প্রীতির রক্তকান্না
প্রীতি ঘামলেই তার শরীর থেকে রক্ত ঝরে।
কাঁদলে চোখ থেকে ঝরে রক্ত। এমন এক বিরল রোগ নিয়ে ভুগছে ভারতের বালিকা
প্রীতি। চিকিৎসকরা বলছেন, হ্যামোল্যাক্রিয়া নামের একটি রোগের মারাত্মক ও
বিরল একটি পর্যায়ে ভুগছে সে। যখন প্রীতির পিতামাতা এ রোগের প্রতিকার ও
সমাধান খুঁজতে হন্য হয়ে ফিরছিলেন, তখন বেশির ভাগ ডাক্তার জানান, এক ধরনের
মানসিক অসুস্থতা থেকে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। একই সঙ্গে তাকে সারিয়ে তুলতে
অস্বীকৃতি জানান তারা। শেষ পর্যন্ত দিল্লির ডা. শশীধর শনাক্ত করতে পারলেন
রোগটি। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন এ রোগের প্রতিষেধক বা সমাধান খুঁজবেন তিনি। এ
ঘটনা ৫ বছর আগের। তখন প্রীতি নামের মেয়েটি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন হঠাৎ
করে তার চোখ ও শরীর দিয়ে রক্ত ঝরা শুরু হয়। একে সংক্রমণ ভেবে পরিবারের
সদস্যরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু এর পরের এক বছর আর কোন
লক্ষণ দেখা যায়নি। তবে ২০১০ সালে বিষয়টি আরও খারাপের দিকে চলে যায়। তার
হাত-পা, কান, চোখ, হাতের নখ থেকে রক্ত বের হতে থাকে। প্রীতি জানায়, সে
বুঝতে পারতো কখন যন্ত্রণা শুরু হবে। কেননা রক্ত-অশ্রু বের হবার আগে বেশ
যন্ত্রণা হতো। তবে রক্ত বের হওয়া শুরু করলে যন্ত্রণা উপশম হয়ে যেত! তার
পিতা মনোজ গুপ্ত জানান, এভাবে প্রায় এক-দুই ঘণ্টা থেকে শুরু করে কয়েক দিন
পর্যন্ত স্থায়ী হতো রক্ত ঝরা। রক্ত খুব চিকন প্রবাহে বের হতো। ডা. শশীধর
জানালেন, এ রহস্যজনক রোগের নাম হ্যামোল্যাক্রিয়া। এ রোগে আক্রান্তে শরীরের
যে কোন অংশ থেকে রক্ত বের হওয়া শুরু হতে পারে। রক্ত বের হওয়া থেমে গেলে
শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন থাকতো না। রক্তের প্রবাহ সম্ভবত ঘামগ্রন্থির সঙ্গে
যুক্ত ছিল। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, এ ধরনের রোগ আক্ষরিক অর্থেই বিরল। পুরো
বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুবই কম। ড. শশীধর এ রোগের একেবারে
মূলে যেতে চান। তার ভাষায়, তার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি
হচ্ছে এ রোগের সমাধান বের করা।
No comments