পবিত্র কোরআনের আলো-সাহাবায়ে কেরাম উম্মতের মধ্যে পবিত্র ও সর্বোত্তম কাফেলা
১০৮. কুল হা-যিহী সাবীলী- আদ'ঊ-
ইলাল্লা-হি, 'আলা- বাসীরাতিন আনা ওয়া মানিত তাবা'আনী, ওয়া সুবহা-নাল্লাহি
ওয়া মা- আনা মিনাল মুশরিকীন। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ১০৮.
(হে নবী,) তুমি বলে দাও, এটাই আমার পথ। পুরোপুরি জেনে-বুঝেই আমি আল্লাহর
পথে আহ্বান করি এবং আমার অনুসারীরাও তেমনি।* আল্লাহ মহাপবিত্র। আমি কখনো
মুশরিক নই।
তাফসির : * প্রিয়তম রাসুল মুহাম্মদ (সা,)-এর পবিত্র জবানে ঘোষণা করে দেওয়ার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নির্দেশ দিচ্ছেন, তুমি বলো, আমি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা সহকারেই তোমাদের আল্লাহর পথে আহ্বান করছি, ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি এবং আমার এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ মহান দায়িত্ব পালনে আমি এবং আমার অনুসারীরা দৃঢ়, অটল এবং আপসহীন থাকব। এসব আলোচনার মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, প্রিয় রাসুল (সা.)-এর আল্লাহর পথে দাওয়াতি মিশন নিছক কোনো চিন্তাধারা নয়; বরং তা পরিপূর্ণ জ্ঞান, পর্যাপ্ত বুদ্ধিমত্তা এবং পরিণত প্রজ্ঞার ফল। দাওয়াতি এই মিশনের বৈশিষ্ট্যে তাঁর অনুসারী বিশেষ করে মহান সাহাবায়ে কেরামও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এখানে অনুসারী বলে সাহাবায়ে কেরামকে বোঝানো হয়েছে। তাঁরা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর জ্ঞানের বাহক এবং আল্লাহর সিপাহি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, সাহাবায়ে কেরাম এ উম্মতের সর্বোত্তম ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের অন্তর পবিত্র এবং জ্ঞান সুগভীর। তাঁদের মধ্যে লৌকিকতার নামগন্ধও নেই। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের নিজের রাসুলের সাহচর্য এবং সেবার জন্য মনোনীত করেছেন। তোমরা তাঁদের চরিত্র, অভ্যাস ও তরিকা অনুসরণ করো। কারণ, তাঁরা সরল পথের পথিক।
'ওয়া মানিত্তাবা'আনী' অর্থাৎ 'এবং আমার অনুসারীরাও তেমনি' বাক্যটি ব্যাপক অর্থেও প্রয়োগ হতে পারে। তখন এ বাক্যের মাধ্যমে যেমন মহান সাহাবায়ে কেরামকে বোঝানো হবে, তেমনি ওইসব ব্যক্তিকেও বোঝানো হবে, যারা কেয়ামত পর্যন্ত প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.)-এর দ্বীনে ইসলামের দাওয়াতি কার্যক্রম যুগে যুগে, দেশে দেশে কেয়ামত পর্যন্ত পৌঁছানোর কাজে নিয়োজিত থাকবেন। হজরত ইবনে জায়েদ (রহ.) বলেন, এ আয়াত থেকে বোঝা গেল, যে কেউ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণকারী বলে নিজেকে দাবি করবেন, তার জন্য আবশ্যক হলো, ইসলামের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া এবং কোরআন শরিফের শিক্ষাবিস্তারে ভূমিকা পালন করা।
আগের আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে, অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর ওপর ইমান রাখলেও তারা শিরকের মতো গুরুতর জুলুমে যুক্ত। যাদের মুশরিক বলা হয়। হজরত রাসুলে কারিম (সা.) ঘোষণা করছেন, আমি প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য ছোট বড় সব ধরনের শিরকি কর্ম থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, আমার দাওয়াতের উদ্দেশ্য মানুষকে নিজের দাসে পরিণত করা নয়। বরং আমি নিজেও আল্লাহর দাস। তোমাদেরও তাঁরই দাসত্ব স্বীকার ও চর্চা করার জন্য দাওয়াত দিচ্ছি। কারণ, তিনি আমাদের তোমাদের তথা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের স্রষ্টা, মালিক এবং প্রতিপালক। দাসত্ব করতে হলে একমাত্র তাঁর দাসত্বই করতে হবে। নিজে মানুষ হয়ে অন্য মানুষের দাসত্ব করবে, অন্য কোনো পশু-পাখি বা গাছ-গাছালি অথবা নিজের হাতে তৈরি মূর্তির পূজা করবে, এগুলো সম্পূর্ণ শিরক। তা কখনো আল্লাহ তায়ালা বরদাশত করেন না। আল্লাহ মহাপবিত্র। আমার প্রতিও দাওয়াতদাতা হিসেবে বিশ্বাস করা ফরজ।
তাফসিরে মাজহারি ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * প্রিয়তম রাসুল মুহাম্মদ (সা,)-এর পবিত্র জবানে ঘোষণা করে দেওয়ার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নির্দেশ দিচ্ছেন, তুমি বলো, আমি পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা সহকারেই তোমাদের আল্লাহর পথে আহ্বান করছি, ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি এবং আমার এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ মহান দায়িত্ব পালনে আমি এবং আমার অনুসারীরা দৃঢ়, অটল এবং আপসহীন থাকব। এসব আলোচনার মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে, প্রিয় রাসুল (সা.)-এর আল্লাহর পথে দাওয়াতি মিশন নিছক কোনো চিন্তাধারা নয়; বরং তা পরিপূর্ণ জ্ঞান, পর্যাপ্ত বুদ্ধিমত্তা এবং পরিণত প্রজ্ঞার ফল। দাওয়াতি এই মিশনের বৈশিষ্ট্যে তাঁর অনুসারী বিশেষ করে মহান সাহাবায়ে কেরামও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, এখানে অনুসারী বলে সাহাবায়ে কেরামকে বোঝানো হয়েছে। তাঁরা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর জ্ঞানের বাহক এবং আল্লাহর সিপাহি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, সাহাবায়ে কেরাম এ উম্মতের সর্বোত্তম ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের অন্তর পবিত্র এবং জ্ঞান সুগভীর। তাঁদের মধ্যে লৌকিকতার নামগন্ধও নেই। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের নিজের রাসুলের সাহচর্য এবং সেবার জন্য মনোনীত করেছেন। তোমরা তাঁদের চরিত্র, অভ্যাস ও তরিকা অনুসরণ করো। কারণ, তাঁরা সরল পথের পথিক।
'ওয়া মানিত্তাবা'আনী' অর্থাৎ 'এবং আমার অনুসারীরাও তেমনি' বাক্যটি ব্যাপক অর্থেও প্রয়োগ হতে পারে। তখন এ বাক্যের মাধ্যমে যেমন মহান সাহাবায়ে কেরামকে বোঝানো হবে, তেমনি ওইসব ব্যক্তিকেও বোঝানো হবে, যারা কেয়ামত পর্যন্ত প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.)-এর দ্বীনে ইসলামের দাওয়াতি কার্যক্রম যুগে যুগে, দেশে দেশে কেয়ামত পর্যন্ত পৌঁছানোর কাজে নিয়োজিত থাকবেন। হজরত ইবনে জায়েদ (রহ.) বলেন, এ আয়াত থেকে বোঝা গেল, যে কেউ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণকারী বলে নিজেকে দাবি করবেন, তার জন্য আবশ্যক হলো, ইসলামের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া এবং কোরআন শরিফের শিক্ষাবিস্তারে ভূমিকা পালন করা।
আগের আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে, অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর ওপর ইমান রাখলেও তারা শিরকের মতো গুরুতর জুলুমে যুক্ত। যাদের মুশরিক বলা হয়। হজরত রাসুলে কারিম (সা.) ঘোষণা করছেন, আমি প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য ছোট বড় সব ধরনের শিরকি কর্ম থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, আমার দাওয়াতের উদ্দেশ্য মানুষকে নিজের দাসে পরিণত করা নয়। বরং আমি নিজেও আল্লাহর দাস। তোমাদেরও তাঁরই দাসত্ব স্বীকার ও চর্চা করার জন্য দাওয়াত দিচ্ছি। কারণ, তিনি আমাদের তোমাদের তথা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের স্রষ্টা, মালিক এবং প্রতিপালক। দাসত্ব করতে হলে একমাত্র তাঁর দাসত্বই করতে হবে। নিজে মানুষ হয়ে অন্য মানুষের দাসত্ব করবে, অন্য কোনো পশু-পাখি বা গাছ-গাছালি অথবা নিজের হাতে তৈরি মূর্তির পূজা করবে, এগুলো সম্পূর্ণ শিরক। তা কখনো আল্লাহ তায়ালা বরদাশত করেন না। আল্লাহ মহাপবিত্র। আমার প্রতিও দাওয়াতদাতা হিসেবে বিশ্বাস করা ফরজ।
তাফসিরে মাজহারি ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments