গণিত আর প্রোগ্রামিংয়ে সেরা ধনঞ্জয় by নুরুন্নবী চৌধুরী
আর্জেন্টিনার মার ডেল প্লাটায় চলছে প্রতিযোগিতা। বিশ্বের ১০০টি দেশের ৫৪৮ জন খুদে গণিতবিদ মনোযোগী হয়ে আছে গণিতের সমস্যা সমাধানে। ২০১২ সালের ৫৩তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের (আইএমও) আসরে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের খুদে গণিতবিদেরাও।
এই ৫৩তম গণিত অলিম্পিয়াডেই প্রথমবারের মতো রৌপ্যপদক অর্জন করে বাংলাদেশ। আর এই অর্জনের নায়ক চট্টগ্রামের ছেলে ধনঞ্জয় বিশ্বাস।
শুধু এ অর্জনই নয়। একই বছর (২০১২) ইতালিতে অনুষ্ঠিত ২৪তম আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াডে (আইওআই) প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান করে বাংলাদেশের পক্ষে দুই জন ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে। ৮১টি দেশের ৩১৭ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী দুই বাংলাদেশির মধ্যেও একজন ধনঞ্জয়। আইএমওতে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্জন ছিল ব্রোঞ্জ পদক। প্রথমবারের মতো রৌপ্যপদক জয়ে বিশ্বে আবার ছড়িয়ে পড়ল বাংলাদেশের নাম। রৌপ্য জয়ের আগে ২০১১ সালে ৫২তম আইএমওতে এ ব্রোঞ্জ পদকও অর্জন করেছিলেন ধনঞ্জয় বিশ্বাস। সেবার ১ নম্বরের জন্য রৌপ্য পদক হাতছাড়া হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগে পড়াশোনা করছেন ধনঞ্জয়। ধারাবাহিকভাবেই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন তিনি। ব্যবসায়ী বাবা মিলন কান্তি বিশ্বাস এবং স্বাস্থ্যকর্মী মা স্বপ্না রানী দের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ধনঞ্জয়। তাঁর ধ্যানজ্ঞান গণিত আর প্রোগ্রামিং। সমস্যা সমাধানে তাঁর অপার আনন্দ। ধনঞ্জয় জানান, ‘আমার আসলে যেকোনো সমস্যা সমাধান করতে ভালো লাগে। আর যেহেতু গণিতে সমস্যা সমাধান করতে হয়, আবার প্রোগ্রামিংয়েও সমস্যার সমাধান করতে হয়, তাই এ দুটি বিষয় আমার পছন্দের।’
২০০৮ সালে নবম শ্রেণীতে পড়াকালে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াডে প্রথমবার অংশ নেন। সেবারই ঢাকার জাতীয় পর্ব পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ পান ধনঞ্জয়। আর শুধু সুযোগই নয়, জাতীয় গণিত উৎসবে সেবার হন ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন’। ২০১০ সালে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পর্বে প্রথম হলেও এসএসসি পরীক্ষা থাকায় ঢাকা যাওয়া হয়নি। ২০১১ সালে আবার চট্টগ্রামে প্রথম এবং ঢাকায় ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন’ হন। পরে গণিত ক্যাম্পের জন্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের পক্ষে আইএমওতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান ধনঞ্জয়।
এইচএসসি পাস করার পর গণিত আর অর্থনীতি বিষয়ে দেশের বাইরে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা ছিল তাঁর। ‘তবে এখন যেহেতু দেশেই পড়ছি, তাই কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানী হতে চাই।’ জানালেন ধনঞ্জয়। তবে বিদেশে পড়ার সুযোগ পেলে গণিত ও অর্থনীতিতেই পড়তে চান তিনি। একই বছরে নিজের ও দেশের জন্য দুটি আন্তর্জাতিক সফল্য অর্জনকারী ধনঞ্জয় জানান, সফলতার জন্য প্রয়োজন কঠিন অনুশীলন। আর আত্মবিশ্বাস থাকাটা জরুরি। এসবের পাশাপাশি পরিবারের সহযোগিতাটাও লাগবে।
১৯৯৪ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাকখাইন গ্রামে জন্ম ধনঞ্জয়ের। মা-বাবা চেয়েছিলেন চিকিৎসক অথবা প্রকৌশলী হোক ছেলে। তবে ধনঞ্জয়ের মাথায় ছিল বিজ্ঞান, গণিত আর প্রোগ্রামিং। ব্যতিক্রমী এ গুণীর পছন্দ-অপছন্দের বেলায়ও রয়েছে নানা ব্যতিক্রম। খাবারের তালিকায় প্রিয় পছন্দ সবজি। তবে ‘ক’ আদ্যাক্ষরের সবজি যেমন: করলা, কাঁকরোল, কাঁচকলা ও কচু ছাড়া অন্যান্য সবজি তাঁর পছন্দ। মাছের ক্ষেত্রে ইলিশ ছাড়া অন্য মাছ খান না। আদর্শ এবং প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। জানালেন, ‘সময় পেলেই বই পড়ি।’ আন্তর্জাতিক গণিত আর প্রোগ্রামিং আসরে ভবিষ্যতে আরও বড় সফলতা আসবে বাংলাদেশের, তার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন ধনঞ্জয়।
আমিই বাংলাদেশ নিয়ে পরামর্শ ও তথ্য যোগাযোগ: ab@pৎothom-alo.info
শুধু এ অর্জনই নয়। একই বছর (২০১২) ইতালিতে অনুষ্ঠিত ২৪তম আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াডে (আইওআই) প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান করে বাংলাদেশের পক্ষে দুই জন ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে। ৮১টি দেশের ৩১৭ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী দুই বাংলাদেশির মধ্যেও একজন ধনঞ্জয়। আইএমওতে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্জন ছিল ব্রোঞ্জ পদক। প্রথমবারের মতো রৌপ্যপদক জয়ে বিশ্বে আবার ছড়িয়ে পড়ল বাংলাদেশের নাম। রৌপ্য জয়ের আগে ২০১১ সালে ৫২তম আইএমওতে এ ব্রোঞ্জ পদকও অর্জন করেছিলেন ধনঞ্জয় বিশ্বাস। সেবার ১ নম্বরের জন্য রৌপ্য পদক হাতছাড়া হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগে পড়াশোনা করছেন ধনঞ্জয়। ধারাবাহিকভাবেই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন তিনি। ব্যবসায়ী বাবা মিলন কান্তি বিশ্বাস এবং স্বাস্থ্যকর্মী মা স্বপ্না রানী দের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ধনঞ্জয়। তাঁর ধ্যানজ্ঞান গণিত আর প্রোগ্রামিং। সমস্যা সমাধানে তাঁর অপার আনন্দ। ধনঞ্জয় জানান, ‘আমার আসলে যেকোনো সমস্যা সমাধান করতে ভালো লাগে। আর যেহেতু গণিতে সমস্যা সমাধান করতে হয়, আবার প্রোগ্রামিংয়েও সমস্যার সমাধান করতে হয়, তাই এ দুটি বিষয় আমার পছন্দের।’
২০০৮ সালে নবম শ্রেণীতে পড়াকালে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াডে প্রথমবার অংশ নেন। সেবারই ঢাকার জাতীয় পর্ব পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ পান ধনঞ্জয়। আর শুধু সুযোগই নয়, জাতীয় গণিত উৎসবে সেবার হন ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন’। ২০১০ সালে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পর্বে প্রথম হলেও এসএসসি পরীক্ষা থাকায় ঢাকা যাওয়া হয়নি। ২০১১ সালে আবার চট্টগ্রামে প্রথম এবং ঢাকায় ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন’ হন। পরে গণিত ক্যাম্পের জন্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের পক্ষে আইএমওতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান ধনঞ্জয়।
এইচএসসি পাস করার পর গণিত আর অর্থনীতি বিষয়ে দেশের বাইরে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা ছিল তাঁর। ‘তবে এখন যেহেতু দেশেই পড়ছি, তাই কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানী হতে চাই।’ জানালেন ধনঞ্জয়। তবে বিদেশে পড়ার সুযোগ পেলে গণিত ও অর্থনীতিতেই পড়তে চান তিনি। একই বছরে নিজের ও দেশের জন্য দুটি আন্তর্জাতিক সফল্য অর্জনকারী ধনঞ্জয় জানান, সফলতার জন্য প্রয়োজন কঠিন অনুশীলন। আর আত্মবিশ্বাস থাকাটা জরুরি। এসবের পাশাপাশি পরিবারের সহযোগিতাটাও লাগবে।
১৯৯৪ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাকখাইন গ্রামে জন্ম ধনঞ্জয়ের। মা-বাবা চেয়েছিলেন চিকিৎসক অথবা প্রকৌশলী হোক ছেলে। তবে ধনঞ্জয়ের মাথায় ছিল বিজ্ঞান, গণিত আর প্রোগ্রামিং। ব্যতিক্রমী এ গুণীর পছন্দ-অপছন্দের বেলায়ও রয়েছে নানা ব্যতিক্রম। খাবারের তালিকায় প্রিয় পছন্দ সবজি। তবে ‘ক’ আদ্যাক্ষরের সবজি যেমন: করলা, কাঁকরোল, কাঁচকলা ও কচু ছাড়া অন্যান্য সবজি তাঁর পছন্দ। মাছের ক্ষেত্রে ইলিশ ছাড়া অন্য মাছ খান না। আদর্শ এবং প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। জানালেন, ‘সময় পেলেই বই পড়ি।’ আন্তর্জাতিক গণিত আর প্রোগ্রামিং আসরে ভবিষ্যতে আরও বড় সফলতা আসবে বাংলাদেশের, তার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন ধনঞ্জয়।
আমিই বাংলাদেশ নিয়ে পরামর্শ ও তথ্য যোগাযোগ: ab@pৎothom-alo.info
No comments