পবিত্র কোরআনের আলো-যেকোনো বিপদে সবর করা ওয়াজিব
৮৭. য়া বানি য়্যাযহাবূ ফাতাহাস্সাসূ মিন
য়ূসুফা ওয়া আখীহি ওয়া লা- তাইআসূ মির রাওহিল্লা-হি, ইন্নাহূ লা য়ায়আসু মির
রাউহিল্লা-হি ইল্লাল কাউমিল কা-ফিরূন। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ :
৮৭. হে আমার সন্তানরা, তোমরা ইউসুফ এবং তাঁর ভাইয়ের সন্ধান করো। তোমরা
কখনো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহর রহমত থেকে কেবল কাফেররাই
নিরাশ হয়ে থাকে।*
তাফসির : * হজরত ইয়াকুব (আ.) আল্লাহর নবী ছিলেন। তিনি বিশেষ মর্যাদার কারণে বিশ্বাস করতেন, ইউসুফ কোথাও না কোথাও আছে। তার মৃত্যু হয়নি। হারানো সন্তান বা আপনজনের ক্ষেত্রে যে কেউ এমন ধারণা বা বিশ্বাস করতেই পারেন। কিন্তু ইয়াকুব (আ.)-এর বিশ্বাসটি ছিল স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের এবং তা কেবল নবী হওয়ার কারণেই। অন্যদিকে বিনয়ামিন আটক অবস্থায় মিসরে আটক থাকার বিষয়টি তো নিশ্চিতই জানতেন। ফলে তিনি সন্তানদের নির্দেশ করলেন, তোমরা গিয়ে ইউসুফ এবং বিনয়ামিনের সন্ধান করো। তালাশ করলে তোমরা তাদের সন্ধান পাবে। আল্লাহর রহমত অফুরন্ত। তাঁর রহমতের ক্ষেত্রে নিরাশ হওয়া মুসলমানের কাজ নয়। আল্লাহর রহমতে আশা করি তাদের পাবেই। দীর্ঘকাল ইয়াকুব (আ.) ইউসুফের সন্ধানে সন্তানদের কোনো নির্দেশ না করে হঠাৎ তিনি এই নির্দেশ কেন দিলেন? ইউসুফকে জড়িয়ে ভাইদের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরপরই দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নির্দেশ দান করলে তখনই না সবচেয়ে বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ ছিল তাঁকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে। তিনি তো তা করেননি। এর কারণ হিসেবে বিভিন্ন তাফসিরের কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বিনয়ামিন মিসরে আটক থাকার বিষয়টি ইয়াকুব (আ.) জানলেও ইউসুফের বিষয়টি একদম জানতেন না। তাই মিসরে গিয়ে ইউসুফকে খোঁজ করার বাহ্যিক কোনো কারণ ছিল না। এর পরও এই নির্দেশ দানের প্রকৃত কারণ ছিল, মিসরের আজিজের যে ধরনের গুণাবলি তিনি সন্তানদের কাছ থেকে শুনেছিলেন, তাতে ইয়াকুব (আ.) মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে পড়েছিলেন, এমন গুণাবলিসম্পন্ন মানুষটিই হয়তো আমার সন্তান ইউসুফ! আল্লাহর কুদরত সবার পক্ষে বোঝা মুশকিল। ইয়াকুব (আ.)-এর এই বিশ্বাসই শেষতক বাস্তব হয়ে দেখা দেয়।
মাসআলা : ০১. ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেছেন, ইয়াকুব (আ.)-এর ঘটনা থেকে প্রমাণ হয়, জান-মাল ও সন্তান-সন্তুতির ব্যাপারে কোনো বিপদ বা কষ্ট দেখা দিলে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজিব হলো ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমে আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকা। সেই সঙ্গে তা কাটিয়ে উঠতে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার পাশাপাশি সম্ভব সব রকম চেষ্টা করা। এসব ক্ষেত্রে ইয়াকুব (আ.) ও অন্য নবী-রাসুলদের তরিকা অনুসরণ করা উচিত। আবু হুরাইরা (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, 'যে ব্যক্তি নিজের বিপদ মানুষের কাছে বলে বেড়ায়, (বাহ্যিকভাবে মনে হলেও) মূলত তা সবরের অন্তর্ভুক্ত হয় না'। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, উত্তম সবরের কারণে আল্লাহ তায়ালা ইয়াকুব (আ.)-কে শহিদের সওয়াব দান করেছেন। এ উম্মতের মধ্যেও যারা বিপদাপদে সবর করবে, তারাও তেমনি প্রতিদান পাবে। হাসান বসরি (রহ.) বলেন, মানুষ যত ঢোক গিলে, এর মধ্যে দুটি ঢোকই হলো আল্লাহর দরবারে সবচেয়ে প্রিয়। তাহলো-০১. বিপদে সবর করা এবং ০২. ক্রোধ সংবরণ করা।
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * হজরত ইয়াকুব (আ.) আল্লাহর নবী ছিলেন। তিনি বিশেষ মর্যাদার কারণে বিশ্বাস করতেন, ইউসুফ কোথাও না কোথাও আছে। তার মৃত্যু হয়নি। হারানো সন্তান বা আপনজনের ক্ষেত্রে যে কেউ এমন ধারণা বা বিশ্বাস করতেই পারেন। কিন্তু ইয়াকুব (আ.)-এর বিশ্বাসটি ছিল স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের এবং তা কেবল নবী হওয়ার কারণেই। অন্যদিকে বিনয়ামিন আটক অবস্থায় মিসরে আটক থাকার বিষয়টি তো নিশ্চিতই জানতেন। ফলে তিনি সন্তানদের নির্দেশ করলেন, তোমরা গিয়ে ইউসুফ এবং বিনয়ামিনের সন্ধান করো। তালাশ করলে তোমরা তাদের সন্ধান পাবে। আল্লাহর রহমত অফুরন্ত। তাঁর রহমতের ক্ষেত্রে নিরাশ হওয়া মুসলমানের কাজ নয়। আল্লাহর রহমতে আশা করি তাদের পাবেই। দীর্ঘকাল ইয়াকুব (আ.) ইউসুফের সন্ধানে সন্তানদের কোনো নির্দেশ না করে হঠাৎ তিনি এই নির্দেশ কেন দিলেন? ইউসুফকে জড়িয়ে ভাইদের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরপরই দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নির্দেশ দান করলে তখনই না সবচেয়ে বেশি আশাবাদী হওয়ার সুযোগ ছিল তাঁকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে। তিনি তো তা করেননি। এর কারণ হিসেবে বিভিন্ন তাফসিরের কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বিনয়ামিন মিসরে আটক থাকার বিষয়টি ইয়াকুব (আ.) জানলেও ইউসুফের বিষয়টি একদম জানতেন না। তাই মিসরে গিয়ে ইউসুফকে খোঁজ করার বাহ্যিক কোনো কারণ ছিল না। এর পরও এই নির্দেশ দানের প্রকৃত কারণ ছিল, মিসরের আজিজের যে ধরনের গুণাবলি তিনি সন্তানদের কাছ থেকে শুনেছিলেন, তাতে ইয়াকুব (আ.) মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে পড়েছিলেন, এমন গুণাবলিসম্পন্ন মানুষটিই হয়তো আমার সন্তান ইউসুফ! আল্লাহর কুদরত সবার পক্ষে বোঝা মুশকিল। ইয়াকুব (আ.)-এর এই বিশ্বাসই শেষতক বাস্তব হয়ে দেখা দেয়।
মাসআলা : ০১. ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেছেন, ইয়াকুব (আ.)-এর ঘটনা থেকে প্রমাণ হয়, জান-মাল ও সন্তান-সন্তুতির ব্যাপারে কোনো বিপদ বা কষ্ট দেখা দিলে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজিব হলো ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমে আল্লাহর ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকা। সেই সঙ্গে তা কাটিয়ে উঠতে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার পাশাপাশি সম্ভব সব রকম চেষ্টা করা। এসব ক্ষেত্রে ইয়াকুব (আ.) ও অন্য নবী-রাসুলদের তরিকা অনুসরণ করা উচিত। আবু হুরাইরা (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, 'যে ব্যক্তি নিজের বিপদ মানুষের কাছে বলে বেড়ায়, (বাহ্যিকভাবে মনে হলেও) মূলত তা সবরের অন্তর্ভুক্ত হয় না'। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, উত্তম সবরের কারণে আল্লাহ তায়ালা ইয়াকুব (আ.)-কে শহিদের সওয়াব দান করেছেন। এ উম্মতের মধ্যেও যারা বিপদাপদে সবর করবে, তারাও তেমনি প্রতিদান পাবে। হাসান বসরি (রহ.) বলেন, মানুষ যত ঢোক গিলে, এর মধ্যে দুটি ঢোকই হলো আল্লাহর দরবারে সবচেয়ে প্রিয়। তাহলো-০১. বিপদে সবর করা এবং ০২. ক্রোধ সংবরণ করা।
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments