টাঙ্গাইলে সবজি চাষ করে নারীরা স্বাবলম্বী by মোঃ সাজ্জাত হোসেন
অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা আজ সমান তালে এগিয়ে চলেছে। এমন এক সময় ছিল যখন নারীরা শুধু পুরুষদের ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহার হতো। কিন্তু সমাজ পরিবর্তন হয়েছে, সভ্যতার উন্নতি হয়েছে আর নারীরা তাদের গণ্ডির বেড়াজাল থেকে মুক্ত হয়ে সমাজ, দেশ ও জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে পুরুষ এবং নারীকে সমান অধিকার নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তেমনিভাবে কৃষিকাজ ও বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করে অনেক নারী আজ স্বাবলম্বী হয়েছে। অন্ধকার থেকে তারা আজ আলোর পথে ধাবিত হচ্ছে। শুক্রবার উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় কয়েকজন নারী কৃষি শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, যে নারী এক সময় নিজবাড়িতে স্বামীর হুকুমে রান্না আর সন্তান লালন পালন করে সময় পার করতো সেই নারীই আজ সমাজ উন্নয়ন এবং ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কৃষিকাজ করে পরিবারকে এনে দিয়েছে অন্য রকম সুখ আর শান্তি। কৃষি কর্মক্ষেত্রে নারীর সন্তানরা আজ পড়াশোনা করে কেউ ডাক্তার, কেউ প্রকৌশলী আবার কেউ আইন পেশা, কেউ বা আবার সেনা নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করে নিজের জীবন পাল্টে দিয়েছে। এমনি কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা হয়েছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় যারা কৃষিকাজ করে অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন। এক সময় যে সব নারীর পরনে ছিল ছেঁড়া কাপড়, দু’বেলা খাবার জুটতো না। সেই সব কৃষি কর্মজীবী নারীর বাড়িতে আজ পাকা ঘর, পাকা পায়খানা, ঘরে টেলিভিশন, টেলিফোন, ফ্যান, বাসায় গ্যাস, পরনে মোটা কাপড়- এই হল কৃষি কর্মজীবী নারীর বর্তমান অবস্থা।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, দেলদুয়ার, সখীপুর, বাসাইল, নাগরপুর, ভুঞাপুর, ঘাটাইল, গোপালপুর, মধুপুর, কালিহাতী ও ধনবাড়ি উপজেলায় কয়েক হাজার নারী আজ কৃষিক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখে চলেছে। এ সব নারীরা ধান বপন ও কাটা থেকে শুরু করে নানা প্রজাতির ফসল ও সবজির আবাদ করে পুরো সমাজকেই পাল্টে দিয়েছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাইমহাটি, গোড়াই, বাঁশতৈল, লতিফপুর, তরফপুর ও আজগানা এলাকায় সরেজমিন ঘরে কয়েকজন নারী কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা তাদের জীবনচিত্র তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে একজন নারী কৃষক হাফিজা বেগম (৫০) জানায়, এক সময় তার স্বামীর সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। এক বেলা ভাত বা রুটি জুটলেও অন্য বেলা না খেয়ে থাকতে হতো। দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন। স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবং দুটি এনজিওর মাঠকর্মীর পরামর্শে তিনি কৃষি কাজের ওপর এক মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরে তার স্বামীকে অন্যের জমি বর্গা নেয়ার জন্য পরামর্শ দেন। স্ত্রীর কথামতো তার স্বামী আইনুল হক ৭৫ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে এক পাশে ধান চাষ এবং অপর পাশে সবজি আবাদ শুরু করেন। স্বামী-স্ত্রী দিনরাত ক্ষেতে পরিশ্রম শুরু করেন। হাফিজা বেগমের সবজির মধ্যে লাউ, চালকুমড়া, টমেটো, ঝিঙা, শসা, করলা, ঢেঁড়স, মুলা, গাজর, কপিসহ নানা প্রজাতির শাকসবজি রয়েছে। ভোর বেলায় বিভিন্ন হাটবাজার থেকে ক্ষেতে বেপারিরা (পাইকাররা) এসে নগদ টাকায় সবজি কিনে নিয়ে যায়। হাফিজা বেগম বলেন, আমার স্বামী সবজি বিক্রির টাকা হাতে নেয় না। আমার ওপরই ছেড়ে দিয়েছে সংসারের হাল। সংসারের খরচ মিটিয়ে ছেলেমেয়েকে কলেজে ও স্কুলে পড়াচ্ছে। সপ্তাহে খরচ বাদে তার ৪/৫ হাজার টাকা তার মুনাফা থাকে। এখন তাদের সুখের সংসার। কৃষাণীদের মধ্যে মিনা বেগম বলেন, পুরুষের পাশাপাশি সমান কাজ করেও আমরা নানাভাবে বৈষম্যের শিকার। স্বামীর সঙ্গে সমান কাজ করলেও অনেক সময় স্বামী আমাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন। ফসল ও সবজি বিক্রির টাকা হাতে দেয় না। স্বামী নিজ হাতে খরচ করে। আমি টাকা চাইলে তিনি নানাভাবে হয়রানি করে থাকে। তার মতে, আমি নারী বলে কি আমার অধিকার নেই। নায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য তিনি জোর দাবি জানান। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসরিন সুলতানা এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মাদার তেরেসা গোল্ড মেডেল এওয়ার্ডপ্রাপ্ত এবং মির্জাপুর মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি নারী নেত্রী সালমা সালাম উর্মি বলেন, নারীরা আজও কিছু কিছু ক্ষেত্রে নানাভাবে নির্যাতিত ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, যে নারী এক সময় নিজবাড়িতে স্বামীর হুকুমে রান্না আর সন্তান লালন পালন করে সময় পার করতো সেই নারীই আজ সমাজ উন্নয়ন এবং ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কৃষিকাজ করে পরিবারকে এনে দিয়েছে অন্য রকম সুখ আর শান্তি। কৃষি কর্মক্ষেত্রে নারীর সন্তানরা আজ পড়াশোনা করে কেউ ডাক্তার, কেউ প্রকৌশলী আবার কেউ আইন পেশা, কেউ বা আবার সেনা নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করে নিজের জীবন পাল্টে দিয়েছে। এমনি কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা হয়েছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় যারা কৃষিকাজ করে অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন। এক সময় যে সব নারীর পরনে ছিল ছেঁড়া কাপড়, দু’বেলা খাবার জুটতো না। সেই সব কৃষি কর্মজীবী নারীর বাড়িতে আজ পাকা ঘর, পাকা পায়খানা, ঘরে টেলিভিশন, টেলিফোন, ফ্যান, বাসায় গ্যাস, পরনে মোটা কাপড়- এই হল কৃষি কর্মজীবী নারীর বর্তমান অবস্থা।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, দেলদুয়ার, সখীপুর, বাসাইল, নাগরপুর, ভুঞাপুর, ঘাটাইল, গোপালপুর, মধুপুর, কালিহাতী ও ধনবাড়ি উপজেলায় কয়েক হাজার নারী আজ কৃষিক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখে চলেছে। এ সব নারীরা ধান বপন ও কাটা থেকে শুরু করে নানা প্রজাতির ফসল ও সবজির আবাদ করে পুরো সমাজকেই পাল্টে দিয়েছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাইমহাটি, গোড়াই, বাঁশতৈল, লতিফপুর, তরফপুর ও আজগানা এলাকায় সরেজমিন ঘরে কয়েকজন নারী কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা তাদের জীবনচিত্র তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে একজন নারী কৃষক হাফিজা বেগম (৫০) জানায়, এক সময় তার স্বামীর সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। এক বেলা ভাত বা রুটি জুটলেও অন্য বেলা না খেয়ে থাকতে হতো। দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন। স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবং দুটি এনজিওর মাঠকর্মীর পরামর্শে তিনি কৃষি কাজের ওপর এক মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরে তার স্বামীকে অন্যের জমি বর্গা নেয়ার জন্য পরামর্শ দেন। স্ত্রীর কথামতো তার স্বামী আইনুল হক ৭৫ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে এক পাশে ধান চাষ এবং অপর পাশে সবজি আবাদ শুরু করেন। স্বামী-স্ত্রী দিনরাত ক্ষেতে পরিশ্রম শুরু করেন। হাফিজা বেগমের সবজির মধ্যে লাউ, চালকুমড়া, টমেটো, ঝিঙা, শসা, করলা, ঢেঁড়স, মুলা, গাজর, কপিসহ নানা প্রজাতির শাকসবজি রয়েছে। ভোর বেলায় বিভিন্ন হাটবাজার থেকে ক্ষেতে বেপারিরা (পাইকাররা) এসে নগদ টাকায় সবজি কিনে নিয়ে যায়। হাফিজা বেগম বলেন, আমার স্বামী সবজি বিক্রির টাকা হাতে নেয় না। আমার ওপরই ছেড়ে দিয়েছে সংসারের হাল। সংসারের খরচ মিটিয়ে ছেলেমেয়েকে কলেজে ও স্কুলে পড়াচ্ছে। সপ্তাহে খরচ বাদে তার ৪/৫ হাজার টাকা তার মুনাফা থাকে। এখন তাদের সুখের সংসার। কৃষাণীদের মধ্যে মিনা বেগম বলেন, পুরুষের পাশাপাশি সমান কাজ করেও আমরা নানাভাবে বৈষম্যের শিকার। স্বামীর সঙ্গে সমান কাজ করলেও অনেক সময় স্বামী আমাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন। ফসল ও সবজি বিক্রির টাকা হাতে দেয় না। স্বামী নিজ হাতে খরচ করে। আমি টাকা চাইলে তিনি নানাভাবে হয়রানি করে থাকে। তার মতে, আমি নারী বলে কি আমার অধিকার নেই। নায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য তিনি জোর দাবি জানান। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাসরিন সুলতানা এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মাদার তেরেসা গোল্ড মেডেল এওয়ার্ডপ্রাপ্ত এবং মির্জাপুর মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি নারী নেত্রী সালমা সালাম উর্মি বলেন, নারীরা আজও কিছু কিছু ক্ষেত্রে নানাভাবে নির্যাতিত ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
No comments