প্রতিক্রিয়া শহীদ পরিবারের কথা'আদিপাপ থেকে মুক্তি পেল জাতি' by নওশাদ জামিল
'আদিপাপ থেকে মুক্তি পেল জাতি। বাংলাদেশের
ঊষালগ্নে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীরা আদিপাপ করেছিল। ৪২ বছর পরে হলেও সে পাপ
থেকে মুক্তি পেল জাতি।' আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের
সেক্রেটারি জেনারেল ও একাত্তরের আলবদর
বাহিনীর নেতা আলী
আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় শুনে এমন কথাই বললেন একাত্তরে দুই
শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তানরা। এ রায়কে 'ঐতিহাসিক রায়' আখ্যায়িত করেছেন শহীদ
সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন ও শহীদ সুরকার আলতাফ মাহমুদের সন্তানরা গতকাল
বুধবার কালের কণ্ঠকে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের রায় দ্রুত কার্যকর ও
বাস্তবায়নের মাধ্যমেই জাতি প্রকৃতপক্ষে আদিপাপ থেকে মুক্তি পাবে।
শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে সাংবাদিক ও লেখক জাহীদ রেজা নূর কালের কণ্ঠকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "একাত্তরের ১০ ডিসেম্বর আমার বাবা 'দৈনিক ইত্তেফাক'-এর নির্বাহী ও বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল আলবদর বাহিনী। এ বাহিনীর প্রধান মুজাহিদ একাত্তরে কী কী করেছে, তার বিবরণ পাওয়া যাবে তাদেরই মুখপত্র 'সংগ্রাম' পত্রিকায়। বাংলাদেশকে অস্বীকার করেও যে এ দেশের মন্ত্রী হওয়া যায়, সেটা দেখিয়েছে মুজাহিদ। তার প্রতি আমাদের কোনো প্রতিশোধস্পৃহা নেই। আমরা কেবল চাইছি, কলঙ্কমুক্ত হোক দেশ। যে আদিপাপ আমাদের প্রতি মুহূর্তেই ক্ষতবিক্ষত করে, সে পাপ মোচন হওয়া দরকার। আলী আহসান মুজাহিদসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার মাধ্যমেই খুলে যেতে পারে আদিপাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পথ।"
আফসোসের সুরে জাহীদ রেজা নূর আরো বলেন, 'ঐতিহাসিক এ মুহূর্তে প্রথমে মনে পড়ছে মা নূরজাহান সিরাজীকে। মুজাহিদের ফাঁসির রায় মা শুনে যেতে পারলেন না। গত ২১ ডিসেম্বর তিনি চলে গেছেন। আমার মা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছেন। আন্দোলন করেছেন। আজকের এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে মা বেঁচে থাকলে খুশি হতেন।'
সিরাজুদ্দীন হোসেনের আরেক ছেলে ও ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক শাহীন রেজা নূর কালের কণ্ঠকে বলেন, '১০ ডিসেম্বর রাতের কথা খুব মনে পড়ছে, খুব। বাবার মুখটি ভেসে উঠেছে বারবার। মায়ের কথা মনে পড়ছে। রায় শুনে যেতে পারেননি মা। বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন তিনি।' মুজাহিদসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান তিনি। শাহীন রেজা নূর আরো বলেন, 'মুজাহিদ যে বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল, এ রায়ের মধ্য দিয়ে তার বিচার হলো। আর এত দিন মুজাহিদরা যে বলে বেড়াত একাত্তরে কিছুই হয়নি, সেই অপপ্রচারকারীদের মুখেও চপেটাঘাত হলো।'
শাহীন রেজা নূর বলেন, 'একাত্তরের এ ঘৃণ্য অপরাধীর বিরুদ্ধে রায়ে স্বস্তি পেয়েছি। এর দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে সংকট ও যন্ত্রণা আরো বাড়বে।' একই সঙ্গে যাঁরা মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন শাহীন রেজা নূর। রায় বাস্তবায়ন ছাড়াও জামায়াতসহ যুদ্ধাপরাধী বিভিন্ন সংগঠনেরও বিচার দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, 'ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালে যুদ্ধাপরাধীদের কেবল নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নানা ধরনের অপরাধে জড়িত বিভিন্ন সংগঠনেরও বিচার হয়েছিল। জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের সময় যা করেছে, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার করতে হবে।'
জামায়াত নেতা মুজাহিদের ফাঁসির রায় শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সুরকার আলতাফ মাহমুদের সহধর্মিণী সারা আরা মাহমুদ ও মেয়ে শাওন মাহমুদ। রায় শুনে কালের কণ্ঠকে শাওন মাহমুদ বলেন, 'দীর্ঘদিন পরে হলেও বিচার হয়েছে, অপরাধীদের শাস্তি হয়েছে। জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আমরা আনন্দিত।' ফাঁসির রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, 'যত দিন পর্যন্ত রায় বাস্তবায়িত হচ্ছে না, তত দিন পর্যন্ত শহীদের আত্মা শান্তি পাবে না।'
শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে সাংবাদিক ও লেখক জাহীদ রেজা নূর কালের কণ্ঠকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "একাত্তরের ১০ ডিসেম্বর আমার বাবা 'দৈনিক ইত্তেফাক'-এর নির্বাহী ও বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল আলবদর বাহিনী। এ বাহিনীর প্রধান মুজাহিদ একাত্তরে কী কী করেছে, তার বিবরণ পাওয়া যাবে তাদেরই মুখপত্র 'সংগ্রাম' পত্রিকায়। বাংলাদেশকে অস্বীকার করেও যে এ দেশের মন্ত্রী হওয়া যায়, সেটা দেখিয়েছে মুজাহিদ। তার প্রতি আমাদের কোনো প্রতিশোধস্পৃহা নেই। আমরা কেবল চাইছি, কলঙ্কমুক্ত হোক দেশ। যে আদিপাপ আমাদের প্রতি মুহূর্তেই ক্ষতবিক্ষত করে, সে পাপ মোচন হওয়া দরকার। আলী আহসান মুজাহিদসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার মাধ্যমেই খুলে যেতে পারে আদিপাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পথ।"
আফসোসের সুরে জাহীদ রেজা নূর আরো বলেন, 'ঐতিহাসিক এ মুহূর্তে প্রথমে মনে পড়ছে মা নূরজাহান সিরাজীকে। মুজাহিদের ফাঁসির রায় মা শুনে যেতে পারলেন না। গত ২১ ডিসেম্বর তিনি চলে গেছেন। আমার মা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছেন। আন্দোলন করেছেন। আজকের এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে মা বেঁচে থাকলে খুশি হতেন।'
সিরাজুদ্দীন হোসেনের আরেক ছেলে ও ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক শাহীন রেজা নূর কালের কণ্ঠকে বলেন, '১০ ডিসেম্বর রাতের কথা খুব মনে পড়ছে, খুব। বাবার মুখটি ভেসে উঠেছে বারবার। মায়ের কথা মনে পড়ছে। রায় শুনে যেতে পারেননি মা। বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন তিনি।' মুজাহিদসহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান তিনি। শাহীন রেজা নূর আরো বলেন, 'মুজাহিদ যে বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল, এ রায়ের মধ্য দিয়ে তার বিচার হলো। আর এত দিন মুজাহিদরা যে বলে বেড়াত একাত্তরে কিছুই হয়নি, সেই অপপ্রচারকারীদের মুখেও চপেটাঘাত হলো।'
শাহীন রেজা নূর বলেন, 'একাত্তরের এ ঘৃণ্য অপরাধীর বিরুদ্ধে রায়ে স্বস্তি পেয়েছি। এর দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে সংকট ও যন্ত্রণা আরো বাড়বে।' একই সঙ্গে যাঁরা মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন শাহীন রেজা নূর। রায় বাস্তবায়ন ছাড়াও জামায়াতসহ যুদ্ধাপরাধী বিভিন্ন সংগঠনেরও বিচার দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, 'ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালে যুদ্ধাপরাধীদের কেবল নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নানা ধরনের অপরাধে জড়িত বিভিন্ন সংগঠনেরও বিচার হয়েছিল। জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের সময় যা করেছে, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার করতে হবে।'
জামায়াত নেতা মুজাহিদের ফাঁসির রায় শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সুরকার আলতাফ মাহমুদের সহধর্মিণী সারা আরা মাহমুদ ও মেয়ে শাওন মাহমুদ। রায় শুনে কালের কণ্ঠকে শাওন মাহমুদ বলেন, 'দীর্ঘদিন পরে হলেও বিচার হয়েছে, অপরাধীদের শাস্তি হয়েছে। জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আমরা আনন্দিত।' ফাঁসির রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, 'যত দিন পর্যন্ত রায় বাস্তবায়িত হচ্ছে না, তত দিন পর্যন্ত শহীদের আত্মা শান্তি পাবে না।'
No comments