বৃদ্ধ আইন! by মাহফুজুর রহমান মানিক
নচিকেতার বৃদ্ধাশ্রম গানটি যে কারও হৃদয়
ছুঁয়ে যাবে। মানবজীবনের এক নির্মম বাস্তবতার কথা বলছে এটি। গানের প্রথম
দিকের চেয়ে শেষের কথাগুলো বোধহয় বেশি বাস্তব।
'ছেলে আমার মস্ত মানুষ, মস্ত অফিসার/মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার
নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী/সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি।'
প্রথম এ ক'টা লাইনের পরই দেখা গেল, কম দামি বলেই বাবার স্থান হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। গান হলেও এটি আসলে সমাজের কথাই বলছে। উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রম এখন সেভাবে দেখা না গেলেও মা-বাবা বৃদ্ধ ও অসামর্থ্য হলে তাদের অবস্থা কারও অজানা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই মা-বাবা থাকেন ছেলেমেয়ে থেকে দূরে। কাছে থাকলেও তাদের যে ধরনের সেবাযত্ন প্রয়োজন তা অনেকে পান না। এর ব্যতিক্রম থাকলেও তাদের অসহায়ত্বের চিত্রই বেশি দেখা যায়। এই অসহায়ত্ব দূর করার কেউ আছে? মানুষের একেবারে পারিবারিক পর্যায়ের এই সুখ-দুঃখ নিয়ে রাষ্ট্রের মাথা ঘামানোরই-বা সময় কোথায়। তারপরও সে কাজটিই করেছে চীন। সম্প্রতি বৃদ্ধদের অধিকার রক্ষায় আইন করেছে দেশটি। ১ জুলাই 'এলডারলি রাইটস ল' বা প্রবীণ অধিকার আইন নামে এটি কার্যকর হয় সেখানে। জনবহুল দেশটিতে বৃদ্ধদের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। ৬০ বা তদূর্ধ্ব বয়সী মানুষ রয়েছে সংখ্যায় প্রায় ২০ কোটি। ২০৩০ সালে এটি দ্বিগুণ হবে বলছে বিবিসি। আইনের মূলকথা হলো, সন্তানদের অবশ্যই বৃদ্ধ মাতা-পিতাকে দেখাশোনা করতে হবে, তাদের দেখতে যেতে হবে। ৭৭ বছরের বৃদ্ধ যে মা ৪০ কিলোমিটার বা ২৫ মাইল দূরে থাকে, তাকে বন্ধের দিনগুলো ছাড়াও দুই মাসে অন্তত একবার দেখতে যেতে হবে। ডিসেম্বরে এটি আইন পরিষদে আনা হয়। এরপরও বৃদ্ধ মাতা-পিতার প্রতি অবহেলা দেখে চূড়ান্তভাবে আইনটি কার্যকর করে আইন পরিষদ। একে হয়তো অনেকে 'অদ্ভুত' আইন বলবেন। এভাবে আইন করে আসলে বৃদ্ধ মানুষের অধিকার কতটুকু সংরক্ষণ করা যাবে বলা মুশকিল। তারপরও জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিও আইনের অন্যতম উদ্দেশ্য_ বলছেন চীনা এক কর্মকর্তা।
এতদিন সবাই শিশু আইন, শিশুনীতির কথা জেনেছে। চীনের এই আইনের মাধ্যমে বলা চলে বৃদ্ধ আইনও আমরা দেখলাম। যদিও ইতিমধ্যে আইনটি নিয়ে তোলপাড় হয়েছে চীনে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে। অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। অনেকে বলছেন, মা-বাবার সঙ্গে দেখা করার সময় তারা পান না।
এটা নির্মম সত্য, যে মা-বাবা সন্তানকে জন্মদান করেছেন, তাকে লালন-পালন করে বড় করেছে সে মা-বাবাকেই বৃদ্ধাবস্থায় এসে অনেক সন্তান ভুলে যায়। নচিকেতার ভাষায়, মা-বাবা তার কাছে সবচেয়ে কম দামি মনে হয়। অথচ কেউ চিন্তা করে না মানবজীবন এক চক্রের মধ্যে আবদ্ধ_ আজ যার যৌবন আছে কাল তার বার্ধক্য আসবেই।
চীনা বৃদ্ধ মা-বাবাদের জন্য এ আইন কতটা খুশি করতে পেরেছে জানা নেই। তারপরও সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে একজন মায়ের কথা জানা গেছে, সাংহাইতে তিনি একা বাস করেন। তার দুই ছেলে শত মাইল দূরে থাকেন। তিনি বলছেন, এ আইন অনেকটা 'নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো'র মতো। আরও বলছেন, আমার ছেলেরা তো বছরে একবার কেবল দেখতে আসে, যদি অন্তত দু'বার আসত ভালো হতো। আইন হওয়ার পর তাদের কতবার আসতে হবে কে জানে। হৃদয়ের টানে যদি কেউ না আসে আইন করে এনে তার কী-ইবা হবে।
নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী/সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি।'
প্রথম এ ক'টা লাইনের পরই দেখা গেল, কম দামি বলেই বাবার স্থান হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। গান হলেও এটি আসলে সমাজের কথাই বলছে। উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রম এখন সেভাবে দেখা না গেলেও মা-বাবা বৃদ্ধ ও অসামর্থ্য হলে তাদের অবস্থা কারও অজানা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই মা-বাবা থাকেন ছেলেমেয়ে থেকে দূরে। কাছে থাকলেও তাদের যে ধরনের সেবাযত্ন প্রয়োজন তা অনেকে পান না। এর ব্যতিক্রম থাকলেও তাদের অসহায়ত্বের চিত্রই বেশি দেখা যায়। এই অসহায়ত্ব দূর করার কেউ আছে? মানুষের একেবারে পারিবারিক পর্যায়ের এই সুখ-দুঃখ নিয়ে রাষ্ট্রের মাথা ঘামানোরই-বা সময় কোথায়। তারপরও সে কাজটিই করেছে চীন। সম্প্রতি বৃদ্ধদের অধিকার রক্ষায় আইন করেছে দেশটি। ১ জুলাই 'এলডারলি রাইটস ল' বা প্রবীণ অধিকার আইন নামে এটি কার্যকর হয় সেখানে। জনবহুল দেশটিতে বৃদ্ধদের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। ৬০ বা তদূর্ধ্ব বয়সী মানুষ রয়েছে সংখ্যায় প্রায় ২০ কোটি। ২০৩০ সালে এটি দ্বিগুণ হবে বলছে বিবিসি। আইনের মূলকথা হলো, সন্তানদের অবশ্যই বৃদ্ধ মাতা-পিতাকে দেখাশোনা করতে হবে, তাদের দেখতে যেতে হবে। ৭৭ বছরের বৃদ্ধ যে মা ৪০ কিলোমিটার বা ২৫ মাইল দূরে থাকে, তাকে বন্ধের দিনগুলো ছাড়াও দুই মাসে অন্তত একবার দেখতে যেতে হবে। ডিসেম্বরে এটি আইন পরিষদে আনা হয়। এরপরও বৃদ্ধ মাতা-পিতার প্রতি অবহেলা দেখে চূড়ান্তভাবে আইনটি কার্যকর করে আইন পরিষদ। একে হয়তো অনেকে 'অদ্ভুত' আইন বলবেন। এভাবে আইন করে আসলে বৃদ্ধ মানুষের অধিকার কতটুকু সংরক্ষণ করা যাবে বলা মুশকিল। তারপরও জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিও আইনের অন্যতম উদ্দেশ্য_ বলছেন চীনা এক কর্মকর্তা।
এতদিন সবাই শিশু আইন, শিশুনীতির কথা জেনেছে। চীনের এই আইনের মাধ্যমে বলা চলে বৃদ্ধ আইনও আমরা দেখলাম। যদিও ইতিমধ্যে আইনটি নিয়ে তোলপাড় হয়েছে চীনে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে। অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। অনেকে বলছেন, মা-বাবার সঙ্গে দেখা করার সময় তারা পান না।
এটা নির্মম সত্য, যে মা-বাবা সন্তানকে জন্মদান করেছেন, তাকে লালন-পালন করে বড় করেছে সে মা-বাবাকেই বৃদ্ধাবস্থায় এসে অনেক সন্তান ভুলে যায়। নচিকেতার ভাষায়, মা-বাবা তার কাছে সবচেয়ে কম দামি মনে হয়। অথচ কেউ চিন্তা করে না মানবজীবন এক চক্রের মধ্যে আবদ্ধ_ আজ যার যৌবন আছে কাল তার বার্ধক্য আসবেই।
চীনা বৃদ্ধ মা-বাবাদের জন্য এ আইন কতটা খুশি করতে পেরেছে জানা নেই। তারপরও সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে একজন মায়ের কথা জানা গেছে, সাংহাইতে তিনি একা বাস করেন। তার দুই ছেলে শত মাইল দূরে থাকেন। তিনি বলছেন, এ আইন অনেকটা 'নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো'র মতো। আরও বলছেন, আমার ছেলেরা তো বছরে একবার কেবল দেখতে আসে, যদি অন্তত দু'বার আসত ভালো হতো। আইন হওয়ার পর তাদের কতবার আসতে হবে কে জানে। হৃদয়ের টানে যদি কেউ না আসে আইন করে এনে তার কী-ইবা হবে।
No comments