১০ বাংলাদেশির প্রাণ- কেড়ে নিল আগুন
বাহরাইনের রাজধানী মানামায় আগুনে পুড়ে ১০ বাংলাদেশিসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো চার বাংলাদেশি শ্রমিক। গত শুক্রবার বিকেলে মানামার মুখারাকা এলাকার একটি তিনতলা ভবনে এই আগুন লাগে।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আহত ব্যক্তিদের বাহরাইনের বাদশা হামাদ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিহত ১০ বাংলাদেশির পরিচয় প্রকাশ করেছে। নিহত বাংলাদেশিরা হলেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর চরখিজিরপুর গ্রামের সাগির আহমেদের ছেলে নাজির আহমেদ, একই জেলার পটিয়ার বাতুয়া গ্রামের হাজি রশিদ আহমেদের ছেলে মাহবুব আলম, একই উপজেলার মারিপাড়া গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে জামাল হোসেন; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের গোয়ালি গ্রামের নাসের মিয়ার ছেলে জসিম, একই উপজেলার কাইতলা গ্রামের প্রয়াত শহীদ মিয়ার দুই ছেলে সুপন (স্বপন) ও সাইফুল ইসলাম (সুজন), ওই উপজেলারই গুড়িগ্রাম গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন; চাঁদপুরের কচুয়ার নওপুরা গ্রামের মো. আলম মিয়ার দুই ছেলে শাহাদাত ও টিটু মিয়া এবং নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির কাশিপুর গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে মো. ওসমান গনি।
বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব মহিদুল ইসলামের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা ওয়েবসাইট জানায়, ভবনটি ভাড়া নিয়ে মূলত বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয় শ্রমিকরা একসঙ্গে বসবাস করতেন। ওই ভবনের ২৬টি কক্ষে ৬০ জনের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক ছিলেন। তিনি জানান, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরো মৃতদেহ আছে কি না খুঁজে দেখা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে নিহত যাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ আদায় এবং মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্যোগও যথাসময়ে নেওয়া হবে। কী কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। উদ্ধার তৎপরতা চালানোর সময় ছাদ ধসে একজন উদ্ধারকর্মীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃতদেহগুলো বাহরাইনের বাদশা হামাদ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ মে বাহরাইনেই একটি কক্ষে ঘুমিয়ে থাকার সময় আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ১০ বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বাহরাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১০ বাংলাদেশি শ্রমিক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরো চার শ্রমিক। যে ৫০ জন বাংলাদেশি এখন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন, তাঁদের জন্য সেখানে শেল্টার হোম খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে ১০ জন মারা গেছেন তাঁদের লাশ বাংলাদেশে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাহরাইনে বাংলাদেশি দূতাবাসকে।
মন্ত্রী আরো বলেন, নিহত শ্রমিকরা যে কম্পানিতে কাজ করতেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। শ্রমিকরা যেন ওই সব কম্পানি থেকে সহযোগিতা পান সেই ব্যবস্থা করা হবে। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিলেও সরকারের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার কোনো ক্ষতিপূরণ দেবে কি না- এমন প্রশ্নে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, নিহত শ্রমিকদের লাশ বাংলাদেশে আসার পর প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া লাশ দাফনের জন্য আলাদাভাবে আরো ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
জানা গেছে, বাহরাইনের সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক জানিয়েছেন, গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মানামার মুখারাকা এলাকার তিনতলা ভবনটিতে (শ্রমিক ক্যাম্প) আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পেঁৗছায়। পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ধসে পড়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব মহিদুল ইসলাম বলেন, 'ঘটনার পর আমরা সেখানে যাই। অনেক রাত পর্যন্ত সেখানে ছিলাম। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আমাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর ভবনটি ধসে পড়ে। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, ভবনটি ভাড়া নিয়ে বাংলাদেশি, ভারতীয় ও পাকিস্তানি শ্রমিকরা থাকতেন। অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জন শ্রমিক মারা গেছেন। এর মধ্যে ১০ জনই বাংলাদেশের।'
বাহরাইনের একটি পত্রিকা জানিয়েছে, ভবনের ২৬টি কক্ষে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের শ্রমিকরা থাকতেন। এর মধ্যে তিনটি কক্ষে পাকিস্তানি শ্রমিকরা থাকতেন। ভবনে বসবাসকারীদের বেশির ভাগ ছিলেন বাংলাদেশের শ্রমিক। প্রতিটি কক্ষে সাত থেকে ১০ জন করে শ্রমিক থাকতেন। বাহরাইনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তিনতলা বাড়িটিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ভেতরে অবস্থানরত শ্রমিকরা বের হওয়ার সুযোগ পাননি। বাহরাইনের গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থলে যান বাহরাইনের চিফ প্রসিকিউটর ফাহদ আল বুয়াইনাইন।
দেশটির শীর্ষ আরেক কর্মকর্তা মুহাম্মদ আকরাম জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানি ছাড়াও ৪০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের মুখমণ্ডল, হাত ও পায়ের বেশির ভাগ অংশ আগুনে পুড়ে গেছে।
এর আগে ২০০৬ সালের জুলাইয়ে বাহরাইনের গুদাইবিয়ায় একটি শ্রমিক ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ ভারতীয় শ্রমিক মারা যান।
বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব মহিদুল ইসলামের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা ওয়েবসাইট জানায়, ভবনটি ভাড়া নিয়ে মূলত বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও ভারতীয় শ্রমিকরা একসঙ্গে বসবাস করতেন। ওই ভবনের ২৬টি কক্ষে ৬০ জনের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক ছিলেন। তিনি জানান, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরো মৃতদেহ আছে কি না খুঁজে দেখা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে নিহত যাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ আদায় এবং মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্যোগও যথাসময়ে নেওয়া হবে। কী কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। উদ্ধার তৎপরতা চালানোর সময় ছাদ ধসে একজন উদ্ধারকর্মীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৃতদেহগুলো বাহরাইনের বাদশা হামাদ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ মে বাহরাইনেই একটি কক্ষে ঘুমিয়ে থাকার সময় আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ১০ বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বাহরাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১০ বাংলাদেশি শ্রমিক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরো চার শ্রমিক। যে ৫০ জন বাংলাদেশি এখন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন, তাঁদের জন্য সেখানে শেল্টার হোম খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে ১০ জন মারা গেছেন তাঁদের লাশ বাংলাদেশে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাহরাইনে বাংলাদেশি দূতাবাসকে।
মন্ত্রী আরো বলেন, নিহত শ্রমিকরা যে কম্পানিতে কাজ করতেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। শ্রমিকরা যেন ওই সব কম্পানি থেকে সহযোগিতা পান সেই ব্যবস্থা করা হবে। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিলেও সরকারের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার কোনো ক্ষতিপূরণ দেবে কি না- এমন প্রশ্নে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, নিহত শ্রমিকদের লাশ বাংলাদেশে আসার পর প্রত্যেকের পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া লাশ দাফনের জন্য আলাদাভাবে আরো ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
জানা গেছে, বাহরাইনের সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক জানিয়েছেন, গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মানামার মুখারাকা এলাকার তিনতলা ভবনটিতে (শ্রমিক ক্যাম্প) আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পেঁৗছায়। পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ধসে পড়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব মহিদুল ইসলাম বলেন, 'ঘটনার পর আমরা সেখানে যাই। অনেক রাত পর্যন্ত সেখানে ছিলাম। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আমাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর ভবনটি ধসে পড়ে। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, ভবনটি ভাড়া নিয়ে বাংলাদেশি, ভারতীয় ও পাকিস্তানি শ্রমিকরা থাকতেন। অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জন শ্রমিক মারা গেছেন। এর মধ্যে ১০ জনই বাংলাদেশের।'
বাহরাইনের একটি পত্রিকা জানিয়েছে, ভবনের ২৬টি কক্ষে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের শ্রমিকরা থাকতেন। এর মধ্যে তিনটি কক্ষে পাকিস্তানি শ্রমিকরা থাকতেন। ভবনে বসবাসকারীদের বেশির ভাগ ছিলেন বাংলাদেশের শ্রমিক। প্রতিটি কক্ষে সাত থেকে ১০ জন করে শ্রমিক থাকতেন। বাহরাইনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তিনতলা বাড়িটিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ভেতরে অবস্থানরত শ্রমিকরা বের হওয়ার সুযোগ পাননি। বাহরাইনের গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থলে যান বাহরাইনের চিফ প্রসিকিউটর ফাহদ আল বুয়াইনাইন।
দেশটির শীর্ষ আরেক কর্মকর্তা মুহাম্মদ আকরাম জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানি ছাড়াও ৪০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের মুখমণ্ডল, হাত ও পায়ের বেশির ভাগ অংশ আগুনে পুড়ে গেছে।
এর আগে ২০০৬ সালের জুলাইয়ে বাহরাইনের গুদাইবিয়ায় একটি শ্রমিক ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ ভারতীয় শ্রমিক মারা যান।
No comments