হারানো মানিক ফিরল বুকে by শাহ আলম
২০১০ সালের ১৯ আগস্ট। রোজার মাস। আইসক্রিমবিক্রেতা শাহিন আলীর শুয়ে-বসে সময় কাটছিল ঘরে। স্বামী ও দুই সন্তান শারমিন (৮) ও নিশানকে (৫) ঘরে রেখে ছয় মাসের পুত্রসন্তান হজরতকে নিয়ে কাজে বেরিয়ে পড়েন রেশমা খাতুন। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ শেষে খাবার নিয়ে সন্ধ্যার আগেই ঘরে ফিরে আসেন। কিন্তু বুকের মানিক শারমিন আর নিশানকে ঘরে পেলেন না। ইফতার না করেই স্বামী-স্ত্রী বেরিয়ে পড়েন ছেলেমেয়ের সন্ধানে। যে খাবারের জন্য এত সংগ্রাম, সেই খাবার পড়ে থাকে ঘরে। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীরাও পাগলের মতো খুঁজতে থাকে শারমিন ও নিশানকে। কিন্তু কোথাও সন্ধান নেই। এরপর একে একে চারটি বছর কেটে গেছে। নিখোঁজ দুই সন্তানকে সর্বক্ষণ খুঁজে বেড়ানো, মাজার-দরগায় গিয়ে মানত করা, পত্রপত্রিকায় খবর ছাপানো—কোনো কিছুই বাদ দেয়নি হতদরিদ্র পরিবারটি। অবশেষে গত রোববার এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে নিখোঁজ মেয়ে শারমিনের সন্ধান পান শাহিন ও রেশমা।
জমিজমা নেই। পরিবার নিয়ে বাস্তুহারা শাহিনের ১৫ বছর ধরে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে বসবাস। দুই সন্তানকে হারিয়ে এত দিন যে ছোট্ট ঘরে ছিল শুধুই কান্না আর দীর্ঘশ্বাস, এখন সেই টিনের চাল ও মাটির দেয়ালঘেরা ঘরেই একটুখানি আনন্দ। যদিও নিখোঁজ নিশানের সন্ধান এখনো মেলেনি। পরিবার সূত্র জানায়, মেয়েকে খুঁজে পাওয়ার খবর পেয়ে শাহিন ও রেশমা রোববার রাতেই বেরিয়ে পড়েন। ছুটে যান জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকী ইউনিয়নের ডাউকী গ্রামের বাসিন্দা আনসার সদস্য আরমান আলীর বাড়িতে। মা-মেয়ে একে অপরকে দেখে চিনতে পারেন। আবেগে কেঁদে ফেলেন দুজনেই। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শারমিনকে গতকাল সোমবার সকালে হাটকালুগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। চার বছর পর হারানো মানিককে খুঁজে পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। স্বজন, প্রতিবেশীরা ভিড়তে থাকে শাহিন-রেশমার ঘরে। গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, শৈশবের খেলার সাথি সানজিদা খাতুন (১২), ফরিদা খাতুন (১২) ও জামেলা খাতুনের (১১) সঙ্গে খেলছে শারমিন। তাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তার বন্ধুরা।
শারমিন জানায়, ঘটনার দিন সে ও তার ভাই নিশান একই সঙ্গে ঘর থেকে বের হয়। দুজনেই হাঁটতে হাঁটতে তিন কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে যায়। এরপর খেয়াল বশে সে ঢাকাগামী একটি বাসে চড়ে বসে। আর নিশান থেকে যায়। ঢাকায় পৌঁছে গাবতলী বাস টার্মিনালে কান্নাকাটি করলে সেখানে কর্মরত আনসার সদস্য আরমান আলীর নজরে আসে সে। পরে তিনিই শারমিনকে ঢাকার নিকেতনে তাঁর বাসায় নিয়ে যান। সেখানে এক মাস থাকার পর তাকে আরমানের গ্রামের বাড়ি ডাউকীতে পাঠানো হয়। আরমান আলীর দুই পুত্রসন্তান। তাঁর মেয়ে না থাকায় শারমিন মেয়ের আদরেই মানুষ হতে থাকে সেখানে। তাকে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ডাউকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। শারমিন জানায়, ছোট ভাই নিশানের বিষয়ে সে কিছুই জানে না। শারমিনের মা রেশমা জানান, তাঁর ননদ বুলবুলি খাতুনের বাড়ি আলমডাঙ্গার ডাউকী ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে। সেই সূত্রে লোক মারফত মেয়ের সন্ধান পেয়েছেন তিনি। শারমিনের বাবা শাহিন বলেন, ‘আল্লাহ মেয়েকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ ছেলেকেও ফিরে পাব।’
জমিজমা নেই। পরিবার নিয়ে বাস্তুহারা শাহিনের ১৫ বছর ধরে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে বসবাস। দুই সন্তানকে হারিয়ে এত দিন যে ছোট্ট ঘরে ছিল শুধুই কান্না আর দীর্ঘশ্বাস, এখন সেই টিনের চাল ও মাটির দেয়ালঘেরা ঘরেই একটুখানি আনন্দ। যদিও নিখোঁজ নিশানের সন্ধান এখনো মেলেনি। পরিবার সূত্র জানায়, মেয়েকে খুঁজে পাওয়ার খবর পেয়ে শাহিন ও রেশমা রোববার রাতেই বেরিয়ে পড়েন। ছুটে যান জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকী ইউনিয়নের ডাউকী গ্রামের বাসিন্দা আনসার সদস্য আরমান আলীর বাড়িতে। মা-মেয়ে একে অপরকে দেখে চিনতে পারেন। আবেগে কেঁদে ফেলেন দুজনেই। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শারমিনকে গতকাল সোমবার সকালে হাটকালুগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। চার বছর পর হারানো মানিককে খুঁজে পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। স্বজন, প্রতিবেশীরা ভিড়তে থাকে শাহিন-রেশমার ঘরে। গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, শৈশবের খেলার সাথি সানজিদা খাতুন (১২), ফরিদা খাতুন (১২) ও জামেলা খাতুনের (১১) সঙ্গে খেলছে শারমিন। তাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তার বন্ধুরা।
শারমিন জানায়, ঘটনার দিন সে ও তার ভাই নিশান একই সঙ্গে ঘর থেকে বের হয়। দুজনেই হাঁটতে হাঁটতে তিন কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে যায়। এরপর খেয়াল বশে সে ঢাকাগামী একটি বাসে চড়ে বসে। আর নিশান থেকে যায়। ঢাকায় পৌঁছে গাবতলী বাস টার্মিনালে কান্নাকাটি করলে সেখানে কর্মরত আনসার সদস্য আরমান আলীর নজরে আসে সে। পরে তিনিই শারমিনকে ঢাকার নিকেতনে তাঁর বাসায় নিয়ে যান। সেখানে এক মাস থাকার পর তাকে আরমানের গ্রামের বাড়ি ডাউকীতে পাঠানো হয়। আরমান আলীর দুই পুত্রসন্তান। তাঁর মেয়ে না থাকায় শারমিন মেয়ের আদরেই মানুষ হতে থাকে সেখানে। তাকে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ডাউকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। শারমিন জানায়, ছোট ভাই নিশানের বিষয়ে সে কিছুই জানে না। শারমিনের মা রেশমা জানান, তাঁর ননদ বুলবুলি খাতুনের বাড়ি আলমডাঙ্গার ডাউকী ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে। সেই সূত্রে লোক মারফত মেয়ের সন্ধান পেয়েছেন তিনি। শারমিনের বাবা শাহিন বলেন, ‘আল্লাহ মেয়েকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ইনশাআল্লাহ ছেলেকেও ফিরে পাব।’
No comments