার বেশী আর্সেনিক সমৃদ্ধ পানি পান করে। আর্সেনিক সমস্যা মূলত দেখা যায় বস্তি, বন্যা প্রবণ, অপরিকল্পিত নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং আবর্জনা সমৃদ্ধ এলাকা সমূহে, তাই শহরের দরিদ্র মানুষেরা আর্সেনিক সমস্যায় বেশী আক্রান্ত হয়।
শহরের দরিদ্র মানুষদের মৌলিক সুবিধা প্রদানের প্রতি ঢাকা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই শহুরে দরিদ্রদের সমস্যার মূল কারণ। বস্তিতে সরকারি সেবার অভাব রয়েছে এবং বস্তির মানুষেরা সরকারি কোম্পানি ছাড়া অন্যান্য প্রাইভেট সংস্থা থেকে পানি ক্রয় করে থাকে। ফলস্বরূপ, ঢাকার এই গরীব জনসংখ্যা তাদের আয়ের ৫০% শতাংশই পানিবাহিত রোগের পিছনে খরচ করে।
শহরের দরিদ্র মানুষদের পানির এই দুর্দশা দূর করতে অনেক সংস্থা পানি সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করছে যেমন ওয়াটারএইড এবং "ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়নিস্কাশন কর্তৃপক্ষ" (ডি.ডব্লিউ.এ.এস.এ)।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা যেটি শহুরে দরিদ্র অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সহজলভ্যতার জন্য কাজ করে। বর্তমানে, ওয়াটারএইড বিভিন্ন জেলার ৪২৬৮ টিরও বেশি গ্রাম জুড়ে, এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও খুলনা শহরগুলোর মধ্যে ৭০২টি বস্তিতে সহযোগিতা প্রদান করেছে। DWASA'র সঙ্গে একত্রিত হয়ে ওয়াটারএইড বস্তি ও দরিদ্র এলাকাগুলোতে স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহের উদ্দেশ্যে স্যানিটারি পায়খানা ও পানি উত্তোলন পয়েন্ট নির্মাণ করেছে। DWASA'র সাথে মিলিত হয়ে পানি সেবা প্রদানের কার্যকরী পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি শহুরে দরিদ্র জীবনে ভিন্নতা এনেছে।
DWASA, একটি সেবা ভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, যেটি শহুরে বস্তিতে পানি সার্ভিস কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়োজিত এনজিওগুলোকে সহযোগীতা প্রদানের মাধ্যমে ঢাকার ক্রমবর্ধমান অবৈধ জনবসতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কাজ করে। এটি শহরে জল লগিং সমস্যা প্রশমনের উদ্দেশ্যে পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ এবং নিরাপদ নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পানি পাম্প স্থাপন করেছে। তাছাড়া, এটি পানির পাইপলাইনে নজর রাখার মাধ্যমে বিভিন্ন ফুটো এবং অবৈধ কারণে পানি অপচয় কমাতে কাজ করে।
তারপরও, উভয় ওয়াটারএইড এবং DWASA তাদের সেবা প্রদানের সময় কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। অননুমোদিত জল নেটওয়ার্ক সিস্টেমের সাথে জড়িত বিশাল অবৈধ জনগোষ্ঠী নিষ্পত্তিই হচ্ছে DWASA’র প্রধান চ্যালেঞ্জ। শহুরে দরিদ্রদের মধ্যে নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহ এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য, ওয়াটারএইডকে স্বায়ত্তশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয়ের অভাবে আইনি অনুমতি নেয়ার সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । তাছাড়া, অক্ষম হওয়া সত্ত্বেও পানি ব্যবহারের কারণে গরীবদের ধনীর সমানই শুল্ক প্রদান করতে হয়, যেহেতু সরকার এ ব্যাপারে কোনো প্রকার খরচ-ভাগ কৌশল তৈরী করে নি। প্রকৃতপক্ষে, তবে, ঢাকা শহরের বস্তিতে ওয়াটারএইড এবং DWASA দ্বারা প্রদানকৃত সেবা শুধুমাত্র নিরাপদ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রেই কার্যকর হয়ে উঠেনি, পাশাপাশি তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থারও উন্নতি সাধন করেছে।
তীব্র ঘাটতি এবং প্রতিযোগিতার মুখে সামঞ্জস্যহীন ভাবে পানি সমস্যার শিকার হয় শহরের দরিদ্র জনসংখ্যা। উদাহরণ সরূপ, ডব্লিউ এইচ ও এর মতে পানিতে আর্সেনিকের সর্বচ্চ মাত্রা ০.০১ মিলি গ্রাম/ লিটার, কিন্তু বাংলাদেশে আর্সেনিকের সর্বচ্চ মাত্রা ০.০৫ মিলি গ্রাম/ লিটার, যা ডব্লিউ.এইচ.ও এর তুলনায় অনেক বেশী। বাংলাদেশের ৭৭-৯৫ মিলিয়ন মানুষ অনুমোদিত সীমার বেশী আর্সেনিক সমৃদ্ধ পানি পান করে। আর্সেনিক সমস্যা মূলত দেখা যায় বস্তি, বন্যা প্রবণ, অপরিকল্পিত নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং আবর্জনা সমৃদ্ধ এলাকা সমূহে, তাই শহরের দরিদ্র মানুষেরা আর্সেনিক সমস্যায় বেশী আক্রান্ত হয়।
শহরের দরিদ্র মানুষদের মৌলিক সুবিধা প্রদানের প্রতি ঢাকা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই শহুরে দরিদ্রদের সমস্যার মূল কারণ। বস্তিতে সরকারি সেবার অভাব রয়েছে এবং বস্তির মানুষেরা সরকারি কোম্পানি ছাড়া অন্যান্য প্রাইভেট সংস্থা থেকে পানি ক্রয় করে থাকে। ফলস্বরূপ, ঢাকার এই গরীব জনসংখ্যা তাদের আয়ের ৫০% শতাংশই পানিবাহিত রোগের পিছনে খরচ করে।
শহরের দরিদ্র মানুষদের পানির এই দুর্দশা দূর করতে অনেক সংস্থা পানি সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করছে যেমন ওয়াটারএইড এবং "ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়নিস্কাশন কর্তৃপক্ষ" (ডি.ডব্লিউ.এ.এস.এ)।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশ হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা যেটি শহুরে দরিদ্র অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সহজলভ্যতার জন্য কাজ করে। বর্তমানে, ওয়াটারএইড বিভিন্ন জেলার ৪২৬৮ টিরও বেশি গ্রাম জুড়ে, এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও খুলনা শহরগুলোর মধ্যে ৭০২টি বস্তিতে সহযোগিতা প্রদান করেছে। DWASA'র সঙ্গে একত্রিত হয়ে ওয়াটারএইড বস্তি ও দরিদ্র এলাকাগুলোতে স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহের উদ্দেশ্যে স্যানিটারি পায়খানা ও পানি উত্তোলন পয়েন্ট নির্মাণ করেছে। DWASA'র সাথে মিলিত হয়ে পানি সেবা প্রদানের কার্যকরী পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি শহুরে দরিদ্র জীবনে ভিন্নতা এনেছে।
DWASA, একটি সেবা ভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, যেটি শহুরে বস্তিতে পানি সার্ভিস কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিয়োজিত এনজিওগুলোকে সহযোগীতা প্রদানের মাধ্যমে ঢাকার ক্রমবর্ধমান অবৈধ জনবসতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কাজ করে। এটি শহরে জল লগিং সমস্যা প্রশমনের উদ্দেশ্যে পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ এবং নিরাপদ নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পানি পাম্প স্থাপন করেছে। তাছাড়া, এটি পানির পাইপলাইনে নজর রাখার মাধ্যমে বিভিন্ন ফুটো এবং অবৈধ কারণে পানি অপচয় কমাতে কাজ করে।
তারপরও, উভয় ওয়াটারএইড এবং DWASA তাদের সেবা প্রদানের সময় কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। অননুমোদিত জল নেটওয়ার্ক সিস্টেমের সাথে জড়িত বিশাল অবৈধ জনগোষ্ঠী নিষ্পত্তিই হচ্ছে DWASA’র প্রধান চ্যালেঞ্জ। শহুরে দরিদ্রদের মধ্যে নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহ এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য, ওয়াটারএইডকে স্বায়ত্তশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয়ের অভাবে আইনি অনুমতি নেয়ার সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । তাছাড়া, অক্ষম হওয়া সত্ত্বেও পানি ব্যবহারের কারণে গরীবদের ধনীর সমানই শুল্ক প্রদান করতে হয়, যেহেতু সরকার এ ব্যাপারে কোনো প্রকার খরচ-ভাগ কৌশল তৈরী করে নি। প্রকৃতপক্ষে, তবে, ঢাকা শহরের বস্তিতে ওয়াটারএইড এবং DWASA দ্বারা প্রদানকৃত সেবা শুধুমাত্র নিরাপদ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রেই কার্যকর হয়ে উঠেনি, পাশাপাশি তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থারও উন্নতি সাধন করেছে।
>http://urb.im/>>কল্পনা ভাট্টারি এবং প্রিয়াঙ্কা শ্রেষ্ঠা, অনুবাদকঃ ফারজানা নওশিন এবং নুসরাত ইয়াসমিন
No comments