‘হিলারি ও ট্রাম্প জনপ্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন’
মার্কিন ইতিহাসবিদ ডরিস কিয়ার্ন গুডউইন বর্তমান সময়কে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, জনগণ সন্দেহের ঊর্ধ্বে বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব চায়। কিন্তু আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয়েই জনপ্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমস-এ গুডউইনকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা উল্লেখ করা হয়। টানা চার দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশের গুলিতে দুজন কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হওয়ার পর থেকে প্রতিবাদ চলছে। কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে ডালাস নগরে পাঁচ পুলিশ সদস্য হত্যার বিষয়টি। বর্ণবাদ, সন্ত্রাস, সহিংসতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখন অস্থির সময় পার করছে। এমন অবস্থায় মার্কিন জনগণের দৃষ্টি যোগ্য নেতৃত্বের দিকে। সাধারণ জনগণের আকাঙ্ক্ষা—এমন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন, যিনি সব ধরনের অস্থিরতা সামাল দিতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রে চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় জনগণের দৃষ্টি এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দিকে। কিন্তু উভয় প্রার্থী জনগণের প্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি তাঁরা নিজ দলকেই ঐক্যবদ্ধ করতে পারেননি। ইতিহাসবিদ গুডউইন বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ করার সম্ভাবনা ছিল, ছিল সুযোগও। কিন্তু তিনি ভিন্ন পথে হেঁটেছেন।
ঐক্যের বদলে অনৈক্যকে আলিঙ্গন করেছেন তিনি। গুডউইন বলেন, হিলারির ই-মেইল ইস্যু, এফবিআই প্রতিবেদন প্রভৃতি নিয়ে জনগণের মধ্যে, এমনকি তাঁর সমর্থকদের মধ্যেও সন্দেহ-সংশয় প্রবল হয়েছে। হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্ব নিয়ে দলের ভেতরেই নানা প্রশ্ন রয়েছে। সেখানে দলের বাইরের লোকদের ঐক্যবদ্ধ করা তো তাঁদের জন্য আরও দুরূহ ব্যাপার। সংগত কারণে দুজনের কেউই এখন পর্যন্ত জনগণের ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠতে পারেননি। হিলারি কৃষ্ণাঙ্গদের কাছে জনপ্রিয়। তবে শক্ত হাতে দেশ পরিচালনা নিয়ে হিলারির প্রতি দলীয় সমর্থকদের আস্থার সংকট রয়েছে। হিস্পানিক, অভিবাসী ও মুসলমানদের নিয়ে বিতর্কিত কথাবার্তা বলে ট্রাম্প ইতিমধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। উত্তেজনা ও অসন্তোষ দূর করার পরিবর্তে তিনি লাগামহীন মন্তব্য করে পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কৃষ্ণাঙ্গ ও নাগরিক আন্দোলনের লোকজনের কাছে হিলারি জনপ্রিয় হলেও তাঁকে নিয়ে তাঁর দলের সমর্থকদের মধ্যে একধরনের সন্দেহ কাজ করছে। অনেকেই তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতির প্রতিনিধি মনে করে। এর ওপর যোগ হয়েছে ই-মেইল কেলেঙ্কারি। সব মিলিয়ে তাঁকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় বাড়ছে। ট্রাম্পের সমর্থক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্রেড ডিলুকা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, পুলিশ হত্যার পর ট্রাম্পের বক্তব্য শতভাগ খাঁটি; যদিও ট্রাম্পের অন্য সব মন্তব্য ও বক্তব্য জনগণকে উদ্বিগ্ন করার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করেন তিনি। হিলারিকে কোনোভাবেই বিশ্বাস করা যায় না বলেও মন্তব্য সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তার।
No comments