দুই মন্ত্রী নিয়ে প্রশ্ন বিএনপির

নতুন দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করে তাঁদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। তাঁরা হলেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল শনিবার এক সমাবেশে বলেছেন, নির্বাচনে সমস্যার কারণে উচ্চতর আদালত মহীউদ্দীন খান


আলমগীরের সংসদ সদস্যপদ বাতিল করে দিয়েছেন। আর বিশ্বব্যাংকের চিঠিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত যাঁদের কথা বলা হয়েছে, সেই 'সাকো'র (সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের কম্পানি) চেয়ারম্যান মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদকে মন্ত্রী করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'এই দুজনকে মন্ত্রী করে প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে দুর্নীতিকে সমর্থন দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি ভেবে দেখুন সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন কি না।'
গতকাল বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চতুর্থ কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে ফখরুল এ কথা বলেন। প্রসঙ্গত, উচ্চতর আদালত মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সদস্যপদ বাতিল করলেও তাঁর আপিলের কারণে ওই নির্দেশ স্থগিত রয়েছে।
ফখরুল বলেন, 'মন্ত্রিসভায় তোফায়েল আহমেদ ও রাশেদ খান মেনন যোগ না দিয়ে বেঁচে গেছেন। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, ডুবন্ত নৌকা। তাই তাতে ওঠেননি।' ছাত্রদলকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অতীতের মতো ছাত্রদলকে আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে প্রস্তুতি নিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের নির্মমতার জবাব দেওয়ার শপথ নিতে হবে।
দলের সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা বলেন, 'বর্তমানে দেশে সরকার বলে কিছু নেই। নর্দমার পানির সঙ্গে এ সরকারের তুলনা করা যায়। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করে নর্দমার পানি পরিষ্কার করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না।'
ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির ডাকা প্রথম সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী জড়ো হন। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে কাকরাইল নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। সমাবেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সভার কারণে কাকরাইল ও ফকিরাপুল মোড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
সংগঠনের সভাপতি জুয়েলের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহসভাপতি সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মজিদুল হাসান হিরু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ সজল, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসহাক সরকার, উত্তরের সভাপতি আবুল মনসুর খান দিপক প্রমুখ নেতা বক্তব্য দেন।
এদিকে গতকাল দক্ষিণ বাড্ডায় বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক রাজনৈতিক সংলাপে দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এহছানুল হক মিলন বলেন, সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। এ জন্য সরকার পতনের লক্ষ্যে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ কাইউমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

No comments

Powered by Blogger.