কে লিওনেল মেসির হাতে আর কে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হাতে এবার দেখতে চেয়েছিলেন ফিফা-ব্যালন ডি’অর ট্রফি। জানাচ্ছেন রাজীব হাসান মেসি রোনালদোর লড়াই যখন ব্যালটে!
কখনো শুনেছেন, শেখ হাসিনা ধানের শীষে ভোট দেন, কিংবা খালেদা জিয়া নৌকা মার্কায়? সূর্যও একেক দিন ভুল করে পুবের বদলে পশ্চিমে উঠে যেতে পারে, আহ্নিক গতি পাল্টে উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করতে পারে পৃথিবী, দারুণ দোস্তি হয়ে যেতে পারে বিড়াল আর ইঁদুরের; কিন্তু প্রথম সম্ভাবনা? নৈবচ নৈবচ!
ভোটাভুটি ব্যাপারটিই এমন। এখানে একেকটা ভোট অমূল্য হীরকখণ্ড। কারণ, নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত জানা যায় না লড়াইটা কেমন হবে। কে জানে, একটা ভোটই হয়তো পাল্টে দিতে পারে নির্বাচনের ফল। এ কারণেই ভোটের মৌসুমে আমাদের কান ঝালাপালা করে দেয় মাইকের এই সতর্কবার্তা, ‘ভোট দেবেন না কলাগাছে, একটি ভোটের মূল্য আছে।’
সেটা বঙ্গীয় নির্বাচন হোক কিংবা ফিফা-ব্যালন ডি’অরের বৈশ্বিক ভোটাভুটি, সবখানেই ছবিটা একই রকম। আর তাই বুঝি লিওনেল মেসি বনাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দ্বৈরথ শুরু হওয়ার পর থেকে কখনোই দুই শিবির ভোট দিতে গিয়ে ভুল করেনি। পর্তুগাল শিবির থেকে মেসিকে ভোট দেওয়া হয় না, আর্জেন্টিনা শিবিরও যেন রোনালদো নামের কোনো খেলোয়াড়কে চেনেই না!
এবার খানিকটা ব্যতিক্রম হয়েছে, কিন্তু মোটের ওপর ছবিটা একই রকম। ব্যতিক্রম বলতে পর্তুগাল কোচ পাওলো বেন্তো তাঁর তৃতীয় পছন্দের ফুটবলার হিসেবে বেছে নেন মেসিকে। প্রথম ভোটটা অবশ্যই পান রোনালদো। তবে ফ্যালকাওয়ের তুলনায় মেসি পিছিয়ে ছিলেন বলেই মনে হয়েছে বেন্তোর কাছে! চক্ষুলজ্জার খাতিরেই ভুল করে বেন্তো মেসিকে একটা পয়েন্ট (প্রথম পছন্দের খেলোয়াড়টি পান ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয়জন ৩ পয়েন্ট, তৃতীয়জন ১ পয়েন্ট) দিয়েছেন কি না, কে জানে!
তবে আর্জেন্টাইন কোচ আলেজান্দ্রো সাবেলা চক্ষুলজ্জার ধার ধারেননি। ভুল করে ভোট দেওয়ার মতো ভুলও নয়, রোনালদোকে সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে প্রথম দুটো ভোটই দিয়েছেন দুই শিষ্য লিওনেল মেসি ও সার্জিও আগুয়েরোকে। সাবেলার তৃতীয় ভোটটি দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে যায়নি। পেয়েছেন রাদামেল ফ্যালকাও।
আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে মেসি নিজেও ভোট দিতে পেরেছেন। মেসিও কিন্তু রোনালদোকে ভোট দেননি। তিনটি ভোট দিয়েছেন যথাক্রমে ইনিয়েস্তা, জাভি ও আগুয়েরোকে। সাংবাদিকেরা মেসিকে প্রশ্ন করেছিলেন, রোনালদোকে ভোট দেননি কেন? গত মৌসুমে ক্লাবের হয়ে ৫৫ ম্যাচে ৬০ গোল করা রোনালদো কি একটি ভোটও পেতে পারত না তাঁর? মেসি খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে অকপটে স্বীকার করেছেন, ‘ক্রিস্টিয়ানোকে অন্যতম সেরা হিসেবে বেছে না নেওয়াটা বোকামি। তবে আমার মন যা বলেছে, আমি তাঁদেরই ভোট দিয়েছি।’
অর্থাৎ ‘বোকামি’টা তিনি জেনেবুঝেই করেছেন। রোনালদোকেও একই প্রশ্ন করেছিল সাংবাদিকেরা। তবে প্রতিপক্ষের রক্ষণফাঁদকে বোকা বানিয়ে যেভাবে বের হয়ে যান, তেমনটাই ছিল রোনালদোর ‘ড্রিবলিং’। চোটের কারণে সেই সময় তাঁর বদলে পর্তুগালের অধিনায়ক ছিলেন ব্রুনো আলভেস। এ কারণে ভোটাভুটির ঝামেলায় তাঁকে যেতে হয়নি। আলভেস অবশ্য ভুল করেননি। রোনালদো, ফ্যালকাও ও রবিন ফন পার্সিকে তাঁর ভোট তিনটা দিয়েছেন।
এদিক দিয়ে রোনালদোর লাভই হয়েছিল। নিজেকে তো আর ভোট দেওয়া যায় না। চক্ষুলজ্জার ব্যাপার আছে! এ কারণে মেসিকে অন্য কাউকেই ভোট দিতে হয়েছে। আর্জেন্টিনার নিশ্চিত একটা ভোট চলে গেছে অন্য ব্যালটে। কিন্তু পর্তুগালের ভোটটা নষ্ট হয়নি। মেসির সেই ‘ক্ষতি’টা অবশ্য পুষিয়ে দিয়েছেন ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড। সৌদি আরবের কোচ হিসেবে ভোট দিয়েছেন, কিন্তু কার্যত কাজ করেছেন বার্সা শিবিরের ‘পোলিং এজেন্ট’-এর। বার্সার সাবেক কোচের তিনটা ভোটই পেয়েছেন মেসি, জাভি আর ইনিয়েস্তা।
মেসির সন্তানের নাম তাঁর নামে। সে কারণেই হোক কিংবা অন্য যেকোনো কারণে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার চিরাচরিত রেষারেষি ভুলে মেসিকেই প্রথম ভোটটা দিয়েছেন ব্রাজিল দলের অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। ক্যামেরুন অধিনায়ক স্যামুয়েল ইতোও ভোলেননি তাঁর সাবেক বার্সা-সতীর্থের নাম। ব্রাজিলের সাবেক কোচ মানো মেনেজেসের প্রথম পছন্দ আবার রোনালদোই। ইংলিশ অধিনায়ক স্টিভেন জেরার্ডের প্রথম পছন্দও মেসি। রাশিয়ার কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলো কিংবা হল্যান্ড কোচ লুই ফন গলও মেসিকেই দিয়েছেন প্রথম ভোটটি।
ফিফা ভোটাভুটির ক্ষেত্রে একটা বড় পরিবর্তন আনার অন্যতম দাবিদার হতে পারেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার কোচ থাকার সময় ম্যারাডোনা নিজেও একবার ভোট দিয়েছেন। কিন্তু নিয়মের ফাঁদে মেসির বদলে তাঁকে ভোট দিতে হয়েছিল অন্য কাউকে। কারণ, নিজের দলের কাউকে ভোট দেওয়ার নিয়ম তখন ছিল না। ম্যারাডোনা তখন স্বভাবসুলভ ভাষায় বলেছিলেন, ‘এর চেয়ে হাস্যকর ব্যাপার আর কী হতে পারে। আমি জানি, মেসিই সেরা খেলোয়াড়, অথচ ভোট দিতে হচ্ছে অন্য কাউকে!’
এর ঠিক পরের বছর থেকেই নিয়মটা তুলে নেয় ফিফা। ফলে সতীর্থ বা সহযোদ্ধা শিষ্যকে ভোট দিতে পারছেন অধিনায়ক ও কোচরা। হল্যান্ড অধিনায়ক ওয়েসলি স্নাইডার যেমন প্রথম ভোটটি রবিন ফন পার্সিকেই দিয়েছেন। ইতালির অধিনায়ক জিয়ানলুইজি বুফনও ভোলেননি আন্দ্রেয়া পিরলোর কথা। জার্মান কোচ জোয়াকিম লোর প্রথম ভোটটিও তাই পেয়েছেন মেসুত ওজিল। বরাবরই মেসির বড় ভক্ত বলে পরিচিত হলেও ভিসেন্তে দেল বস্ক তাঁর সর্বজয়ী স্পেন দলের তিন কাণ্ডারিকেই বেছে নিয়েছেন—ক্যাসিয়াস, জাভি ও ইনিয়েস্তা।
ক্যাসিয়াস? তিনি কাকে দিলেন ভোটটি? এখানে ঘটেছে কৌতূহল-জাগানিয়া একটি ব্যাপার। গতবার রোনালদোকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাসিয়াস এবার প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছেন সার্জিও রামোসকে। রোনালদো পেয়েছেন তাঁর দ্বিতীয় ভোটটি।
রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে পর্তুগাল বনাম স্পেন দ্বন্দ্বটা তাহলে সত্যি? রোনালদোর পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, ব্যালন ডি’অরে রোনালদোর হয়ে রিয়াল প্রচারণা চালাচ্ছে না; সেই অভিযোগেরও তাহলে ভিত্তি আছে বটে!
আফ্রিকান প্রীতি এবং না-ভোট
প্রতিবার ব্যালন ডি’অরের ভোটাভুটির তালিকায় একটা ব্যাপার দেখা যায়, আফ্রিকান কোচ বা অধিনায়কেরা ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আফ্রিকান খেলোয়াড়টিকেই বেছে নিতে বেশি পছন্দ করেন। এবারও এমন বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেখা গেছে। দিদিয়ের দ্রগবাকে প্রথম ভোটটি দিয়েছেন মালি, নামিবিয়া, দক্ষিণ সুদানের অধিনায়ক; কাকতালীয় মনে হতে পারে, এই তিন দেশের কোচও প্রথম ভোটটি দিয়েছেন দ্রগবাকে! ইয়া তোরকে প্রথম ভোটটি দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। কোচদের মধ্যে তোরে ভোট পেয়েছেন নাইজেরিয়া ও সেনেগালের।
এবারও ভোট বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বারবাডোজের সাংবাদিক এজরা স্টুয়ার্টের ভোটটি মজার। তাঁর প্রথম পছন্দ মেসি; দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভোট দুটি বাতিল। মেসি ছাড়া নিজের গুরুত্বপূর্ণ ভোট আর কাউকেই তিনি দিতে চাননি কি না, কে জানে!
সেটা বঙ্গীয় নির্বাচন হোক কিংবা ফিফা-ব্যালন ডি’অরের বৈশ্বিক ভোটাভুটি, সবখানেই ছবিটা একই রকম। আর তাই বুঝি লিওনেল মেসি বনাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দ্বৈরথ শুরু হওয়ার পর থেকে কখনোই দুই শিবির ভোট দিতে গিয়ে ভুল করেনি। পর্তুগাল শিবির থেকে মেসিকে ভোট দেওয়া হয় না, আর্জেন্টিনা শিবিরও যেন রোনালদো নামের কোনো খেলোয়াড়কে চেনেই না!
এবার খানিকটা ব্যতিক্রম হয়েছে, কিন্তু মোটের ওপর ছবিটা একই রকম। ব্যতিক্রম বলতে পর্তুগাল কোচ পাওলো বেন্তো তাঁর তৃতীয় পছন্দের ফুটবলার হিসেবে বেছে নেন মেসিকে। প্রথম ভোটটা অবশ্যই পান রোনালদো। তবে ফ্যালকাওয়ের তুলনায় মেসি পিছিয়ে ছিলেন বলেই মনে হয়েছে বেন্তোর কাছে! চক্ষুলজ্জার খাতিরেই ভুল করে বেন্তো মেসিকে একটা পয়েন্ট (প্রথম পছন্দের খেলোয়াড়টি পান ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয়জন ৩ পয়েন্ট, তৃতীয়জন ১ পয়েন্ট) দিয়েছেন কি না, কে জানে!
তবে আর্জেন্টাইন কোচ আলেজান্দ্রো সাবেলা চক্ষুলজ্জার ধার ধারেননি। ভুল করে ভোট দেওয়ার মতো ভুলও নয়, রোনালদোকে সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে প্রথম দুটো ভোটই দিয়েছেন দুই শিষ্য লিওনেল মেসি ও সার্জিও আগুয়েরোকে। সাবেলার তৃতীয় ভোটটি দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে যায়নি। পেয়েছেন রাদামেল ফ্যালকাও।
আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে মেসি নিজেও ভোট দিতে পেরেছেন। মেসিও কিন্তু রোনালদোকে ভোট দেননি। তিনটি ভোট দিয়েছেন যথাক্রমে ইনিয়েস্তা, জাভি ও আগুয়েরোকে। সাংবাদিকেরা মেসিকে প্রশ্ন করেছিলেন, রোনালদোকে ভোট দেননি কেন? গত মৌসুমে ক্লাবের হয়ে ৫৫ ম্যাচে ৬০ গোল করা রোনালদো কি একটি ভোটও পেতে পারত না তাঁর? মেসি খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে অকপটে স্বীকার করেছেন, ‘ক্রিস্টিয়ানোকে অন্যতম সেরা হিসেবে বেছে না নেওয়াটা বোকামি। তবে আমার মন যা বলেছে, আমি তাঁদেরই ভোট দিয়েছি।’
অর্থাৎ ‘বোকামি’টা তিনি জেনেবুঝেই করেছেন। রোনালদোকেও একই প্রশ্ন করেছিল সাংবাদিকেরা। তবে প্রতিপক্ষের রক্ষণফাঁদকে বোকা বানিয়ে যেভাবে বের হয়ে যান, তেমনটাই ছিল রোনালদোর ‘ড্রিবলিং’। চোটের কারণে সেই সময় তাঁর বদলে পর্তুগালের অধিনায়ক ছিলেন ব্রুনো আলভেস। এ কারণে ভোটাভুটির ঝামেলায় তাঁকে যেতে হয়নি। আলভেস অবশ্য ভুল করেননি। রোনালদো, ফ্যালকাও ও রবিন ফন পার্সিকে তাঁর ভোট তিনটা দিয়েছেন।
এদিক দিয়ে রোনালদোর লাভই হয়েছিল। নিজেকে তো আর ভোট দেওয়া যায় না। চক্ষুলজ্জার ব্যাপার আছে! এ কারণে মেসিকে অন্য কাউকেই ভোট দিতে হয়েছে। আর্জেন্টিনার নিশ্চিত একটা ভোট চলে গেছে অন্য ব্যালটে। কিন্তু পর্তুগালের ভোটটা নষ্ট হয়নি। মেসির সেই ‘ক্ষতি’টা অবশ্য পুষিয়ে দিয়েছেন ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড। সৌদি আরবের কোচ হিসেবে ভোট দিয়েছেন, কিন্তু কার্যত কাজ করেছেন বার্সা শিবিরের ‘পোলিং এজেন্ট’-এর। বার্সার সাবেক কোচের তিনটা ভোটই পেয়েছেন মেসি, জাভি আর ইনিয়েস্তা।
মেসির সন্তানের নাম তাঁর নামে। সে কারণেই হোক কিংবা অন্য যেকোনো কারণে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার চিরাচরিত রেষারেষি ভুলে মেসিকেই প্রথম ভোটটা দিয়েছেন ব্রাজিল দলের অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। ক্যামেরুন অধিনায়ক স্যামুয়েল ইতোও ভোলেননি তাঁর সাবেক বার্সা-সতীর্থের নাম। ব্রাজিলের সাবেক কোচ মানো মেনেজেসের প্রথম পছন্দ আবার রোনালদোই। ইংলিশ অধিনায়ক স্টিভেন জেরার্ডের প্রথম পছন্দও মেসি। রাশিয়ার কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলো কিংবা হল্যান্ড কোচ লুই ফন গলও মেসিকেই দিয়েছেন প্রথম ভোটটি।
ফিফা ভোটাভুটির ক্ষেত্রে একটা বড় পরিবর্তন আনার অন্যতম দাবিদার হতে পারেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার কোচ থাকার সময় ম্যারাডোনা নিজেও একবার ভোট দিয়েছেন। কিন্তু নিয়মের ফাঁদে মেসির বদলে তাঁকে ভোট দিতে হয়েছিল অন্য কাউকে। কারণ, নিজের দলের কাউকে ভোট দেওয়ার নিয়ম তখন ছিল না। ম্যারাডোনা তখন স্বভাবসুলভ ভাষায় বলেছিলেন, ‘এর চেয়ে হাস্যকর ব্যাপার আর কী হতে পারে। আমি জানি, মেসিই সেরা খেলোয়াড়, অথচ ভোট দিতে হচ্ছে অন্য কাউকে!’
এর ঠিক পরের বছর থেকেই নিয়মটা তুলে নেয় ফিফা। ফলে সতীর্থ বা সহযোদ্ধা শিষ্যকে ভোট দিতে পারছেন অধিনায়ক ও কোচরা। হল্যান্ড অধিনায়ক ওয়েসলি স্নাইডার যেমন প্রথম ভোটটি রবিন ফন পার্সিকেই দিয়েছেন। ইতালির অধিনায়ক জিয়ানলুইজি বুফনও ভোলেননি আন্দ্রেয়া পিরলোর কথা। জার্মান কোচ জোয়াকিম লোর প্রথম ভোটটিও তাই পেয়েছেন মেসুত ওজিল। বরাবরই মেসির বড় ভক্ত বলে পরিচিত হলেও ভিসেন্তে দেল বস্ক তাঁর সর্বজয়ী স্পেন দলের তিন কাণ্ডারিকেই বেছে নিয়েছেন—ক্যাসিয়াস, জাভি ও ইনিয়েস্তা।
ক্যাসিয়াস? তিনি কাকে দিলেন ভোটটি? এখানে ঘটেছে কৌতূহল-জাগানিয়া একটি ব্যাপার। গতবার রোনালদোকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাসিয়াস এবার প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছেন সার্জিও রামোসকে। রোনালদো পেয়েছেন তাঁর দ্বিতীয় ভোটটি।
রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে পর্তুগাল বনাম স্পেন দ্বন্দ্বটা তাহলে সত্যি? রোনালদোর পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, ব্যালন ডি’অরে রোনালদোর হয়ে রিয়াল প্রচারণা চালাচ্ছে না; সেই অভিযোগেরও তাহলে ভিত্তি আছে বটে!
আফ্রিকান প্রীতি এবং না-ভোট
প্রতিবার ব্যালন ডি’অরের ভোটাভুটির তালিকায় একটা ব্যাপার দেখা যায়, আফ্রিকান কোচ বা অধিনায়কেরা ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আফ্রিকান খেলোয়াড়টিকেই বেছে নিতে বেশি পছন্দ করেন। এবারও এমন বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেখা গেছে। দিদিয়ের দ্রগবাকে প্রথম ভোটটি দিয়েছেন মালি, নামিবিয়া, দক্ষিণ সুদানের অধিনায়ক; কাকতালীয় মনে হতে পারে, এই তিন দেশের কোচও প্রথম ভোটটি দিয়েছেন দ্রগবাকে! ইয়া তোরকে প্রথম ভোটটি দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। কোচদের মধ্যে তোরে ভোট পেয়েছেন নাইজেরিয়া ও সেনেগালের।
এবারও ভোট বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বারবাডোজের সাংবাদিক এজরা স্টুয়ার্টের ভোটটি মজার। তাঁর প্রথম পছন্দ মেসি; দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভোট দুটি বাতিল। মেসি ছাড়া নিজের গুরুত্বপূর্ণ ভোট আর কাউকেই তিনি দিতে চাননি কি না, কে জানে!
No comments