জাতীয় পার্টিকে পাশে পেতে দুই দলই তৎপর by তানভীর সোহেল
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—দুটি দলই জাতীয়
পার্টিকে পাশে রাখতে চাইছে। আবার জাতীয় পার্টিও বড় দুটি দলের সঙ্গে
সুসম্পর্ক রেখে চলার কৌশল নিয়েছে। মহাজোট ত্যাগ করা কিংবা ১৮-দলীয় জোটে যোগ
দেওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক
সিদ্ধান্ত না নিলেও দুই জোটের নেতাদের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে চলছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
২৩ বছর আগে দুটি বড় দলই একজোট হয়ে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিল। এখন তারাই আবার জাতীয় পার্টিকে কাছে পেতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
দুই জোটের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলটিকে মহাজোটে রাখতে আওয়ামী লীগ এবং মহাজোট থেকে বের করে আনতে বিএনপি জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে। তা ছাড়া নানা মাধ্যমে এরশাদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে তারা। দুই পক্ষেরই দাবি, আগামী নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টি কোনো না কোনোভাবে তাদের সঙ্গে থাকবে।
তবে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ গতকাল রাজধানীতে দলের এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বলেন, দুই দলকে কেউ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই কারও সঙ্গে আর জোট নয়। এ সময় দলের নেতা-কর্মীরা কোনো জোটে না যাওয়ার পক্ষে স্লোগান দিলে তিনি বলেন, ‘এত দিন খেলনা ছিলাম। কেউ খোঁজখবর রাখেনি। এখন সবাই খবর নিচ্ছে। তোমরা যদি চাও, আমরা একলাই নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসব।’ জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, দলটির ৪১ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর অধিকাংশ সদস্য মহাজোট ছাড়ার পক্ষে। এই অংশের ‘অঘোষিত’ নেতৃত্বে আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর আহমেদ। তাঁর সঙ্গে আছেন মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ সভাপতিমণ্ডলীর অন্তত ৩৫ জন সদস্য।
অন্যদিকে মহাজোটের সঙ্গে থাকার পক্ষের অংশটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তাঁর সঙ্গে আছেন জিয়াউদ্দিনসহ অন্তত পাঁচজন সদস্য। এরশাদ দুই পক্ষের চাওয়ার মধ্যে ‘ভারসাম্য’ রেখে চলছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির মতো জাতীয় পার্টিতেও তাঁর কথাই শেষ কথা। তিনি কখনো বলছেন মহাজোটেই থাকছেন, আবার কখনো বলছেন শিগগিরই মহাজোট ছাড়বেন।
গত সোমবার রাতে গুলশানে কাজী জাফরের বাসায় এরশাদ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আলাপচারিতাকে মহাজোট ছাড়ার একটা প্রাথমিক লক্ষণ বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে, সেখানে উপস্থিত দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাজী জাফরের বাসায় এরশাদ ও ফখরুলের মধ্যে রাজনৈতিক কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। যে কক্ষটিতে তাঁরা বসেছিলেন, সেখানে আরও অনেকেই ছিলেন। সাধারণ কুশল বিনিময় হয়েছে। মূলত কাজী জাফরের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই এরশাদ ও ফখরুল সেখানে গিয়েছিলেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, তারা জাতীয় পার্টিকে জোটে আনতে না পারলেও অন্তত মহাজোট থেকে বের করে আনতে চায়। এ জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দলটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে আসা নেতাদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। বিশেষ করে মওদুদ আহমদ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ স্থাপনের জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছেন কাজী জাফর আহমদ। তিনি অনেকটা এগিয়েছেন বলে দলীয় নেতাদের দাবি। ওই নেতারা বলেন, কাজী জাফরের কারণে গাজীপুরে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী চাইলেও এরশাদ সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারেননি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দল চায় জাতীয় পার্টি ১৮ দলে বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় বিএনপির সঙ্গে আসুক। এ জন্য নানাভাবে বিষয়টি এরশাদকে জানানো হয়েছে। জাতীয় পার্টির একটি অংশও চায় বিএনপির পক্ষে আসতে। তিনি বলেন, ‘তবে, দলটির চেয়ারম্যান চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত বা বিএনপিতে আসবেন, এমন কোনো কথা জানাননি। এরশাদ সাহেব একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তিনি বুঝেশুনেই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
জাতীয় পার্টি মহাজোট ছাড়তে পারে, এমন খবরের পর আওয়ামী লীগের নেতারা এইচ এম এরশাদের কাছে ছুটে যান। বিশেষ করে গাজীপুর নির্বাচনে মহাজোটকে সমর্থন না দেওয়ার বিষয়টি তাঁদের চিন্তায় ফেলে। ইতিমধ্যে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন।
জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সময়ে রাজনীতিতে চারটি বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সামনে আরও চার মাস সময় আছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। এই সময়ের মধ্যে দৃশ্যপট বদলাবে। জাতীয় পার্টি মহাজোটের সঙ্গেই আছে। আগামীতে কী হবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। শেষটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
২৩ বছর আগে দুটি বড় দলই একজোট হয়ে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিল। এখন তারাই আবার জাতীয় পার্টিকে কাছে পেতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
দুই জোটের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলটিকে মহাজোটে রাখতে আওয়ামী লীগ এবং মহাজোট থেকে বের করে আনতে বিএনপি জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে। তা ছাড়া নানা মাধ্যমে এরশাদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে তারা। দুই পক্ষেরই দাবি, আগামী নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টি কোনো না কোনোভাবে তাদের সঙ্গে থাকবে।
তবে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ গতকাল রাজধানীতে দলের এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বলেন, দুই দলকে কেউ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই কারও সঙ্গে আর জোট নয়। এ সময় দলের নেতা-কর্মীরা কোনো জোটে না যাওয়ার পক্ষে স্লোগান দিলে তিনি বলেন, ‘এত দিন খেলনা ছিলাম। কেউ খোঁজখবর রাখেনি। এখন সবাই খবর নিচ্ছে। তোমরা যদি চাও, আমরা একলাই নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসব।’ জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, দলটির ৪১ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর অধিকাংশ সদস্য মহাজোট ছাড়ার পক্ষে। এই অংশের ‘অঘোষিত’ নেতৃত্বে আছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর আহমেদ। তাঁর সঙ্গে আছেন মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ সভাপতিমণ্ডলীর অন্তত ৩৫ জন সদস্য।
অন্যদিকে মহাজোটের সঙ্গে থাকার পক্ষের অংশটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তাঁর সঙ্গে আছেন জিয়াউদ্দিনসহ অন্তত পাঁচজন সদস্য। এরশাদ দুই পক্ষের চাওয়ার মধ্যে ‘ভারসাম্য’ রেখে চলছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির মতো জাতীয় পার্টিতেও তাঁর কথাই শেষ কথা। তিনি কখনো বলছেন মহাজোটেই থাকছেন, আবার কখনো বলছেন শিগগিরই মহাজোট ছাড়বেন।
গত সোমবার রাতে গুলশানে কাজী জাফরের বাসায় এরশাদ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আলাপচারিতাকে মহাজোট ছাড়ার একটা প্রাথমিক লক্ষণ বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে, সেখানে উপস্থিত দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাজী জাফরের বাসায় এরশাদ ও ফখরুলের মধ্যে রাজনৈতিক কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি। যে কক্ষটিতে তাঁরা বসেছিলেন, সেখানে আরও অনেকেই ছিলেন। সাধারণ কুশল বিনিময় হয়েছে। মূলত কাজী জাফরের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই এরশাদ ও ফখরুল সেখানে গিয়েছিলেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, তারা জাতীয় পার্টিকে জোটে আনতে না পারলেও অন্তত মহাজোট থেকে বের করে আনতে চায়। এ জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব দলটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে আসা নেতাদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে। বিশেষ করে মওদুদ আহমদ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলেছেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ স্থাপনের জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছেন কাজী জাফর আহমদ। তিনি অনেকটা এগিয়েছেন বলে দলীয় নেতাদের দাবি। ওই নেতারা বলেন, কাজী জাফরের কারণে গাজীপুরে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী চাইলেও এরশাদ সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারেননি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর দল চায় জাতীয় পার্টি ১৮ দলে বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় বিএনপির সঙ্গে আসুক। এ জন্য নানাভাবে বিষয়টি এরশাদকে জানানো হয়েছে। জাতীয় পার্টির একটি অংশও চায় বিএনপির পক্ষে আসতে। তিনি বলেন, ‘তবে, দলটির চেয়ারম্যান চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত বা বিএনপিতে আসবেন, এমন কোনো কথা জানাননি। এরশাদ সাহেব একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তিনি বুঝেশুনেই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
জাতীয় পার্টি মহাজোট ছাড়তে পারে, এমন খবরের পর আওয়ামী লীগের নেতারা এইচ এম এরশাদের কাছে ছুটে যান। বিশেষ করে গাজীপুর নির্বাচনে মহাজোটকে সমর্থন না দেওয়ার বিষয়টি তাঁদের চিন্তায় ফেলে। ইতিমধ্যে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন।
জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সময়ে রাজনীতিতে চারটি বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সামনে আরও চার মাস সময় আছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। এই সময়ের মধ্যে দৃশ্যপট বদলাবে। জাতীয় পার্টি মহাজোটের সঙ্গেই আছে। আগামীতে কী হবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। শেষটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
No comments