জামিন পেলো বগুড়ার সেই কিশোর
তথ্য-প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার বগুড়ার
কাহালু উপজেলার সেই কিশোর সিজান হোসেনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল
দুপুর ১২টায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক
শাহরিয়ার তারিক তার জামিন মঞ্জুর করেন। সে বগুড়ার কাহালু উপজেলার শীতলাই
সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসার জেডিসি পরীক্ষার্থী। তার আইনজীবী লুৎফুর রহমান
জানিয়েছেন, দৈনিক মানবজমিন-এ
প্রকাশিত ‘প্রধানমন্ত্রী খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি
আদালতের দৃষ্টিগোচর করে ওই কিশোরের জেডিসি পরীক্ষার বিষয়টি অবগত করা হয়।
এসব বিষয় বিবেচনা করে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে। জামিনের কাগজপত্র কিশোর
সংশোধনাগার যশোরে পৌঁছার পর মঙ্গলবার সিজান মুক্তি পাবে বলে তিনি জানান।
তবে সিজানের পিতা শুকুর আলীর জামিন আবেদন করা হলেও এর শুনানি হয়নি।
মানবজমিন-এ এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয় প্রশাসনে।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই ঘটনায় আরও নিবিড় তদন্ত শুরু
করেছে কাহালু থানা পুলিশ। গতকাল দুপুরে সিজানের মাদ্রাসায় ছুটে যান মামলার
তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহালু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হেলাল। বগুড়া
জেলার পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা
হচ্ছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের জন্য গতকাল মানবজমিন-এর অফিসে ফোন করে ধন্যবাদ
জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। কাহালু উপজেলার শীতলাই গ্রামের লোকজন ও
শীতলাই সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে
শুকুর আলীর স্ত্রী কল্পনা আক্তার জানান, গ্রামের লোকজন তাকে পত্রিকা পড়ে
শুনিয়েছেন। এতে সত্য কথা লেখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার স্বামী ও সন্তান
নিরপরাধ। আমরা রাজনীতি বুঝি না, করি না। কাজ করে ভাত খাই। মিথ্যা অভিযোগে
আমার স্বামী-সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৭ই অক্টোবর বগুড়ার কাহালু উপজেলার শীতলাই গ্রাম থেকে সিজান হোসেন ও তার পিতা শুকুর আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। অথচ শুকুর আলী লেখাপড়া জানেন না। মোবাইলের বাটনও টিপতে জানেন না তিনি। শুকুর আলী একজন হতদরিদ্র মানুষ। ফেরি করে বাদাম, আচার বিক্রি করে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করেন। তার পুত্র অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সিজান ৫শ’ টাকা দিয়ে একটি মোবাইল ফোন কিনে ব্যবহার করছিল। ওই ফোনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তিমূলক কার্টুন ভিডিও ছিল বলে পুলিশ দাবি করেছে। পুলিশের অভিযোগ, ভিডিও-কার্টুনটি সিজান আশপাশের লোকদের দেখিয়েছে। কিন্তু সরজমিনে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা কেউ এই কার্টুন-ভিডিও দেখেননি বলে জানান।
No comments