কুড়িয়ে পাওয়া সংলাপ-সময়ের সবচেয়ে বড় কর্মপরিকল্পনা by রণজিৎ বিশ্বাস
ঢাকায় বিজয়ের মাসের প্রান্তিকে আয়োজিত এক
অনুষ্ঠানে দাবি উচ্চারণ হয়েছিল- 'আমরা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে
এনেছি।' সে উচ্চারণ এখনো বড় কষ্ট দিচ্ছে, এখনো বড় ভোগাচ্ছে।
কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজক মানুষ হোক কিংবা মনুষ্যবয়বের কোনো প্রাণী হোক, সব
আয়োজনের একটা উদ্দেশ্য থাকে। এ অনুষ্ঠানটিরও তেমন কোনো উদ্দেশ্য অবশ্যই
ছিল। ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার এক হোটেলে বিপুল, বিশাল ও বিস্ময়কর এক দাবি ওই
অনুষ্ঠানে উচ্চারিত হয়েছিল। সেটি উদ্ধরণচিহ্নে বেঁধেই আমাদের
ভাবনা-বিস্তারের শুরু হতে পারে।
অনুষ্ঠানে পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনার জন্য ডাকা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন যাঁর ভ্রান্তবীক্ষণ ও নির্দয় রকম দ্রোহের রাজনীতি এক যুগসন্ধিক্ষণে জাতির খুব ক্ষতি করেছে। পরে তিনি নিজেও সে রাজনীতিতে না থেকে, দেহ রাখার আগে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অংশ হয়ে গিয়েছিলেন।
স্বস্তির কথা, তাঁর পরিবার থেকে সেদিন কেউ আসেননি 'পুরস্কার' (অর্থ, স্মৃতিফলক ও ফুলের মালা ইত্যাদি) নিতে।
যাঁরা পুরস্কারটি গ্রহণ করে গৌরবস্নাত হয়েছেন এবং নিজেদের কাজটিকে ন্যায়সংগত মনে করেছেন, তাঁদের একজন কবিতা লেখেন, দুজন সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং একজন, যিনি মহিলা, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও সেবাশুশ্রূষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
যাঁরা এই পুরস্কার ও সংবর্ধনাকে যৌক্তিক, অনিবার্য ও ন্যায়সংগত ভাবছেন, তাঁরা নিজ নিজ বিবেচনায় তা ভাবছেন। ভাবতেই পারেন। কারণ যাঁর যাঁর বিবেচনা তাঁর তাঁর।
কিন্তু এই বিবেচনা আমাদের হাতের কাজ ছুটিয়ে দিচ্ছে। কারণ তাঁরা কিছু মানুষের কিলবিলে পরিকল্পনায় বল জুগিয়েছেন ও তার গোড়ায় জল ঢেলেছেন।
যুদ্ধাপরাধের যত রকম সংজ্ঞা হতে পারে, তার সব কটিতেই মানুষগুলোর অপরাধ এঁটে যায়। কখনো কখনো অপরাধ ভাণ্ড থেকে উপচেও পড়ে। পুরো জাতি যখন মুক্তিযুদ্ধ করছিল, স্বাধীনতার জন্য লড়ছিল, ওরা তখন দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে শত্রুর পক্ষে অস্ত্র ধরেছিল। ওরা মুক্তিযোদ্ধা এবং ভিনবিশ্বাস ও পৃথক আদর্শের মানুষের বুকে অস্ত্র ধরেছিল, তাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছিল, তাদের সম্পদ লুট করেছিল, তাদের ভাতের থালা কেড়ে নিয়েছিল, সম্ভ্রম ও শুচিতালাঞ্ছনার জন্য তাদের বাড়ির মেয়েদের হায়েনার হাতে তুলে দিয়েছিল। প্রতিবেশীর মেয়ের গায়ে 'গণিমত'-এর মাল' লেবেল সেঁটে এরা উল্লাস করেছিল ও তাদের অবৈধ পিতাদের ভেট দিয়েছিল। এরা যাদের 'নাজায়েজ আওলাদ' হয়ে পড়েছিল, তাদের পদচুম্বন ও পদপ্রান্তের ধূলিলেহন করে পরিতৃপ্ত হয়েছিল ও পরিতৃপ্তির মাঝে শ্লাঘা অনুভব করেছিল। এরা বিধাতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। কারণ, বিধাতা কখনো বলেননি, তুমি মানবহত্যা করো, বিধাতা কখনো বলেননি, তুমি পশুত্ব বরণ করো ও পাশবেতর হয়ে যাও; বিধাতা কখনো বলেননি, তোমরা আমাকে নিয়ে বাণিজ্য করো, অন্য বিশ্বাসের মানুষকে টেনেহিঁচড়ে ও প্রাণের ভয় দেখিয়ে তোমাদের বিশ্বাসে টেনে এনে 'নওবিশ্বাসী' বানিয়ে ছাড়; বিধাতা কখনো বলেননি, তুমি তোমার দেশ ও জাতির মুক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াও; তুমি তোমার স্বাধীনতার দুশমনদের সাহায্য করার জন্য তোমার ভাইকে হত্যা করো, বন্ধুকে হত্যা করো, সহপাঠীকে হত্যা করো, শিক্ষককে হত্যা করো। বিধাতা তেমন বলতে পারেন না। কারণ তিনি অবিবেচক নন। বিশ্বাস বলে, ভূগোলের সব কোণের এবং ভূমিতলের, ভূমিপৃষ্ঠের ও অন্তরীক্ষের সব মানুষ ও সব প্রাণীকে তিনি সৃষ্টি করেছেন, সবাইকে তিনি সমান ভাবেন এবং সবার জন্য সাম্যভিত্তিক বিচারব্যবস্থা বণ্টন করেন।
এদের অপরাধ কোনোক্রমেই পরিসীম নয়। এরা বিধাতাকে সাম্প্রদায়িক করে ছেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধে প্রভুকুলসহ ওদের পরাজয়ের পর ওরা নতুন প্রজন্মের উজ্জ্বল সন্তানদের 'ধৌতমস্তিষ্ক তরুণ'-এ পরিণত করে চলছে।
এদের অপরাধ কিছুটা হালকা করার চেষ্টা হয়, যখন কেউ বলে- স্বাধীনতার এত বছর পর এখন আর বিভক্তি-বিভাজনের দরকার নেই, ওরা কী অপরাধ করেছে আমরা তো জানি না, ১৯৭১ ও ২০০৯-এর প্রেক্ষিত এক নয়, অথবা যাঁরা যুক্তি দেখান- মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা যারা করেছে, তাদের সবাইকেই কি আমরা বাদ দিতে পেরেছি!
এদের অপরাধ কিছুটা ফিকে হয়ে যায়, যখন কোনো বাইচান্স-মুক্তিযোদ্ধা ও তার অনুসারীরা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, পুনর্বাসন করে, সম্মাননা দেয়, অমাত্যসভার সদস্য বানিয়ে তাদের গাড়িতে ও বাড়িতে শহীদের রক্তভেজা পবিত্র পতাকা তুলে দেয়। এদের জোরেই অপরাধীরা বলতে পারে, দেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই, বলতে পারে অমুক ভাই ও তমুক ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি; এদের প্রশ্রয় পেয়েই ওরা বলতে পারে, ১৯৭১ সালে নিজেদের ভূমিকার জন্য আমাদের কোনো খেদ নেই, নেই কোনো শোচনা-অনুশোচনা। তারা এখনো বলে, সময়ের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ও আদর্শিক বিচারে আমরা আমাদের ভূমিকায় ঠিকই ছিলাম।
নাকি তাদের চেয়েও ভয়াবহ মুক্তিযোদ্ধারা? ধর্মবাজরা? নাকি ছদ্ম সাম্প্রদায়িকরা? ফতোয়াবাজরা? নাকি বিকৃত ও বিক্রীত বুদ্ধিজীবীরা?
জাতি কাদের রুখবে? জাতি কাদের বিচার করবে? এ প্রশ্নের জবাব হচ্ছে- জাতি এদের সবাইকে রুখবে। জাতি এদের সবারই বিচার করবে। রোখা ও বিচারটি জরুরি আমাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে, শান্তির প্রয়োজনে, স্বস্তির প্রয়োজনে, শুচিতার প্রয়োজনে, সাধুতার প্রয়োজনে, আধুনিকতার প্রয়োজনে, প্রগতির প্রয়োজনে, মুক্তির প্রয়োজনে, সুশিক্ষার প্রয়োজনে, সুরুচির প্রয়োজনে, ধর্মের প্রয়োজনে, বিধাতাকে সাম্প্রদায়িকতার হাত থেকে রক্ষার প্রয়োজনে এবং আরো শতসহস্র প্রয়োজনের মাঝে পবিত্র সুবাসিত ও গৌরবদীপ্ত স্বাধীনতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার প্রয়োজনে, আকাশতলে ও ধূলি'পরে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সর্বসুন্দর স্বাধীন দেশ ও ইতিহাসসমৃদ্ধ একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ মানববসতি রক্ষার প্রয়োজনে।
এর চেয়ে বড় কোনো কাজ, এর চেয়ে প্রয়োজনীয় কোনো কর্মসূচি এ মুহূর্তে আমাদের থাকা উচিত নয়।
কাজটি একবারেই সহজ। কারণ যারা নষ্টবুদ্ধির ও পশুশক্তির, যারা ধর্মবাজি ও ভেদবুদ্ধির, তারা অঙ্গুলিমেয়; আমরা যারা সত্য সুরুচি, সুশিক্ষা, আধুনিকতা, উদারতা, মানবতা ও স্বাধীনতার পক্ষে, তারা সংখ্যায় এত বড় যে আমাদের নিয়ে জনসমুদ্র, আমাদের নিয়ে মহাসমুদ্র।
লেখক : কথাসাহিত্যিক
অনুষ্ঠানে পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনার জন্য ডাকা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন যাঁর ভ্রান্তবীক্ষণ ও নির্দয় রকম দ্রোহের রাজনীতি এক যুগসন্ধিক্ষণে জাতির খুব ক্ষতি করেছে। পরে তিনি নিজেও সে রাজনীতিতে না থেকে, দেহ রাখার আগে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অংশ হয়ে গিয়েছিলেন।
স্বস্তির কথা, তাঁর পরিবার থেকে সেদিন কেউ আসেননি 'পুরস্কার' (অর্থ, স্মৃতিফলক ও ফুলের মালা ইত্যাদি) নিতে।
যাঁরা পুরস্কারটি গ্রহণ করে গৌরবস্নাত হয়েছেন এবং নিজেদের কাজটিকে ন্যায়সংগত মনে করেছেন, তাঁদের একজন কবিতা লেখেন, দুজন সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং একজন, যিনি মহিলা, মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও সেবাশুশ্রূষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
যাঁরা এই পুরস্কার ও সংবর্ধনাকে যৌক্তিক, অনিবার্য ও ন্যায়সংগত ভাবছেন, তাঁরা নিজ নিজ বিবেচনায় তা ভাবছেন। ভাবতেই পারেন। কারণ যাঁর যাঁর বিবেচনা তাঁর তাঁর।
কিন্তু এই বিবেচনা আমাদের হাতের কাজ ছুটিয়ে দিচ্ছে। কারণ তাঁরা কিছু মানুষের কিলবিলে পরিকল্পনায় বল জুগিয়েছেন ও তার গোড়ায় জল ঢেলেছেন।
যুদ্ধাপরাধের যত রকম সংজ্ঞা হতে পারে, তার সব কটিতেই মানুষগুলোর অপরাধ এঁটে যায়। কখনো কখনো অপরাধ ভাণ্ড থেকে উপচেও পড়ে। পুরো জাতি যখন মুক্তিযুদ্ধ করছিল, স্বাধীনতার জন্য লড়ছিল, ওরা তখন দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে শত্রুর পক্ষে অস্ত্র ধরেছিল। ওরা মুক্তিযোদ্ধা এবং ভিনবিশ্বাস ও পৃথক আদর্শের মানুষের বুকে অস্ত্র ধরেছিল, তাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছিল, তাদের সম্পদ লুট করেছিল, তাদের ভাতের থালা কেড়ে নিয়েছিল, সম্ভ্রম ও শুচিতালাঞ্ছনার জন্য তাদের বাড়ির মেয়েদের হায়েনার হাতে তুলে দিয়েছিল। প্রতিবেশীর মেয়ের গায়ে 'গণিমত'-এর মাল' লেবেল সেঁটে এরা উল্লাস করেছিল ও তাদের অবৈধ পিতাদের ভেট দিয়েছিল। এরা যাদের 'নাজায়েজ আওলাদ' হয়ে পড়েছিল, তাদের পদচুম্বন ও পদপ্রান্তের ধূলিলেহন করে পরিতৃপ্ত হয়েছিল ও পরিতৃপ্তির মাঝে শ্লাঘা অনুভব করেছিল। এরা বিধাতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। কারণ, বিধাতা কখনো বলেননি, তুমি মানবহত্যা করো, বিধাতা কখনো বলেননি, তুমি পশুত্ব বরণ করো ও পাশবেতর হয়ে যাও; বিধাতা কখনো বলেননি, তোমরা আমাকে নিয়ে বাণিজ্য করো, অন্য বিশ্বাসের মানুষকে টেনেহিঁচড়ে ও প্রাণের ভয় দেখিয়ে তোমাদের বিশ্বাসে টেনে এনে 'নওবিশ্বাসী' বানিয়ে ছাড়; বিধাতা কখনো বলেননি, তুমি তোমার দেশ ও জাতির মুক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াও; তুমি তোমার স্বাধীনতার দুশমনদের সাহায্য করার জন্য তোমার ভাইকে হত্যা করো, বন্ধুকে হত্যা করো, সহপাঠীকে হত্যা করো, শিক্ষককে হত্যা করো। বিধাতা তেমন বলতে পারেন না। কারণ তিনি অবিবেচক নন। বিশ্বাস বলে, ভূগোলের সব কোণের এবং ভূমিতলের, ভূমিপৃষ্ঠের ও অন্তরীক্ষের সব মানুষ ও সব প্রাণীকে তিনি সৃষ্টি করেছেন, সবাইকে তিনি সমান ভাবেন এবং সবার জন্য সাম্যভিত্তিক বিচারব্যবস্থা বণ্টন করেন।
এদের অপরাধ কোনোক্রমেই পরিসীম নয়। এরা বিধাতাকে সাম্প্রদায়িক করে ছেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধে প্রভুকুলসহ ওদের পরাজয়ের পর ওরা নতুন প্রজন্মের উজ্জ্বল সন্তানদের 'ধৌতমস্তিষ্ক তরুণ'-এ পরিণত করে চলছে।
এদের অপরাধ কিছুটা হালকা করার চেষ্টা হয়, যখন কেউ বলে- স্বাধীনতার এত বছর পর এখন আর বিভক্তি-বিভাজনের দরকার নেই, ওরা কী অপরাধ করেছে আমরা তো জানি না, ১৯৭১ ও ২০০৯-এর প্রেক্ষিত এক নয়, অথবা যাঁরা যুক্তি দেখান- মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা যারা করেছে, তাদের সবাইকেই কি আমরা বাদ দিতে পেরেছি!
এদের অপরাধ কিছুটা ফিকে হয়ে যায়, যখন কোনো বাইচান্স-মুক্তিযোদ্ধা ও তার অনুসারীরা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, পুনর্বাসন করে, সম্মাননা দেয়, অমাত্যসভার সদস্য বানিয়ে তাদের গাড়িতে ও বাড়িতে শহীদের রক্তভেজা পবিত্র পতাকা তুলে দেয়। এদের জোরেই অপরাধীরা বলতে পারে, দেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই, বলতে পারে অমুক ভাই ও তমুক ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি; এদের প্রশ্রয় পেয়েই ওরা বলতে পারে, ১৯৭১ সালে নিজেদের ভূমিকার জন্য আমাদের কোনো খেদ নেই, নেই কোনো শোচনা-অনুশোচনা। তারা এখনো বলে, সময়ের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ও আদর্শিক বিচারে আমরা আমাদের ভূমিকায় ঠিকই ছিলাম।
নাকি তাদের চেয়েও ভয়াবহ মুক্তিযোদ্ধারা? ধর্মবাজরা? নাকি ছদ্ম সাম্প্রদায়িকরা? ফতোয়াবাজরা? নাকি বিকৃত ও বিক্রীত বুদ্ধিজীবীরা?
জাতি কাদের রুখবে? জাতি কাদের বিচার করবে? এ প্রশ্নের জবাব হচ্ছে- জাতি এদের সবাইকে রুখবে। জাতি এদের সবারই বিচার করবে। রোখা ও বিচারটি জরুরি আমাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে, শান্তির প্রয়োজনে, স্বস্তির প্রয়োজনে, শুচিতার প্রয়োজনে, সাধুতার প্রয়োজনে, আধুনিকতার প্রয়োজনে, প্রগতির প্রয়োজনে, মুক্তির প্রয়োজনে, সুশিক্ষার প্রয়োজনে, সুরুচির প্রয়োজনে, ধর্মের প্রয়োজনে, বিধাতাকে সাম্প্রদায়িকতার হাত থেকে রক্ষার প্রয়োজনে এবং আরো শতসহস্র প্রয়োজনের মাঝে পবিত্র সুবাসিত ও গৌরবদীপ্ত স্বাধীনতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার প্রয়োজনে, আকাশতলে ও ধূলি'পরে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সর্বসুন্দর স্বাধীন দেশ ও ইতিহাসসমৃদ্ধ একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ মানববসতি রক্ষার প্রয়োজনে।
এর চেয়ে বড় কোনো কাজ, এর চেয়ে প্রয়োজনীয় কোনো কর্মসূচি এ মুহূর্তে আমাদের থাকা উচিত নয়।
কাজটি একবারেই সহজ। কারণ যারা নষ্টবুদ্ধির ও পশুশক্তির, যারা ধর্মবাজি ও ভেদবুদ্ধির, তারা অঙ্গুলিমেয়; আমরা যারা সত্য সুরুচি, সুশিক্ষা, আধুনিকতা, উদারতা, মানবতা ও স্বাধীনতার পক্ষে, তারা সংখ্যায় এত বড় যে আমাদের নিয়ে জনসমুদ্র, আমাদের নিয়ে মহাসমুদ্র।
লেখক : কথাসাহিত্যিক
No comments