লিমনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা, বিচারের জন্য পাঠানো হয়েছে
অস্ত্র মামলায় অভিযোগ গঠনের পরদিন গতকাল
মঙ্গলবার র্যাবের গুলিতে পঙ্গু লিমনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা বিচারের জন্য
ঝালকাঠির মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল
ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. শাহীদুল ইসলাম এ আদেশ দেন। আগামী ১৮
আগস্ট মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সরকারি কাজে
বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে এ মামলাটিও র্যাব করেছে।
লিমনের আইনজীবী মানিক আচার্য বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গত ২৩ জুন লিমন ও তাঁর মা-বাবাকে ডেকে র্যাবের সঙ্গে আপস-মীমাংসার প্রস্তাব দেন। সেটা সফল না হওয়ায় হঠাৎ করে লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা মামলা দুটির গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, দুই বছর তিন মাস আগে দায়ের করা মামলা দুটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয় অনেক আগে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আদালতে অভিযোগ গঠনের ধার্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করেছে। আপস প্রস্তাব ভেস্তে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ আর সময়ের আবেদন করেনি।
অবশ্য ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি এম আলম খান বলেন, লিমনের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি, লিমনকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আপসের প্রস্তাব দিয়েছেন। এটা সত্য কি না, জানি না। ওই আপস প্রস্তাবের সঙ্গে লিমনের মামলার কোনো সম্পর্ক নেই।’
২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে কলেজ ছাত্র লিমন হোসেনকে (১৬) গুলি করে র্যাব। ওই ঘটনার নেতৃত্বে থাকা র্যাবের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে ওই দিনই লিমনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। একটি অস্ত্র আইনে ও অপরটি বন্দুকযুদ্ধ করে সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে।
এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় গত সোমবার ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এ লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরদিন গতকাল অপর মামলাটি বিচারের জন্য পাঠানো হয়।
এর আগে ২০১২ সালের ১ জুলাই রাজাপুর থানার পুলিশ লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। গত ৩০ এপ্রিল জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত অভিযোগপত্রটি আমলে নেন।
দুটি মামলায় লিমন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। জাহাঙ্গীর নামের আরও এক স্থানীয় যুবক এ মামলায় আসামি, তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।
তবে স্থানীয় সন্ত্রাসী যে মোর্শেদ জমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করার জন্য ওই দিন র্যাব লিমনের গ্রামে অভিযান চালিয়েছিল বলে দাবি করে আসছে, সে মোর্শেদ বা তাঁর কোনো সহযোগীকে আজ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
অপর দিকে লিমনকে অন্যায়ভাবে গুলি করার ঘটনায় মা হেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ডিএডি লুৎফুর রহমানসহ র্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল একটি মামলা করেন। এ মামলায় র্যাব সদস্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে হেনোয়ারা বেগম নারাজি আবেদন করলে তা-ও খারিজ করে দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন হেনোয়ারা বেগম। এ বিষয়ে আগামী ১৩ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য আছে।
অসহায় কিশোরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র: গতকাল গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতারা এক যুগ্ম বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন, র্যাব তথা রাষ্ট্রপক্ষ অসহায় লিমনের বাকি জীবনকে ধ্বংস করতে নজিরবিহীন প্রতিশোধমূলক অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। পুরো রাষ্ট্র যেন এক পা হারানো এই কিশোর ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, লিমনকে গুলি করার অপরাধে র্যাবের বিচার না হয়ে উল্টো লিমনকে নতুন করে শাস্তি দেওয়ার উদ্যোগ-আয়োজনে বিচারব্যবস্থার ওপর জনগণের আর আস্থা-বিশ্বাস বলে কিছু থাকবে না। এসব তৎপরতা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আরও মদদ জোগাবে।
লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা অস্ত্র মামলায় অভিযোগ গঠনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দেওয়া এ বিবৃতিতে বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্দিকুর রহমান, মোশরেফা মিশু, মোশাররফ হোসেন, জোনায়েদ সাকি, ইয়াসিন মিয়া, হামিদুল হক ও বাসদের আহ্বায়ক মবিনুল হায়দার চৌধুরী সই করেন।
লিমনের আইনজীবী মানিক আচার্য বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গত ২৩ জুন লিমন ও তাঁর মা-বাবাকে ডেকে র্যাবের সঙ্গে আপস-মীমাংসার প্রস্তাব দেন। সেটা সফল না হওয়ায় হঠাৎ করে লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা মামলা দুটির গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, দুই বছর তিন মাস আগে দায়ের করা মামলা দুটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয় অনেক আগে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আদালতে অভিযোগ গঠনের ধার্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করেছে। আপস প্রস্তাব ভেস্তে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ আর সময়ের আবেদন করেনি।
অবশ্য ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি এম আলম খান বলেন, লিমনের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি, লিমনকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আপসের প্রস্তাব দিয়েছেন। এটা সত্য কি না, জানি না। ওই আপস প্রস্তাবের সঙ্গে লিমনের মামলার কোনো সম্পর্ক নেই।’
২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে নিজ বাড়ির পাশে কলেজ ছাত্র লিমন হোসেনকে (১৬) গুলি করে র্যাব। ওই ঘটনার নেতৃত্বে থাকা র্যাবের উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে ওই দিনই লিমনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। একটি অস্ত্র আইনে ও অপরটি বন্দুকযুদ্ধ করে সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে।
এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় গত সোমবার ঝালকাঠির বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এ লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরদিন গতকাল অপর মামলাটি বিচারের জন্য পাঠানো হয়।
এর আগে ২০১২ সালের ১ জুলাই রাজাপুর থানার পুলিশ লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে। গত ৩০ এপ্রিল জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত অভিযোগপত্রটি আমলে নেন।
দুটি মামলায় লিমন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। জাহাঙ্গীর নামের আরও এক স্থানীয় যুবক এ মামলায় আসামি, তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।
তবে স্থানীয় সন্ত্রাসী যে মোর্শেদ জমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করার জন্য ওই দিন র্যাব লিমনের গ্রামে অভিযান চালিয়েছিল বলে দাবি করে আসছে, সে মোর্শেদ বা তাঁর কোনো সহযোগীকে আজ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
অপর দিকে লিমনকে অন্যায়ভাবে গুলি করার ঘটনায় মা হেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ডিএডি লুৎফুর রহমানসহ র্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল একটি মামলা করেন। এ মামলায় র্যাব সদস্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে হেনোয়ারা বেগম নারাজি আবেদন করলে তা-ও খারিজ করে দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন হেনোয়ারা বেগম। এ বিষয়ে আগামী ১৩ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য আছে।
অসহায় কিশোরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র: গতকাল গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতারা এক যুগ্ম বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন, র্যাব তথা রাষ্ট্রপক্ষ অসহায় লিমনের বাকি জীবনকে ধ্বংস করতে নজিরবিহীন প্রতিশোধমূলক অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। পুরো রাষ্ট্র যেন এক পা হারানো এই কিশোর ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, লিমনকে গুলি করার অপরাধে র্যাবের বিচার না হয়ে উল্টো লিমনকে নতুন করে শাস্তি দেওয়ার উদ্যোগ-আয়োজনে বিচারব্যবস্থার ওপর জনগণের আর আস্থা-বিশ্বাস বলে কিছু থাকবে না। এসব তৎপরতা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আরও মদদ জোগাবে।
লিমনের বিরুদ্ধে র্যাবের করা অস্ত্র মামলায় অভিযোগ গঠনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দেওয়া এ বিবৃতিতে বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্দিকুর রহমান, মোশরেফা মিশু, মোশাররফ হোসেন, জোনায়েদ সাকি, ইয়াসিন মিয়া, হামিদুল হক ও বাসদের আহ্বায়ক মবিনুল হায়দার চৌধুরী সই করেন।
No comments