অল্পের জন্য ঢাকা ব্যাংকের রক্ষা- ভুয়া দলিলে ১৩০ কোটি টাকা ঋণমঞ্জুর by জিয়াউল হক মিজান
কাগজপত্র সম্পূর্ণ ভুয়া। জমির মালিক অন্যজন। এ নিয়ে বিভিন্ন আদালতে একাধিক মামলাও চলমান। এমন একটি জমিকে নিষ্কণ্টক ও অতিমূল্য দেখিয়ে ১৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণমঞ্জুর করেছে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষে মর্টগেজ দলিলও সম্পন্ন হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত টাকা উত্তেলনের আগ মুহূর্তে জালিয়াতি ধরা পড়ায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে বেসরকারি ঢাকা ব্যাংক। ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঋণ অনুমোদনের সময় সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, সম্পূর্ণ নিয়মের মধ্যে থেকেই এ ঋণমঞ্জুর করেছিলেন তারা।
জানা যায়, রিম্যাক্স লিবার্টি সিটি লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সম্প্রতি ১৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণমঞ্জুর করে ঢাকা ব্যাংক মতিঝিল আদমজি কোর্ট শাখা। এজন্য গত ১৪ সেপ্টেম্বর ১৩৬২০ নং মর্টগেজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর কাছ থেকে লেটার অব সেটিসফেকশন পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল ব্যাংক। এরই মধ্যে বিপত্তি ঘটান সেই জমির মালিক দাবিদার নোফেল রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ করিম। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবরে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগপত্রে আহমেদ করিম দাবি করেন, ঢাকা ব্যাংকের নামে মর্টগেজকৃত সাভারের আশুলিয়া থানাধীন সেনওয়ালিয়া মৌজার সিএস ৩৫, ৫৫ ও ৫৬ এবং আরএস ৭৬, ১৫৫ ও ১৫৬ দাগের এসব জমির মালিক তিনি। তবে ২০১১ সালে সাবকবলামূলে কিনলেও অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এ জমি এখনো তার নামে জমাখারিজ হয়নি বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি জানান, নামজারি করার অনুমতি চেয়ে তার পক্ষে করা রিট পিটিশন নং ৮২১০/২০১২ হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, যে জমির মালিকানা নিয়ে মামলা চলছে, মালিকপক্ষের অধিকারই এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি সে জমির বিপরীতে মোটা অঙ্কের ঋণমঞ্জুর করা ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে দুর্নীতির যোগসাজস ছাড়া আর কিছু নয়। তা ছাড়া মাত্র ২১৪ শতাংশ জমি মর্টগেজের বিপরীতে ১৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ কিভাবে মঞ্জুর হয় সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অভিযোগকারী।
অভিযোগ আমলে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রথমে মৌখিকভাবে এবং পরে লিখিতভাবে ঋণের এ টাকা নগদায়ন থেকে বিরত থাকার জন্য ঢাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসংক্রান্ত কারণ দর্শানো নেটিশের জবাবে ঢাকা ব্যাংক বলেছে, প্রাথমিকভাবে সবকিছু সঠিক মনে হলেও বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখছে। তদন্তের সুবিধার্থে ঢাকা ব্যাংক মতিঝিল আদমজি কোর্ট শাখার দায়িত্বে থাকা উপব্যবস্থাপনা পরিচালক খান শাহাদাত হোসেনকে সেই শাখা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে ঢাকা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকও গত সপ্তাহ পর্যন্ত মতিঝিল আদমজি কোর্ট শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা খান শাহাদাত হোসেন গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, ঋণমঞ্জুর হয়েছে, তবে ১৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার অঙ্কটি সঠিক নয়। যথাযথ নিয়ম মেনেই ঋণমঞ্জুর হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, অভিযুক্ত মহিউদ্দিন ২০০৪ সাল থেকেই ঢাকা ব্যাংকের সাথে ব্যবসায় করছেন, এবার তিনি সিসি লোনের লিমিট বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেন, আমরা লিগাল ওপেনিয়নের ভিত্তিতে যথাযথ নিয়ম মেনেই ঋণমঞ্জুর করেছি। সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও মঞ্জুরকৃত ঋণ গ্রাহকের বরাবরে নগদায়ন হবে বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে রিম্যাক্স লিবার্টি সিটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন মঈনের সাথে যোগাযোগের জন্য বহুবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা গা ঢাকা দিয়েছেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন বলে জানা গেছে। ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ হাবিবকে পাওয়া গেলেও তিনি মোবাইলে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং তার কার্যালয়ে দেখা করার পরামর্শ দেন।
অভিযোগকারী আহমেদ করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নগদ টাকায় জমি কিনেছি। সরকার আমাকে জমাখারিজ করতে দিচ্ছিল না। আমি আদালতে গিয়েছি। নিন্ম আদালতে জিতেছি। সরকার আপিল করেছে। আশা করছি উচ্চ আদালতেও জিতবো। অথচ আমার জমি মর্টগেজ রেখে ব্যাংক অন্য ব্যক্তিকে ঋণ দিচ্ছিল। জানি আমার কোনো ক্ষতি হবে না। তবুও দায়িত্ববোধের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছি। আমি মনে করি আমার অভিযোগের কারণে আরেকটি হলমার্ক ধরনের কেলেঙ্কারী থেকে ব্যাংকটি রক্ষা পেল। তবে এজন্য তিনি হুমকির মধ্যে আছেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানান আহমেদ করিম।
জানা যায়, রিম্যাক্স লিবার্টি সিটি লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সম্প্রতি ১৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণমঞ্জুর করে ঢাকা ব্যাংক মতিঝিল আদমজি কোর্ট শাখা। এজন্য গত ১৪ সেপ্টেম্বর ১৩৬২০ নং মর্টগেজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর কাছ থেকে লেটার অব সেটিসফেকশন পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল ব্যাংক। এরই মধ্যে বিপত্তি ঘটান সেই জমির মালিক দাবিদার নোফেল রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ করিম। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবরে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগপত্রে আহমেদ করিম দাবি করেন, ঢাকা ব্যাংকের নামে মর্টগেজকৃত সাভারের আশুলিয়া থানাধীন সেনওয়ালিয়া মৌজার সিএস ৩৫, ৫৫ ও ৫৬ এবং আরএস ৭৬, ১৫৫ ও ১৫৬ দাগের এসব জমির মালিক তিনি। তবে ২০১১ সালে সাবকবলামূলে কিনলেও অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এ জমি এখনো তার নামে জমাখারিজ হয়নি বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি জানান, নামজারি করার অনুমতি চেয়ে তার পক্ষে করা রিট পিটিশন নং ৮২১০/২০১২ হাইকোর্টে চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, যে জমির মালিকানা নিয়ে মামলা চলছে, মালিকপক্ষের অধিকারই এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি সে জমির বিপরীতে মোটা অঙ্কের ঋণমঞ্জুর করা ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে দুর্নীতির যোগসাজস ছাড়া আর কিছু নয়। তা ছাড়া মাত্র ২১৪ শতাংশ জমি মর্টগেজের বিপরীতে ১৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ কিভাবে মঞ্জুর হয় সে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অভিযোগকারী।
অভিযোগ আমলে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রথমে মৌখিকভাবে এবং পরে লিখিতভাবে ঋণের এ টাকা নগদায়ন থেকে বিরত থাকার জন্য ঢাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসংক্রান্ত কারণ দর্শানো নেটিশের জবাবে ঢাকা ব্যাংক বলেছে, প্রাথমিকভাবে সবকিছু সঠিক মনে হলেও বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখছে। তদন্তের সুবিধার্থে ঢাকা ব্যাংক মতিঝিল আদমজি কোর্ট শাখার দায়িত্বে থাকা উপব্যবস্থাপনা পরিচালক খান শাহাদাত হোসেনকে সেই শাখা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে ঢাকা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালকও গত সপ্তাহ পর্যন্ত মতিঝিল আদমজি কোর্ট শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকা খান শাহাদাত হোসেন গতকাল নয়া দিগন্তকে বলেন, ঋণমঞ্জুর হয়েছে, তবে ১৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার অঙ্কটি সঠিক নয়। যথাযথ নিয়ম মেনেই ঋণমঞ্জুর হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, অভিযুক্ত মহিউদ্দিন ২০০৪ সাল থেকেই ঢাকা ব্যাংকের সাথে ব্যবসায় করছেন, এবার তিনি সিসি লোনের লিমিট বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেন, আমরা লিগাল ওপেনিয়নের ভিত্তিতে যথাযথ নিয়ম মেনেই ঋণমঞ্জুর করেছি। সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও মঞ্জুরকৃত ঋণ গ্রাহকের বরাবরে নগদায়ন হবে বলে দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে রিম্যাক্স লিবার্টি সিটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন মঈনের সাথে যোগাযোগের জন্য বহুবার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা গা ঢাকা দিয়েছেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন বলে জানা গেছে। ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ হাবিবকে পাওয়া গেলেও তিনি মোবাইলে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং তার কার্যালয়ে দেখা করার পরামর্শ দেন।
অভিযোগকারী আহমেদ করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নগদ টাকায় জমি কিনেছি। সরকার আমাকে জমাখারিজ করতে দিচ্ছিল না। আমি আদালতে গিয়েছি। নিন্ম আদালতে জিতেছি। সরকার আপিল করেছে। আশা করছি উচ্চ আদালতেও জিতবো। অথচ আমার জমি মর্টগেজ রেখে ব্যাংক অন্য ব্যক্তিকে ঋণ দিচ্ছিল। জানি আমার কোনো ক্ষতি হবে না। তবুও দায়িত্ববোধের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছি। আমি মনে করি আমার অভিযোগের কারণে আরেকটি হলমার্ক ধরনের কেলেঙ্কারী থেকে ব্যাংকটি রক্ষা পেল। তবে এজন্য তিনি হুমকির মধ্যে আছেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানান আহমেদ করিম।
No comments