রায়ের পর্যবেক্ষণ গুপ্তঘাতক আলবদর ছিল জামায়াতের ‘সশস্ত্র বিভাগ’
একাত্তরের গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনী ছিল
জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র বিভাগ। জামায়াত কোনোভাবেই একাত্তরের
অস্ত্রসজ্জিত, ফ্যাসিস্ট এই বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী
কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব এড়াতে পারে না।
জামায়াতে ইসলামীর
সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলার
রায়ে গতকাল বুধবার ট্রাইব্যুনাল এই পর্যবেক্ষণ দেন। একাত্তরে বুদ্ধিজীবী
হত্যাকাণ্ডের দায়ে মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ
ট্রাইব্যুনাল-২।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণে বলেন, দুই ট্রাইব্যুনালের রায়ে এটা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত যে জামায়াতে ইসলামী একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। আরও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আলবদর ছিল জামায়াতের ‘অ্যাকশন সেকশন, সশস্ত্র বিভাগ’।
আলবদর গঠিত হয়েছে মূলত জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্যদের দিয়ে। জামায়াত ও ছাত্র সংঘ পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি আরও অস্থির করে তোলে। একাত্তরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা ৫০ হাজার সদস্যের রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলে। এ সময় জামায়াত পাকিস্তান রক্ষার নামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের ‘দুষ্কৃতকারী, ‘ভারতের দালাল’, ‘ইসলামের শত্রু’ বলে আখ্যায়িত করত। জামায়াত কোনোভাবেই একাত্তরের অস্ত্রসজ্জিত, ফ্যাসিস্ট আলবদর বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। জামায়াত বলে, তারা ধর্মের নীতি ও আদর্শ প্রচার করে। অথচ ইসলামের মূল আদর্শ মানবতা ও সহিষ্ণুতার ন্যূনতম নিদর্শন জামায়াতের একাত্তরের কর্মকাণ্ডে পাওয়া যায় না।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ১৯৭৯ সালে সাংবাদিক লরেন্স লিফসুজ বাংলাদেশ: দ্য আনফিনিসড রেভুলেশন বইয়ে লেখেন, আলবদর ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি ধর্মভিত্তিক উগ্র আধা সামরিক বাহিনী। একাত্তরে তারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। দেখা যাচ্ছে, আলবদর নামের ওই আধা সামরিক বাহিনী ছিল একটি ‘ডেথ স্কোয়াড’; যারা নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালি, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক এবং হিন্দুদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। নথিপত্রে দেখা যায়, রাজাকার বাহিনীর দুটি আলাদা বিভাগ ছিল আলবদর ও আলশামস। রাজাকার ও আলবদরদের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার বেতন-ভাতা দিত। একাত্তরে নেত্রকোনা মহকুমায় আলবদরদের পূর্ব পাকিস্তান সরকার অস্ত্র সরবরাহ করে।
ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণে জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম-এর উদ্ধৃতিও দেন। একাত্তরের ১৪ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম-এ আলবদর বাহিনী সম্পর্কে লেখা হয়, ‘আলবদর একটি নাম! একটি বিস্ময়! আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী, আলবদর সেখানেই। যেখানেই দুষ্কৃতকারী, আলবদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা দৃষ্কৃতকারীদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল।’
১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত ফক্স বাটারফিল্ডের একটি প্রতিবেদন রায়ের পর্যবেক্ষণে উদ্ধৃত করা হয়। তাতে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনাদের একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মাধ্যমে যে আলবদর পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হতো, তাঁর জ্বলন্ত প্রমাণ রয়েছে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর ডেস্কে প্রাপ্ত নথিগুলোর মধ্যে আলবদরের একাধিক গুপ্ত নথি পাওয়া গেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘ক্যাপ্টেন তাহির-আলবদরের জন্য যানবাহন’। আরেকটি নথিতে বলা হয়েছে, ‘আলবদরের ব্যবহার...’। বাঙালি ধ্বংসে ব্যবহূত রাজাকার ও বিহারি আধা সামরিক বাহিনীদের সর্বোচ্চ নেতা ও পাকিস্তানি কমান্ডার হিসেবে ক্যাপ্টেন তাহিরকে মনে করা হয়।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণে বলেন, দুই ট্রাইব্যুনালের রায়ে এটা ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত যে জামায়াতে ইসলামী একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। আরও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আলবদর ছিল জামায়াতের ‘অ্যাকশন সেকশন, সশস্ত্র বিভাগ’।
আলবদর গঠিত হয়েছে মূলত জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্যদের দিয়ে। জামায়াত ও ছাত্র সংঘ পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি আরও অস্থির করে তোলে। একাত্তরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা ৫০ হাজার সদস্যের রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলে। এ সময় জামায়াত পাকিস্তান রক্ষার নামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের ‘দুষ্কৃতকারী, ‘ভারতের দালাল’, ‘ইসলামের শত্রু’ বলে আখ্যায়িত করত। জামায়াত কোনোভাবেই একাত্তরের অস্ত্রসজ্জিত, ফ্যাসিস্ট আলবদর বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। জামায়াত বলে, তারা ধর্মের নীতি ও আদর্শ প্রচার করে। অথচ ইসলামের মূল আদর্শ মানবতা ও সহিষ্ণুতার ন্যূনতম নিদর্শন জামায়াতের একাত্তরের কর্মকাণ্ডে পাওয়া যায় না।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ১৯৭৯ সালে সাংবাদিক লরেন্স লিফসুজ বাংলাদেশ: দ্য আনফিনিসড রেভুলেশন বইয়ে লেখেন, আলবদর ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি ধর্মভিত্তিক উগ্র আধা সামরিক বাহিনী। একাত্তরে তারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। দেখা যাচ্ছে, আলবদর নামের ওই আধা সামরিক বাহিনী ছিল একটি ‘ডেথ স্কোয়াড’; যারা নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালি, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক এবং হিন্দুদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। নথিপত্রে দেখা যায়, রাজাকার বাহিনীর দুটি আলাদা বিভাগ ছিল আলবদর ও আলশামস। রাজাকার ও আলবদরদের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার বেতন-ভাতা দিত। একাত্তরে নেত্রকোনা মহকুমায় আলবদরদের পূর্ব পাকিস্তান সরকার অস্ত্র সরবরাহ করে।
ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণে জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম-এর উদ্ধৃতিও দেন। একাত্তরের ১৪ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম-এ আলবদর বাহিনী সম্পর্কে লেখা হয়, ‘আলবদর একটি নাম! একটি বিস্ময়! আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী, আলবদর সেখানেই। যেখানেই দুষ্কৃতকারী, আলবদর সেখানেই। ভারতীয় চর কিংবা দৃষ্কৃতকারীদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল।’
১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত ফক্স বাটারফিল্ডের একটি প্রতিবেদন রায়ের পর্যবেক্ষণে উদ্ধৃত করা হয়। তাতে বলা হয়, পাকিস্তানি সেনাদের একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মাধ্যমে যে আলবদর পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হতো, তাঁর জ্বলন্ত প্রমাণ রয়েছে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর ডেস্কে প্রাপ্ত নথিগুলোর মধ্যে আলবদরের একাধিক গুপ্ত নথি পাওয়া গেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘ক্যাপ্টেন তাহির-আলবদরের জন্য যানবাহন’। আরেকটি নথিতে বলা হয়েছে, ‘আলবদরের ব্যবহার...’। বাঙালি ধ্বংসে ব্যবহূত রাজাকার ও বিহারি আধা সামরিক বাহিনীদের সর্বোচ্চ নেতা ও পাকিস্তানি কমান্ডার হিসেবে ক্যাপ্টেন তাহিরকে মনে করা হয়।
No comments