সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য -১৬৫ by ড. একেএম শাহনাওয়াজ
১৯০৬ সালের ডিসেম্বরে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দল হিসেবে মুসলিম লীগের জন্ম হয়। তবে এই সংগঠন গড়ে তোলার একটি তাৎক্ষণিক কারণ ছিল। ভারতের মুসলমান নেতারা মুসলমান সম্প্রদায়ের শিক্ষাসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য এবং সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে বছরে একবার আলোচনা অনুষ্ঠানে মিলিত হতেন। কংগ্রেসের প্রেরণায় বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে ‘সর্বভারতীয় শিক্ষা সম্মেলন’ নামে এমন এক সভা ১৯০৬ সালে ঢাকার শাহবাগে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মুসলমানদের নেতা খাজা সলিমুল্লাহ কংগ্রেস সমর্থকদের বঙ্গভঙ্গবিরোধী বিক্ষোভ মোকাবেলা করার জন্য একটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। শাহবাগে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি তার এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সভার সভাপতি নওয়াব ভিখার-উল-মুল্ক প্রস্তাবটি সমর্থন করেন। ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর আগা খানের নেতৃত্বে ৩৫ জন মুসলিম প্রতিনিধি বড়লাট মিন্টোর সঙ্গে একটি দাবিনামা নিয়ে সাক্ষাৎ করেন। সিমলায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলে তা ‘সিমলা ডেপুটেশন’ নামে পরিচিত। দাবিতে মুসলমানদের পৃথক নির্বাচনের অধিকারসহ নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সময়েই মুসলিম নেতারা তাদের দাবি আদায়ের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন।
মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পেছনে তিনটি উদ্দেশ্য শনাক্ত করা যায়। এগুলো হচ্ছে- ক. ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ভারতের মুসলমানদের আনুগত্যবোধ গড়ে তোলা; খ. ভারতের মুসলমানদের রাজনৈতিক অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করা এবং সরকারের কাছে তাদের দাবি উত্থাপন করা; গ. এসব উদ্দেশ্য ক্ষুন্ন না করে ভারতের অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ, নওয়াব ভিখার-উল-মুল্ক, নওয়াব মহসীন-উল-মুল্ক প্রমুখের নেতৃত্বে ‘নিখিল ভারত মুসলিম লীগ’ নামে এ সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি হন আগা খান এবং যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন নওয়াব ভিখার-উল-মুল্ক ও নওয়াব মহসীন-উল-মুল্ক। মুসলিম লীগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, জাফর আলী খান, হাকিম আজমল খান, মুহম্মদ আলী প্রমুখ।
বঙ্গভঙ্গবিরোধীরা যে আন্দোলন গড়ে তোলে, সাধারণভাবে তা স্বদেশী আন্দোলন নামে পরিচিত। এ আন্দোলন চারটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল। প্রথমেই প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সভা-সমিতিতে বক্তৃতা দান ও প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপন করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল আÍশক্তি গঠন ও জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন গড়ে তোলা। তৃতীয় পর্যায়ে ‘বয়কট’ অর্থাৎ বিলাতি পণ্য বর্জন এবং স্বদেশী পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার। চতুর্থ পর্যায়ে সশস্ত্র বিপ্লব বা সন্ত্রাসের পথ গ্রহণ করা। মূলত বয়কট বা স্বদেশী আন্দোলন থেকেই বৈপ্লবিক বা সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের জন্ম হয়েছিল। ফলে এ দুই আন্দোলন বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে বিশেষ তাৎপর্যের দাবি রাখে।
বিভিন্ন সভায় বক্তৃতা-বিবৃতির মধ্য দিয়ে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা হতে থাকে। পাশাপাশি চাপ সৃষ্টি করা হয় ইংরেজ সরকারের ওপর। এ সময় পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত ইংরেজি পত্রিকা ইংলিশম্যান, স্টেটসম্যান, পাইওনিয়ার এবং বাংলা পত্রিকা যুগান্তর, সন্ধ্যা, সঞ্জীবনী, নবশক্তি, হিতবাদী ইত্যাদি বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।
বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের অপরাধে সরকারি স্কুল-কলেজ থেকে বহু ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়। এ কারণে আন্দোলনকারী নেতাদের জন্য জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়ে। জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের ফলে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত হয় এবং কয়েকটি কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশালে জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। কিন্তু জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি।
মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পেছনে তিনটি উদ্দেশ্য শনাক্ত করা যায়। এগুলো হচ্ছে- ক. ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ভারতের মুসলমানদের আনুগত্যবোধ গড়ে তোলা; খ. ভারতের মুসলমানদের রাজনৈতিক অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করা এবং সরকারের কাছে তাদের দাবি উত্থাপন করা; গ. এসব উদ্দেশ্য ক্ষুন্ন না করে ভারতের অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ, নওয়াব ভিখার-উল-মুল্ক, নওয়াব মহসীন-উল-মুল্ক প্রমুখের নেতৃত্বে ‘নিখিল ভারত মুসলিম লীগ’ নামে এ সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। মুসলিম লীগের প্রথম সভাপতি হন আগা খান এবং যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন নওয়াব ভিখার-উল-মুল্ক ও নওয়াব মহসীন-উল-মুল্ক। মুসলিম লীগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, জাফর আলী খান, হাকিম আজমল খান, মুহম্মদ আলী প্রমুখ।
বঙ্গভঙ্গবিরোধীরা যে আন্দোলন গড়ে তোলে, সাধারণভাবে তা স্বদেশী আন্দোলন নামে পরিচিত। এ আন্দোলন চারটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল। প্রথমেই প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সভা-সমিতিতে বক্তৃতা দান ও প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপন করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল আÍশক্তি গঠন ও জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন গড়ে তোলা। তৃতীয় পর্যায়ে ‘বয়কট’ অর্থাৎ বিলাতি পণ্য বর্জন এবং স্বদেশী পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার। চতুর্থ পর্যায়ে সশস্ত্র বিপ্লব বা সন্ত্রাসের পথ গ্রহণ করা। মূলত বয়কট বা স্বদেশী আন্দোলন থেকেই বৈপ্লবিক বা সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের জন্ম হয়েছিল। ফলে এ দুই আন্দোলন বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে বিশেষ তাৎপর্যের দাবি রাখে।
বিভিন্ন সভায় বক্তৃতা-বিবৃতির মধ্য দিয়ে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা হতে থাকে। পাশাপাশি চাপ সৃষ্টি করা হয় ইংরেজ সরকারের ওপর। এ সময় পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত ইংরেজি পত্রিকা ইংলিশম্যান, স্টেটসম্যান, পাইওনিয়ার এবং বাংলা পত্রিকা যুগান্তর, সন্ধ্যা, সঞ্জীবনী, নবশক্তি, হিতবাদী ইত্যাদি বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে।
বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের অপরাধে সরকারি স্কুল-কলেজ থেকে বহু ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়। এ কারণে আন্দোলনকারী নেতাদের জন্য জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি হয়ে পড়ে। জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের ফলে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত হয় এবং কয়েকটি কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশালে জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। কিন্তু জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি।
No comments