পবিত্র কোরআনের আলো-ইউসুফ (আ.)-এর পরিচয় প্রকাশের উত্তম পদ্ধতি
৮৯. কা-লা হাল 'আলিমতুম মা- ফা'আলতুম
বিয়ূসুফা ওয়া আখীহি ইয আনতুম জা-হিলূনা। ৯০. কা-লূ--- আইন্নাকা লা আনতা
য়ূসুফু, কা-লা আনা য়ূসুফু ওয়া হা-যা--- আখী-, কাদ মান্নাল্লা-হু 'আলাইনা-,
ইন্নাহূ মায়্যাত্তাকি ওয়া য়াসবির ফাইন্নাল্লা-হা লা- য়ুদী'উ আজরাল
মুহসিনীনা।
(সুরা ইউসুফ, আয়াত ৮৯-৯০)
অনুবাদ : ৮৯. ইউসুফ বললেন, তোমাদের জানা আছে, কী আচরণ তোমরা করেছিলে ইউসুফ এবং তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে? ওই সময় তোমরা অজ্ঞ ছিলে। ৯০. তারা বলল, তাহলে কি তুমিই ইউসুফ! তিনি বললেন, আমিই ইউসুফ এবং এ হলো আমার ভাই। আল্লাহ আমাদের প্রতি অনেক অনুগ্রহ করেছেন।* নিশ্চয়ই যে কেউ তাকওয়া ও সবর অবলম্বন করে, আল্লাহ এমন সৎকর্মশীলদের পুরস্কার নষ্ট করেন না।
তাফসির : * ইউসুফ (আ.) অবশেষে নিজের পরিচয় প্রকাশ করলেন। এর সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিলেন, তোমাদের কি মনে আছে ইউসুফ এবং তার ভাইয়ের সঙ্গে কী আচরণ করেছিলে? বললেন, তখন তোমরা মূলত মূর্খ ছিলে। ভালো-মন্দ যাচাই করার যোগ্যতা ছিল না। তাঁর মুখে ইউসুফের অতীত প্রসঙ্গ শুনে ভাইয়েরা অবাক হলো। ভাবতে শুরু করল, তাহলে কি তিনিই ইউসুফ। তিনি যদি ইউসুফ না-ই হবেন, তাহলে ইউসুফের সঙ্গে মিসরের আজিজের সম্পর্ক কী? আমাদের ভাই ইউসুফের ঘটনা জানবেন কী করে? তারা অতীতের স্মৃতিচারণা করে দেখল, শৈশবে ইউসুফ স্বপ্ন দেখেছিল। যার ব্যাখ্যা ছিল এরকম, সময়ের ব্যবধানে তিনি উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবেন। তাঁর সামনে ভাইদের গিয়ে মাথা নত করতে হবে। এসব ভেবে তারা বুঝে নিল, মিসরের এই আজিজই তাদের ভাই ইউসুফ। সেই কথাই তারা প্রশ্নবোধক বাক্যের মাধ্যমে উচ্চারণ করল, 'আ ইন্নাকা লা আনতা য়ূসুফু- সত্যি সত্যিই কি তুমি ইউসুফ?' জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমিই ইউসুফ। বিনয়ামিন আমার সহোদর ভাই। এখানে ভাইয়ের প্রসঙ্গটি যুক্ত করে দিয়ে মূলত তিনি তাদের চিন্তামুক্ত করলেন, তোমরা যে দুই ভাইয়ের খোঁজে পিতার নির্দেশে এখানে এসেছ, তাদের দুজনই তোমাদের সন্ধানে। এ নিয়ে টেনশন করার কোনো কারণ নেই।
লক্ষ করার মতো বিষয় হলো, ইউসুফ (আ.) তাদের সঙ্গে অহংকারসুলভ কোনো আচরণ করেননি। আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ওহির নির্দেশনার আলোকে এত দিন নিজের পরিচয় প্রকাশ না করলেও এখন তিনি পুরোপুরি পরিচয়ই তাদের সামনে তুলে ধরলেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে যে বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতা দান করেছেন, এ জন্য কোনো অবস্থায়ই অহংকার যেন প্রকাশ না পায় সেদিকে সতর্ক থেকেই তিনি বললেন, আমার আজকের এই সম্মান ও ক্ষমতা পুরোপুরি আল্লাহ রাহমানুর রাহিমের বিশেষ অনুগ্রহ ও দয়ার ফসল। যারা তাকওয়া ও সবর অবলম্বন করে, আল্লাহ তাদের উত্তম পুরস্কার দান করেন। প্রথমে আল্লাহ আমাদের এ দুটি গুণ দান করেছেন। এগুলোই সাফল্যের চাবিকাঠি। প্রত্যেক বিপদে উত্তম রক্ষাকৌশল। এরপর তিনি আমাদের কষ্টকে সুখে, বিচ্ছেদকে মিলনে এবং দরিদ্রতাকে ধনাঢ্যতায় রূপান্তরিত করেছেন। গুনাহের কাজগুলো বর্জন করে চললে, বিপদের মুহূর্তে সবর করলে আল্লাহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সওয়াব দান করেন। বোঝা গেল, বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতা পাওয়ার পরও আল্লাহর দরবারে অবশ্যই শুকরিয়া আদায় করতে হবে। অধীনস্থ বা নিকটজনদের সঙ্গে কিছুতেই অহংকারী আচরণ করা যাবে না।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মা'আরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ৮৯. ইউসুফ বললেন, তোমাদের জানা আছে, কী আচরণ তোমরা করেছিলে ইউসুফ এবং তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে? ওই সময় তোমরা অজ্ঞ ছিলে। ৯০. তারা বলল, তাহলে কি তুমিই ইউসুফ! তিনি বললেন, আমিই ইউসুফ এবং এ হলো আমার ভাই। আল্লাহ আমাদের প্রতি অনেক অনুগ্রহ করেছেন।* নিশ্চয়ই যে কেউ তাকওয়া ও সবর অবলম্বন করে, আল্লাহ এমন সৎকর্মশীলদের পুরস্কার নষ্ট করেন না।
তাফসির : * ইউসুফ (আ.) অবশেষে নিজের পরিচয় প্রকাশ করলেন। এর সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিলেন, তোমাদের কি মনে আছে ইউসুফ এবং তার ভাইয়ের সঙ্গে কী আচরণ করেছিলে? বললেন, তখন তোমরা মূলত মূর্খ ছিলে। ভালো-মন্দ যাচাই করার যোগ্যতা ছিল না। তাঁর মুখে ইউসুফের অতীত প্রসঙ্গ শুনে ভাইয়েরা অবাক হলো। ভাবতে শুরু করল, তাহলে কি তিনিই ইউসুফ। তিনি যদি ইউসুফ না-ই হবেন, তাহলে ইউসুফের সঙ্গে মিসরের আজিজের সম্পর্ক কী? আমাদের ভাই ইউসুফের ঘটনা জানবেন কী করে? তারা অতীতের স্মৃতিচারণা করে দেখল, শৈশবে ইউসুফ স্বপ্ন দেখেছিল। যার ব্যাখ্যা ছিল এরকম, সময়ের ব্যবধানে তিনি উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবেন। তাঁর সামনে ভাইদের গিয়ে মাথা নত করতে হবে। এসব ভেবে তারা বুঝে নিল, মিসরের এই আজিজই তাদের ভাই ইউসুফ। সেই কথাই তারা প্রশ্নবোধক বাক্যের মাধ্যমে উচ্চারণ করল, 'আ ইন্নাকা লা আনতা য়ূসুফু- সত্যি সত্যিই কি তুমি ইউসুফ?' জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমিই ইউসুফ। বিনয়ামিন আমার সহোদর ভাই। এখানে ভাইয়ের প্রসঙ্গটি যুক্ত করে দিয়ে মূলত তিনি তাদের চিন্তামুক্ত করলেন, তোমরা যে দুই ভাইয়ের খোঁজে পিতার নির্দেশে এখানে এসেছ, তাদের দুজনই তোমাদের সন্ধানে। এ নিয়ে টেনশন করার কোনো কারণ নেই।
লক্ষ করার মতো বিষয় হলো, ইউসুফ (আ.) তাদের সঙ্গে অহংকারসুলভ কোনো আচরণ করেননি। আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত ওহির নির্দেশনার আলোকে এত দিন নিজের পরিচয় প্রকাশ না করলেও এখন তিনি পুরোপুরি পরিচয়ই তাদের সামনে তুলে ধরলেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে যে বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতা দান করেছেন, এ জন্য কোনো অবস্থায়ই অহংকার যেন প্রকাশ না পায় সেদিকে সতর্ক থেকেই তিনি বললেন, আমার আজকের এই সম্মান ও ক্ষমতা পুরোপুরি আল্লাহ রাহমানুর রাহিমের বিশেষ অনুগ্রহ ও দয়ার ফসল। যারা তাকওয়া ও সবর অবলম্বন করে, আল্লাহ তাদের উত্তম পুরস্কার দান করেন। প্রথমে আল্লাহ আমাদের এ দুটি গুণ দান করেছেন। এগুলোই সাফল্যের চাবিকাঠি। প্রত্যেক বিপদে উত্তম রক্ষাকৌশল। এরপর তিনি আমাদের কষ্টকে সুখে, বিচ্ছেদকে মিলনে এবং দরিদ্রতাকে ধনাঢ্যতায় রূপান্তরিত করেছেন। গুনাহের কাজগুলো বর্জন করে চললে, বিপদের মুহূর্তে সবর করলে আল্লাহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সওয়াব দান করেন। বোঝা গেল, বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতা পাওয়ার পরও আল্লাহর দরবারে অবশ্যই শুকরিয়া আদায় করতে হবে। অধীনস্থ বা নিকটজনদের সঙ্গে কিছুতেই অহংকারী আচরণ করা যাবে না।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মা'আরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments