পুলিশের ভুল!- বন্ধ হোক এমন অমানবিকতা
কোনোদিন বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহরে যাননি
আনোয়ারা বেগম। অথচ সেই নগরীরই পাহাড়তলী থানার একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে
নিরীহ এই নারী কারাযন্ত্রণা ভোগ করে যাচ্ছেন।
বিধবা
আনোয়ারা বেগমের যে বিবরণ দিয়েছেন সমকালের চট্টগ্রাম অফিসের প্রতিবেদক ফিরোজ
শিবলী, তাতে পাঠকের মন বেদনা-ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। মঙ্গলবার সমকালের ১৯
পৃষ্ঠায় 'পুলিশের ভুলে চট্টগ্রাম কারাগারে নিরপরাধ আনোয়ারা' শিরোনামের খবরে
বলা হয়, বিধবা আনোয়ারা বেগম। পরনে ছেঁড়া সালোয়ার-কামিজ। কোলে দুই বছরের
দুধের শিশু। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তারপরও চট্টগ্রাম কারাগারে বন্দি
কক্সবাজারের আনোয়ারা বেগম। শুধু নিজের নাম ও স্বামীর নামের মিল থাকায়
নগরীর একটি মাদক মামলায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। অন্যদিকে
প্রকৃত আসামি আনোয়ারা বেগমও এখন কারাগারে আটক। তিনি সমকাল প্রতিবেদককে
বলেছেন, 'ফেনসিডিল মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি আমি।' পুলিশের গাফিলতির কারণে
গত ১৫ দিন ধরে নিরপরাধ অভিযোগহীন আনোয়ারা বেগমও কারাগারে আটক। তিনি সমকালকে
বলেছেন, কোনোদিন চট্টগ্রাম শহরে আসিনি আমি। পুলিশকে চাহিদামতো টাকা দিতে
না পারায় চার দেয়ালে বন্দি থাকতে হচ্ছে তাকে। মাদক মামলার রায়ে দণ্ডিত
আনোয়ারা বেগম পলাতক ছিলেন, তিনি পরে ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। তার স্থলে
নামের মিল দেখে গ্রেফতার করা হয়েছে নিরপরাধ আনোয়ারাকে। দুই আনোয়ারাকে
কারাগারে পেয়ে বিপাকে পড়া কারা কর্তৃপক্ষ নিরপরাধ আনোয়ারাকে মুক্তি দেওয়ার
জন্য আদালতে আবেদন করেছে। আমাদের বক্তব্য হলো, পুলিশের কথিত ভুলের এমন ঘটনা
তো এই প্রথম নয়। এ রকম অমানবিক ঘটনা দেশের বিভিন্ন স্থানে বহুবার ঘটেছে।
সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশ পেয়েছে। কেন এমন নির্দয় ঘটনা বারবার ঘটবে? আনোয়ারা
পুলিশের টাকার চাহিদার যে অভিযোগ করেছেন, তারও তদন্ত হওয়া দরকার। আমরা মনে
করি, নিরপরাধ আনোয়ারা বেগমকে অবিলম্বে মুক্তির পাশাপাশি এ ধরনের অমানবিক
ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা
না হলে এমন নিষ্ঠুরতা চলতেই থাকবে, যা কোনো সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না।
No comments