এখানে-সেখানে ভালো থেকো
সিডনিতে নেমেই ঋতুপর্ণ ঘোষের চলে যাওয়ার
সংবাদ। এক দিন আগে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছি। আকাশপথের একটু বিরতিতেই ঋতুপর্ণ
ঘোষের মতো একজন প্রিয় চলচ্চিত্রকারের অকালপ্রয়াণের সংবাদ কোনোভাবেই মেনে
নিতে পারছিলাম না।
৪৯ বছরেই উৎকৃষ্ট মানুষ কেন চলে যাবেন?
বাংলা চলচ্চিত্রজগতে সত্যজিৎ রায়-পরবর্তী প্রজন্মের উজ্জ্বলতম চলচ্চিত্রকার হিসেবে ধরা হয় ঋতুপর্ণ ঘোষকে। ভারতের জাতীয় পুরস্কার থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক পুরস্কার তিনি পেয়েছেন। কিন্তু আমরা আরও অনেক স্বীকৃতি, অনেক পুরস্কার জিতে নিতে চেয়েছিলাম তাঁর মাঝ দিয়ে। সে ক্ষমতা ও দক্ষতা তাঁর ছিল। তাঁর চলচ্চিত্র উপস্থাপন, কাহিনি নির্বাচন, সাজপোশাক এক ভিন্নমাত্রায় এসে দাঁড়িয়েছিল। নিজেই ভাঙছিলেন নিজের কাজ, পরীক্ষণ-নিরীক্ষণ করছিলেন তাঁর বিভিন্ন চলচ্চিত্রকাঠামো।
এই তো কিছুদিন আগে ২০১২-এর জুনে সিডনি এসেছিলেন তাঁর শেষ চলচ্চিত্র চিত্রাঙ্গদা নিয়ে। আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার শো হলো এখানে। আমরা গিয়েছিলাম অনেকেই। শোর আগে ঋতুপর্ণের সঙ্গে একটু দেখা, একটু কথায় যেন জেনে গেছি যোজন যোজন তাঁকে, কারণ তাঁর গল্পকথার সব প্রায় আগেই জানতাম ‘এবং ঋতুপর্ণ’, ‘ঘোষ অ্যান্ড কোং’ দেখে দেখে এবং পড়ে।
বিস্ময় লাগছিল, এই সেই তিনি ঋতুপর্ণ ঘোষ, যাঁর জাদুকরি পাণ্ডুলিপির টেলিভিশন ধারাবাহিক গানের ওপারে টানা দেখেছিলাম পাঁচ-ছয় দিন। ২৫০ পর্ব দেখার পর মনে হয়েছিল কেন শেষ হলো, চলত না হয় আরও কয়েক দিন। এ বিষয়ে একটা লেখাও লিখেছিলাম সিডনির অনলাইন পত্রিকায়। ওই নাটকের চরিত্র প্রদীপ্তর সঙ্গে কেন অন্যায় করা হলো, তার প্রতিবাদও করেছিলাম। তারপর সবচেয়ে বড় যে উপলব্ধিটা হলো, সেটা হলো, কেন যে মানুষ হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখে মিছিল করেছিল সেটা বুঝে গিয়েছিলাম।
তাঁর প্রতিটি ছবি আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করত এবং এখনো করে। কয়েক দিন আগেও তাঁর নৌকাডুবি আবার দেখছিলাম বউকে নিয়ে। দেখি বউ কান্নায় ভেঙে পড়েছে। সিডনিতে যখন নামলাম এক দিন পর, তখন ও-ই প্রথম খুদে বার্তায় জানিয়েছিল যে আমাদের প্রিয় ঋতুপর্ণ ঘোষ আর নেই।
এ হচ্ছে অমোঘ সত্য। সত্য কঠিন। তাকে মেনে নিতেই হয়।
এক রাত। এক ঘুমে পাড়ি দিলেন না-ফেরার দেশে। যে দেশ থেকে আর কোনো দিন ফিরবেন না। ভালো থেকো ঋতুপর্ণ ঘোষ।
কাউসার খান, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
kawsark@gmail.com
বাংলা চলচ্চিত্রজগতে সত্যজিৎ রায়-পরবর্তী প্রজন্মের উজ্জ্বলতম চলচ্চিত্রকার হিসেবে ধরা হয় ঋতুপর্ণ ঘোষকে। ভারতের জাতীয় পুরস্কার থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক পুরস্কার তিনি পেয়েছেন। কিন্তু আমরা আরও অনেক স্বীকৃতি, অনেক পুরস্কার জিতে নিতে চেয়েছিলাম তাঁর মাঝ দিয়ে। সে ক্ষমতা ও দক্ষতা তাঁর ছিল। তাঁর চলচ্চিত্র উপস্থাপন, কাহিনি নির্বাচন, সাজপোশাক এক ভিন্নমাত্রায় এসে দাঁড়িয়েছিল। নিজেই ভাঙছিলেন নিজের কাজ, পরীক্ষণ-নিরীক্ষণ করছিলেন তাঁর বিভিন্ন চলচ্চিত্রকাঠামো।
এই তো কিছুদিন আগে ২০১২-এর জুনে সিডনি এসেছিলেন তাঁর শেষ চলচ্চিত্র চিত্রাঙ্গদা নিয়ে। আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার শো হলো এখানে। আমরা গিয়েছিলাম অনেকেই। শোর আগে ঋতুপর্ণের সঙ্গে একটু দেখা, একটু কথায় যেন জেনে গেছি যোজন যোজন তাঁকে, কারণ তাঁর গল্পকথার সব প্রায় আগেই জানতাম ‘এবং ঋতুপর্ণ’, ‘ঘোষ অ্যান্ড কোং’ দেখে দেখে এবং পড়ে।
বিস্ময় লাগছিল, এই সেই তিনি ঋতুপর্ণ ঘোষ, যাঁর জাদুকরি পাণ্ডুলিপির টেলিভিশন ধারাবাহিক গানের ওপারে টানা দেখেছিলাম পাঁচ-ছয় দিন। ২৫০ পর্ব দেখার পর মনে হয়েছিল কেন শেষ হলো, চলত না হয় আরও কয়েক দিন। এ বিষয়ে একটা লেখাও লিখেছিলাম সিডনির অনলাইন পত্রিকায়। ওই নাটকের চরিত্র প্রদীপ্তর সঙ্গে কেন অন্যায় করা হলো, তার প্রতিবাদও করেছিলাম। তারপর সবচেয়ে বড় যে উপলব্ধিটা হলো, সেটা হলো, কেন যে মানুষ হুমায়ূন আহমেদের নাটক দেখে মিছিল করেছিল সেটা বুঝে গিয়েছিলাম।
তাঁর প্রতিটি ছবি আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করত এবং এখনো করে। কয়েক দিন আগেও তাঁর নৌকাডুবি আবার দেখছিলাম বউকে নিয়ে। দেখি বউ কান্নায় ভেঙে পড়েছে। সিডনিতে যখন নামলাম এক দিন পর, তখন ও-ই প্রথম খুদে বার্তায় জানিয়েছিল যে আমাদের প্রিয় ঋতুপর্ণ ঘোষ আর নেই।
এ হচ্ছে অমোঘ সত্য। সত্য কঠিন। তাকে মেনে নিতেই হয়।
এক রাত। এক ঘুমে পাড়ি দিলেন না-ফেরার দেশে। যে দেশ থেকে আর কোনো দিন ফিরবেন না। ভালো থেকো ঋতুপর্ণ ঘোষ।
কাউসার খান, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
kawsark@gmail.com
No comments