জিএসপি হারানোর পেছনে ইউনূস ও আমিনুল ইস্যু
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি
সুবিধা হারানোর পেছনে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও শ্রমিক নেতা আমিনুল
ইসলাম ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছে লন্ডনের
প্রভাবশালী পত্রিকা দি ইকোনমিস্ট।
গত ৪ জুলাই প্রকাশিত পত্রিকাটির বিশ্লেষণমূলক এক প্রতিবেদনে এ ধরনের মন্তব্য করা হয়।
'ওয়ার্কার সেফটি ইন বাংলাদেশ : অব ইনসাল্টস অ্যান্ড ইনজুরিস' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরাগভাজন হওয়ার কারণেই যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করেছে। ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের অতি প্রিয়ভাজন হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরের এপ্রিলে তাঁকে নিজেদের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা কনগ্রেশনাল পদক দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ থেকে অনেক সমালোচকের ধারণা, হাসিনা সরকার ইউনূসকে ক্রমাগত বিরক্ত করায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে থাকতে পারে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এ ছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিলে আমিনুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার ও থানা হাজতে পুলিশি নির্যাতন এবং পরে তাঁর সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঢাকা ও বিশ্বের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রতিবাদ জানান। হত্যার তদন্তসহ বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়ে সরকারের কাছে চিঠি পাঠান দেশি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি। কিন্তু সরকার তাঁদের চিঠির কোনো জবাব দেয়নি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সুপারিশ করেন।
অন্যদিকে প্রতিবেদনের বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের পোশাকশিল্প জিএসপি সুবিধা পাওয়ার পরও এই শিল্পের কারখানায় ক্রমাগত দুর্ঘটনা ঘটায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জিএসপি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা বাদ গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এটি খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এটা দেশের ভাবমূর্তির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। জিএসপি স্থগিতের বিষয়টি এরই মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিষ ছড়াতে শুরু করেছে। আসছে জাতীয় নির্বাচনের সামনে দেশের পোশাকশিল্প একটি বড় রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে উঠছে বলেও মন্তব্য করা হয়।
ইকোনমিস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের 'ওয়াশিংটন টাইমস' পত্রিকায় বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একটি নিবন্ধ প্রকাশ পায়। সেই নিবন্ধে তিনি বর্তমান সরকারের আমলে শ্রমিক অধিকার না দেওয়া ও বিরোধী মত দমনের কারণে বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে 'গণতন্ত্র রক্ষা' করতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনটির মন্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের বাণিজ্যও নির্বাচনের মতো পাঁচ বছরের চক্রে বাঁধা। বাংলাদেশে নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, দেশটির অর্থনীতি ততই স্থবির হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আইএমএফ।
বিশ্লেষণে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিতের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বেগম জিয়ার ওই নিবন্ধের দিকে আঙুল তুলেছে। সরকারের তথ্যমন্ত্রী জিএসপি স্থগিতের জন্য খালেদা জিয়ার ওই নিবন্ধন দায়ী বলে দাবি করেছেন জাতির সামনে। কিন্তু বিএনপি বিষয়টি জোরালোভাবে অস্বীকার করতে পারেনি। তারা শুধু দাবি করছে, ওই নিবন্ধন তারা পাঠায়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দাবি করছে, বিএনপি 'জাতির শত্রু'। কারণ বিএনপি দেশের ক্রমবর্ধমান পোশাকশিল্পের ক্ষতি করতে চায়।
প্রতিবেদনটির শেষাংশে বলা হয়, এখন ভয়ের বিষয় হলো- যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশেও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার হারাতে পারে বাংলাদেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে বাংলাদেশ ৬০ শতাংশ পোশাক রপ্তানি করে আসছে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গোলযোগ ও বিশ্ববাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি- এই দুই কারণে কঠিন সময় পার করছে বলে প্রতিবেদনটিতে মন্তব্য করা হয়।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারগুলো বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ এনে গত ২৭ জুন বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।
'ওয়ার্কার সেফটি ইন বাংলাদেশ : অব ইনসাল্টস অ্যান্ড ইনজুরিস' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরাগভাজন হওয়ার কারণেই যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করেছে। ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের অতি প্রিয়ভাজন হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরের এপ্রিলে তাঁকে নিজেদের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা কনগ্রেশনাল পদক দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ থেকে অনেক সমালোচকের ধারণা, হাসিনা সরকার ইউনূসকে ক্রমাগত বিরক্ত করায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে থাকতে পারে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এ ছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিলে আমিনুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার ও থানা হাজতে পুলিশি নির্যাতন এবং পরে তাঁর সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঢাকা ও বিশ্বের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রতিবাদ জানান। হত্যার তদন্তসহ বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়ে সরকারের কাছে চিঠি পাঠান দেশি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি। কিন্তু সরকার তাঁদের চিঠির কোনো জবাব দেয়নি। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সুপারিশ করেন।
অন্যদিকে প্রতিবেদনের বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের পোশাকশিল্প জিএসপি সুবিধা পাওয়ার পরও এই শিল্পের কারখানায় ক্রমাগত দুর্ঘটনা ঘটায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জিএসপি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা বাদ গেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এটি খুব একটা প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এটা দেশের ভাবমূর্তির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। জিএসপি স্থগিতের বিষয়টি এরই মধ্যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিষ ছড়াতে শুরু করেছে। আসছে জাতীয় নির্বাচনের সামনে দেশের পোশাকশিল্প একটি বড় রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে উঠছে বলেও মন্তব্য করা হয়।
ইকোনমিস্টের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের 'ওয়াশিংটন টাইমস' পত্রিকায় বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একটি নিবন্ধ প্রকাশ পায়। সেই নিবন্ধে তিনি বর্তমান সরকারের আমলে শ্রমিক অধিকার না দেওয়া ও বিরোধী মত দমনের কারণে বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে 'গণতন্ত্র রক্ষা' করতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনটির মন্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের বাণিজ্যও নির্বাচনের মতো পাঁচ বছরের চক্রে বাঁধা। বাংলাদেশে নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, দেশটির অর্থনীতি ততই স্থবির হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে আইএমএফ।
বিশ্লেষণে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিতের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বেগম জিয়ার ওই নিবন্ধের দিকে আঙুল তুলেছে। সরকারের তথ্যমন্ত্রী জিএসপি স্থগিতের জন্য খালেদা জিয়ার ওই নিবন্ধন দায়ী বলে দাবি করেছেন জাতির সামনে। কিন্তু বিএনপি বিষয়টি জোরালোভাবে অস্বীকার করতে পারেনি। তারা শুধু দাবি করছে, ওই নিবন্ধন তারা পাঠায়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দাবি করছে, বিএনপি 'জাতির শত্রু'। কারণ বিএনপি দেশের ক্রমবর্ধমান পোশাকশিল্পের ক্ষতি করতে চায়।
প্রতিবেদনটির শেষাংশে বলা হয়, এখন ভয়ের বিষয় হলো- যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশেও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার হারাতে পারে বাংলাদেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে বাংলাদেশ ৬০ শতাংশ পোশাক রপ্তানি করে আসছে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্প অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গোলযোগ ও বিশ্ববাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি- এই দুই কারণে কঠিন সময় পার করছে বলে প্রতিবেদনটিতে মন্তব্য করা হয়।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারগুলো বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ এনে গত ২৭ জুন বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।
No comments