বাজেট ২০১৩-১৪ চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে
জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার মহাজোট সরকারের
পঞ্চম বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০১৩-১৪ সালের
জন্য প্রস্তাবিত এ বাজেট আকারে বড়, নির্বাচনের বছর হওয়ায় ভোটারদের তুষ্ট
করার চেষ্টা থাকাও স্বাভাবিক।
অর্থমন্ত্রী শুক্রবার
বাজেট-পরবর্তী প্রথাগত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তার পূর্ববর্তী চারটি
বাজেটের মতো এটিও উচ্চাভিলাষী এবং অবশ্যই জনগণের সরকারের বাজেটে জনতুষ্টির
চেষ্টা রয়েছে। ৭.২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তিনি সরকারের
রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় বাড়িয়েছেন এবং এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয় বাড়ানোর
প্রতিও মনোযোগী হয়েছেন। সম্ভবত আসন্ন নির্বাচনের দিকে তীক্ষষ্ট নজর রেখে
কর-শুল্ক বোঝা যেন আমজনতাকে ক্ষুব্ধ না করে, সে জন্য এ ক্ষেত্রে রেয়াতেরও
ঘোষণা দিয়েছেন। শেয়ারবাজারের জন্য প্রণোদনা রেখেছেন। সামাজিক নিরাপত্তা
বেষ্টনী বাড়িয়েছেন। শিল্পবান্ধব শুল্ক কাঠামো তৈরি করেছেন। অর্থমন্ত্রী
বলেছেন, উচ্চাভিলাষী হলেও বাস্তবায়নযোগ্য বাজেটই তিনি দিয়েছেন। অতীতেও তিনি
তার স্বাক্ষর রেখেছেন। বাজেটের পরের দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে
বিরূপ প্রতিক্রিয়া না হওয়াও অর্থমন্ত্রীর জন্য বড় স্বস্তির খবর। বাজেট পেশ
হওয়ার আগে একবার এবং পেশের পরে আরেকবার বাজারে আগুন লাগে_ প্রচলিত এ মত ভুল
প্রমাণ করার মতো কিছু প্রতিষেধক তিনি রাখতে পেরেছেন। তবে বাজেটে
নিউজপ্রিন্ট আমদানির ক্ষেত্রে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহারের প্রস্তাব
সংবাদপত্রশিল্পের জন্য দুঃসংবাদ। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবের কারণে কেবল
সংবাদপত্রের ওপর ব্যয়ের বিপুল বোঝাই চাপবে না, স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপরেও তা
আঘাত হানবে। সঙ্গত কারণেই এ প্রস্তাবের সমালোচনায় মুখর এখন সংবাদমাধ্যম।
আমরা এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের পক্ষে।
বড় অঙ্কের উন্নয়ন বাজেটের মতো রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার অর্জন নিয়ে শঙ্কা আছে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে। পাশাপাশি বড় আকারের উন্নয়ন বাজেটের জন্য সম্পদের জোগান দিতে ব্যাংকিং খাত থেকে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণকেও তারা বেসরকারি খাতের ঋণপ্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডি শুক্রবার বাস্তবতার নিরিখে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে বাজেট সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে বলে যে অভিমত দিয়েছে, তার পেছনে এসব শঙ্কা কাজ করে থাকতে পারে। বাজেট পেশের পরপরই প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তাবিত বাজেটকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ফায়দা লোটার অপচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিবেচনায় ঘোষিত বাজেট 'বিগ বিউটিফুল বেলুন। এতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে, বিনিয়োগ কমবে এবং জিনিসের দাম বাড়বে। অর্থের অপচয় হবে'। প্রধান বিরোধী দল এ ধরনের সমালোচনা সংসদের অধিবেশন কক্ষে করলেই জনগণ তাকে সাধুবাদ দেবে। তারা বয়কটের ধারা থেকে বের হওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন এবং নবম জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে তার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ এসেছে। তাদের ন্যায়সঙ্গত সমালোচনা, পরামর্শ ও সুপারিশ গ্রহণ করতে অর্থমন্ত্রীর আপত্তি থাকবে না বলে আমরা আশা করব।
বাজেট উচ্চাভিলাষী_ এ ধরনের সমালোচনা কতটা যথার্থ, সময়ই বলে দেবে। তবে সাত-আট বছরের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে আমাদের বিনিয়োগ বিপুলভাবে বাড়াতে হবে এবং সে জন্য সরকারের আয় যথেষ্ট বৃদ্ধির বিকল্প নেই। কালো টাকা সাদা করার আরেক দফা সুযোগ এ ক্ষেত্রে সঠিক পথ নয় বলেই অর্থনীতিবিদদের উল্লেখযোগ্য অংশের অভিমত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সব আমলেই এ পন্থা অনুসৃত হচ্ছে এবং তা সৎ পথে উপার্জনকারীদের জন্য নিদারুণ বৈষম্যমূলক_ এমন সুবচনে কর্ণপাত করার লক্ষণ নেই। বিনিয়োগ বাড়াতে হলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করে তোলার বিকল্প নেই। পদ্মা সেতুর জন্য ৬ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রদক্ষেপ প্রশংসনীয়। দেশবাসী এ প্রকল্পে কার্যকর অগ্রগতি দেখতে চায়। কৃষি খাত কেবল খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না, বাংলাদেশের মর্যাদাও বিশ্ব সমাজে বাড়াচ্ছে। এ খাতে ভর্তুকি বাড়ালে সামগ্রিক অর্থনীতিতেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এক সময়ে উন্নয়ন বাজেটের শতভাগ অর্থের জোগান আসত বিভিন্ন দেশ ও বিশ্বব্যাংক-এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে। এখন নিজস্ব সূত্র বাড়ছে। এটা সুলক্ষণ। বাংলাদেশ রফতানি বাড়াতে মনোযোগী হয়েছে এবং এতে মিলছে বিপুল সাফল্য। শিল্প খাত ভালো করছে এবং তৈরি পোশাকশিল্প ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে, যার বেশির ভাগ নারী। প্রবাসে কর্মরত ৭০-৮০ লাখ বাংলাদেশিও আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিপুল অবদান রাখছে। বিশ্ব সম্প্রদায় যে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে সম্ভাবনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখছে, তার কারণ বোধগম্য। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় তৈরি পোশাকশিল্পের বাইরেও দেশীয় শিল্পের অন্যান্য শাখায় শুল্ককর প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন এবং তা শিল্প মালিক মহলে সঙ্গে সঙ্গেই প্রশংসিত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই মূলধনী যন্ত্রপাতি ও মধ্যবর্তী কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বিবেচনায় কর অবকাশের সুবিধা অব্যাহত রাখার কারণে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। শিল্প-বাণিজ্যের উদ্যোক্তাদের এ ধরনের প্রতিক্রিয়া আর্থ-সামাজিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়। একই সঙ্গে মনে রাখা চাই, সরকার ও উদ্যোক্তা উভয় তরফেই শ্রমবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি এবং শ্রমজীবী জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে অধিকতর পদক্ষেপের তাগিদ এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এর সঙ্গে শ্রমজীবীদের জীবনমান উন্নত করার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের বিষয়টিও কিন্তু যুক্ত হয়ে পড়েছে। সরকার শিল্পবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করায় সচেষ্ট। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিল্পাঞ্চলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখায় সচেষ্ট হতে হবে সংশ্লিষ্টদের।
রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বস্তিদায়ক পরিবেশ সৃষ্টিও জরুরি বিষয়। নির্বাচনের বছরে অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম হয়, এ তথ্য দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু দলমত নির্বিশেষ সবাইকে এটাও মনে রাখতে হবে যে, হিংসাশ্রয়ী রাজনীতির পথে চলার কারণে ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের সমৃদ্ধির চাকা যেন থমকে না থাকে। নির্বাচনের বছরের বাজেট নিয়ে সরকারের সমালোচনা হতেই পারে। আয়-ব্যয়ের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা যথার্থ মেনে নিয়েও তা বাস্তবায়নের প্রশাসনিক দক্ষতা ও সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। অনেক ইস্যুতে কঠোর সমালোচনার মাধ্যমে সরকারকে অবস্থান পরিবর্তনে বাধ্য করাও যৌক্তিক। কিন্তু নির্বাচনের ইস্যু কিংবা অন্য কোনো কারণে কৃষি-শিল্প-বাণিজ্যের লক্ষ্য অর্জনে বিঘ্ন সৃষ্টি কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। আমরা আশা করব যে, সরকার তার সীমিত মেয়াদের কথা না ভেবে আর্থ-সামাজিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মনোযোগী থাকবে এবং সাধারণ নির্বাচনে যারাই জনরায়ে ক্ষমতায় আসুক না কেন বাজেট অর্থনীতির ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে চলবে।
বড় অঙ্কের উন্নয়ন বাজেটের মতো রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার অর্জন নিয়ে শঙ্কা আছে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে। পাশাপাশি বড় আকারের উন্নয়ন বাজেটের জন্য সম্পদের জোগান দিতে ব্যাংকিং খাত থেকে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণকেও তারা বেসরকারি খাতের ঋণপ্রাপ্তির পথে প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডি শুক্রবার বাস্তবতার নিরিখে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে বাজেট সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে বলে যে অভিমত দিয়েছে, তার পেছনে এসব শঙ্কা কাজ করে থাকতে পারে। বাজেট পেশের পরপরই প্রধান বিরোধী দল বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তাবিত বাজেটকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ফায়দা লোটার অপচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিবেচনায় ঘোষিত বাজেট 'বিগ বিউটিফুল বেলুন। এতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে, বিনিয়োগ কমবে এবং জিনিসের দাম বাড়বে। অর্থের অপচয় হবে'। প্রধান বিরোধী দল এ ধরনের সমালোচনা সংসদের অধিবেশন কক্ষে করলেই জনগণ তাকে সাধুবাদ দেবে। তারা বয়কটের ধারা থেকে বের হওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন এবং নবম জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনে তার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ এসেছে। তাদের ন্যায়সঙ্গত সমালোচনা, পরামর্শ ও সুপারিশ গ্রহণ করতে অর্থমন্ত্রীর আপত্তি থাকবে না বলে আমরা আশা করব।
বাজেট উচ্চাভিলাষী_ এ ধরনের সমালোচনা কতটা যথার্থ, সময়ই বলে দেবে। তবে সাত-আট বছরের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে আমাদের বিনিয়োগ বিপুলভাবে বাড়াতে হবে এবং সে জন্য সরকারের আয় যথেষ্ট বৃদ্ধির বিকল্প নেই। কালো টাকা সাদা করার আরেক দফা সুযোগ এ ক্ষেত্রে সঠিক পথ নয় বলেই অর্থনীতিবিদদের উল্লেখযোগ্য অংশের অভিমত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সব আমলেই এ পন্থা অনুসৃত হচ্ছে এবং তা সৎ পথে উপার্জনকারীদের জন্য নিদারুণ বৈষম্যমূলক_ এমন সুবচনে কর্ণপাত করার লক্ষণ নেই। বিনিয়োগ বাড়াতে হলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করে তোলার বিকল্প নেই। পদ্মা সেতুর জন্য ৬ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রদক্ষেপ প্রশংসনীয়। দেশবাসী এ প্রকল্পে কার্যকর অগ্রগতি দেখতে চায়। কৃষি খাত কেবল খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না, বাংলাদেশের মর্যাদাও বিশ্ব সমাজে বাড়াচ্ছে। এ খাতে ভর্তুকি বাড়ালে সামগ্রিক অর্থনীতিতেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এক সময়ে উন্নয়ন বাজেটের শতভাগ অর্থের জোগান আসত বিভিন্ন দেশ ও বিশ্বব্যাংক-এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে। এখন নিজস্ব সূত্র বাড়ছে। এটা সুলক্ষণ। বাংলাদেশ রফতানি বাড়াতে মনোযোগী হয়েছে এবং এতে মিলছে বিপুল সাফল্য। শিল্প খাত ভালো করছে এবং তৈরি পোশাকশিল্প ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে, যার বেশির ভাগ নারী। প্রবাসে কর্মরত ৭০-৮০ লাখ বাংলাদেশিও আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিপুল অবদান রাখছে। বিশ্ব সম্প্রদায় যে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে সম্ভাবনার সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখছে, তার কারণ বোধগম্য। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় তৈরি পোশাকশিল্পের বাইরেও দেশীয় শিল্পের অন্যান্য শাখায় শুল্ককর প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন এবং তা শিল্প মালিক মহলে সঙ্গে সঙ্গেই প্রশংসিত হয়েছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই মূলধনী যন্ত্রপাতি ও মধ্যবর্তী কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বিবেচনায় কর অবকাশের সুবিধা অব্যাহত রাখার কারণে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। শিল্প-বাণিজ্যের উদ্যোক্তাদের এ ধরনের প্রতিক্রিয়া আর্থ-সামাজিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়। একই সঙ্গে মনে রাখা চাই, সরকার ও উদ্যোক্তা উভয় তরফেই শ্রমবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি এবং শ্রমজীবী জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণে অধিকতর পদক্ষেপের তাগিদ এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এর সঙ্গে শ্রমজীবীদের জীবনমান উন্নত করার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে আমাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের বিষয়টিও কিন্তু যুক্ত হয়ে পড়েছে। সরকার শিল্পবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করায় সচেষ্ট। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিল্পাঞ্চলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখায় সচেষ্ট হতে হবে সংশ্লিষ্টদের।
রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বস্তিদায়ক পরিবেশ সৃষ্টিও জরুরি বিষয়। নির্বাচনের বছরে অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম হয়, এ তথ্য দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু দলমত নির্বিশেষ সবাইকে এটাও মনে রাখতে হবে যে, হিংসাশ্রয়ী রাজনীতির পথে চলার কারণে ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের সমৃদ্ধির চাকা যেন থমকে না থাকে। নির্বাচনের বছরের বাজেট নিয়ে সরকারের সমালোচনা হতেই পারে। আয়-ব্যয়ের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা যথার্থ মেনে নিয়েও তা বাস্তবায়নের প্রশাসনিক দক্ষতা ও সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। অনেক ইস্যুতে কঠোর সমালোচনার মাধ্যমে সরকারকে অবস্থান পরিবর্তনে বাধ্য করাও যৌক্তিক। কিন্তু নির্বাচনের ইস্যু কিংবা অন্য কোনো কারণে কৃষি-শিল্প-বাণিজ্যের লক্ষ্য অর্জনে বিঘ্ন সৃষ্টি কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। আমরা আশা করব যে, সরকার তার সীমিত মেয়াদের কথা না ভেবে আর্থ-সামাজিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মনোযোগী থাকবে এবং সাধারণ নির্বাচনে যারাই জনরায়ে ক্ষমতায় আসুক না কেন বাজেট অর্থনীতির ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে চলবে।
No comments