সিএনজি স্টেশন- অন্যায্য ধর্মঘট
শুক্রবার দেশের সিএনজি স্টেশনগুলোতে
অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট আহ্বান করেছিল সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড
কনভারশন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নামে
হয়রানি করা হচ্ছে_ এমন অভিযোগ এনে মাত্র
কয়েক ঘণ্টার
নোটিশে এ ধর্মঘট ডাকা হয় এবং তা পালিতও হতে থাকে। শুক্রবার ধর্মঘট চলাকালেই
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা, জ্বালানি সচিব এবং পেট্রোবাংলার
চেয়ারম্যানের সঙ্গে মালিকদের বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। ধর্মঘট
আহ্বানকারী সংগঠনের দাবি হচ্ছে, ছয় মাস ধরেই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের
নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত সিএনজি ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে চলেছেন। গত
বৃহস্পতিবার সিলেটে একটি সিএনজি স্টেশনে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানাও করা
হয়। মালিকদের দাবি ছিল, ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহার করা হোক। আপাতত
পেট্রোবাংলার ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবেন না_ এ ধরনের আশ্বাসের
পরিপ্রেক্ষিতে মালিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, এ ধরনের
নমনীয়তা প্রদর্শনের মাধ্যমে সরকার অন্যায্য দাবির কাছে নতি স্বীকার করেছে।
এভাবে একটি মন্দ নজির সৃষ্টি করা হলো। সিলেটে একটি সিএনজি স্টেশনের কাছে
তাদের পাঁচ বছরের হিসাব দেখতে চাওয়ায় অন্যায় কিছু ছিল না। সংশ্লিষ্ট মালিক এ
জন্য সময় গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু তার পরিবর্তে পরিবহন খাতকে জিম্মি করে
রাতারাতি ধর্মঘট আহ্বান করা হলো এবং সরকারও অসহায়ের মতো আচরণ করে বসল।
যারা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে জনগণের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করল, তাদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এভাবে তোষণ নীতি অনুসরণের কী কারণ, সেটা
সাধারণের বোধগম্য হওয়ার কথা নয়। মাসের পর মাস ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
চলছে। পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ কি মনে করছে যে, এ অভিযান ভুল ছিল? এটা হলে
তাদের সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে। অভিযান পরিচালনা করে সিএনজি স্টেশনগুলোতে
কী কী অনিয়ম-দুর্নীতি পাওয়া গেছে, সেটাও তুলে ধরা দরকার। সরকারের কাজ
হচ্ছে সুশাসন নিশ্চিত করা। কেউ জনসাধারণকে জিম্মি করে অন্যায় দাবি আদায় করে
নেবে, সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ধর্মঘট প্রত্যাহার করার
জন্য মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসায় দোষের কিছু নেই। জনদুর্ভোগ কমাতে এ ধরনের
উদ্যোগ যৌক্তিক। কিন্তু সরকার কখনোই অন্যায়ের সঙ্গে এভাবে আপস করতে পারে
না।
No comments