অনলাইন থেকে-ম্যান্ডেলার বন্ধুরা
সেটি ছিল নেলসন ম্যান্ডেলার সম্মানে দেওয়া
প্রধানমন্ত্রীর ভোজসভা। ১৯৯৭ সালে নয়াদিল্লির গ্র্যান্ড হায়দরাবাদ হাউসে।
ম্যান্ডেলা এসেছিলেন দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের রেডফোর্ট
ডিক্লারেশনে স্বাক্ষর করতে।
প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি.
দেবগৌড়া ভারতীয় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য দিয়ে ম্যান্ডেলাকে নিয়ে এগিয়ে
যাচ্ছেন। সবাইকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন।
ঠিক আমার সামনে পর্যন্ত এসে প্রধানমন্ত্রী বিড়বিড় করে কিছু একটা বললেন।
যেন আধা-আধি ঘুমের মধ্য থেকে বলছেন। 'সম্প্রতি সে আপনাদের দেশে গিয়েছিল' বা
এ ধরনের কিছু বললেন। আমার সঙ্গে করমর্দন করে ম্যান্ডেলা পরের অতিথির দিকে
পা বাড়ালেন। এর পরই তিনি থামলেন। প্রধানমন্ত্রীর ওই কথাটির পর তাঁর চোখ-মুখ
দেখে মনে হলো, তিনি আমাকে চিনতে পেরেছেন।
তিনি এক পা পিছিয়ে এসে আমার চোখে চোখ রাখলেন। সরাসরি এবং আত্মপ্রত্যয়ী দৃষ্টি। 'আপনি জানেন, ইউসুফ আর আমাদের মধ্যে নেই।' তিনি বলেননি, ইউসুফ মারা গেছেন অথবা বেঁচে নেই। এভাবেই ম্যান্ডেলা কথা বলে থাকেন। ইউসুফ বলে ম্যান্ডেলা যার কথা উল্লেখ করলেন, তিনি হচ্ছেন ইউসুফ কাচালিয়া। তিনি মোলভি কাচালিয়ার ছোট ভাই। মোলভি আবার ছিলেন ইউসুফ দাদু এবং নেলসন ম্যান্ডেলার সহযোগী। তাঁরা সবাই মিলে দক্ষিণ আফ্রিকার কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তুলেছিলেন।
কাচালিয়া ভ্রাতৃদ্বয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে গান্ধীর যোগাযোগ ছিল। তাঁদের পিতা মোহাম্মদ কাচালিয়া ছিলেন গান্ধীর খুবই ঘনিষ্ঠজন। তাঁদের একটি ভারতীয় স্বপ্ন ছিল: তাঁদের পূর্বপুরুষের গ্রাম গুজরাটের কুচ-এ, তাঁদের পিতার নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা।
ইউসুফ কাচালিয়ার কথা কেন ম্যান্ডেলা আমাকে বললেন, সেটা বের করতে মনোবিজ্ঞানীর প্রয়োজন। আমি ইউসুফ ভাইকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে কখনো দেখা করিনি। ইউসুফ ভাই ম্যান্ডেলার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বন্ধুদের মাধ্যম, যেমন- আর্চ বিশপ ডেসমন্ড টুটু অথবা এএনসি-কমিউনিস্ট পার্টি প্রবক্তা ওয়াল্টার সিসুলু। কিন্তু তিনি কখনো নিজে আমাকে এই প্রবাদ পুরুষের কাছে নিয়ে যাননি।
প্রথম আমার সাক্ষাৎ হয় ইউসুফ ভাই, তাঁর স্ত্রী আমিনা এবং ছেলে গালিবের সঙ্গে জোহানেসবার্গে, ঠিক নেলসন ম্যান্ডেলার ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেপটাউনের ভিকটর ভার্সটার কারাগার থেকে মুক্তির কয়েকদিন আগে। আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম, নেলসন ম্যান্ডেলার বেরিয়ে আসা। তিনি অপেক্ষমাণ হাজার হাজার মানুষের দিকে হাত উঁচু করে বের হয়ে এসেছিলেন। এই স্মরণীয় ঐতিহাসিক মুহূর্তটি দেখার আয়োজন করে দিয়েছিলেন ইউসুফ ভাই এবং তাঁর স্ত্রী আমিনা।
লেখক : সাঈদ নাকভি, ভারতের সিনিয়র সাংবাদিক।
আউটলুক থেকে সংক্ষেপিত
ভাষান্তর: মহসীন হাবিব
তিনি এক পা পিছিয়ে এসে আমার চোখে চোখ রাখলেন। সরাসরি এবং আত্মপ্রত্যয়ী দৃষ্টি। 'আপনি জানেন, ইউসুফ আর আমাদের মধ্যে নেই।' তিনি বলেননি, ইউসুফ মারা গেছেন অথবা বেঁচে নেই। এভাবেই ম্যান্ডেলা কথা বলে থাকেন। ইউসুফ বলে ম্যান্ডেলা যার কথা উল্লেখ করলেন, তিনি হচ্ছেন ইউসুফ কাচালিয়া। তিনি মোলভি কাচালিয়ার ছোট ভাই। মোলভি আবার ছিলেন ইউসুফ দাদু এবং নেলসন ম্যান্ডেলার সহযোগী। তাঁরা সবাই মিলে দক্ষিণ আফ্রিকার কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তুলেছিলেন।
কাচালিয়া ভ্রাতৃদ্বয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে গান্ধীর যোগাযোগ ছিল। তাঁদের পিতা মোহাম্মদ কাচালিয়া ছিলেন গান্ধীর খুবই ঘনিষ্ঠজন। তাঁদের একটি ভারতীয় স্বপ্ন ছিল: তাঁদের পূর্বপুরুষের গ্রাম গুজরাটের কুচ-এ, তাঁদের পিতার নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা।
ইউসুফ কাচালিয়ার কথা কেন ম্যান্ডেলা আমাকে বললেন, সেটা বের করতে মনোবিজ্ঞানীর প্রয়োজন। আমি ইউসুফ ভাইকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে কখনো দেখা করিনি। ইউসুফ ভাই ম্যান্ডেলার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বন্ধুদের মাধ্যম, যেমন- আর্চ বিশপ ডেসমন্ড টুটু অথবা এএনসি-কমিউনিস্ট পার্টি প্রবক্তা ওয়াল্টার সিসুলু। কিন্তু তিনি কখনো নিজে আমাকে এই প্রবাদ পুরুষের কাছে নিয়ে যাননি।
প্রথম আমার সাক্ষাৎ হয় ইউসুফ ভাই, তাঁর স্ত্রী আমিনা এবং ছেলে গালিবের সঙ্গে জোহানেসবার্গে, ঠিক নেলসন ম্যান্ডেলার ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেপটাউনের ভিকটর ভার্সটার কারাগার থেকে মুক্তির কয়েকদিন আগে। আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম, নেলসন ম্যান্ডেলার বেরিয়ে আসা। তিনি অপেক্ষমাণ হাজার হাজার মানুষের দিকে হাত উঁচু করে বের হয়ে এসেছিলেন। এই স্মরণীয় ঐতিহাসিক মুহূর্তটি দেখার আয়োজন করে দিয়েছিলেন ইউসুফ ভাই এবং তাঁর স্ত্রী আমিনা।
লেখক : সাঈদ নাকভি, ভারতের সিনিয়র সাংবাদিক।
আউটলুক থেকে সংক্ষেপিত
ভাষান্তর: মহসীন হাবিব
No comments